| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবোল তাবোল - সুকুমার রায়
মেঘ মুলুকে ঝাপ্সা রাতে,
রামধনুকের আব্ছায়াতে,
তাল বেতালে খেয়াল সুরে,
তান ধরেছি কন্ঠ পুরে।
হেথায় নিষেধ নাইরে দাদা,
নাইরে বাঁধন নাইরে বাধা।
হেথায় রঙিন্ আকাশতলে
স্বপন দোলা হাওয়ায় দোলে,
সুরের নেশায় ঝরনা ছোটে,
আকাশ কুসুম আপনি ফোটে,
রঙিয়ে আকাশ, রঙিয়ে মন
চমক জাগে ক্ষণে ক্ষণে।
আজকে দাদা যাবার আগে
বল্ব যা মোর চিত্তে লাগে_
নাই বা তাহার অর্থ হোক্
নাইবা বুঝুক বেবাক্ লোক।
আপনাকে আজ আপন হতে
ভাসিয়ে দিলাম খেয়াল স্রোতে।
ছুট্লে কথা থামায় কে?
আজকে ঠেকায় আমায় কে?
আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ তব্লা বাজে_
রাম-খটাখট ঘ্যাচাং ঘঁ্যাচ্
কথায় কাটে কথায় পঁ্যাচ্ ।
আলোয় ঢাকা অন্ধকার,
ঘন্টা বাজে গন্ধে তার।
গোপন প্রাণে স্বপন দূত,
মঞ্চে নাচেন পঞ্চ ভুত!
হ্যাংলা হাতী চ্যাং দোলা,
শূন্যে তাদের ঠ্যাং তোলা!
মক্ষিরাণী পক্ষিরাজ_
দস্যি ছেলে লক্ষ্মী আজ!
আদিম কালের চাঁদিম হিম
তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম।
ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর,
গানের পালা সাঙ্গ মোর।
২|
২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫
মাধবী বলেছেন: অসম্ভব নয়! -সুকুমার রায়
এক যে ছিল সাহেব, তাহার
গুণের মধ্যে নাকের বাহার।
তার যে গাধা বাহন, সেটা
যেমন পেটুক তেমনি ঢ্যাঁটা।
ডাইনে বল্লে যায় সে বামে
তিন পা যেতে দুবার থামে ।
চল্তে চল্তে থেকে থেকে
খানায় খন্দে পড়ে বেঁকে।
ব্যাপার দেখে এম্নিতরো
সাহেব বললে সবুর করো_
মাম্দোবাজি আমার কাছে?
এ রোগেরও ওষুধ আছে।"
এই না বলে ভীষন েেপ
গাধার পিঠে বস্ল চেপে
মুলোর ঝুটি ঝুলিয়ে নাকে
আর কি গাধা ঝিমিয়ে থাকে?
মুলোর গন্ধে টগবগিয়ে
দৌড়ে চলে লম্ফ দিয়ে_
যতই ছোটে 'ধরব' ব'লে
ততই মুলো এগিয়ে চলে !
খাবার লোভে উদাস প্রাণে
কেবল ছোটে মুলোর টানে _
ডাইনে বাঁয়ে মুলোর তালে
ফেরেন গাধা নাকের চালে।
৩|
২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১১:০৫
হযবরল বলেছেন: মাধবী এই সাইটে গেলে প্রচুর সুকুমার পাইবা
http://tinyurl.com/f764m
Keep it up
৪|
২৫ শে মে, ২০০৬ বিকাল ৫:০৫
মাধবী বলেছেন: থ্যাংকস, হযবরল!
৫|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: জীবনের হিসাব -সুকুমার রায়
বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে
মাঝিরে কন , "বলতে পারিস্ সূর্যি কেন ওঠে?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?"
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যাল্ফেলিয়ে হাসে।
্বাবু বলেন, "সারা জনম মরলিরে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি!"
খানিক বাদে কহেন বাবু ,"বলত দেখি ভেবে
নদীর ধারা কেম্নে আসে পাহাড় হতে নেবে?
বল্ত কেন লবনপোরা সাগরভরা পানি?"
মাঝি সে কয় ,"আরে মশাই , অত কি আর জানি?"
বাবু বলেন , "এই বয়সে জানিসনেও তাকি?
জীবনটা তোর নেহাৎ খেলো , অষ্ট আনাই ফাকি।"
আবার ভেবে কহেন বাবু ,"বলতো ওরে বুড়ো,
কেন এমন নীল দেখা যায় আকাশের ঐ চুড়ো?
বল্ত দেখি সূর্য চাঁদে গ্রহণ লাগে কেন?"
বৃদ্ধ বলে, "আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন?"
বাবু বলেন, "বলব কি আর, বলব তোরে কি তা, _
দেখছি এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।"
খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে,
বাবু দেখেন নৌকাখানি ডুব্ল বুঝি দুলে।
মাঝিরে কন, "একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি,
ডুব্ল নাকি নৌকো এবার ? মরব নাকি আজি?"
মাঝি শুধায়, "সাঁতার জানো? মাথা নাড়েন বাবু"
মুর্খ মাঝি বলে, "মশাই , এখন কেন কাবু?
বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব কারো পিছে,
তোমার দেখি জীবনখানা ষোল আনাই মিছে।"
৬|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: আশ্চর্য ! -সুকুমার রায়
নিরীহ কলম, নিরীহ কালি,
নিরীহ কাগজে লিখিল গালি_
"বাঁদর বেকুব আজব হাঁদা
বকাট্ ফাজিল অকাট্ গাধা।"
আবার লিখিল কলম ধরি
বচন মিষ্টি, যতন করি_
"শান্ত মানিক শিষ্ট সাধু
বাছারে, ধনরে, লক্ষ্মী যাদু।"
মনের কথাটি ছিল যে মনে,
রটিয়া উঠিল খাতার কোণে,
আঁচড়ে আঁকিতে আখর ক'টি
কেহ খুশী, কেহ উঠিল চটি!
রকম রকম কালির টানে
কারো হাসি কারো অশ্রু আনে,
মারে না, ধরে না, হাঁকে না বুলি
লোক হাসে কাঁদে কি দেখি ভুলি?
সাদায় কালোয়া কি খেলা জানে?
ভাবিয়া ভাবিয়া না পাই মানে।
৭|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: নিরুপায় -সুকুমার রায়
বসি বছরের পয়লা তারিখে
মনের খাতায় রাখিলাম লিখে_
"সহজ উদরে ধরিবে যেটুক্,
সেইটুকু খাব হব না পেটুক।"
মাস দুই যেতে খাতা খুলে দেখি,
এরি মাঝে মন লিখিয়াছে একি!
লিখিয়াছে "যদি নেমন্তন্নে
কেঁদে ওঠে প্রাণ লুচির জন্যে,
উচিত হবে কি কাঁদান তাহারে ?
কিম্বা যখন বিপুল আহারে ,
তেড়ে দেয় পাতে পোলাও কালিয়া
পায়েস অথবা রাবড়ি ঢালিয়া_
তখন কি করি, আমি নিরূপায়!
তাড়াতে না পারি, বলি আয় আয়,
ঢুকে আয় মুখে দুয়ার ঠেলিয়া
উদার রয়েছি উদর মেলিয়া!"
৮|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: হিতে _বিপরীত ঃ সুকুমার রায়
ওরে ছাগল, বল্ত আগে
সুড় সুড়িটা কেমন লাগে?
কই গেল তোর জারিজুরি
লম্ফঝম্ফ বাহাদুরি।
নিত্যি যে তুই আসতি তেড়ে
শিং নেড়ে আর দাড়ি নেড়ে,
ওরে ছাগল করবি রে কি?
গুঁতোবি তো আয়না দেখি।
হাঁ হাঁ হাঁ, এ কেমন কথা ?
এমন ধারা অভদ্রতা!
শান্ত যারা ইতরপ্রাণী,
তাদের পরে চোখরাঙানি!
ঠান্ডা মেজাজ কয় না কিছু,
লাগতে গেছে তারই পিছু?
শিার তোদের এম্মিতর
ছি_ছি_ছি! লজ্জা বড়।
ছাগল ভাবে সামনে একি!
একটুখানি গুতিয়ে দেখি।
গুতোর চোটে ধড়াধ্বড়
হুড়মুড়িয়ে ধুলোয় পড়।
তবে রে পাজি লক্ষ্মীছাড়া,
আমার পরেই বিদ্যেঝড়া,
পাত্রাপাত্র নাই কিরে হুঁশ্
দে দমাদম ধুপুস্ ধুাপুস্।
৯|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: নন্দগুপি -সুকুমার রায়
হঠাৎ কেন দুপুর রোদে চাদর দিয়ে মুড়ি,
চোরের মত নন্দগোপাল চল্ছে গুড়ি গুড়ি?
লুকিয়ে বুঝি মুখোশখানা রাখছে চুপি চুপি?
আজকে রাতে অন্ধকারে টেরটা পাবেন গুপি।
আয়না হাতে দাঁড়িয়ে গুপি হাসছে কেন খালি?
বিকট রকম পোশাক করে মাখ্ছে মুখে কালি!
এম্মি করে লম্ফ দিয়ে ভেংচি যখন দেবে
নন্দ কেমন আঁৎকে যাবে _ হাস্ছে সে তাই ভেবে।
আঁধার রাতে পাতার ফাঁকে ভূতের মতন কেরে?
ফন্দি এঁটে নন্দগোপাল মুখোশ মুখে ফেরে!
কোথায় গুপি, আসুক না সে ইদিক্ পানে ঘুরে_
নন্দদাদার হুঙ্কারে তার প্রাণটি যাবে উড়ে।
হেথায় কেরে মূর্তি ভীষণ মুখটি ভরা গোঁফে?
চিমটে হাতে জংলা গুপি বেড়ায় ঝাড়ে ঝোপে!
নন্দ যখন বাড়ির পথে আসবে গাছের আড়ে,
"মার্ মার্ মার্ কাট্রে" বলে পড়বে তাহার ঘাড়ে
নন্দ চলেন এক পা দু পা আস্তে ধীরে গতি,
টিপ্টিপিয়ে চলেন গুপি সাবধানেতে অতি_
মোড়ের মুখে ঝোপের কাছে মার্তে গিয়ে উকি
দুই সোয়ান এক্কেবারে হঠাৎ মুখোমুখি!
নন্দ তখন ফন্দি ফাঁদন কোথায় গেলে ভুলি
কোথায় গেল গুপির মুখে মার মার মার বুলি।
নন্দ পড়েন দাঁতকপাটি মুখোশ টুখোশ ছেড়ে
গুপির গায়ে জ্বরটি এল কম্প দিয়ে তেড়ে
গ্রামের লোকে দৌড়ে তখন বদ্যি আনে ডেকে,
কেউ বা নাচে কেউ বা কাঁদে রকম সকম দেখে।
নন্দগুপির মন্দ কপাল এমন ঞল শেষে,
দেখ্লে তাদের লুটোপুটি সবাই মেরে হেসে।
১০|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: বর্ষ শেষ -সুকুমার রায়
শুনে রে আজব কথা, শুন বলি ভাই রে_
বছরের আয়ু দেখ বেশিদিন নাই রে।
ফেলে দিয়ে পুরাতন জীর্ণ এ খোলসে
নতুন বরষ আসে, কোথা হতে বল সে!
কবে যে দিয়েছে চাবি জগতের যন্ত্রে!
সেই দমে আজ চলে না জানি কি মন্ত্রে!
পাকে পাকে দিনরাত ফিরে আসে বার বার ।
ফিরে আসে মাস ঋতু _এ কেমন কারবার।
কোথা আসে কোথা যায় নাহি কোন উদ্দেশ,
হেসে খেলে ভেসে যায় কত দুর দুর দেশ।
রবি যায় শশী যায় গ্রহ তারা সব যায়,
বিনা কাঁটা কম্পাসে বিনা কলকব্জায় ।
ঘুর পাকে ঘুরে চলে ,চলে কত ছন্দে,
তালে তালে হেলে দুলে চলে রে আনন্দে।
১১|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: বর্ষার কবিতা -সুকুমার রায়
কাগজ কলম লয়ে বসিয়াছি সদ্য,
আষাঢ়ে লিখিতে হবে বরষার পদ্য।
কি যে লিখি কি যে লিখি ভাবিয়া না পাই রে
হতাশে বসিয়া তাই চেয়ে থাকি বাইরে।
সারাদিন ঘনঘটা কালো মেঘ আকাশে,
ভিজে ভিজে পৃথিবীর মুখ খানা ফ্যাকাশে।
বিনা কাজে ঘরে বাঁধা কেটে যায় বেলাটা,
মাটি হল ছেলেদের ফুটবল খেলাটা।
আপিসের বাবুদের মুখে নাই ফুর্তি,
ছাতা কাঁধে জুতা হাতে ভ্যাবাচ্যাকা মূর্তি।
কোনখানে হাটু জল কোথা ঘন কর্দম_
চলিতে পিছল পথে পড়ে লোকে হর্দম।
ব্যাঙেদের মহাসভা আহাদে গদ্গদ্,
গান করে সারারাত অতিশয় বদ্খদ্।
১২|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: গ্রীষ্ম - সুকুমার রায়
ঐ এল বৈশাখ, ঐ নামে গ্রীস্ম,
খাইখাই রবে যেন ভয়ে কাঁপে বিশ্ব!
চোখে যেন দেখি তার ধুলিমাখা অঙ্গ,
বিকট কুটিলজটে ভ্রুকুটির ভঙ্গ,
রোদে রাঙা দুই আখি শুকায়েছে কোটরে,
ুধার আগুন যেন জ্বলে তার জঠরে!
মনে হয় বুঝি তার নিঃশ্বাস মাত্রে
তেড়ে আসে পালাজ্বর পৃথিবীর গাত্রে!
ভয় লাগে হয় বুঝি ত্রিভুবন ভষ্ম_
ওরে ভাই ভয় নাই পাকে ফল শস্য!
তপ্ত ভীষণ চুলা জ্বালি নিজ ব ে
পৃথিবী বসেছে পাকে, চেয়ে দেখ চ,ে_
আম পাকে, জাম পাকে , ফল পাকে কত যে,
বুদ্ধি যে পাকে কত ছেলেদের মগজে!
১৩|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬
মাধবী বলেছেন: শ্রাবণে -সুকুমার রায়
জল ঝরে জল ঝরে সারাদিন সারারাত_
অফুরান নাম্তায় বাদলের ধারাপাত।
আকাশের মুখ ঢাকা, ধোঁয়ামাখা চারিধার,
পৃথিবীর ছাত পিটে ঝমাঝম্ বারিধার,
স্নান করে গাছপালা প্রাণখোলা বরষায়,
নদীনালা ঘোলাজল ভরে ওঠে ভরসায়।
উৎসব ঘনঘোর উম্মাদ শ্রাবণের
শেষ নাই শেষ নাই বরষার প্লাবনের।
জলে জলে জলময় দশদিক্ টলমল্,
অবিরাম একই গান, ঢালো জল, ঢালো জল।
ধুয়ে যায় যত তাপ জর্জর গ্রীষ্মের,
ধুয়ে যায় রৌদ্রের স্মৃতিটুকু বিশ্বের।
শুধু যেন বাজে কোথা নিঃঝুম ধুক্ধুক্.
ধরণীর আশাভয় ধরণীর সুখদুখ।
১৪|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ২:০৬
মাধবী বলেছেন: নিঃস্বার্থ -সুকুমার রায়
গোপ্লাটা কি হিংসুটে মা! খাবার দিলেম ভাগ করে,
বল্ল নাকো মুখেও কিছু, ফেল্লে ছুঁড়ে রাগ করে ।
জ্যাঠাইমা যে মিঠাই দিলেন "দুই ভায়েতে খাও বলে"_
দশটি ছিল, একটি তাহার চাখতে নিলেম ফাও বলে।
আর যে নটি ভাগ করে তায়, তিন্টে দিলেম গোপ্লাকে_
তবুও কেবল হ্যাংলা ছেলে আমার ভাগেই চোখ রাখে।
বুঝিয়ে বলি, কাদিস্ কেন? তুই যে নেহাত কনিষ্ঠ_
বয়েস বুঝে সাম্লে খাবি _ তা নৈলে হয় অনিষ্ট।
তিনটি বছর তফাৎ মোদের , জ্যায়দা হিসেব গুন্তি তাই,
মোদ্দা আমার ছয়খানি হয়, তিন বছরের তিনটি পাই।
তাও মানে না কেবল কাদে _ স্বার্থপরের শয়তানী _
শেষটা আমায় মেঠাইগুলো খেতেই হল সবখানি।
১৫|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ দুপুর ২:০৬
মাধবী বলেছেন: বর্ষ গেল বর্ষ এল -সুকুমার রায়
বর্ষ গেল বর্ষ এল গ্রীষ্ম এলেন বাড়ি_
পৃথিবী এলেন চক্র দিয়ে এক বছরের পাড়ি।
সত্যিকারের এই পৃথিবী বয়স কেবা জানে,
ল হাজার বছর ধরে চল্ছে একই টানে।
আপন তালে আকাশ পথে আপনি চলে বেগে,
গ্রীষ্মকালের তপ্তরোদে বষর্াকালের মেঘে,
শরৎকালের কান্নাহাসি হাল্কা বাদল হাওয়া,
কুয়াশা - ঘেরা পদর্া ফেলে হিমের আসা যাওয়া_
শীতের শেষে রিক্ত বেশে শূন্য করে ঝুলি,
তার প্রতিশোধ ফুলে ফলে বসন্তে লয় তুলি।
না জানি কোন নেশার ঝোঁকে যুগযুগান্ত ধরে,
ছয়টি্ ঋতুর দ্বারে দ্বারে পাগল হয়ে ঘোরে
না জানি কোন ঘূর্ণিপাকে দিনের পর দিন,
এমন করে ঘোরার তারে নিদ্রাবিরামহীন
কাঁটায় কাঁটায় নিয়ম রাখে লযুগের প্রথা,
না জানি তার চাল চলনের হিসাব রাখে কোথা!
১৬|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ বিকাল ৩:০৬
মাধবী বলেছেন: মূর্খমাছি -সুকুমার রায়
মাকড়সা
সান্ - বাঁধা মোর আঙিনাতে
জাল বুনেছি কাল্কে রাতে ,
ঝুল ঝেড়ে সব সাফ করেছি বাসা।
আয় না মাছি আমার ঘরে,
আরাম পাবি বসলে পরে,
ফরাশ্ পাতা দেখবি কেমন খাসা!
মাছি
থাক্ থাক্ থাক আর বলে না ,
আনকথাতে মন গলে না_
ব্যবসা তোমার সাবার আছে জানা।
ঢুকলে তোমার জালের ঘেরে
কেউ কোনদিন আর কি ফেরে?
বাপের সেথায় ঢুক্তে মোদের মানা।
মাকড়সা
ঘাওয়ায় দোল জালের দোলা
চারদিকে তার জাল্না খোলা
আপ্নি ঘুমে চোখ য়ে আসে জুড়ে!
আয়না হেথা হাত পা ধুয়ে
পাখনা মুড়ে থাক না শুয়ে_
ভন্ ভন্ ভন্, মরবি কেন উড়ে?
মাছি
কাজ নেই মোর দোলায় দুলে,
কোথায় তোমার কথায় ভুলে
প্রাণটা নিয়ে টান পড়ে ভাই শেষে।
তোমার ঘরে ঘুম যদি পায়
সে ঘুম কভু ভাঙ্বে না হায় _
সে ঘুম নাকি এমন সর্বনেশে!
মাকড়সা
মিথ্যে কেন ভাবিস্ মনে?
দেখ্না এসে ঘরের কোণে
ভাঁড়ার ভরা খাবার আছে কত!
দে_টপাটপ ফেলবি মুখে।
মাছি
লোভ দেখালেই ভুলবে ভবি,
ভাবছ আমায় তেমনি লোভী!
মিথ্যে দাদা ভোলাও কেন খালি,
করব কি ছাই ভাড়ার দেখে?
প্রণাম করি আড়াল থেকে_
আজকে তোমার সেই গুড়ে ভাই বালি।
মাকড়সা
নধর কালো বদন ভরে
রুপ যে কত উপচে পড়ে!
অবাক দেখি মুকুটমালা শিরে!
হাজার চোখে মানিক জ্বলে!
ইন্দ্রধনু পাখার তলে!
ছয় পা ফেলে আয় না দেখি ধীরে।
মাছি
মন ফুর্ফুর ফুর্তি নাচে_
একটুখানি যাই না কাছে!
যাই যাই যাই _ বাপরে একি বাধাঁ।
ও দাদা ভাই রক্ষে কর!
ফাঁদ পাতা এ কেমন তরো।
পড়ে হাত পা হল বাঁধা ।
১৭|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ বিকাল ৩:০৬
মাধবী বলেছেন: দুষ্টুলোকের মিষ্টি কথায় -সুকুমার রায়
দুষ্টুলোকের মিষ্টি কথায়
নাচলে লোকের স্বস্তি কোথায়?
এম্মি দশাই তার কপালে লেখে।
কথার পাকে মানুষ মেরে
মাকড়জীবী ঐ যে ফেরে,
গড় করি তার অনেক তফাৎ থেকে।
*বিখ্যাত ইংরাজি কবিতার অনুকরণে
১৮|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ বিকাল ৩:০৬
মাধবী বলেছেন: হারিয়ে পাওয়া -সুকুমার রায়
ঠাকুরদাদার চশমা কোথা?
ওরে গুনশা হাবুল ভোঁতা,
দেখ্না হেথা, দেখ্না হেথা_ খোজ না নিচে গিয়ে।
কই কই কই? কোথায় গেলে?
টেবিল টানো ডেস্কো ঠেল,
ঘরদোর সব উল্টে ফেলে - খোঁচাও লাঠি দিয়ে।
খুজছে মিছে কুজোর পিছে,
জুতোর ফাঁকে, খাটের নিচে,
কেউ বা জোরে পদর্া খিচে _ বিছানা দেখে ঝেড়ে_
লাফিয়ে ঘুরে হাফিয়ে ঘেমে
কান্ত সবে পড়ল থেমে,
ঠাকুরদাদা আপনি নেমে আসেন তেড়েমেড়ে।
বলেন রেগে, "চশমাটা কি
ঠ্যাং গজিয়ে ভাগল নাকি
খোঁজার নামে কেবল ফাঁকি _ দেখছি আমি এসে!"
যেমন বলা দারুন রোষে
কপাল থেকে অম্মি খসে
চশমা পড়ে তক্তপোশে _ সবাই ওঠে হেসে!
১৯|
০৪ ঠা জুন, ২০০৬ বিকাল ৩:০৬
মাধবী বলেছেন: দাদা গো দাদা -সুকুমার রায়
দাদা গো দাদা, সত্যি তোমার সুরগুলো খুব খেলে!
এম্নি মিঠে - ঠিক যেন কেউ গুড় দিয়েছে ঢেলে!
দাদা গো দাদা, এমন খাসা কন্ঠ কোথায় পেলে?
এই খেলে যা ! গান শোনাতে আমার কাছেই এলে?
দাদা গো দাদা, পায়ে পড়ি তোর ভয় পেয়ে যায় ছেলে_
গাইবে যদি ঐখেনে গাও, ঐ দিকে মুখ মেলে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫
মাধবী বলেছেন: দাঁড়ের কবিতা - সুকুমার রায়
চুপ কর্ শোন, শোন, বেয়াকুল হোস্নে_
ঠেকে গেছি বাপ্রে কি ভয়ানক প্রশ্নে!
ভেবে ভেবে লিখে লিখে বসে বসে দাঁড়েতে
ঝিম্ঝিম্ টন্টন্ ব্যথা করে হাড়েতে।
এক ছিল দাঁড়িমাঝি_ দাড়ি তার মস্ত,
দাড়ি দিয়ে দাঁড়ি তার দাঁড়ে খালি ঘষ্তে।
সেই দাঁড়ে একদিন দাঁড়কাক দাঁড়াল,
কাঁকড়ার দাঁড়া দিয়ে দাঁড়ি তারে তাড়াল।
কাক বলে রেগেমেগে, "বাড়াবাড়ি ঐ ত!
না দাঁড়াই দাঁড়ে তবু দাঁড়কাক হই ত?
ভারি তোর দাঁড়িগিরি শোন বলি তবে রে_
দাঁড় বিনা তুই ব্যাটা দাঁড়ি হোস কবে রে?
পাখা হলে পাখি হয় ব্যাকরণ বিশেষে_
কাঁকড়ার দাঁড় আছে, দাঁড়ি নয় কিসে সে?
দ্বারে বসে দারোয়ান, তারে যদি দ্বারী কয়,
দাঁড়ে-বসা যত পাখি সব তবে দাঁড়ি হয়!
দূর দূর! ছাই দাঁড়ি! দাড়ি নিয়ে পাড়ি দে!"
দাঁড়ি বলে, "ব্যাস্ ব্যাস্! ঐখেনে দাঁড়ি দে!"