![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অধীনতামুলক মিত্রতা- করুন পরিনতি মনে আছে কি ?
অধীনতামুলক মিত্রতা নামক এক জঘন্য রাজনীতি বৃটিশ ভারতে প্রথম চালু করেছিলেন লর্ড ডালহৌসী। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনামলে তিনি ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন ১৮৪৮ সাল থেকে ১৮৫৬ সাল অবধি। অতিমাত্রায় কুটনীতির চাল-চালাকী এবং অতি রাজনীতির কারণে তিনি ছিলেন তৎকালীন ভারতে মূর্তিমান আতংক এবং ঘৃনিত ব্যক্তি। তার কারনেই ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ হয় এবং পরিনতিতে ভারতে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী রাজত্ব হারায়।
অধীনতামুলক মিত্রতার নীতি অনুসারে তিনি দেশীয় রাজ্য গুলোকে প্রস্তাব করেন ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সঙ্গে বহুমুখী চুক্তি এবং প্রটোকল স্বাক্ষর করার জন্য। চুক্তিতে ইংরেজ সৈন্যরা অবাধে ঐসব রাজ্য দিয়ে চলাফেরা করতে পারবে, প্রতিটি রাজ্য তাদের নিজ খরচে একদল ইংরেজ সৈন্য পুষবে এবং ইংরেজরা কারো সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে দেশীয় রাজ্য গুলো সৈন্য, অর্থ এবং সমর্থন দিয়ে সাহায্য করবে। বিনিময়ে ইংরেজরা ঐসব রাজ্য আক্রমন করবে না। দেশীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে সর্ব প্রথম হায়দরাবাদের নিজাম এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই অঞ্চলেরই বাসিন্দা।
ডালহৌসি ছিলেন বিট্রিশ ভারতে উন্নয়নের অগ্রপথিক। তিনি রোজ ১৮ ঘন্টা পরিশ্রম করতেন এবং অফিসের টেবিলে বসেই সকাল-দুপুর এবং রাতের খাবার খেতেন। তিনি বিধবা বিবাহ চালু করেন। ভারতে প্রথম রেল যোগাযোগ, টেলিগ্রাফ সার্ভিস, গঙ্গা ক্যানেল নির্মাণ, পুল, ব্রিজ, কালভার্ট সহ হাজারো স্থাপনা নির্মাণ করেও তিনি ভারতবাসীর ঘৃনাকে একটুও কমাতে পারেননি। তার কার্যকাল শেষ হয় ১৮৫৬ সালে। তিনি যখন ইংল্যান্ডে পৌঁছান তার কিছুদিন পরই শুরু হয় ভারতে সিপাহী বিদ্রোহ। সারা ইংল্যান্ডে তার বিরুদ্ধে শুরু হয় ছি ছি রব। অন্যদিকে ভারতবাসীদের অভিশাপতো ছিলোই- ফলে তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। প্রায় একবছর নির্মম মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগ করে তিনি যেদিন মারা যান সেদিন তার বিভৎস মৃতদেহের রূপ দেখার মতো একটি সহৃদয় লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা রনি
©somewhere in net ltd.