![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় বাবা ও মা,
আমার বিষয় নিয়ে এটা তোমাদের সাথে আমার শেষ আলোচনা। এটা বলার কারণ তোমাদের কে একটা সুযোগ দেয়া, যাতে তোমরা মনে করতে পারো, এবারের মত এড়াতে পারলেই তো হলো। তাই না? যাই হোক, আসল কথায় আসি।
আমি একটু অবাক হইছি যে, তোমরা কখনো জানতে চাওনি যে, আমি কেন ওর জন্য এতটা desperate? প্রথমে সেই কারণ তা ব্যাখ্যা করি। একটা দিনের ২৪টা ঘন্টায় ও আমার সাথে থাকে। এমন একটা সময় নেই, যে সে জানে না, আমি কোথায়, কি করতেছি। আমার যে বেলা রান্না হয় না, সে বেলা ও রান্না করে পাঠিয়ে দেয় (অধিকাংশ বার ই এটা হয়). আর যদি কোনো বেলা আমি খেতে না পারি, সেও ওই বেলা খায় না ! আমি আজ যে অবস্থায় আছি, এতে তার অবদান আমি কখনো অস্বীকার করতে পারবনা। বাবা, I was a very very frustrated person where I got no one beside me but her. সে আমাকে সবসময় অনুপ্রেরণা দিত, সমর্থন দিত, যার জোরে আমি আজ এই জায়গায়। তার ফল কিন্তু পরোক্ষ ভাবে তোমরাও পাচ্ছ বাবা। তুমি আজ গর্ব করে তোমার ছেলের কথা বল, সেই ছেেলকে গর্বের মত জায়গায় আনতে তোমার ছেলের অবদান ২০% আর তার অবদান ৮০%। আমাকে রোজ ঘুম থেকে ডেকে তোলে, আমি রোজ নিশ্চিন্তে ঘুমাই আমার যত ভোরেই ওঠা লাগুক না কেন। আমি জানি ঠিক ই সময় মত ও ফোন দিবে। রাতে কোনদিন ও আমার আগে ঘুমায়নি। আমি যে কয়টা পর্যন্ত কাজ করি, সে জেগে থাকে, যদিও পরদিন ভোরে আবার তার ও অফিস থাকে।
আশা করি তোমরা বুঝতে পারছ, আমি কেন তার উপরে এতটা নির্ভরশীল? আর আমি নির্ভর করে অনেক খুশী (মা একবার বলছিলে যে, সে কি আমাকে টাকা দেয় যে, আমি তার উপরে নির্ভর করি? মা টাকাটা তো সব না, তুমি আমাকে টাকা দাও না, তাই বলে কি আমি তোমার উপরে নির্ভর করি না?)
And honestly, the truth is - আমি তার কাছ থেকে যে মানসিক সাপোর্ট পেয়েছি, তা আমি আর কারো কাছ থেকে পাইনি। Mental support is a very powerful resource to recover any type of mental sickness, disorder etc - that she did.
কিছু সত্য কথা -
আজ আমাকে শুনতে হয় সব আত্মীয় স্বজন বাজে কথা বলবে, সবাই ছি ছি দিবে। বাবা, আমাকে নিয়ে আমার কজন আত্মীয় ভালো কথা বলছে, সে আমিও জানি, তোমরাও জানো। আমার বাড়ি থেকে তোমরা আমাকে বের করে দিছ, আমি কাদতে কাদতে বের হয়ে আসছি, বাড়ি ভর্তি লোক, কেউ আমাকে একবার ও ডেকেও জিগ্যেস করলো না। Why should I care for them? Got any answer? মজার কথা হলো, তোমরাও বাড়িতে ছিলে, ডাকনি। মা পরে সি এন্ড বি তে গিয়েছিল, আমার এটুকু মনে আছে। এমনকি, তুমি বাবা হয়ে পরেও এর কোনো সমাধান করলে না। মানে ব্যপারটাই এমন, সবার লাথি গুতা খাব, আর চুপ করে থাকব!
আমার সাথে এক বিছানায় ঘুমায় - রা.....। প্রতিদিন ওর বাসা থেকে ২বার করে ফোন আসে, একটা ওর বাবা দেয়, আর একটা ওর মা দেয়। কি খায়, কি ভাবে আছে, সব খোজ নেয়। আর আমার? আমার বেশির ভাগ ফোন যায় তোমাদের সালিশ করতে করতে। আর একটা ব্যাপার হলো, আমি অসুস্থ - শোনার পর তোমরা অনেক কথা বল - কিন্তু ওই পর্যন্তই, পরে আর ফোন দিয়ে খুব একটা খোজ খবর নিছ বলে মনে পরেনা। আমি অভিযোগ করতেছি না, হয়ত তোমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে, তাই ভুলে যাও - এটা হতেই পারে - কিন্তু কেন যেন আমার খারাপ লাগে। তুমি যেন, আমি নিজে থেকে কখনো ডাক্তার দেখাতে যাইনি, প্রতিবার সে আমাকে জোর করে নিয়ে গেছে।
পূজার সময় যখন বাড়িতে আসছি, আমার বাজেটের বেশি খরচ হয়ে গেছিল, আমার ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল, দেখাতে পারিনি - বরং ধার করে হলেও তোমাদের পরের মাসের টাকা আমি দিয়ে আসছি। ডিসেম্বরে আবার ডাক্তারের কাছে যাবার কথা ছিল, কিন্তু হটাত করে তোমর প্লান করলে ঢাকা আসবে, আমি আবার ও টাকা পাঠিয়ে দিলাম, এবার ও সেই ডাক্তার না দেখিয়েই। আমি কখনো বলিনি, যদি তোমরা আবার কষ্ট পাও বা কিছু মনে কর। আমি তোমাদের কথা চিন্তা করি বলেই, আমি যে মাসে প্রথম বেতন পাই তার ঠিক ২ মাস পরেই আমি বলে দেই আমাকে টাকা পাঠাতে হবে না। বাবা, আমি যখন প্রথম ঢাকায় আসি, আমাকে পাঠাতে মাসে ৪ হাজার করে (পরে পাঠাতে ৫ হাজার করে, তুমি নিজে থেকেই দিতে আমি কখনো চাইনি ৫ করে), সে তাকে আমার চলত না। রাহুল বাসা থেকে মাসে গড়ে ৮-১০ হাজার করে আনত। আমি তখন টিউশনি শুরু করি, ২.৫ কিলোমিটার হেটে আমি ২টা পরতাম তখন। একটা পার্ট টাইম চাকরির জন্য মোট কয়েকশ কিলোমিটার হাটছি আমি। এরকম ও হইছে, আমি রাতে ভাত না খেয়ে ২/৩ টাকার পাউরুটি র জল খাইছি। রাহুল এগুলো জানে, কিন্তু কোনদিন ও আমি তোমাদের বলিনি, জানি বললে তুমি সাথে সাথেই টাকা পাঠিয়ে দিতে - কিন্তু আমার মধ্যে অপরাধবোধ কাজ করত, এমনিতেই কতগুলো টাকা নষ্ট করছি, আবার কিভাবে চাই - বেশি করে টাকা পাঠাতে বলি কিভাবে?
তারপর আমি একটা scholarship পাই জার্মান টেকনিকালে। তার কিছুদিন পর ই আমি রাতের চাকরি টা পাই। তখনকার দৈনিক রুটিন কি জানো - সকাল ৮টাই উঠে জার্মান টেকনিকাল, ওখান থেকে ২টায় আগারগাঁও যেতাম আড়াইটায় টিউশনি ছিলো। পথে আসতে আসতে বাসে বসে কিছু হালকা খাবার খেতাম। আগারগাঁও থেকে ৩.৩০ এ বের হয়ে ধানমন্ডি, ৪ টার টিউশনি ধরতে। ৫.৩০ তে বের হয়ে ভার্সিটি, ৬তে ক্লাস। ক্লাস থেকে বের হতাম ৯টায়, বের হয়ে বাসায় এসে খেয়েই (তখন আমি এই এক বেলাই ভাত খাই) অফিসে যেতাম। আসতাম ভোর ৫টায় । এসে ঘুমাতাম, আবার উঠতাম ৮ টায় !
আমার কখনো ইচ্ছেই ছিল না, আমি এই কথা গুলো তোমাদের বলি, কিন্তু আমি এই কাজ গুলো এ জন্যই করছি, কারণ আমি তোমাদের দিকে তাকায়ছি । নিয়তির পরিহাস - আজ যখন তোমরা আমার দিকে তাকাবে এই আশায় আমি তোমাদের কাছে গেছি, তোমরা মুখ উল্টা দিকে ফিরিয়ে বসে আছ। অনেক কষ্ট লাগছে যখন দেখছি, তোমরা সমাধানের কোনো উপায় না খুঁজে, নিজেদের মতকে কিভাবে আমার উপরে চাপাবে - সেই জন্য blackmail করতেছ। একটা মেয়ে সব বাদ দিয়ে আসতে চাচ্ছে আর তোমরা এই টুকু consider করতে পারো না? বাবা, তুমি তো বল যে, আগে নিজের সুস্থ থাকা, নিজের ঠিক থাকা - তার পরে সব। কিন্তু তোমরাই তো আমাকে অসুস্থ বানিয়ে দিচ্ছ ! তবে আমি একটা কথা ভালোভাবে বুঝতে পারছি যে - I am not that important to you than your relative and society.
কেন মনে কর না, আমি একজন এতিম হিন্দু মেয়ে কে বিয়ে করতে চাচ্ছি? সবাইকে তাই বলতে পারতে। অথবা চাইলে আমি যে বিয়ে করব তাও লুকিয়ে রাখা যেত, সবাই জানবে যে আমি বিয়ে করব না। বা অন্য কোনো উপায় - তোমরা সে রকম কোনো চেষ্টাই কর নাই। আফসোস !!!
বাবা, আমি তোমাদের সবাইকে যেমন অনেক ভালবাসি, তাকেও অনেক ই ভালবাসি। তোমরা সবাই মিলে পূর্ণাঙ্গ আমি। তোমরা ৪জন আমার জীবনের ৪টা অঙ্গের মত। আজ কোনো অভিশাপের কারণে যদি আমাকে বলা হয়, ১টা অঙ্গ কাটবে নাকি ৩টা অঙ্গ কাটবে, আমি অবশ্যই ১টা কাটব - কিন্তু বাবা মনে রেখো, আমি কিন্তু পঙ্গুই হয়ে যাব। আশা করি আমাকে অর্ধমৃত অবস্থায় দেখতে তোমাদের ও ভালো লাগবে না, নাকি? আমি তোমাদের কাছেই থাকব, কিন্তু সেই আগের আমাকে আর তোমরা পাবে না। পরে যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন কর - তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে। আর আমাকে যদি একাই থাকতে হয়, আমি ঢাকাতে থাকব না, চটগ্রাম বা সিলেটে চলে যাব। একা থাকতে হলে একাই থাকি, তাই না?
বাবা, আমি আজ শেষবারের মত তোমার কাছে ভিক্ষা চাচ্ছি, তুমি যে কোনো ভাবেই হোক মেনে নাও, প্লিজ। আশা করি তুমি এমন কিছু করবেনা, যাতে আমি তোমার কাছে চাওয়া বন্ধ করে দেই ! তুমি শুধু একবার আমাকে ফোন করে তোমার সিদ্ধান্ত জানাবে, এর পর আমি জীবনেও এ নিয়ে আর কোনো কথা বলব না। আমার ভালো থাকা না থাকা পুরোটাই তোমার উপরে এখন।
আমার আর কিছু বলার নাই, শুধু একটাই কথা - যদি তোমরা মেনে নিতে নাই পর, আমাকে আমার মত থাকতে দিও - তা না হলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে।
ভালো থেকো ।
ইতি
বাপ্পী
পুনশ্চ ১: চিঠির সাথে চোখের জল টুকু পাঠাতে পারলাম না, সে টুকুও তোমদের লাগত।
পুনশ্চ ২: আমি ওকে ছাড়া কখনই ভালো থাকবনা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৫
সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: কষ্টকর অনুভুতি।
মন ভাল করতে Click This Link