নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়ার্ডপ্রেসে আগে একটা ব্লগ এখন আর না এই নামেই ছিল । তাই সে নামই রাখলাম । আমার ব্লগ লেখা পাগলা ।

লেখা পাগলা

একজন সাধারন মানুষ,বাংলাদেশের একজন অসচেতন নাগরিক ।

লেখা পাগলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী এসফাহন

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৫


এসফাহন হল তেহরান শহরের ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী।একসময় এসফাহন বিশ্বের বড় শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ছিল । ১০৫০সাল থেকে ১৭২২ সাল পর্যন্ত ছিল এর সমৃদ্ধিকাল। সাফাভিদ সাম্রাজ্যের সময়কালে এসফাহন শৌর্যের শীর্ষে পৌঁছে। সেসময় দ্বিতীয়বারের মত এসফাহন পারস্যের রাজধানীর মর্যাদা পায়।অনন্য ইসলামী স্থাপত্য ছাদ ঢাকা সেতু, মসজিদ এবং মিনারের অসাধারণ সৌন্দর্য আজও এসফাহনকে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করে রেখেছে। এসফাহনের সৌন্দর্য কিংবদন্তিতুল্য। ইরানে প্রবাদ প্রচলিত আছে এসফাহন নেস্‌ফে জাহন আস্ত" যার অর্থ হল এসফাহন পৃথিবীর অর্ধেক।বিখ্যাত ভ্রমণপ্রিয় ফরাসি লেখক অঁদ্রে মালরো লিখেছিলেনঃ
Qui peut prétendre avoir vu la plus belle ville du monde sans avoir visité Ispahan?
অর্থাৎ কে দাবী করতে পারে সে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শহর দেখেছে যে এখনও এসফাহনে যায়নি? মালরো এসফাহনকে l'une des trois plus belles villes du monde অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর তিনটি শহরের একটি বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।নাকশ-এ-জাহান চত্বর বিশ্বের সবচয়ে বড় চত্বর গুলোর মধ্যে অন্যতম। ইউনেস্কো এটিকে একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে।

এসফাহন জাগ্রোস পর্বতমালার পাদদেশে জায়েন্দে নদীর তীরে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এটি ১৫৯০ মিটার উপরে অবস্থিত। বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৫৫ মিমি। তাপমাত্রা মোটামুটি ২ থেকে ২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে মধ্যে থাকে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস আর সর্বনিম্ন -১৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
চেহেল সুতুন পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান
এসফাহনের ইতিহাসের সূচনা প্রাচীন প্রস্তর যুগে। নৃতত্ত্ববিদেয়া এখানে প্রাচীন প্রস্তরযুগীয়, নব্য প্রস্তরযুগীয়, ব্রোঞ্জ এবং লৌহযুগীয় নিদর্শনের সন্ধান পেয়েছেন।
শাহ মসজিদের জ্যামিতিক হস্তলিপিশিল্প
প্রাচীন এসফাহন এলামীয় সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। মেদিয়ান গোত্রের অধীনে শহরটির নাম ছিল আসপানদানা। ম্যাসেডোনীয় দখল থেকে আর্সাসিডরা ইরানকে মুক্ত করার পর এটি পার্থীয় সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। সাসানিদ যুগে এসফাহন শাসন করতেন "ইসফুরান" বা সাতটি অভিজাত পরিবারের সদস্যরা। এসময় এসফাহন সামরিক দিক দিয়ে বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠে। আরবদের কাছে ইরানীদের সর্বশেষ পরাজয়ের পর এসফাহন আরবদের পদানত হয় ।
শাহ জামে মসজিদের প্রবেশপথ সাফাভিদ সাম্রাজ্যের সময়কালীন স্থাপত্য উৎকর্ষের নিদর্শন বয়ে চলেছে
ইসলামী যুগ
আব্বাসী বংশের শাসক আল-মনসুরের আগে এসফাহন অল্পদিনের জন্য আরবদের পদানত ছিল। সেলজুক বংশের মালিক শাহের শাসনামলে এসফাহন পুনরায় রাজধানীর মর্যাদা পায়। এ সময়টা ছিল এসফাহনের স্বর্ণযুগ। দার্শনিক ইবনে সিনা ১১শ শতকে এসফাহনে শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন।ত্রয়োদশ শতকে মঙ্গোলদের অভিযানে এসফাহনের অধিকাংশ অধিবাসী গণহত্যার শিকার হয়। ১৩৮৭ সালে তৈমুর লঙ পুনরায় এসফাহনে অভিযান চালালে এসফাহন অনেকাংশে তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে ।কিন্তু সাফাভিদ শাসকেরা পুনরায় এসফাহনের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনেন। ষোড়শ শতকে সাফাভিদ শাসক মহান শাহ আব্বাস এর সময়কালে এসফাহন পুনরায় পারস্যের রাজধানীতে পরিণত হয়। সে সময় এসফাহন সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছে যায়। এসফাহনের পার্ক, পাঠাগার, মসজিদ, স্থাপনা ইউরোপীয়দের অবাক করে দেয়। এসময় এসফাহনে ১৬৩টি মসজিদ , ৪৮টি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১৮০১টি দোকান এবং ২৬৩টি হাম্মামখানা নির্মিত হয়।
খাজু সেতু
আধুনিক যুগ
বর্তমানে এসফাহন ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী। শহরটি শতরঞ্চি এ গালিচা (কার্পেট), বস্ত্র, ইস্পাত এবং বিধি হস্তশিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানে পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদনের চুল্লী রয়েছে। ইউরেনিয়ামকে এখানে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইডে পরিণত করা হয় ।এসফাহনের অনুকূল অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে গড়ে উঠেছে ২০০০টির বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান। ইরানের বড় তেল শোধনাগার এবং গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটি এখানে অবস্থিত । ইরানের সবচয়ে উন্নত উড়োজাহাজ তৈরির কারখানাটিও এখানে অবস্থিত। এখানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। এসফাহন মেট্রো তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে । ২০০৭ সালে এসফাহনে আন্তর্জাতিক পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়।

আলী কাপু প্রাসাদের দৃশ্য
আর্মেনীয় গির্জা
স্কয়ার এবং রাজপথ
নাখ্‌শ-এ-জাহান চত্বর (ইমাম চত্বর) - ১৬০২
মেইদনে কোহনে (পুরাতন চত্বর)
শাহেনশাহ চত্বর
চহারবাগ বুলভার - ১৫৯৬


প্রাসাদ

আলি কাপু (রাজকীয় প্রাসাদ) - ১৭ শতকের গোড়ার দিকে
তালার আশরাফ- ১৬৫০
হাশত বেহেশত (আট স্বর্গের প্রাসাদ) - ১৬৬৯
চেহেল সুতুন (চল্লিশ স্তম্ভের প্রাসাদ) - ১৬৪৭

মাদ্রাসা (ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান)

মাদ্রাসায়ে সাদ্‌র
ইমাম জাফর সাদেক মাদ্রাসা
মাদ্রাসায়ে খাজু

মসজিদ

ইমাম মসজিদ
শেইখ লোতফোল্লাহ মসজিদ
জামে মসজিদ
জুম'আ মসজিদ

ক্যারাভানসারি

শাহ ক্যারাভানসারি
খাজু সেতু
সেতু
শাহরেস্তান সেতু,পোলে খাজু - ১৬৫০ খাজু সেতু
)
বুকেয়ে ইবনে সিনা (Avicenna's Dome) - ১২ শতক
নিজাম-উল-মূলক এবং মালেক শাহর মাজার - ১২ ও ১৮ শতক
নিউ জুলফা (The Armenian Quarter)
শেখ বাহাই হাম্মামখানা
পিজিওন টাওয়ার- ১৭ শতক পিজিয়ন হাউস
মানার জমবান (একটি বিখ্যাত মিনার)

হাতে নকশা করা গালিচার একজন পুরনো কারিগর

হুক্কা টানছেন এসফাহনী গালিচা ব্যবসায়ী
গালিচা শিল্প
সাফাভিদ শাসনামলে এসফাহনে গালিচা শিল্প গড়ে উঠে। কিন্তু আফগান আগ্রাসনের পর এটি স্তিমিত হয়ে যায়। ১৯২০ সালের দিকে গালিচা শিল্পের পুনর্জাগরণ হয়। এসফাহনীরা সাফাভিদ আমলের নকশা অনুসরণ করে গালিচা বুনতে শুরু করেন। হাতির দাঁত রঙের পটের, নীল-লাল গোলাপ নকশার মোটিফে গড়া এসফাহনী গালিচার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। গালিচাগুলোর নকশা খুবই সুষম।


ছবি তথ্য সূত্র/গুগোল,
লেখা/ Isfahan Is Half The World,
দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ,২০০৬ সালে ২৫ শে জানুয়ারি সংগ্রহ ।
http://www.amiscorbin.com/textes/francais/malraux.htm

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৪

প্রামানিক বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৫

লেখা পাগলা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১৮

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: বেশ ভাল পোস্ট।

ছবি-বিবরণে মিলে ভাল লাগলো পড়তে। +

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:২৬

লেখা পাগলা বলেছেন: অনেক অনেক শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.