নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্থার্ক্থা

আমি যততুক সময় অবসর থাকি ততটুক সময় নিজেকে মানুষের কাজে ব্যস্ত রাখতে চাই ।

ক্থার্ক্থা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেনে নিন রজঃস্রাব কি ?

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭


রজঃস্রাব হল উচ্চতর প্রাইমেট বর্গের স্তন্যপায়ী স্তরী একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে আমরা বেশি সংখক নারী বাংলায় মাসিক বলে থাকি । প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ন টিউব দিয়ে জরায়ুতে চলে আসে এবং ৩ ৪ দিন অবস্থান করে এ ক্ষেত্রে এটি অনেকে ৬ থেকে ৭ দিনও থাকতে পারে । এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না আসে এবং এই না আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর এন্ডমেট্রিয়াম ভেঙ্গে পড়ে । এই ভগ্ন ঝিল্লি সঙ্গের শ্লেষ্মা এবং এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধ তঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়ে থাকে । এই ক্ষরণকেই রজঃস্রাব অথবা রক্তস্রাব বলা হয় । যদি নারী জরায়ুতে অবমুক্ত ডিম্বটি পুরুষের স্খলিত শুক্র দ্বারা নিষিক্ত হয়ে এণ্ডোমেট্রিয়ামে প্রোথিত ইম্প্ল্যান্টেশন হয় তবে আর রজঃস্রাব হয় না । তাই মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।
ঋতুচক্র বলতে সাধারনত নারীরদেহের ২৮ দিনের একটি পর্যায়ক্রমিক শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়াকে বোঝায় । এটি প্রথম শুরু হয় সাধারণত এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তারপর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে একবার করে হয়ে থাকে । এই চক্র আটাশ দিন পর পর বা তার কিঞ্চিৎ আগে বা পরেও হতে পারে ।
এতে সাধারনত প্রাথমিক ভাবে ভয়ের কিছু নেই । মাসিককে সাধারনত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । ১। মেনোস্ট্রুয়াল পর্যায় গপষঢ়য়ড়ৎথল হভথঢ়প এর স্খিতিকাল হলো তিন থেকে চার দিন অথবা পাঁচ থেকে সাত দিন । এ সময় যৌনীপথে রক্তমিশ্রিত রস ক্ষরণ হতে থাকে । এতে রক্তের সাথে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অস্খায়ী স্তরের খসে পড়া কোষ কলা এবং কিছু কিছু গ্ল্যান্ডের রস মিশ্রিত থাকে । তা ছাড়া একধরনের টিপিক্যাল পথ থাকে যা থেকে বোঝা যায় এটি মাসিক ঋতুস্রাবের পথে । ২। প্রলিফেরাটিভ পর্যায় চড়সলমহভথড়থয়মংপ হভথঢ়প এই ফেজ বা সময়ে জরায়ুর অভ্যন্তরে ঝরে যাওয়া কোষ বা কোষের স্তরগুলো ফিমেল হরমোনের প্রভাবে আবার তৈরি হতে শুরু হয় । ৩। সিকরেটরি পর্যায় ঝপধড়পয়য়সড়ী চভথঢ়প এই সময় জরায়ু বা মাতৃজঠরের অভ্যন্তরের প্রতিটি গ্রন্থি রস নিঃসরণের জন্য একেবারে তৈরি হয় । গ্রন্থি এবং তার মধ্যবর্তী স্ট্রমা বা টিস্যুতে রস জমে থাকে। যৌনসঙ্গমের ফলস্বরূপ পুরুষের শুক্রাণু কর্তৃক নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হলে সেটি জরায়ুতে ইমপ্ল্যান্ট ওশহলথষয় প্রোথিত হয় । যদি নির্দিষ্ট কোন মাসিকের মধ্যে গর্ভধারণ না ঘটে তাহলেই কেবল পরবর্তী মাসিক রজঃস্রাব শুরু হয় ।
অনিয়মিত রজঃস্রাব একটি সাধারণ সমস্যা । স্বাভাবিক ক্ষেত্রে এই মাসিক রজঃস্রাব আটাশ দিন পর পর হবে । তবে দু একদিন আগে বা পরে হতে পারে । দুই এক দিনের হের ফের স্বাভাবিক । তবে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে । ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
মাসিক রজঃস্রাব প্রথম শুরু হয় সাধারণত এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তার পর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয় । প্রথম রজঃস্রাব নয় বছর বয়সে অর্থাৎ একটু আগেও শুরু হতে পারে । আবার একটু দেরিতেও অর্থাৎ বারো অথবা তেরো বছর বয়সে কিংবা এর কিছু পরেও শুরু হতে পারে । যদি আঠারো বছর বয়সেও মাসিক রজঃস্রাব শুরু না হয় তবে তা সমস্যা গণ্য করে চিকিৎসা নিতে হবে । সে ক্ষেত্রে শারীরিক এবং হরমোনজনিত কোনো প্রকার অস্বাভাবিকতা আছে কি না তা নির্ণয় করা আবশ্যক । রজঃস্রাব শুরু হয় কিশোরীরা যখন সন্ধিতে উপনীত হয় । এরপর রজঃচক্র দীর্ঘদিন চলতে থাকে । নারী প্রৌরত্বে উপনীত হলে তা বন্ধ হয়ে যায় যাকে রজঃক্ষান্তি Menopause বলা হয় । প্রথমে রজঃস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং রজঃস্রাবের সময় পরিধি কমে আসে । এক সময় রজঃস্রাব সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায় । এ সময়ে নারী দেহে নানা রকম উপসর্গ পরিলক্ষিত বা পরিবর্তন হয়ে থাকে । মনোপজ বা রজঃক্ষান্তি যাওয়া মহিলাদের জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায় । সাধারণতঃ ৪৩ থেকে শুরু করে ৫৩ বৎসরের মধ্যে নারীর জীবনে রজঃক্ষান্তি অধ্যায়ের শুরু হয় । নারীর বয়স ৪০ পার হওয়ার পর থেকে ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে । প্রত্যেক নারীদের তলপেটে জরায়ুর দুই ধারে দুটি ডিম্বাশয় থাকে । এর কাজ হল ডিম্বস্ফুটন এবং হরমোন নিঃসরন । বেশিরভাগ মেয়েলি হরমোন ইসট্রোজেন এবং প্রজেসটেরন পুরুষের হরমোন টেসটোসটেরন সামান্য নিঃসরণ হয় । রজঃস্রাব শুরুর পর থেকে প্রতি মাসে একেকটি ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্ফুটন হয় এবং হরমোনগুলো বের হতে থাকে । ৪০ বছরের পর থেকে হরমোন নিঃসরণ কমতে থাকে । প্রভাব পড়ে শরীর ও মনের ওপরে । এই স্বাভাবিক ঘটনায় মন খারাপ করার কিছু নেই ।
রজঃক্ষান্তি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের জীবনে শারীরিক এবং মানসিক নানা ধরনের পরিবর্তন বা উপসর্গ দেখা দেয় । মাসিকে অনিয়ম হঠাৎ করেই মাথা গরম বা হট ফ্লাস বুক ধড়ফড় অতিরিক্ত ঘুমানো অনিদ্রা প্রস্রাবে সমস্যা ওজন বেড়ে যাওয়া মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া বা মুড চেঞ্জ ইত্যাদি হয় । জীবনধারা বা লাইফস্টাইলের পরিবর্তন দ্বারা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব । অনিয়মিত ঋতুচক্র এই সময় ঋতুচক্র অথবা মাসিক চক্রের পরিবর্তন হয়ে থাকে । কখনো বা একটু বেশি রক্তস্রাব কখনো বা কম রক্তস্রাব যেতে পারে । অনেকদিন ধরে অল্প ফোঁটা ফোঁটা রক্ত যেতে পারে । কমপক্ষে সাধারণত ছয় মাস একটানা রক্তস্রাব বন্ধ থাকলে ধরে নেয়া যায় যে মেনোপজ হয়ে গেছে ।
মেনোপজ হওয়ার প্রথম বছরগুলোতে হট ফ্লাশ বা মুখ কান ঘাড় মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হয় । শতকরা ৭৫ ভাগ মহিলা এই হট ফ্লাশে ভুগে থাকেন এবং সেই সঙ্গে গা ঘামতে শুরু করে । সাধারণত রাতের বেলায় এই ঘাম বেশি বের হতে পারে । প্রথম বছরে বেশি হয় সাধারণত পাঁচ বছর পর্যন্ত হতে পারে । শরীর অবসাদবোধ হয় এবং মেজাজও খিটখিটে হয়ে যায় । অনিদ্রা বেড়ে গিয়ে শরীরে ক্লান্তি নেমে আসে । ইস্ট্রোজেন হরমোন মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের গ্রন্থিগুলোকে প্রভাবিত করে থাকে । তাই মেনোপজ হলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতির কারণে হট ফ্লাশ হয়ে থাকে । এই কারণে ইস্ট্রোজেন হরমোন প্রতিস্থাপন করে এর চিকিৎসা করা হয় । তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে । মুখে ঠাণ্ডা পানি দিলে এবং ঠাণ্ডা পানি খেলে আরামবোধ হয় । কফি গরম চা সিগারেট জর্দা এগুলো খেলে হট ফ্লাশ আরও বেড়ে যায় । ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার যেমন আটা ওটমিল ব্রকোলি ফুলকফি মাশরুম বাদাম সূর্যমুখী বীজ মটরশুঁটি কিশমিশ কলা ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত । অনিদ্রা হট ফ্লাশ বা রাতে ঘামের কারণে অনেকের ভালো ঘুম হয় না । তাছাড়াও অনেকের রাতে ঘুম ভেঙে গেলে আর ঘুম আসে না । সেই সঙ্গে নানা রকম টেনশন বেড়ে যায় । এই কারণে সারাদিন ক্লান্তিবোধ হয় । ঘুমের ওষুধ তবে অবশ্যয়ই চিকিৎসকের পরামর্শে তা খেতে হবে বা খেতে পারেন । রাতে হালকা খাবার খাবেন তেল মশলাদার খাবার না খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম । এসময় সিগারেট জর্দা অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকলে বাদ দিয়ে দিবেন । এবং ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ভালো ঘুম হবে । বুক ধড়ফড় করা হট ফ্লাশের সঙ্গে বুক ধড়ফড় করতে পারে । তবে হার্টের বা অন্যান্য অসুস্থতার কারণেও বুক ধড়ফড় করতে পারে । তাই এ সময় বেশি করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত । ভুলে যাওয়া রজঃক্ষানিত হলে কারোকারো স্মৃতিশক্তি কিছুটা দুর্বল হয়ে যায় । মস্তিষ্কের সজীবতা বজায় রাখার জন্য ইস্ট্রোজেন হরমোন জরুরি । এই হরমোন ঘাটতির ফলে সোজা জিনিস অনেক সময় ভুলে যায় । বিশেষ করে যারা অযথাই টেনশন বেশি করে তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয় । কলা তিল তিসি বীজ সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়া উচিত ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৫

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩১

ক্থার্ক্থা বলেছেন: পড়ার জন্যও আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

আমি মিন্টু বলেছেন: সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপন এটা নরীদের জন্য বেশি প্রয়োজন ।

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

ক্থার্ক্থা বলেছেন: ধন্যবাদ মিন্টু ভাই ।
অনেকদিন হয় আপনি কোন পোস্ট দেননা মনে হচ্ছে । বেপারকি মিন্টু ভাই রাগ করেছেন নাকি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.