![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- আমাকে ভোলার জন্য তুমি কী কী করেছ?
: কিছুইনা।
- কেন? কিছু না করেই ভুলতে পেরেছ?
: না। আমি তোমাকে ভুলতে চাইনি । আমাকে ভুলে থাকাটা তোমার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তোমাকে নিয়ে বাচাটাই আমার প্রয়োজন। আমি তোমাকে নিয়েই বেচে আছি, আর তুমি আরেকজনকে নিয়ে।
- বোকামি করছো কেন? তোমার একটা ভালো লাইফ আছে। আমার চেয়ে ভালো কাউকে তুমি পেতে পারতে। আর কাউকে খোঁজোনি না?
: হুম, খুঁজতে চাইনি। কারন তোমার সবচেয়ে বড় ভয় ছিল অন্য কেউ আমাকে কেড়ে নিবে তোমার থেকে। আমি নিজের ইচ্ছায়তো সেটা হতে দিতে পারিনা। এজন্য তোমার জায়গাটা শুধু তোমার জন্যই রেখে দিয়েছি।
- আমিতো তোমার থেকে অনেক অনেক দূরে। তাও কেন এসব পাগলামি করছো?
: দূরে কোথায়? তুমিতো আমার সাথেই আছো। আমার ওয়ালপেপারে তোমার ছবি। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে তোমাকে দেখি। একসময় তোমার ফোনে আমার ঘুম ভাঙতো। অথচ তোমার কন্ঠটাও আর শুনতে পাইনা। তোমার কিছু ছবি আছে শুধু। ওগুলো বুকে নিয়েই বেচে আছি। তুমিতো ভাগ্যবতি। আমার কন্ঠটা তোমার প্রিয় ছিল। সেজন্য সেভ করে রাখতে। কিন্তু তুমি পুরোটাইত আমার প্রিয় ছিলে, আমি সেভ করতে পারলাম কই। ঠিকতো হারিয়ে গেলে।
- দেখো, আগেও বলেছি, ভাগ্যকে মেনে নিতে শিখতে হয়। মেনে নাও এটাই ভাগ্য। তুমি চাইলেইত সেটা পাল্টাতে পারবেনা।
: পারবনা ঠিক। আমি চাইওনা। এভাবেই বেশতো আছি। তোমার সাথে যখন ঝগড়া হত, তুমি কথা বন্ধ করে দিতে। তখন আমি মনে মনে তোমাকে চিন্তা করে কথা বলতাম। এখনো তাই করি। তুমিতো আমার থেকে হারিয়ে যাওনি। আমিও যাইনি। শুধু মাঝখানে একটা দেয়াল এসে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের স্বপ্নগুলোতো ঠিকই ছিল। এখনো আছে। শুধু দুজনেরটা এক হয়ে ফলেনি।
- বাদ দাও সে কথা। আমি আর ওসব মনে করতে চাইনা। ভুলে থাকতে চাই সব।
: তুমিতো আরেকজনকে সাথে পেয়ে আমাকে ভুলে থাকতে পেরেছ। আমাদের স্বপ্নগুলোকে খুব করে তোমাদের স্বপ্ন বানিয়ে ফেলতে পেরেছ। কিন্তু আমি? যতবার অন্যের কাছে গিয়েছি, বরং আরো দূরে ছিটকে গেছি। তুমি এসে আটকে দিয়েছ । কিংবা আমিই সরাতে পারিনি তোমাকে। আমাদের স্বপ্নগুলোকে অন্য কারো হতে দিইনি।
- তোমাকে অনেক বুঝিয়েছি আমি। তাও কেন বোঝোনা। তুমিতো অবুঝ না।
: আমি অবুঝ না। তাই তোমাকেও কোন দোষ দিইনা। তোমাকেও কিছু বলিনা । কিন্তু আমিতো তোমাকে নিয়েই আছি। তোমাকে নিয়েই বাচি। তোমার ভয়কে সত্যি হতে দিইনিতো। তোমার জায়গাটা তোমার জন্যই আছে এখনো।
- তুমি একটা পাগল।
: সেটা ঠিক করার ডাক্তার শুধু তুমি ছিলে।
- উন্মাদ
: শুধু তোমার জন্যই।
- থাক। এখনো কি আমার নাম্বার আইডি চেক করো?
: বিয়ে ঠিক হবার পর আর যাইনি। আরেকজনের সাথে তোমাকে তো মানতে পারবোনা। তাই সে ছবি দেখতে চাইনি। আমার কাছে ওই জায়গাটায় শুধু আমি আছি। সে দৃশ্য বদলাতে চাইনা কখনো। তুমি ভালো আছোতো?
- হু। অনেক অনেক ভালো।
: এ কথাটা শেষবারেও বলেছিলে। অবশ্য ভালো থাকারো কথা । তোমার ভালো থাকার জন্যই বাবামা ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছে। আমার সাথেতো তুমি ভালো থাকতেনা।এটাই ভালো বরং। তোমার আম্মুর শেষ ইচ্ছাপূরণ হয়েছে।
- হু
: এখনো ওরকমই আছো না? হুম হাম করো। এতদিন পর দেখা, ভালোভাবে কথা বলতে পারো।
- কথা বলে কি হবে। কথায় কথা বাড়ে। বেশী বাড়ালে আবার মায়ায় পড়ে যাবো। তোমার মায়া কাটিয়ে আরেকজনের মায়ায় আটকেছি অনেক কষ্টে। আবার সে ভুল করতে চাইনা। তুমি বরং ভালো থাকো।
- বেশতো আছি। অনেক ভালো। তুমি এখনো আমার স্বপ্নে আসো। আমাকে আদর করো। আমাদের মেয়েটা হঠাৎ মাকে খুঁজতে থাকে। তোমার কথামতো আমি বলি, তোমার আম্মু মরে গেছে।
: তুমি এসব পাগলামি বন্ধ করবে?? মেয়ে পেলে কোথায়!! তুমি প্লিজ স্বাভাবিক হও।
- স্বাভাবিক আছি। এক ঝাক স্বপ্নের সাথে আমার বসবাস। সেখানে তুমি আছো। আমাদের মেয়ে আছে। তোমার ইচ্ছা ছিল চারটা বেবি হবে। আমি বলতাম মোটা পাঁচটা। আরেকজন তুমি। মাসহ পাচ বাচ্চা। তোমাকে আদর করে বলতাম বাচ্চা একটা মেয়ে। কিন্তু তুমি হারিয়ে গেলে। আমি তাই এখন দুজনকে নিয়েই থাকি। কত কথা বলি সারাদিন। ওগুলা তুমি জানতে পারোনা, তাই না?
তোমার জন্য কিছু কথা লিখে রেখেছিলাম। যখন য মনে পড়তো, লিখে রাখতাম। অবশ্য সেগুলা তোমার পড়া হবেনা। তোমার মন এখন বন্ধ। আমি চাইওনা সেটা আবার খুলে যাক। এখন তুমি ভালো থাকলেই আমিও খুশি। দুজনইতো ভালো আছি।
- এভাবে ভালো থাকা বলে??
: নয়তো কী? তুমিও ফ্যামিলির কথা রাখতে অভিনয় করে গেছো। সেটা একসময় সত্যিও হয়ে গেছে হয়ত। আমিও সবার চোখে খুব হেসে বেচে আছি । সবাই খুশী। আমিও। ভালোনা?
- আমার কি করার ছিল??
: তুমি কি করতে পারতে তা আমি জানি। কারন আমি তোমাকে সবচেয়ে ভালো বুঝি। তাই কোন দোষ দিইনা। আমিও জানি তুমি বন্দী। ২ বছরের পরিচয়ের জন্য বাবা মায়ের ২০ বছরের ভালোবার বিরুদ্ধে যাওয়া উচিৎ না। তুমিও সেটাই করেছ। আমিতো তোমার ভালোবাসা পেয়েছি। তোমাকে কোন দোষ দিইনা। তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো, কতটা চাইতে, সেটাও আমি জানি। আমাকে নিয়ে ভরসা পেতে না। বিশ্বাস করতে পারতেনা। কিন্তু আমিতো করি। আমাদের মধ্যে কোন লুকোচুরি ছিলোনা। সবই সত্যি ছিল। শুধু পরিবার, সমাজ, অন্যের ইচ্ছা, আমাদের এক হতে দিলোনা, এই আর কি। এরবেশীতো কিছুনা। আমাকে নিয়েতো তোমার অভিযোগ ছিলোনা। যা হয়েছে তার জন্যেও আমরা কেউ দায়ী নই। শুধু ভাগ্য।
- থাক। এসব শুনতে আর ভালো লাগেনা। অনেকবার বলেছ। আমিতো মেনে নিতে পেরেছি। তুমি কেন পারবেনা?
: কারন তোমার মন ভাঙতে ভাঙতে শক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমিতো সেটা পারিনা। এতো ভাঙন সহ্য করতে যে আমি পারবোনা। আমি কি করবো, বলতে পারো?
- প্লিজ। চুপ করো। আমাকে যেতে হবে। তোমার এসব কথা আমি নিতে পারিনা। অনেক বড় ভুল ছিল এ রিলেশনটা। তোমার সাথে না জড়ালেইতো হত। কি দরকার ছিল মায়ায় পড়ার। মাঝখানে তুমি কষ্ট করেই যাচ্ছ।
: তুমি কষ্ট করছোনা?
-না। আমি মানিয়ে নিয়েছি। নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। কিন্তু তুমি এখনো আগের জায়গাতেই পড়ে আছো। প্লিজ স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করো। আমি আর তোমার জীবনে নেই। তোমার কোন মেয়ে নেই। তুমি একা। নতুন করে ভালোবাসতে শেখো। সবকিছু ভালোর জন্য এটা মেনে নিতে শেখো। আমি কি কষ্ট পাইনি? তোমাকে ছেড়ে থাকতে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে তা আমি জানি। প্রতিটা মুহুর্ত হাসফাস করে কাটিয়েছি। আবার তোমাকে ভুলে থাকারও চেষ্টা করেছি। ওনার সাথে বেশী বেশী সময় দিয়েছি, যাতে তোমাকে মনে না পড়ে। কিন্তু পারিনি। ওনাকে দেখলেই মনে হত এটা তুমি। আমার সামনে তুমি দাঁড়িয়ে আছো। হাটাহাটি করছো। কেউই চায়না তার পছন্দের মানুষকে ছেড়ে থাকতে। কিন্তু থাকতে হয়। তুমিও সেভাবে থাকার চেষ্টা করো।
: আচ্ছা, পরেরবার কখনো দেখা হলে কি তুমি আমাকে চিনতে পারবে? নাকি না চেনার ভান করে এড়িয়ে যাবে?
- এড়িয়ে যাবো।
: কেন?
- কারন, এখনকার জীবনটা শুধু অভিনয়ের। তুমিও হাসিমুখে কষ্ট চেপে এগিয়ে যাবে, আর আমি আরেকজনকে নিয়ে সুখ দেখানো সংসার করবো। অভিনয় করতে করতে একসময় এটাই সত্যি হয়ে যাবে।
লেখকঃ মুহাম্মদ মাহদী হাসান সৈকত
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
©somewhere in net ltd.