![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন সাধারন মানুষ,বাংলাদেশের একজন অসচেতন নাগরিক ।
কুরবানী আল্লাহতাআলার একটি বিধান। আর আদম আলাইহিস সালাম হতে প্রত্যেক নবীদের যুগেই কুরবানী করার ব্যবস্থা ছিল। আর প্রত্যেক নবীর যুগে এর বিধান ছিল বলেই এর গুরুত্বও অনেক। যেমন ইরশাদ হয়েছেঃ وَلِكُلِّ أُمَّةٖ جَعَلۡنَا مَنسَكٗا لِّيَذۡكُرُواْ ٱسۡمَ ٱللَّهِ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّنۢ بَهِيمَةِ ٱلۡأَنۡعَٰمِۗ ﴾ [الحج: ٣٤]
অর্থঃ আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানীর নিয়ম করে দিয়েছি; তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সকল চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সেগুলোর উপর যেন তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে।( সূরাঃ আল-হাজ্জ: ৩৪)
﴿ ۞وَٱتۡلُ عَلَيۡهِمۡ نَبَأَ ٱبۡنَيۡ ءَادَمَ بِٱلۡحَقِّ إِذۡ قَرَّبَا قُرۡبَانٗا فَتُقُبِّلَ مِنۡ أَحَدِهِمَا وَلَمۡ يُتَقَبَّلۡ مِنَ ٱلۡأٓخَرِ﴾ [المائدة: ٢٧]
অর্থঃ আর তুমি তাদের নিকট আদমের দুই পুত্রের সংবাদ যথাযথভাবে বর্ণনা কর, যখন তারা উভয়ে কুরবানী পেশ করল। অতঃপর একজন থেকে গ্রহণ করা হলো আর অপরজনের থেকে গ্রহণ করা হলো না। ( সূরা আল-মায়িদাহ:৩৪)
আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বন্ধু ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে বিভিন্ন পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছেন এবং ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যখন ইবরাহীমকে তার রবের কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর সে তা পূর্ণ করল। তিনি বললেন, আমি তোমাকে নেতা বানাবো। [সূরা আল-বাকারাহ-১২৪] নিজ পুত্র যবেহ করার মত কঠিন পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছিলেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। এ বিষয়ে সূরা আস-সাফ্ফাতের ১০০ থেকে ১০৯ আয়াতে বলা হয়েছে,
﴿ رَبِّ هَبۡ لِي مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ١٠٠ فَبَشَّرۡنَٰهُ بِغُلَٰمٍ حَلِيمٖ ١٠١ فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعۡيَ قَالَ يَٰبُنَيَّ إِنِّيٓ أَرَىٰ فِي ٱلۡمَنَامِ أَنِّيٓ أَذۡبَحُكَ فَٱنظُرۡ مَاذَا تَرَىٰۚ قَالَ يَٰٓأَبَتِ ٱفۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُۖ سَتَجِدُنِيٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٠٢ فَلَمَّآ أَسۡلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلۡجَبِينِ ١٠٣ وَنَٰدَيۡنَٰهُ أَن يَٰٓإِبۡرَٰهِيمُ ١٠٤ قَدۡ صَدَّقۡتَ ٱلرُّءۡيَآۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ ١٠٥ إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلۡبَلَٰٓؤُاْ ٱلۡمُبِينُ ١٠٦ وَفَدَيۡنَٰهُ بِذِبۡحٍ عَظِيمٖ ١٠٧ وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِي ٱلۡأٓخِرِينَ ١٠٨ سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِبۡرَٰهِيمَ ١٠٩ ﴾ [الصافات: ١٠٠، ١٠٩]
অর্থঃ তিনি বললেন, হে প্রভু, আমাকে নেক সন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাকে সুসংবাদ দিলাম এক অতীব ধৈর্যশীল সন্তানের। পরে যখন সে সন্তান তার সাথে দৌড়াদৌড়ি করে বেড়ানোর বয়সে পৌঁছলো তখন তিনি ইবরাহীম আঃ একদিন বললেন, হে বৎস ! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি আল্লাহর হুকুমে তোমাকে যবেহ করছি এখন তুমি চিন্তা ভাবনা করে দেখ এবং তোমার অভিমত কী? তিনি ইসমাঈল বললেন, হে পিতা আপনি তাই করুন যা করতে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন । ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। অতঃপর যখন দুইজনই আল্লাহর আদেশ মানতে রাজি হলেন, তখন তিনি ইবরাহীম আঃ পুত্রকে যবেহ করার জন্য শুইয়ে দিলেন। আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইবরাহীম ! তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। আমি এভাবেই নেক বান্দাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এটি বড় পরীক্ষা। আর আমি তাকে বিনিময় করে দিলাম এক বড় কুরবানীর দ্বারা এবং তা পরবর্তীর জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম।
একমাত্র আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের প্রত্যাশায় এবং আল্লাহ প্রদত্ত কঠিনতম পরীক্ষায় সাফল্যজনকভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার উদ্দেশ্যে এক মহান পিতার প্রাণাধিক পুত্রকে কুরবানী করার মধ্য দিয়ে ধৈর্যশীলতার উত্তম নমুনা পেশ পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। কুরআন মাজীদে উল্লেখিত আয়াতসমূহে ইবরাহীম এবং ইসমাঈল আলাইহিমুস সালামের আত্মত্যাগ এবং আল্লাহর প্রতি সীমাহীন আনুগত্যের সাবলীল বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। উল্লেখিত আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে স্বীয় পুত্র যবেহ না হয়ে দুম্বা যবেহ হওয়ার মাধ্যমে উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়।
কুরবানী একটি ইবাদত যার বিধান আদম (আঃ) এর যুগ থেকেই চলে আসছে। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সঠিক ইতিহাস ও বিধানাবলী সম্পর্কে আমরা খুব কমই অবগত আছি।
আশা করছি এ আলোচনা থেকে কুরবানী সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছুই জানা হবে ।
ক) কুরবানীর ইতিহাসঃ
পৃথিবীর সর্বপ্রথম কুরবানী অর্থাৎ সেই আদি পিতা আদম আঃ এর যুগ থেকেই কুরবানীর বিধান চলে আসছে। আদম আঃ এর দুই ছেলে হাবীল এবং কাবীলের কুরবানী পেশ করার কথা আমরা মহাগ্রন্থ আল কুরআন থেকে জানতে পারি।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে দাও যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, তখন একজনের কুরবানী কবুল হলো এবং অন্যজনের কুরবানী কবুল হলো না।
তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কুরবানীই কবূল করে থাকেন।[সূরা মায়িদা (৫):২৭]।
মূল ঘটনাঃ
যখন আদম এবং হাওয়া আঃ পৃথিবীতে আগমন করেন এবং তাদের সন্তান প্রজনন ও বংশ বিস্তার আরম্ভ হয় তখন হাওয়া আঃ এর প্রতি গর্ভ থেকে জোড়া জোড়া জময অর্থাৎ একসাথে একটি পুত্র এবং একটি কন্যা সন্তান করে জময সন্তান জন্মগ্রহণ করত। কেবল শীস আঃ ব্যতিরেকে।
কারণ, তিনি একা ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন। তখন ভাই বোন ছাড়া আদম আঃ এর আর কোন সন্তান ছিল না। অথচ ভাই বোন পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। তাই আল্লাহ তাআলা উপস্থিত প্রয়োজনের খাতিরে আদম আঃ এর শরীয়তে বিশেষভাবে এই নির্দেশ জারি করেন যে একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র এবং কন্যা জন্মগ্রহণ করবে তারা পরস্পর সহোদর ভাই বোন হিসেবে গণ্য হবে। তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম। কিন্তু পরবর্তী গর্ভ থেকে জন্মগ্রহনকারী পুত্রের জন্য প্রথম গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারীনি কন্যা সহোদরা বোন হিসেবে গণ্য হবে না। তাদের মধ্যে পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ। সুতরাং সে সময় আদম আঃ একটি জোড়ার মেয়ের সাথে অন্য জোড়ার ছেলের বিয়ে দিতেন।
ঘটনাক্রমে কাবীলের সাথে যে সহোদরা জন্ম নিয়েছিল সে ছিল পরমা সুন্দরী। তার নাম ছিল আকলিমা। কিন্তু হাবিলের সাথে যে সহোদরা জন্ম নিয়েছিল সে দেখতে অতটা সুন্দরী ছিলেন না। সে ছিল কুশ্রী এবং কদাকার। তার নাম ছিল লিওযা। বিবাহের সময় হলে শরয়ী নিয়মানুযায়ী হাবীলের সহোদরা কুশ্রী বোন কাবীলের ভাগে পড়ল। ফলে আদম আঃ তৎকালীন শরীয়তের আইনের পরিপ্রেক্ষি তে কাবীলের আবদার প্রত্যাখ্যান করলেন এবং তাকে তার নির্দেশ মানতে বললেন। কিন্তু সে মানল না। এবার তিনি তাকে বকাঝকা করলেন। তবুও সে ওই বকাঝকায় কান দিল না। অবশেষে আদম আঃ তার এই দুইসস্তান হাবীল ও কাবীলের মতভেদ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা উভয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী পেশ কর আর যার কুরবানী গৃহীত হবে তার সাথেই আকলিমার বিয়ে দেওয়া হবে। সে সময় কুরবানী গৃহীত হওয়ার একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন ছিল যে আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা এসে সে কুরবানীকে ভষ্মীভূত করে ফেলত। আর যার কুরবানী কবূল হতো না তারটা পড়ে থকত। যাইহোক তাদের কুরবানীর পদ্ধতি সম্পর্কে যা জানা যায় তা হলো কাবীল ছিল চাষী।তাই তিনি গমের শীষ থেকে ভাল ভাল মালগুলো বের করে নিয়ে বাজে মালগুলোর একটি আটি কুরবানীর জন্য পেশ করল। আর হাবীল ছিল পশুপালনকারী। তাই সে তার জন্তুর মধ্যে থেকে সবচেয়ে সেরা একটি দুম্বা কুরবানীর জন্য পেশ করল। তারপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা এসে হাবীলের কুরবানীটি ভষ্মীভুত করে দিল। (ফতহুল ক্বাদীরের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, হাবীলের পেশকৃত দুম্বাটি জান্নাতে উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তা জান্নাতে বিচরণ করতে থাকে। অবশেষে ইসমাঈল যাবিহুল্লাহ আঃ কে ওই দুম্বাটি পাঠিয়ে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়। আর কাবীলের কুরবানী যথাস্থানেই পড়ে থাকল। অর্থাৎ হাবীলেরটি গৃহীত হলো আর কাবীলেরটি হলো না। কিন্তু কাবীল এই আসমানী সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারলেন না। এই অকৃতকার্যতায় কাবীলের দুঃখ এবং ক্ষোভ আরো বেড়ে গেল। সে আত্মসংবরণ করতে পারল না এবং প্রকাশ্যে তার ভাইকে বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব।
হাবিল তখন ক্রোধের জবাবে ক্রোধ প্রদর্শন না করে একটি মার্জিত এবং নীতিগত বাক্য উচ্চারণ করল তাতে কাবীলের প্রতি তার সহানুভূতি এবং শুভেচ্ছা ফুটে উঠেছিল।
হাবীল বলেছিলঃ তিনি মুত্তাক্বীর কর্মই গ্রহণ করেন। সুতরাং তুমি তাক্বওয়ার কর্মই গ্রহণ করো। তুমি তাক্বওয়া অবলম্বন করলে তোমার কুরবানীও গৃহীত হতো। তুমি তা করোনি তাই তোমার কুরবানী প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এতে আমার দোষ কোথায়? তবুও এক পর্যায়ে কাবীল হাবীল কে হত্যা করে ফেলল। (তাফসীর ইবনু কাসীর, দুররে মনসূর, ফতহুল বায়ান, ৩/৪৫ ও ফতহুল ক্বাদীর, ২/২৮-২৯)
কুরআনে বর্ণিত হাবীল এবং কাবীল কর্তৃক সম্পাদিত কুরবানীর এই ঘটনা থেকেই মূলত কুরবানীর ইতিহাসের গোড়াপত্তন হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা দেখতে পেলাম যে কুরবানী দাতা হাবীল যিনি মনের ঐকান্তিক আগ্রহ সহকারে আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের জন্যে একটি সুন্দর দুম্বা কুরবানী হিসেবে পেশ করেন। ফলে তার কুরবানী কবূল হয়। পক্ষান্তরে কাবীল সে অমনোযোগী অবস্থায় কিছু খাদ্যশস্য কুরবানী হিসেবে পেশ করে। ফলে তার কুরবানী কবূল হয়নি। সুতরাং প্রমাণিত হলো কুরবানী মনের ঐকান্তিক আগ্রহ ছাড়া কবূল হয় না। তারপর থেকে বিগত সকল উম্মতের উপরে এটা জারি ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানীর বিধান রেখেছিলাম, যাতে তারা উক্ত পশু যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে এ জন্য যে, তিনি চতুষ্পদ জন্তু থেকে তাদের জন্য রিযিক নির্ধারণ করেছেন। সূরা হাজ্জ (২২):৩৪।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা নাসাফী এবং যামাখশারী বলেন, আদম আঃ থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত প্রত্যেক জাতিকে আল্লাহ তাআলা তার নৈকট্য লাভের জন্য কুরবানীর বিধান দিয়েছেন। তাফসীরে নাসাফী ৩/৭৯; কাশশাফ, ২/৩৩।
তথ্যঃ ইন্টারনেট ।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৫
লেখা পাগলা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া ।
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:০০
হাকিম৩ বলেছেন: জানা হলো ।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২০
লেখা পাগলা বলেছেন: ঠিক আছে ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০১
ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ভালো লাগল ইতিহাস জেনে ।