নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে বুঝতে পারছি না আমি কে বা কি ?

মাধুকরী মৃণ্ময়

কিংকর্তব্যবিমুড়

মাধুকরী মৃণ্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

একা একা পথ চলা

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০০

ছোট বেলায় সামাজিক বিজ্ঞান বই এ পড়েছিলাম , মানুষ সামাজিক জীব " সে একা বাস করতে পারে না। তাই সে পরিবার গঠন করে"। এখানে পরিবার বলতে বিয়া কইরা বউ আনার কথা বলা হয়েছে। সেই অর্থে আমি সমাজ বিজ্ঞানের কথা তুচ্ছ জ্ঞান করে ড্যাংড্যাং করে বেচে আছি। তাইলে আমি কি অসামজিক!! হ্যা প্রচলিত অর্থে আমি অসামাজীক। আমি নার্সিসিস্ট। নিজের প্রতি নিজের মুগ্ধতা আমার দিনের পর দিন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। কিন্তু সমস্যা হলো যার প্রতি আমার এতো মুগ্ধতা, তাকে আমি সময় দিতে পারি না। তাই নিজেকে সময় দেয়ার জন্য কাধে ব্যাগ নিয়ে কলকাতের উদ্দেশে রওনা দিলাম। যেখান শুধু আমার সাথে শুধু থাকবো আমি, আর কেউ না।
তো যথারীতি আমি বেনোপল বর্ডারে ইমেগ্রেশনের জন্য অপেক্ষা করছি। সামনে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে এই গরমে কালো জ্যাকেট পড়ে ঘামছে। আর এদিক সেদিক তাকাচ্ছে, হাতে এক খানা কাগজ। কৌতুহল হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, এইটা কি । বলল , ফর্ম ,পুরন করতে পারছি না। আমি বললাম, দেন আমি করে দিচ্ছি। ছেলেটা গভীর কৃতজ্ঞতায় আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। আমি পাত্তা দিলাম না। কারন পড়ালেখা জানলে , যে কেউ এটা করতে পারে। ইমেগ্রেশন পার হয়ে বাংলা টাকা রুপিতে রুপান্তরিত করছি সে সময় দেখি সেই ছেলেটা এদিক সেদিক দিশাহারার মতো তাকাচ্ছে। তার দিকে না থাকিয়ে টাকা গুনায় মন দিলাম।হঠাত দেখি এক দালাল ছো মেরে তার পার্সপোর্ট নিয়ে গেলো। আমি কোনরকম পকেটে টাকা গুজে সেই দালালের পেছন থেকে ধরলাম । ঠান্ডা গলায় বললাম , পার্সপোর্ট দিয়ে দেন। দিয়ে দিল।
এরপর থেকে সেই ছেলেটা আমার ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভুতের মতো চেপে থাকলো। ভিক্টোরিয়া দেখতে গিয়েছি। সে বলল, ভাই মনে একটা খায়েশ ছিল। বললাম, খায়েশটা কি। বলল, আমি বিদেশিদের সাথে একটা ছবি তুলবো। আমি বললাম , সমস্যা কি তোলেন। কলকাতার সবাই তো বিদেশী। সে বলল , এদের কে বিদেশি বলে মনে হয় না। সবাই আমার আপনার মতো দেখতে । আমি বললাম, তাইলে কি করা যায়। সে বলল , ঐ বেঞ্চির উপর দুইজন বিদেশী বসে আছে। আপনি কথা বলে , ছবি তোলার ব্যাবস্থা করে দেন। আমি বিদেশীদের কাছে গিয়ে বললাম, আমরা বাংলাদেশ থেকে এসেছি । আমার বন্ধুর ইচ্ছে বিদেশীর সাথে এক খান ছবি তুলবে। এই দেশে সে আপনাদের ছাড়া আর কোন বৈদেশী সে খুজে পাচ্ছে না। সবাই নিজের মতো লাগে। তারা বলল, ফেয়ার ইনাফ, কাম অন।
তার ছবি তোলা হলো।
হোটেলে যেয়ে বললাম, এইবার বিদায় দেন গো। পথ মাপেন। আমি একা একা ঘুরবো। সে প্রায় ছল ছল নয়নে বিদায় নিল।বিদায় নেয়ার সময় বলল, ভাইজান , আপনি ভালো লোক। আমি বললাম, আমি ভালো লোক না, ভালো লোক হলে আপনাকে ঘাড়ে করে ঘুরতাম।
এরপর দুই দিন আমি টো টো করে কলকাতা ঘুরলাম। আসার দিন দমদম থেকে ট্রেন চড়েছি । বনগা যাবো। ট্রেনের ভেতর মনে হলো , ছেলেটা কি ঠিক মতো পৌছেছে, কোন বিপদ হয় নি তো ! এক অচেনা ছেলে, যার সাথে এ জীবনে আর দেখাে হবে না, তার জন্য মন কেমন করা শুরু করলো।
ট্রেনের কু ঝিক ঝিক শব্দের সাথে ঠোট মিলিয়ে আবৃতি করলামঃ
From ev’ry depth of good and ill
The mystery which binds me still—
From the torrent, or the fountain—
From the red cliff of the mountain—
And all i loved, i loved alone.
--- edgar allan po

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৯

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: হুম! ভাল লিখেছেন।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৫০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৫০

মাধুকরী মৃণ্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.