নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রোপ্রাইটর- ট্যুরমেট, সদস্য- ট্যুর অপারেটর্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব), সাধারণ সম্পাদক - ট্যুরিষ্ট গাইড এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিগ্যাব) । তবে, ট্যুর গাইড হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।

কায়েশ খান

ঢাকায় থাকি, বিচিত্র সব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাই!

কায়েশ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পান্তা-ইলিশ ও নাগরিক ভাবনাঃ

১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮

গ্রামাঞ্চলে সকালের নাস্তা খুব একটা গুরুত্বপুর্ন ব্যপাড় নয়। সহজলভ্য যে কোন কিছুই নাস্তা হিসেবে উপযুক্ত হিসেবে গন্য।চিড়া-মুড়ি, রুটি-গুড়, রুটি-সবজি, ডাল-ভাত ইত্যাদি। এসব নাস্তা তৈরী হতে হতে সকাল ৭টা-৮টা বেজেই যায়।কিন্তু যে কৃষক সুর্যোদয়ের পুর্বেই জমিতে যায় তার জন্য রাতের উচ্ছিষ্ট ভাত, খানিকটা বাসী ডাল, ভাগ্য ভাল হলে রাতের রয়ে যাওয়া একটুকরো মাছ নিদেনপক্ষে কাচা লঙ্কা-পেয়াজই অমৃত। সেই হিসেবে পান্তা একটা অনিচ্ছাকৃত বিকল্প। এ নিয়ে নাগরিক বাড়াবাড়ি, বিশেষ করে নববর্ষে পান্তা-ইলিশের ছড়াছড়ি ঐ কৃষক তথা গ্রামীন জীবনের প্রতি এক ধরনের নির্মম রসিকতা ছাড়া আর কিছুই না। একই ধরনের রসিকতা আমরা ভাষা দিবস সহ বিভিন্ন দিবসেও দেখে থাকি। বাংলার কৃষক কিন্তু সারা বছরই বাঙ্গালী, সে সারা বছরই বাংলায় কথা বলে কিংবা পানি-পান্তা খায়। শহুরে বাঙ্গালীর এইসব সিজনাল আদিখ্যেতায় তার খুব কমই আসে যায়। তাহলে বাঙ্গালী হয়েও কেন সময়ে সময়ে বাংগালীত্বের ভং ধরে শহুরে বাঙ্গালী? ব্যপাড় কিছুই না, কর্পোরেট জগতের ফন্দীমাত্র।আমাদের আবেগকে পুজী করে আমাদের মানষে সাময়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি করে ব্যবসায়িক ধান্দা। এতেও আমি দোষের কিছু দেখিনা। যে যার চরিত্র অনুযায়ী কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাভাবিক কোন কিছু যখন অস্বাভাবিকভাবে চর্চিত হতে থাকে তখনই যত গোল।
প্রথম অস্বাভাবিকতা হলো এবছরই প্রথম দেখলাম, টিভি চ্যানেলগুলুতে বিশিষ্ট জনদের দিয়ে নববর্ষে ইলিশ না খাওয়ার প্রচারনা চালানো হচ্ছে অথচ প্রায় সকল নামী-দামী রেষ্ট্যুরেন্ট সহ বড় বড় হোটেল এবং অন্যান্য ক্লাব ইত্যাদি নববর্ষে পান্তা-ইলিশের লোভনীয় অফার বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার করছে।জনগন মান রাখবে না কুল রাখবে?
দ্বিতীয় অস্বাভাবিকতা, যেহেতু এই সময় ইলিশের ডিম পারার মৌসুম সেহেতু সরকার এই সময় ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে। এখানেও কথা আছে, ইলিশ সমুদ্রের মাছ, ডিম পারতেই সে নদীতে আসে। এখন যদি জেলে ইলিশ না ধরে তবে ধরবে কবে? তার মানে ইলিশকে প্রান্তিক জেলের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সমুদ্রে শিকার করা কর্পোরেট জেলের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।
আসল কথা হলো আমাদের রাষ্ট্র প্রচন্ড স্ববিরোধী কর্মকান্ড করে যাচ্ছে যার মুল বেনিফিসিয়ারী শহুরে ধনী সমাজ। আপনি সাধারন মানুষকে বলছেন বৈশাখে ইলিশ ধরোনা, ইলিশ খেওনা আর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হোটেল-রেষ্ট্যুরেন্টে ইলিশকে প্রধান আকর্ষন হিসেবে উপস্থাপন করে ২শ' টাকার ইলিশ ২ হাজারে বিক্রীর ব্যবস্থা করেছেন। একদিকে গরীব জেলে দু'পয়সা উপার্জনের জন্য সারারাত পদ্মায় জেগে ইলিশ ধরে জেল জরিমানার শিকার হচ্ছে, অন্যদিকে শহুরে বাঙ্গালী নববর্ষে পান্তা-ইলিশ খেতে হাজার টাকা খরচ করছে।
এ অন্যায়! ঘোরতর অন্যায়।আমি এর নিন্দা জানাই। আমাদেরকে আমাদের মত থাকতে দিন, নবর্ষের মত সার্বজনীন অনুষ্ঠানকে বানিজ্যিকিকরন থেকে মুক্তি দিন।আর যদি ভাল কিছু করতে চান তবে আপামর জনগন যেন তার ফল ভোগ করতে পারে সেরকম উদ্যোগ নিন।নইলে এর পরিনতি ভাল হবে না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, খুব ভাল বলেছেনে। তবে পান্তার সাথে কোন ভাবেই "ইলিশ" যায়না, পান্তা যদি খেতেই হয় তবে অনেক বিকল্প রয়েছে যা আসলেই আপামর জনসাধারণের খাবার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.