![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন সাধারন মানুষ,বাংলাদেশের একজন অসচেতন নাগরিক ।
ছবিটা দেখে অবাক হলো প্রিতিমা । আজ কতদিন পরে প্রিতিমার বুকের বামপাশটায় হঠাৎ ঘুমিয়ে থাকা একটা ব্যাথা যেন লাফ দিয়ে উঠলো । ওটা প্রিতিমাদের বিয়ের ছবি ছিল । প্রিতিমার জীবনে অরবিন্দু ঝড়ের মত হঠাৎ করে ছুঁটে আসা একটুকরো ঝড় ছিল।
প্রিতিমাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল ছিল। প্রিতিমা সে বছর ইন্টার সেকেন্ট ইয়ারের ছাত্রী । তার পড়া লেখায় যেমন ছিল মেধা তেমন ছিল রূপ বুদ্ধি ভরপুর পরিপূর্ণ এক দীপ্তময়ী মেয়ে ।প্রিতিমা আর অরবিন্দুর সম্পক গড়ে উঠেছিল প্রিতিমার এক বান্ধবীর
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ।তবে তাদের বেশিদিন দুরত্ব সম্পকে থাকতে হয়নি ! তাদের সম্পক গড়ে ওঠার এক বছরের মাথায়
বিয়ে হয়েছিল ।
খুব ভালো চলতেছিল প্রিতিমা আর অরবিন্দুদের সংসার। অরবিন্দু একটি ছোট ব্যবসা করতো । বিয়ের এক বছরের মাথায় অরবিন্দু আর প্রিতিমার কুল জুড়ে আসলো বড় মেয়ে রুবি । রুবির যখন বয়স চার পেরুলো তখন আবার প্রিতিমা আর অরবিন্দুর কুল জুড়ে তাদের ছোট মেয়ে কিউট তিশিমার পৃথিবীতে আগমণ ঘটল।
হঠাৎ করে দেশের পরিস্থিতির সাথে সাথে অরবিন্দুর ব্যবসার পরিস্থিত খারাপ হতে থাকলো একটি পর্যায় বছর দু-একের ভিতরে এতটা খারাপ হলো
যে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল । বেশ কিছুদিন তার পরেও কষ্টে সংসার চলতেছিল ।
প্রিতিমা আর অরবিন্দুর ,মা-বাবা,ছাড়াও বাড়িতে ছোট ভাই বোন তাদের লেখা পড়ার খরচ সব মিলিয়ে প্রিতিমা যখন দেখল স্বামী অরবিন্দু সংসার চালাতে হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে…………………..অন্যদিকে প্রায় আট মাসের বাড়ি ভাড়া আটকে গেছে, স্বামী অরবিন্দু সেই কোন সকালে বেরিয়ে যায় কাজের উদ্ধেশে আর বাড়িতে ফিরেন মাঝ রাতে,সারাদিন কি খান কি খান না কোথায় থাকেন সারাদিন তার কিছুই জানে না প্রিতিমা । ফোন করলেও প্রায় সময় অরবিন্দু ফোন রিসিব করেন না । অভাব অনটন যেন তাদের সুখের সংসারটাকে গ্রাস করতে উঠেপরে লেগেছে। স্বামীর সে দূরসহ কষ্ট আর ভালো লাগছিলনা প্রিতিমার কাছে।
তখন প্রিতিমা তার এক বান্ধবীর সাথে পরামর্শ করে একটি চাকুরি নিলেন । কয়েক মাস চাকুরি পার হয়ে গেল …………বাড়িওয়ালাকে আগামি মাস
বলতে বলতে পুরো এক বছরের ভাড়া জমে গেল । একদিন সকালে বাড়িওয়ালা এসে অরবিন্দুকে খুব অপমান করলো ভাড়া না দেয়ার দায়ে ।
অনেক কষ্টে বাড়িওয়ালাকে রাতে বাসায় ফিরে টাকা দিবেন বলে মানিয়ে অরবিন্দু বাসা থেকে বের হলেন ।প্রিতিমাও অফিসে চলে গেলেন ।
প্রতিদিনের মত বিকেল পাঁচটায় প্রিতিমা বাসায় ফিরলেন । দেখতে দেখতে রাত বারোটা বেজে গেলো কিন্তু স্বামী অরবিন্দুর কোন খবর নাই ।এর
মধ্যে বাড়িওয়ালা লোকটা তিনবার এসে ঘুরে গেছেন অরবিন্দুর দেখা না পেয়ে প্রিতিমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে গেছেন আর বলেছেন আজকে
সমস্ত টাকা না দিতে পারলে পুরো ফ্যামেলীকে জেলের পাঠাবে ।
অপেক্ষা করতে করতে প্রিতিমা কখন যে খাবার টেবিলে মাথা হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল তা সে বলতে পারে না । হঠাৎ মোবাইল ফোনের শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে গেল । ফোন রিসিব করলো । হ্যালো অরবিন্দু ? অপর প্রান্ত থেকে জী না আসলে আমরা আপনার কাছ থেকে এ ফোনের মালিক সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছিলাম ।আপনারা কারা তাছাড়া ফোন আপনাদের হাতে কেন ? অরবিন্দু কোথায় ? আসলে দেখুন আমরা পুলিশের লোক
আমরা হাসপাতাল থেকে বলছি । এই ফোনের ডায়াল লিস্টে আপনার নাম্বারটি প্রথমে দেখছি তাই আমরা আপনাকেই ফোন দিয়েছি ।
আসলে উনি আপনার কে হন ? জী উনি আমার স্বামী হন,কিন্তু কেন বলুনতো ? আর ওই বা হাসপাতালে কেন ? আসলে আমরা উনাকে রাস্তার পরে থাকতে দেখে তুলে হাসপাতালে আনি আর এখানে আনার পর ডাক্তার বলেছেন উনি অনেক আগেই স্টক করে পৃথিবী থেকে ………..?
এ কথা শোনার পরে প্রিতিমা চারদিক কেমন যেন অন্ধকার দেখতে ছিলেন ……..। প্রিতিমা হাসপাতালে যান স্বামীর মুখ শেষ দেখার জন্য।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৫১
লেখা পাগলা বলেছেন: গল্পটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:১৮
MD FAISAL HOSSEN বলেছেন: সুন্দর গল্প।
দেশের অস্থিরতার কারনে হাজারো মানুষের মুখ থেকে হাসি মুছে যায় তা রাজনৈতিক দলগুলো বুজতে পারে না। তারা তাদের স্বার্থের কথা সবসময় বিবেচনা করে আর অরবিন্দুর মত সাধারন মানুষ প্রাণ হারায়।
ধন্যবাদ।