![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি স্বপ্ন। আমরা ধানমন্ডিতে থাকি। পরিবারের সদস্য বলতে বাবা, মা, ছোট্ট বোন আর আমি।আমাদের বাসাটা দেখতে অনেক সুন্দর।বাসার সামনে খুব সুন্দর একটা বাগানও আছে।
আব্বুর ওনার কাজে সব সময় ব্যাস্ত থাকে। কিছুদিন হল আম্মুও প্রাইমারি স্কুলে একটা চাকরি পেয়েছে। আমাদের কে ঠিক মত সময়ও দিতে পারছে না। আর বোনটি দশম শ্রেণীতে পড়ে। তাই কাজ করার জন্য একটা মেয়ে খুবই দরকার। এর জন্য আব্বু আমাদের গ্রামের রাড়ি থেকে একটা মেয়ে নিয়ে আসল কাজ করার জন্য। ওর নাম সিনথিয়া। মেয়াটা দেখতেও খুব সুন্দর।পড়ালেখাও জানে।ও পড়াশুনা করেছে দশম শ্রেনী পর্যন্ত।
আমাদের বাসার সামনেরটা আমার বন্ধু সানিদের বাসা। ওদের বাসায় তিন তালায় একটা ফ্যামিলি ভাড়া থাকে। ঐ ফ্যামিলির বড় ছেলের নাম জাহিদ। জাহিদ দেখতে অনেক সুন্দর এবং স্মার্ট। তবে জাহিদের অবশ্য একটা খারাপ স্বভাব আছে। তার অনেক গুলো মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে। সে খুব অল্পতেই মেয়ে পটাতে পারে। তাই আমার বোনকেউ ওর থেকে দূরে রাখি।
সারাদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করে ক্লান্ত হয়ে সন্ধ্যায় বাসায় আসার পর ছোটকি(আমার বোন) বলে সিনথিয়া ওর হাত কেটে ফেলেছে। শুনে আমি তো রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম। দেরি না করে সাথে সাথে হাসপাতালে গেলাম। গিয়ে দেখি মা ওর পাশে বসে কথা বলছে ওর সাথে। মা বলল, তুই এমন করলি কেন? ও কোন কথা বলছে না। মা ভাবল যে ও অসুস্থ তাই আর কিছু না কিজ্ঞাসা করাই ভাল। কেউ আসলেও কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কারণ আমরা সিনথিয়াকে অনেক আদর করতাম। আমি ওকে আমার নিজের বোনের মত আদর করতাম। আমি, আমার বোন এবং সিনথিয়া আমাদের মধ্যে বয়সে একটা পার্থক্য থাকলেও আমরা সব সময় বন্ধুর মত আচরণ করতাম এক জন আরেকজনের সাথে। তাই আসলেও বুঝতে পারছিলাম না কেন এই কাজ করল সে।
তিন দিন হাসপাতালে থাকার পর, সিনথিয়ার বাবা ওকে গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসল। কিন্তু আব্বু কিছুতেই যেতে দিল না। আমরাও সবাই আব্বুর সাথে একমত। আব্বু মূলত অনেক রেগে আছে। যে কেন করল এইও কাজটা। কী এমন হয়েছে যে সে এত বড় একটা কাজ করে বসল। আমারও ঠিক একই কথা, কেন করল সে এমন।
এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর এখন সিনথিয়া অনেকটাই সুস্থ্য। আগের থেকে অনেকটা ভাল। আগের মত কাজও করতে পারে। যদিও আম্মু এখন ওকে কাজ করতে দেয় না।
আমি আর ছোটকি আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম যে সিনথিয়া সুস্থ্য হওয়ার পর আমরা একসাথে ওকে জিজ্ঞাসা করব। কারণ আব্বু আম্মুর কাছে যাই বলুক না কেন। আমাদের কাছে তো আর মিথ্যে বলবে না। তাই বৃহস্পতিবারে আমি আর ছোটকি তাড়াতাড়ি পড়া শেষ করে সিনথিয়াকে ডাকলাম।
ছোটকিঃ আচ্ছা কি হয়েছে, সিনথিয়া আপু?
সিনথিয়াঃ কই কি অব?
আমিঃ শোন সিনথিয়া!! আমদের কাছে লুকানোর কিছুই নেই। তুই তো আমাদের সব কিছুই জানিস। আমি আর ছোটকি তোর সাথে সব কিছুই শেয়ার করি। তোকে আমাদের বন্ধুর মত ভাবি।
সিনথিয়াঃ হ্যা, ভাইয়া। আমি জানি।
আমিঃ তাহলে কি এমন হয়েছে যে তুই এমন বর একটা কাজ করলি।
ছোটকিঃ হ্যা আপু। তুমিও যদি আমাদেরকে নিজের ভাই বোনের মত ভাব তাহলে আমদেরকে বল।
সিনথিয়াঃ আসলে ভাইয়া, তোমাদের অগোচরে আমি একটা খারাপ কাজ কইরা ফালাইছি। তাই কবার সাহস পাইতাছি না।
ছোটকিঃ কেমন খারাপ কাজ।
সিনথিয়াঃ আমি একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক কইরা ফালাইছিলাম।
আমিঃ হ্যা, তো এতে খারাপ এর কি হয়েছে। আমার ও তো একটা মেয়ের সাথে সপর্ক রয়েছে। আর তুই এবং ছোটকি জানিস।
এতে হাত কাটার মত কি হয়েছে।
ছোটকিঃ হ্যা, আমিও বুঝতেছি না।
সিনথিয়াঃ আসলে ভাইয়া, আমি ছেলেটাকে অনেক বেশি ভালবাইসা ফালাইছি। তাই সহ্য করবার না পাইরা এমন করছি। ও এহন আমারে আর পছন্দ করে না।
ছোটকিঃ কেন কি হয়েছে তোমাদের মধ্যে। আর কবে কীভাবেই বা হল এই ভালবাসা। আর ছেলেটার নামই বা কী?
সিনথিয়াঃ আমি সব কমু কিন্তু তোমারা কাউরে কবার পাবা না, আমারে ছুয়ে কসম কাইটা কও।
আমি এবং ছোটকি ওকে ছুয়ে কসম করলাম যে কাউকে বলব না। কিন্তু বললাম যে আমি যদি এর সমাধান করতে পারি তাহলে অবশ্যি চেষ্টা করব।
সিনথিয়াঃ না ভাইয়া তাও করবা না। কারণ এইডা আর সম্ভব না।
আমিঃ আচ্ছা সেটা পরে দেখা যাবে। আপাতত তুই বল কী হয়েছে।
সিনথিয়াঃ আচ্ছা কইতাছি। সামনের বাসায় যে একটা ছেলে থাহে না। জাহিদ নাম।
ছোটকিঃ হ্যাঁ আপু।
সিনথিয়াঃ ওর সাথে।
আমিঃ কি করে?
ছোটকিঃ জাহিদ ভাইয়া কি তোমাকে বলেছে যে তোমাকে সে ভালবাসে।
সিনথিয়াঃ হ্যাঁ। সে নিজে থেইকাই আমাকে প্রপোজ করেছে। আমি আগে কিছুই কইনাই।
আমিঃ আচ্ছা বুঝলাম। কিন্তু সম্পর্ক কি করে হল, আর কী করেই বা ভেঙে গেল সেটা তো বল।
চলবে..............................
©somewhere in net ltd.