![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন সাধারন মানুষ,বাংলাদেশের একজন অসচেতন নাগরিক ।
ছিন্নমস্তা হলেন একজন হিন্দু দেবী। তিনি দশমহাবিদ্যার অন্যতমা এবং মহাশক্তির একটি ভীষণা রূপ। ছিন্নমস্তা দেবী ছিন্নমস্তিকা বা প্রচণ্ড চণ্ডিকা নামেও পরিচিতা। তার ভয়ংকর মূর্তিটি দেখে সহজেই তাকে চেনা যায়। তিনি এক হাতে থাকে তার নিজের ছিন্ন মুণ্ড, অপর হাতে থাকে একটি কাতরি দেবীর কবন্ধ থেকে তিনটি রক্তধারা নির্গত হয়ে একটি তার নিজের মুখে এবং অপর দুটি তার দুই সহচরীর মুখে প্রবেশ করে। ছিন্নমস্তা সাধারণত রতিসংগমরত যুগলের দেহের উপর দণ্ডায়মান অবস্থায় কল্পিতা হন।ছিন্নমস্তা আত্মবলিদান এবং কুণ্ডলিনী জাগরণের দেবী। তাকে একাধারে যৌনসংযম ও যৌনশক্তির প্রতীক মনে করা হয়। অন্যদিকে তিনি একাধারে দিব্যজননীর জীবনদাত্রী এবং জীবনহন্তা সত্ত্বারও প্রতীক। তার আত্মবলিদানের কিংবদন্তিটির সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে তার মাতৃসত্ত্বা, যৌন কর্তৃত্ব ও আত্মবিধ্বংসী ক্রোধ। দশমহাবিদ্যার অন্যতমা হলেও এককভাবেও তার পূজা প্রচলিত আছে। উত্তর ভারত ও নেপালে ছিন্নমস্তার একাধিক মন্দির রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহরের ছিন্নমস্তা মন্দিরটিও প্রসিদ্ধ। তবে গৃহস্থবাড়িতে তার পূজা করা হয় না। তার কারণ লোকবিশ্বাস অনুযায়ী তিনি এক ভীষণা দেবী এবং তার পূজা করা বা দর্শন কামনা করা বিপজ্জনক। কেবলমাত্র তান্ত্রিক যোগী এবং সর্বত্যাগীগণ বীরাচার মতে তার পূজা করে থাকেন।হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মে ছিন্নমস্তার পূজা প্রচলিত। তিব্বতি বৌদ্ধ দেবী বজ্রযোগিনীর ছিন্নমুণ্ডা রূপটির সঙ্গে দেবী ছিন্নমস্তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। মহাশক্তির দশটি মহাবিদ্যাকে নিয়ে ভাবতে বসলে অনেকের কাছেই কয়েকটি রূপ অস্বস্তিকর ঠেকতে পারে। বিশেষ করে ধূমাবতী এবং ছিন্নমস্তার রূপ সত্যিই ভয়ের আবহ তৈরি করার সামর্থ্য রাখে। মহাবিদ্যা তত্ত্ব অনুযায়ী, ধূমাবতী ঘোর রহস্যময় এক শক্তি। কিন্তু দেবী ছিন্নমস্তা দর্শনে যত ভয়ঙ্করী হোন না কেন, তার রূপের ব্যাখ্যা আর মহিমা জানা থাকলে ওই ভয়াবহ মূর্তিই প্রেমময় বোধ হবে। দেবী ছিন্নমস্তা সারা দেশেই পূজিত হন। কিন্তু ছিন্নমস্তার মহিমাকে অন্তর দিয়ে অনুভব করতে গেলে পৌঁছতে হবে রাজরাপ্পায়।
রামগড় ক্যান্টনমেন্ট থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরত্বে এক টিলার উপরে এই মন্দির। কাছেই বিখ্যাত রাজরাপ্পা ফলস, দামোদর আর ভৈরবী নদীর মোহনা। পুরুষ দামোদরের বুকে জলপ্রপাত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া নারী ভৈরবীর দৃশ্য শুধু প্রাকৃতিক বৈভবের কথা বলে না, এই জলতরঙ্গে মিশে থাকে কাহিনি-কিংবদন্তি-মিথ। তবে রাজরাপ্পার আসল আকর্ষণ তার প্রকৃতি নয়, এ কথা রাজরাপ্পায় আগত সব পর্যটকই জানেন।
রাজরাপ্পার ছিন্নমস্তা মন্দির অতি প্রাচীন। এই দেবস্থানকে অন্যতম শক্তিপীঠ বলে মনে করেন তন্ত্রবিশ্বাসীরা। দেবীরূপ অবশ্য ততটা প্রাচীন নয়। ছিন্নমস্তার মূর্তি একেবারেই শাস্ত্রানুগ সেখানে। দেবী নিজহস্তে ধরে রেখেছেন তার ছিন্ন মস্তক। গলা থেকে নির্গত হচ্ছে তিনটি রুধিরধারা যার মধ্যধারাটি পান করছেন দেবী স্বয়ং নিজেই। বাকি দুটি ধারা গিয়ে পড়ছে তার দুই সহচরী যোগিনীদের মুখে। দেবীর পদতলে শায়িত রয়েছেন রতিদেবী ও মদনদেব। দেবী কামদলনী। মোক্ষস্বরূপা। এই ত্রিধারাকে ইড়া-পিঙ্গলা-সুষুম্নার প্রতীক বলে ধরা হয়। কামকে দলন করে কুলকুণ্ডলীনির জাগরণকেই ব্যক্ত করে এই মূর্তি।ছিন্নমস্তার উৎস সন্ধান করতে হলে যেতে হবে মহাভাগবৎ পুরাণ এ। দক্ষ শিবকে তার যজ্ঞে আমন্ত্রণ না জানানোয় ক্রুদ্ধ সতীদেবী দশ মহাবিদ্যের রূপ ধরেন। ছিন্নমস্তা তাদেরই অন্যতম। তারা শিবকে কেন্দ্র করে দশ দিকে অবস্থান করেন। ছিন্নমস্তার অবস্থান শিবের ডানদিকে। বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্রে বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডার একটি জন্মবৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে। কৃষ্ণাচার্যের শিষ্যা ছিলেন দুই বোন মেখলা ও কনখলা। তারা ছিলেন মহাসিদ্ধা। তারা নিজেদের মাথা কেটে গুরুকে উপহার দেন এবং তারপর নৃত্য করেন। দেবী বজ্রযোগিনী সেই রূপেই সেখানে উপস্থিত হন এবং তাদের সঙ্গে নৃত্যে যোগ দেন। অন্য একটি কাহিনি অনুসারে, পদ্মসম্ভবের এক শিষ্যা পূর্বজন্মে ছিলেন রাজকুমারী লক্ষ্মীঙ্করা। রাজশাস্তি গ্রহণ করে তিনি নিজের মাথা কেটে নগর পরিক্রমা করেন। নগরবাসী তাকে ছিন্নমুণ্ডা-বজ্রবারাহী রূপে পূজা করে। মনে করা হয়, বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডা দেবীই হিন্দু ছিন্নমস্তার উৎস।
অন্যদিকে তান্ত্রিক এবং তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম মতে ছিন্নমস্তা এক জনপ্রিয় দেবী। উক্ত মতে তার নাম ছিন্নমুণ্ডা। তিনি দেবী বজ্রযোগিনী বা বজ্রবারাহীর ছিন্নমস্তক মূর্তি। এই মূর্তিটি ছিন্নমস্তার অনুরূপ।বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্রে বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডার একটি জন্মবৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে। কৃষ্ণাচার্যের শিষ্যা ছিলেন দুই বোন মেখলা ও কনখলা। তারা ছিলেন মহাসিদ্ধা। তারা নিজেদের মাথা কেটে গুরুকে উপহার দেন এবং তারপর নৃত্য করেন। দেবী বজ্রযোগিনী সেই রূপেই সেখানে উপস্থিত হন এবং তাদের সঙ্গে নৃত্যে যোগ দেন। অন্য একটি কাহিনি অনুসারে পদ্মসম্ভবের এক শিষ্যা পূর্বজন্মে ছিলেন রাজকুমারী লক্ষ্মীঙ্করা। রাজশাস্তি গ্রহণ করে তিনি নিজের মাথা কেটে নগর পরিক্রমা করেন। নগরবাসী তাকে ছিন্নমুণ্ডা-বজ্রবারাহী রূপে পূজা করেন।গবেষক বি. ভট্টাচার্য বৌদ্ধ সাধনমালা (১১৫৬ সাল) হিন্দু ছিন্নমস্তাকল্প এবং তন্ত্রসার (সপ্তদশ শতাব্দী) প্রভৃতি গ্রন্থ আলোচনা করে দেখিয়েছেন যে বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডা এবং হিন্দু ছিন্নমস্তা একই দেবী। কেবলমাত্র দেবী ছিন্নমস্তা নাগযজ্ঞোপবীতধারিণী এবং রতি কামদেবের উপর দণ্ডায়মানা। বৌদ্ধ সাধনমালা গ্রন্থে তার নাম সর্ববুদ্ধা এবং তার সহচরীদের নাম বজ্রবৈরোচনী ও বজ্রবর্ণনী। হিন্দু তন্ত্রসার গ্রন্থে তার নাম সর্বসিদ্ধি এবং তার সহচরীগণ হলেন ডাকিনী, বৈরোচনী ও বর্ণনী। ছিন্নমস্তাকল্প গ্রন্থে দেবীর নাম সর্ববুদ্ধি এবং তার সহচরীদের নাম বৌদ্ধ গ্রন্থের অনুরূপ। ভট্টাচার্য আরও মত দেন সপ্তম শতাব্দীতে পূজিত বৌদ্ধ ছিন্নমুণ্ডা দেবীই হিন্দু ছিন্নমস্তার উৎস।
তবে ভট্টাচার্যের মতামত বিতর্কিত। শঙ্করনারায়ণন প্রমুখ গবেষক ছিন্নমস্তার বৈদিক (প্রাচীন ভারতীয়) উৎস সন্ধান করেছেন। এস. ভট্টাচার্যের মতে বৈদিক দেবী নিঋতির বৈশিষ্ট্যাবলি পরবর্তীকালে কালী, চামুণ্ডা, করালী ও ছিন্নমস্তার মধ্যে সঞ্চারিত হয়। শাক্ত মহাভাগবত পুরাণ (৯৫০ সাল) ও দেবীভাগবত পুরাণ নামে উপপুরাণ দুটিই প্রথম হিন্দু গ্রন্থ যাতে ছিন্নমস্তার উল্লেখ পাওয়া যায়। বারনার্ড বলেছেন, উৎস যাই হোক না কেন, একথা স্পষ্ট যে খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীতে ছিন্নমস্তা বা ছিন্নমুণ্ডার পূজা প্রচলিত ছিল এবং মহাসিদ্ধারা তার পূজা করতেন। ভ্যান কুইজ ছিন্নমুণ্ডা ছাড়ায় তান্ত্রিক দেবী বারাহী ও চামুণ্ডার মধ্যেও ছিন্নমস্তার কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য খুঁজে পেয়েছেন।
ডেভিড কিংসলে ছিন্নমস্তার বৌদ্ধ উৎসের তত্ত্বটি মেনে নিলেও অন্যান্য প্রভাবের কথাও বলেছেন। তার মতে মহাবিদ্যার ধারণাটি সম্ভবত খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর পূর্ববর্তী নয়। যে সকল প্রাচীন হিন্দু দেবীর মূর্তি নগ্ন এবং কবন্ধের আকারে কল্পিত হত তারা ছিন্নমস্তার বিবর্তনে কিছু ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই সকল দেবীর যৌন অঙ্গের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার জন্য এদের কবন্ধ আকারে কল্পনা করা হত। এই জন্য এদের যৌনশক্তির প্রতীক মনে করা হয়। তবে এই তত্ত্ব স্বমস্তক ছিন্ন করার বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করে না।কুচক্রী যুদ্ধদেবী কোটাভী ও দক্ষিণ ভারতীয় মৃগয়া দেবী কোরাভাই ছিন্নমস্তার রূপকল্পনায় অনুপ্রেরণার কাজ করে থাকবেন। কোটাভীকে কোথাও কোথাও মাতৃকা রূপে কল্পনা করা হয়েছে। তিনি নগ্না ও বিস্রস্ত বসনা এবং ভীষণা। বিষ্ণু পুরাণ এবং ভাগবত পুরাণে একাধিক স্থানে তাকে বিষ্ণুর শত্রু রূপে কল্পনা করা হয়েছে। ভীষণা দেবী কোরাভাইও যুদ্ধ ও বিজয়ের দেবী। দুজনেরই সম্পর্ক রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে কিন্তু ছিন্নমস্তার তা নেই। কিংসলে বলেছেন, হিন্দু পুরাণে একাধিক রক্তপিপাসু, নগ্ন ও ভীষণা দেবী ও দানবীর উল্লেখ থাকলেও, ছিন্নমস্তাই একমাত্র দেবী যাকে ভয়াল নিজমুণ্ড-ছিন্নকারিণী রূপে কল্পনা করা হয়।
বিভিন্ন স্তোত্রে ছিন্নমস্তাকে পঞ্চম মহাবিদ্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিংসলে বলেছেন মহাবিদ্যার বর্ণনায় ও তালিকায় কালী তারা ও ছিন্নমস্তাই সর্বপ্রধান। যদিও মহাবিদ্যার বাইরে তার অস্তিত্ব নগণ্য। গুহ্যাতিগুহ্য তন্ত্র গ্রন্থে বিষ্ণুর দশাবতারের সঙ্গে দশমহাবিদ্যার সম্পর্ক প্রদর্শিত হয়েছে এই গ্রন্থ মতে নরসিংহ অবতারের উৎস ছিন্নমস্তা। মুণ্ডমালা গ্রন্থে অনুরূপ একটি তালিকায় ছিন্নমস্তার সঙ্গে পরশুরামের তুলনা করা হয়েছে।শাক্ত মহাভাগবত পুরাণ গ্রন্থে ছিন্নমস্তা সহ দশমহাবিদ্যার উৎপত্তি সংক্রান্ত একটি উপাখ্যান রয়েছে। দক্ষের কন্যা দাক্ষায়ণী ছিলেন শিবের প্রথমা স্ত্রী। দক্ষ তার যজ্ঞানুষ্ঠানে শিবকে নিমন্ত্রণ না জানালে দাক্ষায়ণী অপমানিত বোধ করেন। তিনি বিনা আমন্ত্রণেই যজ্ঞে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে শিবকে পীড়াপীড়ি করতে থাকেন। কিন্তু শিব রাজি হন না। তখন দাক্ষায়ণী ভীষণা দশ মূর্তি ধারণ করে দশ দিক থেকে শিবকে ঘিরে ধরেন। এই দশ মূর্তিই দশমহাবিদ্যা নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। ছিন্নমস্তা পশ্চিমে শিবের ডানদিকে অবস্থান করেছিলেন। আর একটি কিংবদন্তি অনুসারে সতী নন শিবের দ্বিতীয়া পত্নী পার্বতীকে দশমহাবিদ্যার উৎস বলা হয়েছে। পার্বতী ছিলেন সতী অথবা প্রধানা মহাবিদ্যা কালীর অবতার। পার্বতী দশমহাবিদ্যার সাহায্যে শিবকে তার পিতৃগৃহ ছেড়ে যেতে বাধা দেন। শিব পার্বতীর সঙ্গে থেকে থেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই তিনি পার্বতীকে ত্যাগ করতে গিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় কালী তাকে জ্ঞান প্রদান করেন এবং নিরস্ত করেন। দেবীভাগবত পুরাণ মতে দশমহাবিদ্যা দেবী শাকম্ভরীর যুদ্ধসঙ্গী ও রূপান্তর।
প্রাণতোষিণী তন্ত্র গ্রন্থে ছিন্নমস্তার জন্মসংক্রান্ত দুটি কাহিনি বিবৃত হয়েছে। একটি কাহিনি নারদ পঞ্চরাত্র থেকে গৃহীত বলে দাবি করা হয়েছে। এই কাহিনি অনুযায়ী একদা মন্দাকিনী নদীতে স্নানকালে পার্বতী কামার্ত হয়ে পড়েন। ফলে তার গাত্রবর্ণ কালো হয়ে যায়। এই সময় তার দুই সহচরী ডাকিনী ও বর্ণনী (এরা জয়া ও বিজয়া নামেও পরিচিত) ক্ষুধার্ত হয়ে দেবীর নিকট খাদ্য প্রার্থনা করতে থাকেন। পার্বতী গৃহে ফিরে তাদের খেতে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু সহচরীদের ক্ষুধার্ত অবস্থা দেখে কাতর হয়ে দয়ার্দ্রহৃদয় দেবী নিজ নখরাঘাতে স্বমস্তক ছিন্ন করে নিজ রক্ত দিয়ে তাদের ক্ষুণ্ণিবৃত্তি করেন। পরে তারা গৃহে ফিরে আসেন। অপর কাহিনিটি প্রাণতোষিণী তন্ত্র গ্রন্থে স্বতন্ত্রতন্ত্র গ্রন্থ থেকে গৃহীত বলে দাবি করা হয়েছে। এই কাহিনিটি শিব নিজে বর্ণনা করেছেন: একদা তিনি ও তার পত্নী চণ্ডিকা (পার্বতী) রতিসংগমে রত ছিলেন। চণ্ডিকা ছিলেন বিপরীত রতিতে। কিন্তু শিবের বীর্যস্খলনে তিনি ক্রুদ্ধা হলেন। তখন তার দেহ থেকে ডাকিনী ও বর্ণনী নামে দুই সহচরীর জন্ম হল। কাহিনির অবশিষ্টাংশ পূর্বকথিত কাহিনিটির অনুরূপ। যদিও এই কাহিনিতে নদীটির নাম হল পুষ্পভদ্রা এবং ছিন্নমস্তার জন্মতিথিটিকে বলা হয়েছে বীররাত্রি। শক্তিসংগম তন্ত্র গ্রন্থে এই কাহিনিটি পুনঃকথিত হয়েছে।
একটি লোকশ্রুতি অনুযায়ী দেবাসুর যুদ্ধে দেবগণ মহাশক্তির সাহায্য প্রার্থনা করলে দেবী প্রচণ্ড চণ্ডিকা দেবগণের সাহায্যার্থে উপস্থিত হন। সকল দৈত্য বধের পর ক্রোধন্মত্তা দেবী নিজ মস্তক কর্তন করে নিজ রক্ত পান করেন। শাক্তপ্রমোদ গ্রন্থে ছিন্নমস্তা শতনাম স্তোত্রে প্রচণ্ড চণ্ডিকা দেবী ছিন্নমস্তারই অপর নাম। অপর একটি লোকশ্রুতি অনুযায়ী সমুদ্রমন্থনের সময় উত্থিত অমৃত দেবাসুরের মধ্যে বণ্টিত হলে ছিন্নমস্তা অসুরদের ভাগটি পান করেন এবং তারপর অসুরদের অমৃত থেকে বঞ্চিত করতে স্বমস্তক ছিন্ন করেন।ছিন্নমস্তা সংক্রান্ত কিংবদন্তিগুলির মূল উপজীব্য বিষয় হল আত্মত্যাগ মায়ের আত্মত্যাগ (প্রাণতোষিণী তন্ত্র গ্রন্থের কাহিনিদ্বয়) বা জগতের হিতার্থে আত্মত্যাগ (দ্বিতীয় জনশ্রুতি)। এই কিংবদন্তির অপর উপজীব্য হল যৌন কর্তৃত্ব স্থাপন (প্রাণতোষিণী তন্ত্র গ্রন্থের দ্বিতীয় কাহিনি) বা আত্মবিধ্বংসী ক্রোধ (প্রথম লোকশ্রুতি) ।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
লেখা পাগলা বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই । ঠিক বলেছেন দিন চলে যায় আসে নতুন দিন কিন্তু সেই যে রূপকথা নামের পূপসী সে থেকে যায় ।
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম ।
২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৪১
নীলাকাশ ২০১৬ বলেছেন: হিন্দু ধর্মকে এখনও জনপ্রিয় করে রেখেছে এরকম বিচিত্র লোকাচার, সাম্প্রতিক সময়ে ইয়োগাও কিছুটা ভুমিকা রাখছে।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪১
লেখা পাগলা বলেছেন: ধন্যবাদ আমার কাছে এসব বিষয় গুলো মাঝে মাঝে খুব ভয়ংকর মনে হয় ।
৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:০১
অগ্নিবেশ বলেছেন: ভয়ংকর রূপকথা।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
লেখা পাগলা বলেছেন: ভয়ংকর ।
৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫
হাকিম৩ বলেছেন: চাঁদগাজী ভাই যা বলেছেন সত্য বলেছে ।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
লেখা পাগলা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিশাল রূপকথার ধর্ম ছিল গ্রীক ধর্ম, হারিয়ে গেছে; আরেক সুন্দর রূপকথার ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম, যা এখন হয়তো সবচেয়ে পুরাতন ধর্ম।