![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সামুব্লগের সাথে নিয়মিত পাঠক হিসেবে পরিচিত অনেক দিন যাবত। দেখাযাক মাঝে মাঝে কিছু লিখতে পারি কিনা.........
নর্থ বেংগল থেকে ঢাকা ফিরছিলাম ঈগল পরিবহনের কোচে। দুই ঘন্টা চলার পর থেকেই আমার পাশের পঞ্চাশ উর্ধ বয়সী যাত্রী অসুস্থ্য বোধ করতে থাকেন। তিনি আমাকে বললেন-“আমার শরিরটা ভালোনা, মাথা ঘুড়ছে আর বমি বমি ভাব হচ্ছে”। “বমি” ভাবের কথা শুনেই আমারও বমি পেয়ে গেলো! বমি বিষয়টা আমার কাছে ভয়ংকর অস্বস্তিদায়ক! সীট বদলে অন্যত্র বসার সুযোগ নেই-সব সীটেই যাত্রী। আমি আমার পাশের সীটে বসা এই যাত্রীকে এতক্ষন খেয়াল করিনি। উনার দিকে তাকিয়ে কেমন একটা শ্রদ্ধা ভাব এসেগেল। পরিচয় দিলেন-ডাক বিভাগের পদস্থ্য কর্মকর্তা, জিপিও তে আছেন। পঞ্চগড় এসেছিলেন সরকারী কাজে-তিনি তাঁর নেম কার্ড আমাকে দিলেন। আমাদের পরিচয় হলো।
শীতকাল হলেও কতিপয় যাত্রীদের চিল্লা চিল্লিতে ড্রাইভার এসি চালাতে বাধ্য হয় বাস ছাড়ার সময় থেকেই(এসি বাসের ভাড়া দিয়ে এসি চলবেনা-তা কি হয়! হোকনা আমরা সবাই শীতে কষ্ট পাই)। যথারিতী শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে তাঁর বেশী ঠান্ডা লাগায় আমরা সীট বদল করে বসলাম। পাশ বদলের সময় ভদ্র লোকের কপালে হাত দিয়ে দেখি জ্বরে তার শরির পুড়ে যাচ্ছে। যা ভয় পেয়েছিলাম-তাই শুরু হলো। উনার বমি আমার শরিরেও লাগলো! ভদ্র লোকের অবস্থা কাহিল-কিন্তু পাশাপাশি অন্য যাত্রীরা অনেকেই অসৌজন্যতা শুরু করলো। কেউ কেউ ড্রাইভার সুপারভাইজরকে নির্দেশ দিচ্ছে- উনাকে পথেই নামিয়ে দিতে!
রোগীর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। শরির নেতিয়ে পরছে। কিছুক্ষণ পূর্বের উত্তপ্ত শরির এখন হিম! আমি ভয় পেয়ে গেলাম। এবার আমিই রোগীর অবিভাবক হলাম। নিজেই ডাক্তারী/নার্সিং শুরু করলাম। বোতলের পানি দিয়ে যতটা সম্ভব পরিস্কার করিয়ে দিলাম। তাঁর হাতের তালু আমার হাতে ঘষে ঘষে গড়ম রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের গ্রামের বাড়ির আংগীনায় লাগানো কমলা গাছের কমলা ধরেছে। সেই কমলা আমার স্ত্রী সন্তানদের জন্য ভাই-ভাবী আমার সাথে করে দিয়েছেন। কমলা বের করে ভদ্রলোকের হাতে দিয়ে বললাম গন্ধ নিন-বমিভাব কমতে পারে। ইচ্ছে করলে/রুচী হলে আপনি কমলা খেতেও পারেন। অন্যদিকে এক যাত্রী বলছেন- দুই হাতের তালু ঘষেন আর গন্ধ নেন, বমি বন্ধ হবে।
২য় যাত্রী বলেন-এভোমিন খাইয়ে দিন বমি বন্ধ হবে।
৩য় যাত্রী-এই সুপারভাইজার একটু পেট্রোল দাও, পেট্রোলের গন্ধে বমি বন্ধ হবে। সুপারভাইজার বলে-এই গাড়ি গ্যাসে চলে পেট্রোল পাবো কোথায়?
৪ র্থ যাত্রী-চামড়ার স্যান্ডেলের গন্ধ শুকতে দেন-বমি বন্ধ হবে।
অন্য যাত্রী-মোজার গন্ধ শুকান-দেখবেন বমি বাহে বাহে করতে ভাগবে(এই যাত্রী হামাক দেশী!)
অন্য যাত্রী-পালটী মাদারের কচি পাতার রস খাওয়াতে পারলে বমি বন্ধ হত(আবার নিজেই সমাধান দিলেন-পথের মধ্যে রাত্রী বেলা পালটী মাদার গাছে পাওয়াতো সম্ভব নয়)।
ড্রাইভার ঘাড় ত্যাড়া করে বলছে-“অনারে একটা পানের রস খাওয়াই দ্যান-বমি মবি সব বন হইয়া যাইবো”। সাথে সাথে বাসের প্রায় সকল যাত্রী চিল্লাইয়া উঠলো-“ঐ মিয়া, তোমার ডাক্তারী মারাইতে হইবেনা, তুমি গাড়ি চালাও”। ড্রাইভার ঝাড়ি খেয়েও বলে-সবাই ডাক্তার হইতে পারবে-খাই ড্রাইভারেরই মানা”!
এভাবেই বাসের ৩৪ জন্য যাত্রীই নানান বনজ ঔষধ, হোমিওপাথী, এলোপ্যাথী এমনকি-কেই কেউ দোয়া দরুদ পাড়ারও প্রেসক্রিপশন করতে লাগলেন স্পেশালিষ্ট ডাক্তারেরমত। একজন বয়স্ক যাত্রী পিছনের সীট ছেড়ে কাছে এসে নীচু গলায় বললেন-“বাহে,পায়খানার রাস্তায় আংগুল দিয়ে গোন্ধ লিবার কহেন-আর বমি হইবার পারবোনা”!
সব ডাক্তারের ঔষধের কথাই শুনছিলাম কিন্তু এই ডাক্তার(শরিরের বিশেষ অংগে আংগুল দেয়া ডাক্তার) ভদ্র লোকের কথা শুনে আমি আমি জিজ্ঞেশ করি-আপনার চেম্বার কোথায়? আঙ্গুল ঢুকানো ডাক্তারের কথায় এবার আমার রোগী নিজেই হেসে দিলেন! আর বললেন-দেখলেনতো বাংলাদেশ কি ভাবে এগিয়েছে-একটা বাসের সকল যাত্রীই ডাক্তার!!!
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: উনার চেম্বারে উনি আংগুল ঢুকিয়ে বমি বন্ধ করায় ব্যস্ত
২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৫
মদন বলেছেন: মানুষের মধ্যে মানবতাবোধ উঠেই যাচ্ছে।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: সহমত।
৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪১
ডরোথী সুমী বলেছেন: আসল ঘটনা খুবই বিব্রতজনক আর কষ্টকর হলেও বর্ণনাতে খুব আনন্দ পেলাম।(আপনি হয়ত সেটাই চেয়েছিলেন) ধন্যবাদ।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: হ্যা, আমি চিকিতসা নিয়ে আমাদের অপচিকিতসার দৌরাত্ব তুলে ধরতে চেয়েছি কিছুটা কৌতুকেরর ছলেই।
ধন্যবাদ।
৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৮
সারথী মন বলেছেন: রাজীব ভাই হেব্বী মজা পাইলাম!!!
ড্রাইভারদেরও ডাক্তারী করার সুযোগ চাই!
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন:
৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫০
অহন_৮০ বলেছেন:
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন:
৬| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০০
বাংলাদেশী পোলা বলেছেন: বমি বন্ধ করার জন্য ঔষধ খাওয়াতে হবে(আমিও একজন ডাক্তার!!!)
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন:
৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২০
গিড়ীবাজ বলেছেন: আংগুল কতটুকু ঢুকাতে হবে-তা কি জেনে নিয়েছিলেন?
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন:
৮| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫
নষ্টালজিয়া বলেছেন: হা হা প গে!
ফ্রি চিকিতসা বিষয়ক এই মহান পোস্ট স্টিকি করা হউক!
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০২
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: আধুনিক চিকিতসা বিজ্ঞানে এই পোস্টের গুরুত্ব অপরিসীম-যাহা একমাত্র আপনিই অনুধাবন করিতে সক্ষম হইয়াছেন
৯| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৭
পঞ্চপাণ্ডব বলেছেন: ভাই আংগুল ঢুকানো ডাক্তারের ঠিকানা আছে?
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: না ভাই ঠিকানা নাই
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১০
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: আপনার প্রয়োজন হলে স্ব স্ব উদ্যোগে যথাস্থানে নিজ আংগুল ঢুকিয়ে চিকিতসা নিতে পারেন!
১০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১
নীলিমায় নীল রোদ বলেছেন: জটিল হইছে
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১০
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন:
১১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১১
কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: আমরা হগগলতে ডাক্তার !!
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১১
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: মানে আপনিও "আংগুল ঢুকানো ডাক্তার"?
১২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭
কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: ইয়ে, মানে, না আর কি !! :#>
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
ক্ষুধিত পাষাণ বলেছেন: বুঝেছি-মাঝে মাঝে...............
১৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১৯
শহীদ ভূইয়া বলেছেন: ডাক্তারময় গাড়ি। এই রোগীর কিছু হলে অন্তত কেউ বলতে পারবেনা যে, চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনার চেম্বার কোথায়? হাহাহাহাহাহা
ব্যাপক হাসির খোরাক পাইলাম ।