![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
#থাইল্যান্ড_ট্রিপ_২০১৮
#ব্যাংকক #পাতায়া হুয়াহিন
বলা যায় লং ওয়েটেড ভ্যাকেশন ছিলো বউ বাচ্চা নিয়ে! অনেক দিন ধরেই মাথাতে ছিলো কিন্তু সঠিক ট্যুরমেট না থাকলে,
- ট্যুরের ঝামেলা বাড়ে অনেক বেশি,
-মজা কমে অনেক বেশি!
সেই হিসাবে বন্ধু মানিক আর আদনা কাপল ছিলো ট্যুরমেট হিসাবে অসাধারন :3 Same Same মেন্টালিটি বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই।
টিম ওকে হল!
কিন্তু সবার জব থেকে কমন ছুটির সময় বার করা চ্যালেঞ্জিং ছিলো শেষ পর্যন্ত তাও ফাইনাল করে ট্যুরের সময় ঠিক করেছিলাম ফেব্রুয়ারী ২-১১, ২০১৮!
৯ রাত! ১০ দিন -_-
মোটামুটি লম্বা ট্যুর -_-
যদিও আমাদের প্ল্যানে ইন্দোনেশিয়া ও ছিলো কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়াটা মোটামুটি সময় সাপেক্ষ হওয়ার কারনে প্লাস মানিকের ১ বছর বয়সের বাচ্চা আরিশের কারনে তা আমরা স্যাক্রিফাইস করেছিলাম। সো ইন্দো-থাই (বালি-ব্যাংকক-হুয়াইন/ফুকেট) ট্যুর হয়ে গেলো শুধু মাত্র থাই ট্যুর আর এই চান্সে এড হয়ে গেলো পাতায়া -_- প্ল্যান মতে ঘুরেছিলাম পাতায়া, হুয়াইন আর ব্যাংকক।
প্রথমদিন, ফেব্রুয়ারী ২ এ চিটাগাং থেকে ডিরেক্ট ব্যাংকক এ গিয়েছিলাম রিজেন্ট এয়ারে, যেহেতু আমরা চিটাগাং এর মানুষ তাই চিটাগাং থেকে ডিরেক্ট ফ্লাইট এম মাত্র রিজেন্টই আছে। সার্ভিস অসাধারন না হলেও খুব একটা খারাপ না। ভালো ছিলো ওদের সার্ভিস যদিও ফ্লাইট এটেন্ডেন্সের ভাব সাব সেই রকম ছিলো! এজ ইফ সে গেস্ট আর আমরা ফ্লাইট এটেন্ডেন্স -_- হয় তো কোন কারনে তার মুড অফ ছিলো :3 ব্যাপার না! খাওয়ার মান খারাপ ছিলো না, রাইস, চিকেন, আর অল্প ভেজিটেবল ছিলো মিল হিসাবে। প্লাস ডেজার্ট হিসাবে মিস্টি ছিলো, কফি ছিলো। দুই পরিবারের সাথেই বাচ্চা ছিলো দেখে আমরা এয়ারপোর্টে নেমেই সিম কিনেছিলাম, এয়ারপোর্ট হওয়ার কারনে এক্সপেন্সিভ ছিলো, প্রতিটি সিম ছিলো ৬০০ বাথ। ৫০ বাত টক টাইম ছিলো সাথে ১০ গিগা 4G ইন্টারনেট।
** ভিসা প্রসেসিং সময় লেগেছিলো ৫ কর্মদিবস
** টিকেট ছিলো পার হেড ২২৮০০ টাকা [চিটাগাং - ব্যাংকক - চিটাগাং]
** মোবাইল সিম নিয়েছিলাম TrueMove, প্রতি সিম ৬০০ বাথ।
ফ্লাইট অন টাইম ছিলো! ঠিকনঠাক সময়েই ব্যাংকক পৌছালাম! ট্রাভেল টাইম ২ ঘন্টা। একটা কার (কার টাইপ ভ্যান ছিলো, পেছনে ব্যাগেজ রাখার জন্য সাফেসিয়ান্ট জায়গা ছিলো, যেহেতু দুই ফ্যামিলি বাচ্চা সহ তাই ব্যাগ বেশি ছিলো আমাদের) একটা ভাড়া করে পাতায়াও গেলাম কোন প্রকার সমস্যা ছাড়া, পাতায়াতে হোটেল ছিলো Best Beach Hotel! আমাদের জন্য ভালো ছিলো, সার্ভিস ভালো ছিলো, সাগরের কাছেই ছিল। পরিষ্কার পরিচ্ছন ছিলো, আশে পাশের নাইট লাইফ ও জাক জমক পূর্ন ছিলো।
** ব্যাংকক টু পাতায়া গাড়ি ভাড়া ছিলো ২৩০০ বাথ।
আমাদের আগে থেকেই মাথাতে ছিলো আমরা প্রচুর হাটবো! বাংলাদেশে যেই জিনিষটা আমরা মিস করি বা এভয়েড করি, হাটতে হাটতে ঘোরা! এভারেজে প্রতিদিন আমাদের হাটা পরেছিলো ৭-১২ কিলোমিটার করে! -_-
পাতায়াতে ঘুরেছিলাম Coral Islam আর Nong Noch Garden.
কোরাল আই ল্যান্ড ভালো ছিলো, কিন্তু আফসো হয়েছে তারা সামান্য বিচ নিয়ে যা বিজনেস করছে আমরা এতো এতো বিচ নিয়েও বাল্ডাও করতে পারছি না! কক্সবাজারের তুলনায় ওদের প্রতিটা বিচ এই কক্সবাজারের বিচের বিচির বাচ্চা থেকেও ছোট >_< আগেও বলেছিলাম আবারো বলছি ট্যুরিজম থেকে কেমন করে টাকা ইঙ্কাম করা যায় তা থাইল্যান্ড থেকে শেখার আছে অনেক। প্যাকেজের আওয়াতেয় নানান ধরনের এক্টিভিটি আছে কোরালে।
** ফেরি ঘাট থেকে ছোট লঞ্চ টাইপ শীপে ভাড়া পরেছিলো পার হেড ৩০ বাথ। শীপ থেকে নেমে আপনি চাইলে বাইক ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন। যেহেতু ভাড়া করি নাই তাই ডিটেইলস জানি না যতদুর দেখেছিলাম ৪০০ বাথ ভাড়া ছিলো বাইকের! সময়টা খেয়াল করি নাই। সময় লাগে ৩০ মিনিট।
** আমার জানা মতে সকাল ৯ টায় একটা শীপ, ১০ টা তে একটা শীপ যায় কোরালে, ব্যাক করার সময় মনে হয় ৩ টা, ৪ টা! এর মাঝে আর আছে নাকি শিয়র না।
ওয়েল NongNochGarden হতে যাচ্ছে পাতায়ার অসাধারন এক সৃষ্টি! পুরো কাজ এখনো শেষ না হলেও এখন পর্যন্ত যা হয়েছে এক কথায় অসাধারন! কি যে বানাচ্ছে ওরা! পাতায়া গেলে অবশ্যই যাওয়ার জন্য রিকমেন্ড করবো। বাচ্চাদের অনেক ভালো লাগবে সাথে করে বুড়োদের ছবি তোলার জন্যই জোস জায়গা। টিকেটের ব্যাপার স্যাপারে ট্রিক আছে তাই গেলে আগে খোজ খবর নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু যাওয়া উচিত অবশ্যই, আর ফ্যামিলি হলে মাস্ট।
** পাতায়া সিটি থেকে যেতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট, কার ভাড়া পরেছিলো ৩০০ বাথ! আমরা কমে পেয়েছিলিলাম, নরমালী ৫০০ বাথ, কিন্তু পরে বুঝতে পেরেছিলাম ক্যাব ড্রাইভার কেন আমাদের থেকে কম নিয়েছিলো কারন ও যখন জানসে আমরা NongNoch Garden এর টিকেট করি নাই সেই চান্সটা ও নিয়েছে আর টিকেট থেকে ভালোই কমিশন পেয়েছিলো! -_- পরে বুঝতে পেরেছি!! এই কমিশন বিজনেসের সাথে অথোরিটিও জড়িত কারন ওরা আমাদের টিকেট প্রাইস বাড়তিটাই দেখিয়েছিলো। আমাদের পার হেড পরেছিলো এডাল্ট বাথ।
Walking Street এর ব্যাপারে অনেক শুনেছি আগে! গিয়েছিলাম রাতের পিক টাইমে আর সকালের অফ পিক টাইমেও! রাতের Walking Street আর দিনের Walking Street কোন ভাবেই মেলানো যাবে না -_- দিনের টা দেখলে মনে হবে কেউ বুঝি পারোমানবিক বোমা মাইরা দিনের Wallking Street বানাই দিসে -_- ওয়াকিং স্ট্রিটের ব্যাপারে অনেকে অনেক কিছু জানেন তাই বিস্তারিত না গেলাম -_-
পাতায়া পর্ব শেষ করে গেলাম হুয়া হিন!! হুয়া হিন এ একটা সময় পাতায়া থেকে গাড়িতে যেতে সময় লাগতো ৫-৬ ঘন্টা! বেশ লম্বা জার্নি ছিলো কিন্তু এক বছরের মত হল পাতায়া থেকে হুয়া হিন এর জাহাজ সার্ভিস এড হয়েছে। সময় মাত্র ২.৫ ঘন্টা কিন্তু টিকেট বেশ এক্সপেন্সিভ লাইক পার হেড ১২০০ বাত! অনেক অনেক! জাহাজ ভালো ছিলো সার্ভিস ও ভালো ছিলো কিন্তু জার্নিটা মোটামুটি বেশ ডিভিকাল্ট যাদের বোমিটিং প্রব্লেম আছে! স্পেশালি বাচ্চাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং এজ ওয়েল এজ বুড়োদের জন্যও -_- অনেকেই বোমি করেছে! আমার ৪ বছরের ছেলে সাফোয়ানের ও অনেক কষ্ট হয়েছিলো থ্যাংস গড বোমি ছাড়াই জার্নি শেষ করেছিলো, আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিলো সাফোয়ানকে রিল্যাক্স ফিল করানো জন্য দেড় ঘন্টা কোলে রেখে ঘুমে রাখা! বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো আমার জন্য! মোট জার্নি ছিলো আড়াই ঘন্টা!! হুয়াহিন আর পাতায়ার কমন ব্যাপার হল সাগর! আর অপজিট ব্যাপার হল নাইট লাইফ! হুয়াহিন পুরো ঠান্ডা এক শহর আর আমাদের প্ল্যানে রিল্যাক্স ভাবে কাটানোর জন্য তাই এটাই চয়েজ ছিলো উইত এক্সিলেন্ট রিজোট! সারা জীবন মনে থাকার মত একটা রিজোট হল হুয়াইন এর Haven Resort! ছোট কিন্তু অসাধারন উইত অল ফাইভ স্টার ফ্যাসিলিটি! প্রতিটা জিনিশ এতো এতো অসাধারন! ডে ভিউ নাইট ভিউ ফুড সব ক্লাস! দুইটা দিন বেশ ভালো কেটেছিলো হুয়াইনের ঠান্ডা পরিবেশে! একেবারে সাগরের সাথে লাগানো সাথে ইনফিনিটি পুল!উফফফফ
পরের দিন হুয়াহিন থেকে দুপুরের পরে রওনা করেছিলাম ব্যাংককের দিকে! ব্যাংকক অনেকের কাছে অপছন্দের হলেও ব্যাংকক মেয়েদের কাছে সব সময় হেভেন! বন্ধু মানিক আর আমার কাছে হুয়াহিন এর হেভেন রিজোর্টটা হেভেন মনে হলেও সাথী আর আদনার কাছে ব্যাংককই হ্যাভেন লাগে তাদের পুরোনো এক্সপেরিয়ান্স থেকে -_- রিজনটা আর নাই বললাম! ব্যাংককে ছিলাম ৫ রাত -_- সুকুম্ভিতের সই ১১ এর গ্র্যান্ড প্রেসিডেন্ট হোটেলকে বাসা বাড়ি বানাই ফেলসিলাম আমরা -_- অনেক আশাও ছিলো এই হোটেলই নিয়ে কিন্তু পুরো হতাশ হয়েছি এই হোটেলের সার্ভিস আর ফ্যাসিলিটি দেখে পাতায়া আর হুয়া হিন এর তুলনায় পুরাই ফালতু ছিলো! আর এই হোটেলের স্টাফস আর বাকি বয় বাবুর্চি ছাড়া সব মনে হয় বাংলাদেশি! সব বলতে ট্যুরিস্ট সব! :O এতো এতো বাংলাদেশি -_-উপর নিচে ডাইনে পিছে সব বাংলাদেশি -_-
খাওয়া দাওয়ার জন্য ব্যাংককে অনেক বাংলাদেশি হোটেল আছে, কিন্তু খাওয়া এক্সপেন্সিভ মনে হয়েছে অনেক, ওভার অল ম্যাকডোনাল্ড, কে এফ সি, বার্গার কিং এই সবের উপরেই বেচেছিলাম।
ব্যাংককে ঘুরাঘুরি বলতে মার্কেট মার্কেট আর মার্কেট -_- ফাকে ফুকে অবশ্য ঘুরেছিলাম সাফারি ওয়ার্ল্ড, ড্রিমল্যান্ড -_-
ওভার অল বেশ ভালো একটা ট্রিট ছিলো! ভাল্লাগসে।
আর একটা কথা! থাইল্যান্ড আর থাইল্যান্ড নাই! থাইল্যান্ড বাংলাদেশ হয়ে গেছে! জাস্ট খরচা আর খরচা -_- সব কিছু বাংলাদেশের মত দামি দামি!!
©somewhere in net ltd.