নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাললাগে মনের কল্পনায় অজস্র স্বপ্নের জাল বুনতে।

লাবণ্য ২

বাস্তবতা যত সুন্দরই হোক; কখনোই স্বপ্নের মত নয়।আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি।জানি আমার স্বপ্ন পূরণ নাও হতে পারে; তবুও আমি স্বপ্ন দেখতেই ভালোবাসি......

লাবণ্য ২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিচয়

২০ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮

নিকষ কালো রাতের আকাশে আজ ছড়ানো তারার বর্ণিল শোভা।কেবিনের জানালা দিয়ে বিষন্ন মনে তাকিয়ে আছে নীহারিকা।ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসটি যমুনার উপর দিয়ে ধীরগতিতে এগোচ্ছে।পথে যান্ত্রিক ত্রুটি না হলে শেষ রাতে যশোহর জংশন পৌঁছাবে।সতেরো বছর!আজ থেকে সতেরো বছর আগে রাহাতকে ছেড়ে এসেছিলো নীহারিকা।সবকিছু এমন রংহীন বিবর্ন হয়ে গিয়েছিল কেমন যেন দম বন্ধ বন্ধ ভাব,যেন মুহুর্তের মধ্যে পালিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা।আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসার পর সেদিন রাতেও সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী হয়েছিল সে।কেবিনের মধ্যে একদম একা,এমনি এক নিস্তব্ধ নিকষ কালো অন্ধকার রাত।সেদিনের আকাশে এত অজস্র তারার ঝলকানি ছিলো না।

প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনে বসে আছে নীহারিকা আর তানিয়া।তানিয়ার চোখে মুখে প্রচন্ড বিরক্তি।মনে মনে নীহারিকা ও খানিকটা বিরক্ত।যতই ট্রেন জার্নি ভালো লাগুক,ট্রেনের জন্য স্টেশনে এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে কার ভালো লাগে।

ধুর ছাই!তখন তোকে কতবার বললাম,"বাসে যায়,না ট্রেনে যাবো, এখন বোঝ ঘন্টার পর ঘন্টা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকে"।

দাঁড়িয়ে কোথায়!আমরা তো দিব্যি বসেই আছি।দ্যাখ! দ্যাখ!কি সুন্দর! একঝাঁক পাখি নীল আকাশের বুকে ডানা মেলে ছুটে চলেছে।

উফ!কি যে বিরক্তিকর এভাবে বসে থাকা।

তানিয়া ঐ যে ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে,চেনা চেনা লাগছে না?মনে হচ্ছে আমাদের ক্যাম্পাসে দেখেছি ছেলেটিকে।

দেখলে দেখেছিস।প্রচন্ড ফালতু বকছিস তুই আজ।

তুই যা খেপেছিস না! আমি কি জানতাম আজ এত লেট করবে ট্রেন আসতে।

ট্রেনে তানিয়া আর নীহারিকার অপজিটে বসেছিল রাহাত।ওদের ক্যাম্পাসের ছাত্র।দুই ইয়ার সিনিয়র।সেদিন ট্রেনের মধ্যেই পরিচয় হয় ওদের।তারপর পরিনয় থেকে বিয়ে।

বিয়ের ছয়মাস পর রাহাত উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা চলে যায়।তিন বছর পর নীহারিকাকে ও আমেরিকা নিয়ে যায়।সুন্দর ছোট্ট সাজানো সংসার।অর্থের প্রাচুর্যতা না থাকলেও ভালোবাসার প্রাচুর্যতার কোন কমতি ছিল না রাহাতের কাছে।কিন্তু হঠাৎ করেই সবকিছু কেমন পাল্টে গেল কেবল .....

শশুর শাশুড়ি ফোনে অনাবরৎ নীহারিকার সন্তানের ব্যাপারে তাগাদা দিচ্ছিল।রাহাতও চাইছিলো।কিন্তু মেডিকেল টেস্টের পর ডাক্তার জানায় নীহারিকা কখনো মা হতে পারবে না।

আম্মি! নীহারিকার শরীরের সাথে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকা মৌ ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলল,"আমরা এখনো পৌঁছায়নি?"

এই তো প্রায় পৌঁছে গেছি,আর ঘন্টা খানেক লাগবে।

নীহারিকার মনে পড়ল সতেরো বছর আগের সেই ভোর রাতের কথা।

যশোহর স্টেশনে নামার পর দেখে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে অনেক মানুষের জটলা।পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছে আর হাতের ইশারায় সামনের দিকে কিছু একটা দেখাচ্ছে।কি ঘটেছে জানার কৌতুহলে নীহারিকা সেদিকে এগিয়ে গেল।

আপনারা এভাবে এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে যে যার গন্তব্যে যান।কথাটা যে বলছে লম্বা দোহারা গড়নের একজন মধ্যবয়সী পুরুষ।

নীহারিকা বলল,"কি ঘটেছে এখানে?"

ম্যাডাম!..…..... নীহারিকার দৃষ্টি সামনের দিকে যেতেই দেখতে পেল, প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে কিছুটা দূরে রেললাইনের ল্যাম্পপোস্টের নিচে, একটি মেয়ে প্রচন্ড যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আর মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।

একটা পাগলী মেয়ে ম্যাডাম! না জানি কার পাপের ফল ভোগ করছে!আর মানুষজন দূরে দাঁড়িয়ে থেকে সহানুভূতি দেখাচ্ছে।এখানে দুই জন মহিলা ছিলো কতবার বললাম একটু এগিয়ে যেতে আর অমনি কেটে পড়ল।আমি এই স্টেশনে পাঁচ বছর ধরে কর্মরত আছি।তিন বছর ধরে মেয়েটিকে দেখছি।কোথা থেকে এসেছে কে জানে?

মৌ!আলতো করে ডাকলো নীহারিকা,আমরা এসে গেছি,ওঠ মা!

নীহারিকার ছোট ভাই আসলাম ট্রেন আসার আগেই স্টেশনে এসে দাঁড়িয়েছিলো।আসলাম ল্যাগেজ নিয়ে নামার পর নীহারিকা মৌকে নিয়ে নামার সাথে সাথেই একটি পাগলী এসে মৌয়ের হাত ধরলো।নীহারিকা হঠাৎই যেনো বিদ্যুৎ চমকানোর মত চমকে উঠলো।যে জন্মের পরিচয় গোপন রাখতে নীহারিকা পুনরায় আমেরিকা ফিরে গিয়েছিলো।তবে রাহাতের কাছে নয়,রাহাত পুনরায় বিয়ে করে সংসারী হয়েছে।আর নীহারিকা মৌকে নিয়েই....

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫

সোহেল আহমেদ নাসিম বলেছেন: লেখাটি পড়তে পড়তে যশোরের কথা মনে পড়ে গেল... রেল ষ্টেশনে গিয়েছি - সুন্দরবন এক্সপ্রেসে ভ্রমন করেছি ....
দারুন লেখা ....
আমার তোলা কয়েকটি ছবি দিলাম
ধন্যবাদ

২| ২১ শে জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

লাবণ্য ২ বলেছেন: ছবি ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৩| ২১ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

ঋতো আহমেদ বলেছেন: কিছু বুঝতে পারছি না। পাগল মেয়েটি কার এবং কীভাবে তা অস্পষ্ট। ডাক্তার যদি বলে থাকেন, মা হতে পারবে না তো মৌ কীভাবে এলো ? আর যদি মৌ তাদের সন্তান হয়ে থাকে তাহলে রাহাত আবার বিয়ে করবে কেন?

গল্প মানে কাহিনী। আর সেটাই যদি অস্পষ্ট আর যোগসূত্র স্থাপন করা না যায় তাহলে সেটা পাঠকের কাছে কী হয় শেষ পর্যন্ত !?

মাফ করবেন। একটু রুঢ় মন্তব্য করে ফেলেছি।

আবার, গল্প বুঝতে আমার‌ও অপারগতা হতে পারে।

৪| ২১ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:০৮

লাবণ্য ২ বলেছেন: মৌ রাহাত নীহারিকার সন্তান নয়।ঐ পাগলী মেয়েটির।আমার হয়তো আর একটু স্পষ্ট করে লেখা উচিত ছিল।ভাইয়া আমার ব্লগে লেখা নিয়ে যেকোনো রকম মন্তব্য করতে পারেন।

৫| ২১ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:৫৪

আঁধার রাত বলেছেন: ট্রেনটার নাম মনে হয় চিত্রা হবে যদি ভোর রাতে যশোরে পৌঁছতে হয়! সুন্দরবন শেষ রাতে না শেষ বেলায়/পড়ন্ত বিকালে যশোর পৌঁছায়।
এই ট্রেনের লেট করার বাতিক আছে। প্রায় সময়ই ৩০-৪৫ মিনিট দেরী করে। অপেক্ষার ষ্টেশনটাকি কমলাপুর? যশোরে যদি ভোর রাতে পৌঁছতে হয় তবে নীলকাশে একঝাঁক পাখি দেখা খুব কঠিন কারন সন্ধ্যার পর নীলাকাশ আর দেখা যায় না। চিত্রা ট্রেনে ভোর রাতে যশোরে পৌঁছাতে আপনি যে ষ্টেশনেই অপেক্ষায় থাকেন না কেন নীলাকাশে একঝাঁক পাখি কল্পনার চোখে দেখা ছাড়া উপায় নাই।
পাগলীটা মা হয়েছে কেউ বাবা হয় নাই বিষয়টা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। তানিয়া আর নীহারিকার জুটিটার জন্য শুভকামনা রইল।
নীহিরিকার নতুন সর্ম্পকে জাড়ানো ভাল হবে। যখন সবসময়ের জন্য একজন শ্রোতার খুব দরকার হবে তখন মৌ আমেরিকা চলে যাবে বা নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চলে যাবে। কথা বলার জন্যও তো একটা সাথি থাকতে হয়!

৬| ২১ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪

লাবণ্য ২ বলেছেন: নীহারিকা সতেরো বছর আগে রাহাতকে ছেড়ে আসার এবং সতেরো বছর পর মৌকে নিয়ে আসার সময়ে রাতের ট্রেনের যাত্রী হয়েছিল কিন্তু রাহাতের সাথে প্রথম পরিচয়ের দিনে ওরা রাতে নয় দিনের বেলায় ট্রেনে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায়।ট্রেনের নামটা আসলেই ভুল করে ফেলেছি।পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

৭| ২১ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আরও সুন্দর গল্প চাই।

২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩১

লাবণ্য ২ বলেছেন: দোয়া করবেন যেন আর ও ভালো লিখতে পারি।

৮| ২১ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৫

তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: ভাল লেগেছে।

২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:২৬

লাবণ্য ২ বলেছেন: ধন্যবাদ

৯| ২১ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

মোঃ জিদান খান (অয়ন) বলেছেন: গল্পটা ভালো হয়েছে আপু!

২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩৫

লাবণ্য ২ বলেছেন: পাঠও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১০| ২১ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: @"ভাললাগে মনের কল্পনায় অজস্র সপ্নের জাল বুনতে।"
টাইপো ঠিক করেন!



আপনি প্রতিউত্তর না করে, মন্তব্য করছেন কেন??

২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৪৭

লাবণ্য ২ বলেছেন: সবুজ তীর চিহ্নিত ক্লিক বাটন ফোনে সবসময় আসে না।আর টাইপো ভুল ছিল খেয়াল করিনি।

১১| ২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ২:৫৭

ওমেরা বলেছেন: গল্প সুন্দর হয়েছে আপু।

২৫ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৫০

লাবণ্য ২ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

১২| ২৫ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:০৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ইটস্ ওকে!
আপনারা ফোন থেকেও ব্লগে লিখছে এটাই অনেক!

প্রতিউত্তরে সমস্যা হলে মন্তব্যের সময় @ সাইন ব্যবহার করবেন!
যেমনঃ
@মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল,
সবুজ তীর চিহ্নিত ক্লিক বাটন ফোনে সবসময় আসে না।আর টাইপো ভুল ছিল খেয়াল করিনি।

১৩| ২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮

অচেনা সালু বলেছেন: দারুন লেখা

২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৫

লাবণ্য ২ বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.