নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার পরিচয় লেখার মাঝেই

ঘাসফুল

ঘাসফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ প্রশ্ন প্রথম পর্ব

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৫

বনানী ক্রসিং এ গাড়ি থামতেই একটা মেয়ে ফুল হাতে দৌড়ে এলো। একহাতে
রজনীগন্ধা অন্যহাতে পদ্ম। আশ্চর্য!! সবাই লাল গোলাপ নিয়ে আসে, আর এই
মেয়ে আসলো দুটো সাদা ফুল।
- ভাইয়া ফুল নেন বলে গ্লাসে টোকা দিলো। আমি পদ্ম নিয়ে পাশের সীটে
তাকালাম। লামিয়ে অন্য দিকে মুখ করে বাইরে তাকানো। ওর প্রিয় বেলী ফুল।
ফুলগুলো দুজনের মাঝখানে রেখে সামনে তাকালাম। দীর্ঘ জ্যামের সামনের দিকে আমরা।

ঢাকায় আমার তেমন কেউ নেই। লামিয়া কলেজ থেকেই আমার ফ্রেন্ড। একসময় একসাথে
অনেক সময় কাটানো হতো।

এইচ এস সি র পর আমি ঢাকার বাইরের ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম ইঞ্জিনিয়ারিং এ,
আর ও ঢাকার ভেতরেই ন্যাশনাল এ।

সায়মার সাথে পরিচয় ফেসবুকে। ১ বছরের জুনিয়র। আজ ওর সাথে প্রথমবারের মতো
দেখা করার কথা, ওর প্রিয় জায়গা দিয়াবাড়িতে।

ঢাকায় আসার আগে লামিয়াকে বললাম আমাকে হেল্প করতে হবে । দেখা করতে যাবো ।
প্রথম দেখা তাই সাথে ক্লোজ কেউ থাকলে ভালো।

লামিয়া ওর বাবার গাড়ি নিয়ে এলো। গাবতলি থেকে আমাকে তুলে নিলো।

প্রথম থেকেই চুপচাপ বসে আছে। একটা কথাওনা। একবার চোখাচোখি হয়েছে শুধু,
তাও মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে ছিল কিছুক্ষণ।

জ্যাম ছাড়ছেনা। বিরক্ত চোখে ওর দিকে তাকালাম আবার।

নাহ, মনের মধ্যে অস্থিরতায় ওর দিকে তাকানো হয়নি একবারো , এবার চোখে পড়লো।
লাল শাড়িপরিহিতা, খোপায় বেলি ফুল গেথে সেজেগুজে চুপচাপ বসে আছি পাগলি।
ওকে পাগলি ডাকি অনেকদিন থেকেই।

ও কখনো এক সিদ্ধান্ত বেশীক্ষণ রাখতে পারেনা। সকালে এক কথাতো বিকেলবেলা
আরেকটা । কোন কিছুতে আবিষ্ট থাকেনা বেশীক্ষণ ।

আমার সাথে মতের মিল হয়নি কখনো। তবুও কথা না বলে থাকা যায়নি।

কেমন মুগ্ধতা কাজ করছে ওর চোখে, তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করেও করছেনা।

জ্যাম ছেড়ে গেছে। গাড়ি কিছুক্ষণ চলে আবারো দাঁড়ালো।
এবার অন্য এক ফুলওয়ালি আসলো। এ অবশ্য ব্যতিক্রম নয়। গোলাপের কয়েক গোছা নিয়ে এসেছে।

কালো হাতে লাল গোলাপ। গায়ের জামার রংও কালো। আমার মতোই অবস্থা। আমার
প্রিয় রঙ কালো, গায়ের রং কালো এমনকি প্রিয় ব্যান্ডও কালো (ব্লাক).

ফুল নিবো কিনা ভাবছি। লামিয়ার দিকে তাকিয়ে মন অন্যদিকে চলে গেছে। কিছু
ভালো লাগছেনা। মেয়েটাকে সরিয়ে দিলাম।

লামিয়ে ওকে ডাকলো। এক গোছা নিলো।

আশ্চর্য, ওর গোলাপ পছন্দ কখনো বলেনিতো।

ফুল গুল আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, প্রথম দেখায় গোলাপ দিতে হয়। আর তুই
কিনা পদ্ম নিয়েছিস। বুদ্ধু কোথাকার।

এই প্রথম ওর হাসিমুখ নজরে আসলো।
আমি বললাম, জানিনা দেখেইতো আপনার মতো এক্সপার্ট নিয়ে এলাম।
হয়েছে, ঢং বাদ দিয়ে ফুল গুলো হাতে নে।
আমার হাতে ফুল গুলো দিলো। সেই সাথে তালুতে তার আঙ্গুলের স্পর্শ।
চমকে উঠলাম। এর আগে এ স্পর্শ পাইনি।

তাই আজ অবাক হলাম, কি নিঃস্পৃহ, কেমন শীতল। শামসুর রহমানের ভাষায়।

আমি পদ্মের পাশে গোলাপ রেখে আগের মতো বাইরে তাকালাম।

বিমানবন্দর এর পাশ ধরে রাস্তাটা খুব সুন্দর করে সাজানো। সবুজে মিশে আছে দুপাশ ।

গাড়ি এসে থামলো দিয়াবাড়ি।
নেমে হাটলাম। সায়মা যেখানে থাকার কথা সেদিকে হাটলাম। লামিয়ে গাড়িতে বসে আছে এখনো।
চলে যাবে কিনা কিছু বললাম না। ও আমার হাতে ফুলগুলো তুলে দিয়ে আবার
অন্যদিকে তাকিয়েছে, এ ছিল তাকে দেখা শেষ দৃশ্য।

গাড়ি রেখে সামনে এগুলাম।

সায়মা এখনো আসেনি। ওকে ফোন দিলাম। ফোন বিজি বলছে। আশ্চর্য! এতক্ষণে চলে
আসার কথা। আগে থেকেই প্লান করা ছিল, তাই এতো দেরী হবার কথানা।

আমি ঘাসে বসলাম। ফুলগুলো পাশে রেখে আকাশের দিকে তাকালাম। বিকেল হতে এখনো
দেরী আছে। সুর্য পশ্চিম দিকে হেলবে একটু পর। এখনো মাঝামাঝি জায়গায় আটকে
আছে।

আচ্ছা, আমিও কি ওরকম কিছুতে আছি?

হঠাৎ একটা প্রশ্ন জাগলো মনে।

গল্প: প্রশ্ন

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: গল্পের সৌন্দর্যটাও এখানে-মাঝ খানে আটকে থাকা।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:২১

ঘাসফুল বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.