নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কপি-পেস্ট ব্লগ

..............................................

লিঙ্কন

লিখি না অনেক দিন..

লিঙ্কন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেমন আছেন তারা?

১১ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩০



২০০৮ সালের ২৯শ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মহাজোট সরকারের আমলে তারা সবাই ছিলেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী। কেউ কেউ ছিলেন দুর্দোন্ড প্রতাপশালী ও দাপুটে। আবার বিভিন্ন ইস্যুতে এদের অনেকেই নিজেকে জড়িয়েছেন বিতর্কে। তাদের নিয়ে ছিল আলোচনা-সমালোচনা। ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রী সভায় তাদের ঠাঁই হয়নি। নতুন মন্ত্রিসভার ৪৯ সদস্যের ২৪ জনই ছিলেন নতুন মুখ। পুরোনো মন্ত্রীদের ৩৬ জনের ঠাঁই হয়নি এই মন্ত্রী সভায়। অনেকে এমপি নির্বাচিত হলেও ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েনি তাদের। ফলে তারা এখন আর আলোচনায় নেই খুব একটা। নতুন করে মন্ত্রী সভায় ঠাঁই পাবেননা এমন সম্ভাবনায় গুটিয়ে ফেলেছেন নিজেকে। চলে গেছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। কেউ মনোযোগ দিয়েছেন ব্যবসা ও পারিবারিক কাজে। আবার কেউবা বার্ধক্যজনিত ও শারীরিক কারণে চলে গেছেন বিশ্রামে। সব মিলিয়ে ভাল নেই সাবেক এই মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীরা।
মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদের মন্ত্রীসভায় সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন এয়ার মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার। মন্ত্রীর পদে থাকাকালিন সময়ে কোন বিতর্কে না জড়ালেও ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের পর মন্ত্রী সভায় ঠাঁই হয়নি তার। গতবছর সেপ্টেম্বরে ‘১৯৭১ ; ভেতরে বাইরে’ নামে তার একটি বই প্রকাশিত হলে তার তীব্র সমালোচনায় মুখর হন আওয়ামী লীগ নেতারা। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত লেখার অভিযোগে তার নামে মামলাও হয় দেশের কোন কোন জেলায়। তাকে নিয়ে চলা বিতর্কের মধ্যেই তিনি চলে গেছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক এই মন্ত্রী বর্তমানে তার উত্তরার বাসাতেই আছেন। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হননা তিনি। নিকটাত্বীয় ছাড়া দেখা করেননা কারও সঙ্গে। এড়িয়ে চলেন গণমাধ্যমকেও। এখন সময় কাটছে তার বই পড়ে, বিশ্রাম নিয়ে। গুরুতর কোন রোগে আক্রান্ত না হলেও শারীরিকভাবে সুস্থ নন এ কে খন্দকার। অশীতিপর এই মানুষটির বর্তমান সার্বক্ষনিক সঙ্গী তার সহধর্মীনি ফরিদা খন্দকার।
মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। একসময় তাকে দায়িত্ব দেয়া হয় ডাক, টেলি যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের। ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের পরও মন্ত্রী পদে বহাল ছিলেন তিনি। ক্ষমতায় থাকাকালিন দুর্দোন্ড প্রতাপশালী ছিলেন। বেপরোয়া হিসেবে সমালোচনাও ছিল তার। ২০১৪ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনা সভায় হজ্ব, তাবলীগ, প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে কটুক্তি করে বিতর্কের ঝড় তোলেন তিনি। তার মন্তব্যে দেশ বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তার নামে ২৯টির বেশি মামলা হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তাকে নিয়ে চলা বিতর্কের মধ্যেই ২০১৪ সালের ২৩শে নভেম্বর দেশে ফিরেন তিনি। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার একটি মামলায় ২৬শে নভেম্বর ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পন করেন লতিফ সিদ্দিকী। পরে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। এরই মধ্যে মন্ত্রীর পদ থেকে অপসারন করা হয় তাকে। দলের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ন পদ প্রেসিডিয়াম থেকেও তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। বহিষ্কার করা হয় দল থেকেও। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে সেখানেই কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর বিলাশবহুল ডিলাক্স কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছরের বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। রাজনৈতিক জীবনে বার বার এমপি নির্বাচিত হলেও মন্ত্রীর স্বাদ পাওয়া হয়নি তার। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার গঠন করে। কিন্তু শুরুতে মন্ত্রিসভায় তার স্থান হয়নি। অতপর ২০১১ সালের ২৮শে নভেম্বর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন অভিজ্ঞ পার্লমেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত। দায়িত্ব পান রেল মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু অর্থ কেলেঙ্কারিতে পড়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে হয় তাকে। নতুন মন্ত্রিসভায়ও আর ঠাই মিলেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বেশিরভাগ সময় নিজ নির্বাচনী এলাকা ও রাজধানীর ঝিগাতলার বাসায় কাটান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত ‘চলমান রাজনীতি বিষয়ক’ আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে স্বভাবসুলভ বক্তব্য রাখেন তিনি।
সংসদ সদস্য না হয়েও টেকনোক্যাট কোটায় মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছিলেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। এমনিতে সজ্জন হিসেবে পরিচিত শফিক আহমেদ রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় না হলেও মন্ত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন অনেকটাই সফল। এছাড়া মন্ত্রীত্ব পদে থাকাকালিন সময়ে তাকে নিয়ে বিতর্ক ছিলনা কোন। আওয়ামী লীগের কোন পদে না থাকলেও আস্থাভাজন ছিলেন দল ও সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু বর্তমান সরকারে মন্ত্রীর পদ পাননি তিনি। বর্তমানে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদে ব্যস্ত আছেন আইন পেশায়।
মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী ছিলেন সাবেক ডাকসাইটে আমলা ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর। আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ন পদ প্রেসিডিয়ামের পাশাপাশি দায়িত্ব পান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। যতদিন মন্ত্রীর পদে ছিলেন আলোচনা সমালোচনা ছিল তাকে ও তার কর্মকান্ড নিয়ে। বিশেষ করে ২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধ্বসের পর তার ‘পিলার ঝাকুনি তত্ত্ব’ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় সারাদেশে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে চাদপুরের একটি আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু এবার আর মন্ত্রীর পদ পাননি মহীউদ্দিন খান আলমগীর। এরই মধ্যে দলের প্রেসিডিয়াম পদ থেকে তাকে স্থানান্তর করা হয় উপদেষ্টা পরিষদে। ফলে একপ্রকার অন্তরালেই চলে যান একসময়ের প্রভাবশালী এই মন্ত্রী। দলের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় কার্যালয়ে পা পড়েনা তার। দলের কোন কর্মসূচীতেও অংশ নেননা খুব একটা। বেসরকারি ফার্মার্স ব্যাংকের পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আছেন মহীউদ্দিন খান আলমগীর। এখন তার বেশিরভাগ সময় কাটে এই ব্যাংক নিয়েই। এছাড়া বনানীর ২৫ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাসায় দিন কাটে তার।
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া। অনেকটা নাটকীয়ভাবেই ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত মহাজোট সরকারের সময়ে টেকনোক্র্যাট কোটায় শিল্প মন্ত্রী হন তিনি। তবে মন্ত্রী হওয়ার পর তাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বর্তমান মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়া দিলীপ বড়–য়ার এখন দিন কাটছে অনেকটাই একা একা। তবে, ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠকে তাকে মাঝে মাঝে দেখা যায়। কিন্তু এ পর্যন্তই।
মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে অনেকটা চমকে দিয়েই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট সাহারা খাতুন। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার পর নানা অতিকথনে নিজেকে বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেন তিনি। একসময় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাদ দিয়ে তাকে করা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে ঢাকার একটি নির্বাচনী আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন সাহারা খাতুন। কিন্তু মন্ত্রিসভায় আর ঠাই হয়নি। তবে রাজনীতি ও আইন পেশায় সক্রিয় রয়েছেন তিনি।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের (গোলাম মোহাম্মদ কাদের) ছিলেন মহাজাট সরকারের বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। পরে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বড় ভাই এরশাদের কথায় নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন জি এম কাদের। ফলে সংসদ সদস্যও হতে পারেননি সজ্জন হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির এই রাজনীতিবিদ।
২০০৯ সালে মহাজোট সরকারের প্রথমে ডাক, তার, টেলিযোগাযোগ পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান নরসিংদীর রায়পুরা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। মন্ত্রী হওয়ার পরেই নিজের কর্মকান্ডে বিতর্কিত হয়ে পড়েন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে একপ্রকার নির্জীব জীবন কাটছে তার।
মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. আ ফ ম রুহুল হক। কিন্তু নানা বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেন নিজেকে। যে কারনে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর দ্বিতীয় মেয়াদে আর তাকে মন্ত্রীর পদ দেয়া হয়নি। বর্তমানে স্বাচিপের সাংগঠনিক কর্মকান্ড ও নিজের চিকিৎসা পেশা নিয়েই সময় কাটছে তার।
২০০৯ সালের মহজোট সরকারের সময়ে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান গোপালগঞ্জের একটি আসন থেকে নির্বচিত সংসদ সদস্য কর্নেল (অব:) ফারুক খান। বর্তমানে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন তিনি। মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে সরকারের খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক। ব্যাক্তি হিসেবে সজ্জন হলেও তার ঘনিষ্টজনদের দুর্নীতির কারনে সমালোচিত হতে হয় তাকে। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় না থাকলেও রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। মহাজোট সরকারের মন্ত্রী সভার চমক ছিল দেশের প্রথম নারী হিসেবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনির পররাষ্ট্র মন্ত্রী হওয়া। দায়িত্বপালনকালে রেকর্ড গড়েছিলেন বিদেশ ভ্রমনের। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় না থাকলেও দলীয় কার্যক্রমেও নিয়মিত অংশ নেন দীপু মনি। মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদের মন্ত্রিসভার সদস্য হাছান মাহমুদ এবার মন্ত্রী হতে না পারলেও মিডিয়ায়-রাজনীতিতে সরব রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন একসময়ের বাম রাজনীতিক আবদুল মান্নান। একই সঙ্গে মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিন্তু নানা বিতর্কে জড়িয়ে যান তিনি। ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও নিজ এলাকা থেকে জয়লাভ করতে পারেননি আবদুল মান্নান।

কেমন আছেন তারা?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.