নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদ্ভুদ রাজ্যের প্রবেশদ্বার

চার কথা শিখতে, দু কথা লিখি

খালেদ সাইফুল্লাহ রাজ

চার কথা শিখতে, দু কথা লিখি

খালেদ সাইফুল্লাহ রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের সমাজের তথাকথিত এক খারাপ মেয়ের আত্মকথা

১০ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৫

বেশ কয়েক মাস আগে একটা মেয়ে এর সাথে কথা হয়। যে আমাদের সমাজের তথাকথিত একটি খারাপ মেয়ে। তাঁর জীবন সম্পর্কে জানার ইচ্ছে ছিল খুব আমার। তাঁর শৈশব, কিশোরকাল থেকে বর্তমান জীবনে আবর্তন নিয়ে কথা প্রসঙ্গে একদিন আমি জানতে চাইলাম। বিশ্বস্ত হওয়ায় সে আমার কাছে নিজের জীবন নিয়ে সব বলতে রাজি হল এবং একদিন সময় করে আমাকে বলল। এরপর তাঁর জীবন নিয়ে লিখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু তাঁর অনুমতি পাই নি। অবশেষে পেলাম এবং লিখলাম। লেখাতে তাঁর নাম এবং তাঁর নাম পরিচয় ছদ্ম রাখা হল।



ঋতু ছোট বেলায় মেধাবী ছাত্রী ছিল। ২য় শ্রেণি পর্যন্ত তাঁর অবস্থান প্রথম ছিল। খুব শান্ত, আদুরে ছিল। সবাই আদর করত। সবাই তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব আশানুরূপ ছিল। কারণ, তাঁর বিভিন্ন ব্যাপারে প্রতিভা ছিল। খুব সহজে নিজের মত করে বুঝতে নিত। মিশুক ছিল। নতুন বন্ধুত্ব করা, সবাই কে নিয়ে মিলে মিশে থাকাটা খুব পছন্দ ছিল।

কিন্তু তাঁর জীবনে ধিরে ধিরে পরিবর্তন হতে থাকল। ভুল পথের প্রতি তাঁর আগ্রহ জন্মাল মনে। সেই ভুল পথের প্রতি তাঁর আগ্রহ এবং আকর্ষণের কিভাবে হল তা সে এভাবে বর্ননা করল।



ঋতুর মা ছিলেন সিরিয়াল এবং হিন্দি সিনেমায় আসক্ত। মায়ের সাথে সিরিয়াল এবং হিন্দি সিনেমা দেখত ঋতু। এরপর টিভি দেখার প্রতি তাঁর আগ্রহ বাড়ে। মাঝে মাঝে টিভি তে আপত্তিকর দৃশ্যও দেখত তাঁর মায়ের সাথে। সেই আপত্তিকর দৃশ্য তাঁর মনে প্রশ্ন জাগাত এবং সে তাঁর উত্তর খোজার চেষ্টা করত। এভাবে সে বড় হতে থাকল প্রায় আপত্তিকর ব্যাপার গুলো দেখতে দেখতে।



ঋতুর বয়স যখন ১০ প্রায় তখন একদিন সে ছাদে যাচ্ছিল। সিড়ি ঘরেই দেখে তাঁর ভাই এবং পাশের বাসার আপুটা অন্তরঙ্গভাবে একে অপরকে আলিঙ্গন করে আদর করছে। ঋতুকে দেখে তাঁর ভাই তাকে বকা দিয়ে পাঠিয়ে দিল বাসায়। বাসায় এসে তার ভাই ডেকে বলল যা দেখেছে তা কাও কে না বলতে বিনিময়ে তাকে কম্পিউটারে গেমস খেলতে দিবে এবং যা চায় তা দিবে। ঋতুর তখন এসব নিয়ে শুধু নিজ ধারনা ছিল এসব লজ্জাজনক কাজ যা লুকিয়ে করতে হয় এবং করে কেউকে বলা যায় না, বলতে হয়না।



তার এক বছর পর একদিন তার মা ঘুমচ্ছিল তার ভাই তাকে গেমস খেলতে দিয়ে একটা ফোন পেয়ে বের হয়ে গেল। তখন সে মোটামোটি জানত কম্পিউটার চালাতে। সে গেমস খেলছিল। কিছুক্ষণ পর তার আর খেলতে ভাল লাগছিলনা। কম্পিউটার নিয়ে অধিক আগ্রহ থাকায় সে অনেক ঘাটাঘাটি করে একটা ভিডিও ওপেন করে ফেলল। আর সেটা ছিল “নীল ছবি”। ঋতু বিস্ময়কর চোখে দেখছিল। তখন কারেন্ট চলে গেল। সে উঠে গেল। তার মনে তখন অনেক প্রশ্ন। এরপর আগ্রহের কারনে সে আরেকদিন সুযোগ পেয়ে খুজল সেই ভিডিওটি। কিন্তু পায়নি। এভাবে চলতে থাকল। আর সে তার মনের প্রশ্নের উত্তর খুজছিল।



ঋতু যখন ৭ম শ্রেণিতে সে খুব হিন্দি সিনেমা দেখত। ধিরে ধিরে সে অনেক আবেগি হয়ে উঠল। ভালবাসা নামক জিনিসটি তার পেতে ইচ্ছে করত। তার এক চাচাত ভাই ছিল রিজভি। প্রায় ঋতুদের বাসায় তার আসা যাওয়া। একদিন বাসায় ঋতুকে বাসায় কেউ না থাকায় তার চাচাত ভাইয়ের কাছে রেখে তার মা মার্কেটে যান। তারা দুজন পাশাপাশি বসে টিভি দেখছিল। একটু পর ঋতু অনুভব করল রিজভি তাকে জড়িয়ে ধরেছে। এবং আপত্তিকর জায়গায় হাত দিচ্ছে। ঋতু চুপ করে টিভির দিকে তাকিয়ে আছে। সে ভয় পাচ্ছে এবং তার মনে এসব নিয়ে প্রশ্ন থাকায় চুপ করে থাকে এবং নিজের মাঝেই রাখে এসব। সে যে ভুল করছে তা সে জানেনা এবং এটি ভুল কাজ সে তাও জানেনা। মনে প্রশ্ন থাকায় সে এসব করতেও আগ্রহী ছিল। দ্বিতীয়বার সে রিজভিকে জিজ্ঞেস করল, “আপনি এসব কেন করছেন।“ সে উত্তর দিল “তোমাকে ভালবাসি তাই”। ঋতুর মনের মধ্যে এক আলোড়ন সৃষ্টি হল। সে আর কিছু বলেনি। কোমল মনে ভালবাসার আবেগ তার মনে কোনায় কোনায় ছড়িয়ে পরে। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে বাসায় অথবা বাসার ছাদে আলিঙ্গন, আদর শারীরিক সম্পর্কটা চলতে থাকে। এভাবে সে শারীরিক সম্পর্কের প্রতি আসক্ত হয়ে যায়।



একদিন বাসায় ফেরার পথে রিক্সায় দেখে সে রিজভিকে অন্য মেয়ে এর হাত ধরে যাছে। বাসায় গিয়ে সে অনেক কাঁদে এবং ভেঙ্গে পড়ে। কেউ তাকে মিথ্যে বলে তার শরীরকে ব্যবহার করেছে সে মানতেই পারছিলনা। এভাবে ৯ম শ্রেণির মাঝামাঝি যায়। ছেলেদের প্রতি ভিসন ক্ষোভের কারনে এবং মন ভাঙ্গার আবেগে সে মানসিক রোগীর মত হয়ে গেল। বিভিন্ন ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়াত। শারীরিক সম্পর্কের আসক্তির জন্যে সে শারীরিক সম্পর্কও করত। এভাবে সে খারাপ মেয়ে নামে পরিচিত হতে থাকে।



সম্পর্কগত জটিলতার কারনে তার বাসায় জানাজানি হয়। তাকে ১০ম শ্রেণির শেষের দিকেই বিয়ে দিয়ে দেয় ভুরি পেটের একজন ধনী ব্যাক্তির সাথে। কিন্তু সেই সংসার বেশিদিন টিকল না। ফেরত পাঠানো হয় তাকে। এখন তার অন্য কোথাও বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।



(আপত্তিজনক কিছু লেখা এবং বক্তা সংক্ষিপ্ত এবং গুছিয়ে না বলায়, আমার গুছিয়ে লিখতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে তার জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। এখন এই খারাপ মেয়ে যাকে আমরা ঘৃণা করি তার জীবনের এই পরিস্থিতির জন্যে আসলে কে দায়ী তা আপানাদের কাছেই প্রশ্ন থাকল।)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.