নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কপি-পেস্ট ব্লগ

..............................................

লিঙ্কন

লিখি না অনেক দিন..

লিঙ্কন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অসময়োচিত সত্য ও মতলবি বিতর্ক

৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:৪৭





কালুরঘাটের রেডিও ট্রান্সমিটার সেন্টার থেকে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা উচ্চারণ করেন। এটা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল রেকর্ডে আছে, ইতিহাসে আছে এবং বহু মানুষ শুনেছে। কাজেই এ নিয়ে বিতর্ক নেই। অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু যেহেতু জিয়া, তাই আওয়ামী লীগ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তুলতে চায়। তারা বলে, জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন, ঘোষণা পাঠক মাত্র।



মানলাম, পাঠক বা ঘোষক যাই হোক সেটা জিয়া, আর কেউ নন। তিনিই স্বকণ্ঠে, সদম্ভে, জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে ওই সময়ে সেটা করেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণা এভাবেই করতে হয়, শত্রু-মিত্র, বিশ্ববাসী সবাইকে শুনিয়ে। গুপ্তপন্থায় বা চিরকুট দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা হয় না।



স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার মানেই হলো, আপনাকে হয় জিততে হবে, না হয় মরতে হবে। তৃতীয় বিকল্প বা মাঝামাঝি আর কোনো পথ নেই। স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার অর্থই হোল, আপস বা সমঝোতার সব পথ রুদ্ধ করে দেয়া। জিয়া সেটাই করেছিলেন। এটা প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিশ্চয়তায় ঘেরা এক কঠিন সিদ্ধান্ত। কারণ এরপর যদি কোনো রাজনৈতিক বোঝাপড়া হয়ে যেত পাকিস্তানের সঙ্গে তবে জিয়া হতেন রাষ্ট্রদ্রোহী। সেনাবিদ্রোহের দায়ে তার মৃত্যুদণ্ড ছিল অবধারিত। সেই ঝুঁকি মেনেই জিয়া বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার বাণী উচ্চারণ করেছিলেন।



জিয়া তার ঘোষণায় নিজেকে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান ও স্বাধীনতার অস্থায়ী প্রধান সমরনায়ক বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এটাও ইতিহাসের অংশ। অসংখ্য প্রামাণ্য দলিল, ভারতীয় ডকুমেন্ট, এমনকি আওয়ামী নেতাদের লেখা বইপত্রেও আছে সেকথা।



এই ঘোষণার পর ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়া চা বাগানে স্বাধীনতাযুদ্ধের কমান্ডারদের বৈঠকে মুক্তিবাহিনী গঠন ও সেক্টর বিভাজন করে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ওই মিটিংয়েই সিদ্ধান্ত হয়, ভারতে আশ্রিত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের খুঁজে বের করে তাদের সমন্বয়ে একটি প্রবাসী সরকার গঠন করতে হবে।



এরপর ১০ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠিত হয় এবং সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ১১ এপ্রিল তার প্রথম বেতার ভাষণে জিয়াউর রহমানের ঘোষণাকেই স্বাধীনতার ঘোষণা হিসেবে অনুমোদন ও স্বীকৃতি প্রদান করেন। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের এক আমবাগানে প্রবাসী সরকারের অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়।



জিয়াউর রহমানের ঘোষণা অস্বীকার করলে স্বাধীনতার যুদ্ধকেই অস্বীকার করা হয়, এর ইতিহাস বিকৃত ও ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত হয়। জিয়া নিজেকে তার ঘোষণায় বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান রূপে উপস্থাপন করেছিলেন। তার স্বাধীনতার ঘোষণা বৈধ হলে, প্রবাসী সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেও তিনিই বৈধ ছিলেন। তার এই ঘোষণাকে আর কোনো ঘোষণা মারফৎ কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষ কখনো রদ বা রহিত করেনি।



এই ঐতিহাসিক ফ্যাক্টসটি আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়েই আলোচিত হয়েছে। এ নিয়ে অনেকে লেখালেখি ও বিতর্কও করেছেন। জেনারেল শফিউল্লাহ, একে খোন্দকার, ব্রিগেডিয়ার মজুমদার, জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী, জেনারেল সুবিদ আলী ভুঁইয়া, মাঈদুল হাসান, বেলাল মোহাম্মদ, কাজী সিরাজ, হারুন উর রশীদসহ অনেকেই এ নিয়ে লিখেছেন। সমস্যাটি হয়েছে সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লন্ডনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক আলোচনাসভায় তারেক রহমান এই কথাটি উল্লেখ করায় এবং ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া সেই ফ্যাক্টসের সমর্থনে কথা বলায়।



যে তরুণরা ইতিহাস জানে না তারা এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতেই পারে। কিন্তু যারা জানে তেমন জ্ঞানপাপীদের হৈ চৈ সত্যিই খুব নোংরা ভাঁড়ামি।



আমি এদের চরিত্রটা জানি ও কৌশল, অপকৌশলগুলো বুঝি। তারেক রহমানের বক্তব্যের পর তাই আমার আশঙ্কা ছিল, এরা এটা করবেই। তারেক রহমান যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ সত্য। তবে আমার নিজের ধারণা হচ্ছে, এই বিতর্কটি নতুন করে তোলা হয়তো সময়োচিত হয়নি। রাজনীতিতে স্ট্র্যাটেজি থাকে। ঠিক কোন সময়ে কোন কথাটা বলতে হবে, সেই সময় নির্ধারণটাও সেই স্ট্র্যাটেজির অংশ।



আওয়ামী লীগ এখন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনীরঙ্গ, উপজেলায় ভোটডাকাতি, গুম-হত্যালীলায় মানবাধিকার বিপর্যয়ে দেশকে ঠেলা, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কটসহ নানান কিছুতে জেরবার আছে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য ভেতর-বাইরের চাপ মোকাবিলায় তারা হিমশিম খাচ্ছে। এ সময়ে বিতর্কের একটা উপাদান পেলে তারা সেটা নিয়ে ধুম্রজাল তৈরি করে জ্বলন্ত ইস্যুগুলো আড়ালের চেষ্টা করবেই। তারেক রহমানের বক্তব্যকে পুঁজি করে তারা সে চেষ্টাই করছে।



বিএনপির ওয়েবসাইটে প্রথম না বলে জিয়াউর রহমানকে সপ্তম প্রেসিডেন্ট বলা হয়েছে। কাজেই তারেক রহমান যা বলেছেন এবং তাকে সমর্থন করে বেগম জিয়া যা বলেছেন তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে, এমন কুযুক্তিও তুলেছেন কেউ কেউ। তাদের বলবো-

১. বিএনপি ওয়েবসাইটকে তারা ইতিহাসের নির্ভুল পাঠ বলে মানছেন তাহলে?

২. ওই ওয়েবসাইটের তালিকাটি স্বাধীনতা অর্জনপরবর্তী রাষ্ট্রপ্রধানদের। হানাদার কবলিত স্বদেশের নয়।

৩. আরো বলবো জিয়াউর রহমানই জনগণের সরাসরি ভোটে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান।



Fri, 28 Mar, 2014 09:41 PM

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব

মারুফ কামাল খান সোহেল

Banglamail24.com

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.