![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তারেক রহমানের নাম নিলেই সবাই বলে উঠে ও তো একটা চোর , বাপারটা আসলেই কি তাই , ১/১১ থেকে শিশুরা এই রটনায় বড় হয়ে উঠেছিল যে, তারেক রহমান গণতন্ত্র, সুশাসনের খলনায়ক। হাওয়া ভবন ছিল যত্তসব হাঙ্গামার উৎস। তাকে ঘিরে হিন্দি সিনেমার মতো গল্প বানিয়ে, গল্প ছড়িয়ে কী বিষাক্ত ধিক্কারই না দেগে দেয়া হয়েছিল। গণতন্ত্র বিনাশের সেই কালো প্রহরে তারেক-গীবত হয়ে উঠেছিল লিভিং স্পেসের নিয়মিত ঘটনা। কী সব শিরোনাম! মইন-ফখরুদ্দীন সরকারের ছত্রছায়ায় ডিজিএফআই অর্থাত্ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা অফিসের কয়েকজন অতিউত্সাহী কর্মকর্তার বানানো সব কাহিনী লাল শিরোনাম হচ্ছিল অনেক দৈনিকে। কিন্তু আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট, সে ধিক্কার সত্যভিত্তিক বা প্রামাণিক ছিল না।
তারেক রহমানের নামে মামলা দেওয়া হলো কিছু প্রমান হওয়ার আগেই তাকে ধরে নিয়ে গেল মইন-ফখরুদ্দীন বাহিনী, তার পরে তারেক রহমানের বক্তব্য কি ছিলো সেটা নিচে দিলাম ।
আমার বাবা জিয়াউর রহমান গ্রাম-গঞ্জে অবিরাম হেঁটে হেঁটে মানুষের মাঝে থাকার রাজনীতি করতেন। আমিও শুরু করেছিলাম সেই হাঁটা। বলুন তো, কেন ওরা আমার মেরুদণ্ড ভেঙে আমাকে স্থবির করতে চেয়েছিল? সেই হাঁটা, সেই রাজনীতি বন্ধ করতে?’ উল্টো আমার দিকেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন বিষণ্ন, অভিমানী তারেক রহমান, ১/১১’র আমলে সবচাইতে বেশি নির্যাতিত রাজনীতিক, যাকে আজীবন বইতে হবে সেই বেদনা।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে জড়িয়ে মইনগং গুনে গুনে ১৩টি মামলা দিয়েছিল। কোনোটাতেই তারেক সরাসরি আসামি নন। আসামিদের আগে ধরে তাদের বানানো স্বীকারোক্তি ছিল তারেককে ফাঁসানোর অস্ত্র। সেই সব স্বীকারোক্তি পিটিয়ে সাদা কাগজে সই করা হয়েছিল, যা পরে আদালতে প্রত্যাহার হয়েছে। ১৩টি মামলার মধ্যে ১১টি উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত আছে, তারেক জামিন পেয়েছেন। ‘দিনকাল’ সংক্রান্ত মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত মামলাটি আদালতের বিবেচনাধীন রয়েছে, সরকার সময় নিয়েছে। কাফরুল থানায় দ্রুত বিচার আইনের অধীনে ২০০৭-এর ১৭ এপ্রিল যে মামলাটি হয়, তাতে তারেককে ফাঁসাতে মরিয়া মইন-ফখরুদ্দীন সরকার দু’দিনের ব্যবধানে দু’বার আইনের সংশোধন করেছিল। কিন্তু হাইকোর্ট তা আমলে নেয়নি। বর্তমান মহাজোট সরকার তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা প্রায় দেড় হাজার মামলা তুলে নিয়েছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মামলাগুলো একচোখা সরকারের দৃষ্টিতে পড়েনি। তারেকের বিরুদ্ধে স্থগিত একটি মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন আইন প্রতিমন্ত্রী। আবার তা পুষিয়ে দিতে বর্তমান আমলে মানি লন্ডারিংয়ের একটি মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে। অথচ সেখানেও তিনি মূল আসামি নন। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিনা অভিযোগে তারেক রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মঈনুল রোডের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। । ৭ মার্চ রাতে বলেছিলেন, ওরা আমাকে নিতে এসেছে। আমি কোনো অপরাধ করিনি, আমার জন্যে দোয়া করবেন।’ এরপর দু’রাকাত নফল নামাজ পড়লেন। মা বেগম জিয়ার অঝোর কান্না আর প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে তারেককে ওরা নিয়ে যায়। ১২টি মামলায় জামিন পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্তি পান। কিন্তু তারেক রহমান আর সুস্থ নেই।
অসহ্য যন্ত্রণায় কাঁদতে কাঁদতে স্ট্রেচারে গিয়ে লন্ডনের প্লেনে উঠেছিলেন ১১ সেপ্টেম্বর। ৫৫৪ দিন কারাবাসের পর পিজি হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে দেখা হয়। কান্নায় ভেঙে পড়া মায়ের বুকে বেদনার্ত তারেকের রোদন ও বাষ্পরুদ্ধ কথোপকথন পিজি হাসপাতালের বাতাসকে ভারি করে তুলেছিল। তারপর থেকে তারেক লন্ডনে, চিকিত্সায়। আগের চাইতে এখন খানিকটা সুস্থ। কিন্তু কোনোদিনই সম্পূর্ণ সুস্থ হবেন না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন। সারাক্ষণই শরীরে যন্ত্রণা হয়। জানালেন, মেরুদণ্ডের ভেঙে যাওয়া হাড়টা জোড়া লেগেছে বাঁকা হয়ে। ডাক্তাররা বলেছেন, সম্পূর্ণ আরোগ্য কখনওই সম্ভব নয়। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ফিজিওথেরাপি নেন। আরও চিকিত্সা দরকার।
অবাক হবেন এটা ভেবে যে তাকে কতো ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছিলো , ২০০৭-এর ৩১ ডিসেম্বর রিমান্ডে থাকাকালে আমার ওপর নানা রকমের দৈহিক নির্যাতন করা হয়। এর মধ্যে একটি ছিল অনেক উপর থেকে বার বার ফেলে দেয়া। অসহ্য যন্ত্রণায় আমি কুঁকড়ে উঠেছি। কিন্তু ওইসব অফিসারের বিন্দুমাত্র মায়া-দয়া হয়নি। ওদের দায়িত্ব ছিল আমাকে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলা। তারপর থেকে দীর্ঘ সময় আমি কারাগারে। কোনো ডাক্তার নেই। চিকিত্সা হয়নি। প্রতিটি দিন কেটেছে নারকীয় যন্ত্রণায়। একজন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে, গ্রেফতার চলতে পারে। কিন্তু নির্যাতন করার, শরীরের অঙ্গ বিকল করার, মানবাধিকার পদদলিত করার অধিকার সভ্যতার কোথায় আছে?
একজন নেতাকে উপর থেকে বার বার ফেলে দেওয়া আর উপরে তোলা এটা কোন ধরনের শাস্তি আমার বোধ গম্য নয়।
সামরিক শাসনামলের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া শরীরি নিপীড়নে মৃতপ্রায় তারেক রহমান ২০০৮-এর জানুয়ারি আদালতে জীবনের নিরাপত্তা চাইলেন। বললেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের নামে রিমান্ডে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চোখ বেঁধে (২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা) আমাকে নিগৃহীত করা হয়েছে। আমি একজন রাজনীতিবিদ। কোনো সন্ত্রাসী নই। এর আগে আমার চিকিত্সার জন্য আদালত নির্দেশ দিলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। রিমান্ডে আবার নির্যাতন হলে আমি বাঁচব না।’ অথচ সবার মনে আছে, ডিজিএফআই’র মিডিয়া-পেষণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তারা সেদিন মিডিয়ায় বার বার দাবি করেছিলেন, তারেক রহমানকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। কিন্তু জাতি দেখেছে, ডাক্তাররা রিপোর্ট দিয়েছেন, অমানবিক নিগ্রহে তারেক নিশ্চল।
আদালতের নির্দেশক্রমে ২৯ জানুয়ারি তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে একটি মেডিক্যাল বোর্ড পরীক্ষা করে সুপারিশ করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির জন্য। কোনো চিকিত্সায় কাজ হচ্ছিল না। ৯ জুন অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে নেয়া হলে কাঠগড়ায় হুইল চেয়ারেও বসে থাকতে পারেননি। এরপর পেইন কিলার দিয়েও তার ব্যথা কমানো যাচ্ছিল না। সে বছরের আগস্টে হাসপাতালের প্রিজন সেলে টয়লেটে পড়ে গিয়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি। ডিজিএফআই’র প্রবল চাপ উপেক্ষা করে দেশের শীর্ষ চিকিত্সকদের এক মেডিক্যাল বোর্ড তারেক রহমানকে চিকিত্সার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করে। বোর্ড দেখতে পায়, নির্যাতনে তারেকের মেরুদণ্ডের ৬ ও ৭ নম্বর হাড় ভেঙে গেছে। মেরুদণ্ডের ৩৩টি হাড়ের দূরত্ব কমে গেছে। চোখে, হৃদযন্ত্রে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এসবের চিকিৎসা সম্ভব নয়।
স্বল্পাহারী তারেক রহমান ডাল দিয়ে ভাত খেতে খেতে বলছিলেন, ‘আমাকে নিয়ে তদন্তকারীরা যে সিরিয়াসলি তদন্ত করেছে, তা মনে হয় না। চারশ’ স্যুটকেস ডলারে ভরে সৌদি আরবে পাচারের অভিযোগ তুললে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, একটি ডিসি-১০ বিমানের কার্গোহোলে কত স্যুটকেস আঁটে বা একজন যাত্রী অত স্যুটকেস কীভাবে নিয়ে যেতে পারে—সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা আছে কিনা। এরপর তারা আর সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করেনি। সরকার ব্যবস্থা বা রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ওইসব বিপথগামী অফিসার স্রেফ আক্রোশের বশে আমাকে নির্যাতন করেছে। তদন্তকারীদের কিছু জ্ঞান তো থাকতে হয়। আমাকে নিঃসাড় করে দেয়াই ছিল তাদের লক্ষ্য।’ ওইসব তদন্তকারী ওরফে নির্যাতকদের চিনতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে তারেক ‘না’ সূচক মাথা নাড়লেন।
পিজি হাসপাতালের জানালা থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তারেক রহমান ।
এখন পয়েন্টে আসা যাকঃ একজন রাজনৈতিক নেতা যে কোন চোর না , ডাকাত না তার শাস্তি কি হতে পারে, হয়তো অল্প কিছু মার দিতে পারে অনেক দিন জেল হতে পারে । তার শারীরিক নির্যাতনের নমুনা একটু দেখি চলুন ।
২ তলা বিল্ডিং এর উপর থেকে কয়েকবার নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছে যাতে তার কমরের হাড্ডি ভেঙ্গে যায় ।
হাতের আঙ্গুলের নখ উঠিয়ে ফেলা হয় ।
নির্যাতনে তারেক রহমানের মেরুদণ্ডের ৬ ও ৭ নম্বর হাড় ভেঙে গেছে। মেরুদণ্ডের ৩৩টি হাড়ের দূরত্ব কমে গেছে ।
হাসপাতালের প্রিজন সেলে টয়লেটে পড়ে গিয়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি (একটা মানুষ কোন অবস্থায় থাকলে টয়লেটে পড়ে যায় সবাই বুজতে পারছেন )
মেরুদণ্ডের ভেঙে যাওয়া হাড়টা জোড়া লেগেছে বাঁকা হয়ে। ডাক্তাররা বলেছেন, সম্পূর্ণ আরোগ্য কখনওই সম্ভব নয়। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ফিজিওথেরাপি নেন। আরও চিকিতৎসা দরকার।
জিজ্ঞাসাবাদের নামে রিমান্ডে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চোখ বেঁধে (২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা) তারেক রহমানকে নিগৃহীত করা হয়েছে।
আমার বিশ্বাস, একজন নতুন তারেক রহমান তৈরি হচ্ছে। নতুন এক ধরনের অস্মিতাবোধে তার অন্তরাত্মা নতুন করে জাগছে, সে দূরাভাস অস্পষ্ট থাকে না। ৫৫৪ দিনের যন্ত্রণাময় কারাবাস, প্রায় ১৪ মাসের নিভৃত প্রবাস জীবন এই তরুণকে ‘আমি আছি’ ‘আমি যে আমি,’ এই অনুভূতিতেই দাবিয়ে রাখছে। দেশাত্মবোধ, জাতীয়তাবোধ, তৃণমূল রাজনীতির দুর্লভ অভিজ্ঞতার সঙ্গে স্নায়ুবিক অনুভূতি, চাঞ্চল্য, দীর্ঘশ্বাস, অশ্রুপাত, শিহরণ যে রূপে দেখা যায় তাই অস্মিতাবোধ। মেরুদণ্ড ভেঙেছে তারেক রহমানের। কিন্তু মচকাননি। অপরিসীম মনের জোর তার বরাবরের শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধকে এখনও ম্লান করতে পারেনি।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
অমানুষকে নির্যাতন!