নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাজী নিয়াজ

কাজী নিয়াজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগের চেতনায় বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০২

শাহবাগ গণজাগরণের শেষ পরিণতি কী হবে তা এখনো বলা মুশকিল। তবে গত পাঁচ দিনে কিছু বিষয় পরিষ্কার হয়েছে। যেমন, 'জয় বাংলা' এই স্লোগানটি তার '৭১ এর সার্বজনীনতা পুনরায় ফিরে পেয়েছে। যে স্লোগানটিকে আওয়ামী লীগ তার দলীয় পরিচয়ে কুক্ষীগত করে রেখেছিলো, তা আজ আবার আম-জনতা নিজেদের মুখের ভাষায় ফিরে পেলো। 'জয় বাংলা' আজ এক মুক্ত, জাতীয় স্লোগান; তা দল-মত-নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষের জয়ধ্বনি।



দ্বিতীয়ত, শাহবাগ থেকে সব রাজনৈতিক শক্তিকে এই বার্তা নিতে হবে যে, তারা দলীয় স্বার্থে দেশে-বিদেশে যেখানেই আঁতাত করুক না কেন, সেটা যদি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যায় তবে প্রতিবাদ হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ওয়াশিংটন, দিল্লি, বা রিয়াদ যেখানই সালাম ঠুকুন না কেন, শেষ বিচারে এসে জনগণের পা-ই ধরতে হবে। এই প্রতিরোধের জন্য কোন বড় নেতা লাগবেনা, নাম না জানা তরুণরাই যথেষ্ট।



তৃতীয়ত, এই শাহবাগ অভ্যুত্থান নিয়ে বিএনপি (=বেসিক্যালি নো পার্টি) এর অবস্থান আরও হাস্যকর। জামায়াত-শিবিরের সাথে উন্মুক্ত আঁতাত তাদেরকে ক্রমেই গণবিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। শাহবাগের চেতনাকে তারা বলেছে সরকারের সাথে সমঝতার ধুম্রজাল। তারা যে কেনো তারুণ্যের পালস ধরতের পারছে না তা তাদের স্থায়ী কমিটির সভা দেখলেই বোঝা যায়; সেটি পরিণত হয়েছে হাসপাতালের আইসিইউ-এ বৃদ্ধ রোগীদের কোনো মিটিং-এ। তৃণমুল থেকে উঠে আসা নেতার সংখ্যাও নগণ্য, আছে শুধু অবসরপ্রাপ্ত আমলা আর আইনজীবী । একটা দলের বিভ্রান্ত হতে এর থেকে বেশি আর কি লাগে! শাহবাগের চেতনাকে তারা যেভাবে অনাহূত-অনাত্নীয় ভেবে তাড়িয়ে দিয়েছে, তাতে এদেশে তাদের এক চূড়ান্ত রাজনৈতিক পরাজয় ঘটলো বলে।



চতুর্থত, এই দেশে ধর্ম ব্যবসায়ি যদি হয় জামায়াত, তবে মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ি আওয়ামী লীগ। অবশ্যই '৭১-এ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব অবিসংবাদিত। কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধ শুধু লীগ করেনি। সেখানে ছিলো বামপন্থীরা, সাধারণ ছাত্র-যুবক-কৃষক-মজুর-নারী ছিলো। ছিলো পুলিশ-ইপিআর-ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। তারা বিভিন্ন মত, পথ, দৃষ্টিভঙ্গি আর উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। কিন্তু, সেই সব বহুত্ববাদী মতবাদ আর আদর্শকে আ.লীগ অস্বীকার করেছে। একটি মাত্র একত্ববাদী মতবাদ চাপিয়ে দিয়ে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছে মুক্তিসংগ্রামের বহুধারাকে। মুক্তিযুদ্ধের যে বিকল্প ইতিহাস থাকতে পারে, তা তারা মানে না। এর চেতনায় অন্য কারো হালাল অংশীদারিত্বও সহ্য করে না দলটি। এই একটি মাত্র রাজনীতি করেই তারা টিকে রয়েছে। এবারো তারা ভেবেছিলো, জনগণ রাষ্ট্রনীতিতে আগ্রহী নয়। নিষ্ক্রিয়তার আফিমেই বুঝি তারা বুঁদ থাকবে। ব্যস্ত থাকবে দৈনন্দিন রুটি-রুজির জোগাড়ে। এইফাঁকে জামায়াতকে চাপে ফেলে হাসিল করতে চেয়েছে নিজেদের নির্বাচনী ফায়দা। জনগণের একটা অংশও ভেবেছিলো, বোধহয় বিচার ঠিকই হচ্ছে, রাজকারদের ভাগ্যে জুটবে সর্বোচ্চ শাস্তি। তাই তারা নীরব ছিলো এতদিন, শিবিরের তাণ্ডবের পরও। কিন্তু, তারপর যখন এদেশের মানুষ সার্কাসের ভেল্কিবাজি দেখতে পেলো রাজনীতি আর বিচারের ময়দানে, তারা রাজপথে নেমে এলো বর্ষার ধারার মতো।



তবে এই আন্দোলনের সব থেকে বড় পাওয়া, উগ্র-ধর্মভিত্তিক-মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক অপ-শক্তির বিরুদ্ধে গণ-প্রতিরোধ। জামায়াত-শিবির-জঙ্গী চক্র চেয়েছিলো দেশের মানুষকে নিঃশেষ করে দিতে। কোনো এক অদৃশ্য হাতের ইশারায় হঠাৎ ধ্বজভঙ্গ হয়ে যাওয়া মনোবল-শূন্য পুলিশকে পিটিয়ে, একটা গোপন উপায়ে তারা পার পেতে চেয়েছিলো। কিন্তু, মানুষের ঘৃণার থুথু'র প্রবাহ বানের জলের মুখে খড়-কুটোর মত আজ তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে ফেলে দিয়ে এসেছে আরব সাগরে--করাচী'র কাছাকাছি। এই জাগরণ এ দেশে জামায়াত-শিবিরের রক্তাক্ত রাজনীতির কবর রচনা করবে। আর তার জন্য দরকার জামায়াত-শিবির-মৌলবাদী চক্রকে শুধু আইন করে নয়, বরং সামাজিক-রাজনৈতিক-বাণিজ্যিক আর আদর্শিক ভাবে বর্জন ও মোকাবেলা করা। তাই ইস্রাফিলের শিঙ্গার মত বজ্রস্বরে আজ দিগ্বিদিক ধ্বনিত হোক-- জামায়াত-শিবির-রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়.....জয় বাংলা।



১০/০২/১৩

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৪

নায়করাজ বলেছেন: ইসলামের সেবক বলে দাবীদার জামায়াত শিবির রাজাকার যুদ্ধাপরাধী চক্রের মিথ্যার বেসাতি পাবেন নিচের লিংকে। তাদের মিথ্যার বেসাতি দেখে অবাক হয়ে যাবেন।

Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.