নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সজীব রকিবুল ইসলাম

সাধারন একজন মানুষ

সজীব রকিবুল ইসলাম

খুবই সিম্পল আর সাধারন একজন মানুষ

সজীব রকিবুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রমন কাহিনীঃ টাঙ্গুয়ার হাওড়। সুনামগঞ্জ

০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৩০

ভ্রমন কাহিনীঃ টাঙ্গুয়ার হাওড়।

অনেকদিন ধরেই প্ল্যান ছিলো টাঙ্গুরের হাওড় যাবো, অনেক দিন না বলে অনেক বছর বলা উচিত। কিন্তু এবার যাবো এমন কোন প্ল্যান বা সুযোগই ছিলো না, কোথাও যাওয়ার আগে নরমালী স্টাডি করি, কিন্তু টাঙ্গুরের হাওড়েরে ব্যাপারে কোন স্টাডিই করি নাই -_- মানে কোন প্ল্যান ছিলো না, ইচ্ছা ছিলো সিলেট যাবো, ছোট দুই ভাই আরিফ আর শামিমকে বলার সাথে সাথে রাজী হয়ে গেলো ওরা, আরিফ টিকেট করেছিলো সিলেটের। যেই দিন আমাদের বাস সেই দিন দুপুর ২ টার দিকে শামিম আর আমি ফাইনাল করি সিলেট না সুনামগঞ্জ যাবো :3 শুরু হয়ে গেলো শামিমের বোট ক্যাম্পেন এর প্রস্তুতি! বেচারা দুপুর থেকে বাস ছাড়ার আগ পর্যন্ত দৌড়ের উপরই ছিলো। আরিফ তার অফিস ছুটির পর সন্ধার দিকে এনা পরিবহনের কাউন্টারে ১০০ টাকা ঘুষ দিয়ে টিকেট চেঞ্জ করে -_- তখনই আমরা ১০০% নিশ্চিত হই আমরা সুনামগঞ্জ যাচ্ছি :3 :3

বলছিলাম বছর খানেক আগে টাঙ্গুয়ার হাওড়ে যাওয়ার গল্প, মনে হল আমার এই ভ্রমন কাহিনী থেকে একজন মানুষ ও যদি ইনেস্পায়ার হয় জায়গা গুলোতে যাওয়ার ব্যাপারে আমার লিখা সার্থক হবে। ট্যুরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলছি, একটু বড় লিখা, অনেকে বিরক্ত হতে পারেন, ক্ষমা সুন্দর ভাবে দেখবেন।

বাস ছাড়লো রাত ১১ঃ২০ এ উত্তরা থেকে,

** মিরপুর থেকে উত্তরা এনা বাস কাউন্টার সি এন জি তে ভাড়াঃ ২৫০ টাকা

ওয়েল এনা পরিবহনের বাস ড্রাইভারের ড্রাইভিং দেখে যে কেউ বলবে উনি NFS Game এর স্টেজ সব রিয়েল লাইফে কমপ্লিট করেই এনা পরিবহনের ড্রাইভার হয়েছেন -_- মারে মা কি স্পিড! ওয়েল এনা পরিবহনের সব ড্রাইভারই যে এমন তা আজকে ব্যাক করার সময় নিশ্চিত হলাম -_- ভয়াবহ ড্রাইভিং -_- কাউকে রিকমেন্ড করবো না। -_-

** ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জের বাস ভাড়াঃ ৫৫০ টাকা
** যাত্রা বিরতীতে পচা খিচুড়ি খেলে ১৮০ টাকা

আমরা সুনামগঞ্জের নতুন ব্রীজে পৌছালাম আনুমানিক ৬ টার দিকে! বাস থেকে নামে ঘন্টা খানেক আগে থেকেই ঝুম বৃষ্টি! মনটা অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিলো ! ধরা খেলাম নাকি !! বাস থেকে নেমেই কনফিউসড ছিলাম তাহেরপুরে যাবো কিসে করে?

- সিএনজি?
- টেম্পু?

দুইটা বাদ বিচার করে আমাদের তিনজনের জন্য বেটার চয়েজ হল পার হেড ১০০ করে ৫ জনের বসার সিট ক্যাপাসিটির সিএনজি। ৫০০ টাকাতে ভাড়া করে নিলাম, যেতে প্রচন্ড বৃষ্টি! পর্দা টেনে টুনে বসেও রক্ষা নাই! মোটেমুটি ভালোই ভিজেছিলাম! তবে বেশি কষ্ট করতে হয় নাই ৩০ মিনিটেই শেষ আর তার পরক্ষনে আস্তে আস্তে বার হতে লাগলো সুনামগঞ্জ থেজে পিচ ঢালা রাস্তার দুপাশে হাওড়, খোলা জায়গা আর পাহাড়ের সৌন্দর্য্য! অসাধারন লেগেছিলো, তাহিরপুর পৌছাতে দেড় ঘন্টার মত লেগেছিলো!

** সুনামগঞ্জ নতুন ব্রীজ থেকে তাহিরপুর সিএনজি পার হেড় ১০০ টাকা, পুরাটা রিজার্ভ ৫০০ টাকা

তাহিরপুর পৌছিয়ে নাস্তা করে নিলাম বাজারে, হোটেলের মান মোটেই ভালো লাগে নাই কিন্তু খেতে হবে দেখে খেয়েছি, দাম তেমন একটা বেশি না, পরোটা, ডাল, চা, পানি খেয়েছিলাম।

** নাস্তা পার হেড ৪০ টাকার মত

নাস্তা পানি খেয়েই মিশন নৌকা ভাড়া করা। ওরা বেশ স্ট্রং সিন্ডিকেট! হিসেব কিতেব করেই নৌকা ঠিক করতে হবে, বেস্ট হয়ে হল সবাই না গিয়ে চালাক চতুর একজন আলাদা গিয়ে কথা বলে মুলা মুলি করা। আমরা দুইজন ব্যাগ নিয়ে বাজারে অপেক্ষা করছিলাম আর শামিম গিয়ে একটা নৌকা ফাইনাল করলো অনেক কষ্টে! সকাল ৯ টা থেকে পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত! আমাদের তিনজনের জন্য মোটামুটি ছিলো! হিসেব করে দেখলাম ৫ জন ও ওকে চেপে চুপে থাকার জন্য! কিন্তু মাঝি অবশ্য বলেছে আগের দিন নাকি ৯ জন ছিলো -_- কেমনে ছিলো আল্লাহ মালুম! ওয়েল থাকাও যেতে পারে!

** দুই দিনের নৌকা ভাড়া ছিলো ৩৫০০ টাকা, কাভার করার কথা হাওড়, ওয়াচ টাওয়ার, বারেকের টিলা, নীলাদ্রী, যাদুকাটা নদী।

ওয়েল টুরের ব্যাপারে আসি, আমার জন্য আর আরিফের জন্য ক্যাম্পিং প্রথম হলেও শামিমের জন্য বেশ পুরোনো, আর ও যে এক্সপার্ট তার কাজ কর্মেই বোঝা গেলো! পোর্টেবল চুলা থেকে শুরু করে হেনো কিছু নাই যে ও জানে না ক্যাম্পিং রিলেটেড -_- বেস্ট পার্ট ওয়াজ তার বানানো নাস্তা আমরা নৌকাতেই করেছি, কফি খেয়েছি! অসাধারন ফিলিংস ছিলো, ব্যাড লাক যে হাওড়ে রাত কাটিয়েও আমরা বর্শি বেয়েও মাছ ধরতে পারি নাই -_- আমাদের ভ্রমন কাহিনী আসলে লিখে শেষ করা যাবে না, স্পেশালি, বোটে রান্না করা, টয়লেট করা -_- সব আমাদের জন্য নতুন ছিলো -_- যদিও টয়লেট আমি করি না আমি বাইরে ম্যানেজ করসি।


ব্যাক করার সময় আমরা মিয়ার চর থেকে সুনামগঞ্জে বাস কাউন্টারে ব্যাক করেছিলাম, ঢাকাতে দিনের বেলায় ব্যাক করতে চাইলে শেষ বাস আড়াইটা তে, আর রাতের দিকে বাস আছে মনে হয় ১০ টার পর থেকে, শিয়র না। মিয়ারচর থেকে সুনামগঞ্জ বাস কাউন্টার পর্যন্ত সি এন জি ভাড়া ৪০০ টাকা রিজার্ভ পরেছিলো।

** মিয়ারচর থেকে সুনামগঞ্জ সি এন জি পার হেড ৮০ টাকা, সময় লাগবে ৩০ – ৪০ মিনিটের মত।

প্রথমবার যাওয়ার পর এতো অসাধারন লেগেছে যে হাওড়ের মাঝে নৌকাতে রাত্রী যাপন তাই বছর ঘুরতে না ঘুরতে আবার গিয়েছিলাম। আমার জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি নৌকাতে রাত্রীযাপন।

ধন্যবাদ ধোর্য্য নিয়ে পুরোটা পড়ার জন্য।

আরো কিছু ছবিঃ

প্রথম এল্বামঃ

https://www.facebook.com/shozib.rokibulislam/media_set?set=a.10213054069971706.1073741914.1391681701&type=3

দ্বিতীয় এল্বামঃ

https://www.facebook.com/shozib.rokibulislam/media_set?set=a.10209790802312054.1073741901.1391681701&type=3

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৩৬

শামচুল হক বলেছেন: ভালো লাগল ছবি এবং ভ্রমণ কাহিনী।

২| ০৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ছবি গুলো খুব সুন্দর হয়ে গেছে।

৩| ০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:২৭

সুমন কর বলেছেন: ভালো পোস্ট। পরিপূর্ণ। নিরাপত্তা কেমন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.