নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

মাহফুজ

তেমন কিছু লিখবোনা নিজেকে নিয়ে কারণ লিখতে গেলে সেটা এতো বিশাল হবে যে কেউ পড়বেনা; অবশ্য লিখলেই যে অনেকে পড়বে তাও না। যাই হোক আসি মূল বিষয়ে, আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যে জীবনে চলার পথে একটি সুন্দর সেতু পেয়েছিলাম, মজবুতও ছিলো। সেতুটির পাশেই ছিলো একটি বাঁশের সেতু। আমি অনায়াসেই সুন্দর আর মজবুত সেতু দিয়ে ওপারে চলে যেতে পারতাম যেখানে খুব সুন্দর একটি পৃথবী আছে। আমি বোকার মতো নিজের খামখেয়ালিপনার কারণে বাঁশের সাঁকোতে উঠে পড়লাম যেটা ছিলো খুবই ভয়ানক এবং জায়গায় জায়গায় ত্রুটি অর্থাৎ নড়বড়ে আর খুবই গভীর। বাতাস দিলেই সেতুটি দুলতে থাকে ভয়ানক ভাবে।

মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাত্ররাজনীতি

০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৫১

সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ
অনেক শ্রদ্ধাভাজন আছেন যারা এদেশের ছাত্রদের ছাত্ররাজনীতিতে আগ্রহ নেই দেখে হতাশ। তারা বুঝতে পারেন না কেন ছাত্ররা রাজনীতি করেনা!!!
আসলে রাজনীতি কি? এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অধিকার আদায় করা হয় কিংবা শাসন এবং শোষন ইত্যাদির মাত্রা নির্ধারণ করা হয় কিন্তু এদেশে ছাত্ররাজনীতির নামে কি হয়? কয়জন ছাত্রনেতা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, তারা দেশ এবং দশের উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজনীতি করেন? কয়জন বুকে হাত দিয়ে বলবেন তাদের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য ক্যাম্পাস দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া নয়? ছাত্ররাজনীতি ছিলো ৫২ তে, ছিলো ৭১ এ ছিলো সৈরশাসনামলে। সেসময়ের ছাত্রনেতা,কর্মী সকলের মনে ছিলো দেশপ্রেম, ছিলো দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তারা বন্ধুকের গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলো বারবার। অকুতোভয় সৈনিক ছিলো যেন একেক জন। বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যে সব কর্মকাণ্ড চলে সেসবে যোগদান করা মানে পৈতৃক সম্পদ জীবনটাকে উতসর্গ করে দেয়া। যে উতসর্গকৃত জীবন দেশের কোন উপকারে আসবেনা, আসবেনা দেশের মানুষের উপকারেও। লাশটি কিছুদিন মিডিয়ার টি আর পি বৃদ্ধি করবে আর কিছু অসাধু রাজনৈতিক ব্যবসায়ীর ব্যবসা হবে। হয়তো আপনারা বলবেন, তুমি অধম বলিয়া আমি কেন উত্তম হইবোনা। আদর্শের রাজনীতি, জনগনের রাজনীতি করলেই তো হলো। জি তা ঠিক কিন্তু আপনি সে রাজনীতি কোথায় করবেন? আপনি পারবেন না দেশ ও দশের হয়ে, কোন আদর্শকে সামনে রেখে অধিকার আদায়ের রাজনীতি করতে। নানারকম প্রতিবন্ধকতা আসতে থাকবে। কেউ চাইবেনা আপনি নতুন কিছু করুন, কেউ চাইবেনা আপনার জনপ্রিয়তা বাড়ুক। মানুষ আপনার আদর্শকে অনুসরণ করুন। কারণ তাদের ব্যবসায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে আপনার অন্যরকম রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। তারা আপনাকে টিকতে দেবেনা, তারা আতংকে আপনাকে খরচের খাতায় ফেলে দেবে। খরচের খাতায় না যেতে চাইলে, আপনাকেও মিশতে হবে তাদের সাথে। আপনাকে যোগ দিতে হবে ক্যম্পাস দখলের লড়াইয়ে, আপনাকে যেতে হবে জোর করে টেন্ডার নিয়ে আসার শোডাউনে, আপনাকে অবশ্যই যেতে হবে ভোট কেন্দ্র দখলে কিংবা বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন থেকে চাঁদা তোলার গ্রুপে। আমার মাতৃভূমিতে ছাত্ররাজনীতির জের ধরে প্রতিবছর কয়জন মায়ের বুক খালি হয়, কয়জন বাবার স্বপ্নের শলীল সমাধি হয় সে হিসাব কি আছে? মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, আবাদি জমি এমনকি ভিটেমাটি বন্ধক দিয়েও মা বাবা সন্তানকে পাঠান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সে সন্তান বিদ্যান হয়ে, চাকুরি বাকুরি করে মা বাবার স্বপ্ন পূরণ এবং আর হাসির স্থায়িত্ব না বাড়িয়েই ফিরে আসে লাশ হয়ে। সন্তানের লাশ বওয়া কিংবা দেখার যে অমামবিক যন্ত্রণা তা মা বাবা না হলে বুঝা সম্ভব না। এপ্রজন্মের কোন ছাত্রনেতা কিংবা কোন কর্মী, সাংগঠনিক কে দেখিনা, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি হলে আন্দোলনে নামতে, শুনিনা বন্যা কিংবা শীতে অসহায় মানুষদের সাহায্যের জন্য কর্তৃপক্ষে চাপ দিতে, কাউকে কোনদিন বলতে শুনলামনা দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে মনি টরিং ব্যবস্থার জন্য একটা প্রেস কনফারেন্স করতে, ফারাক্কার বাধ নিয়ে দেখিনা মিছিল কিংবা অনসন করতে, শুনিনি বর্ডারে নির্বিচারে মানুষ মারার প্রতিবাদ করতে। কেন? এগুলো কি রাজনৈতিক ইস্যুর মাঝে পড়েনা না, নাকি দায়িত্ববোধ নেই তাই? শাহবাগে তো প্রচুর হয় আন্দোলন, কই সুন্দরবন রক্ষার দায়ভার কি কোন ছাত্রসংগঠনের নেই? বাংলার বাঘ খ্যাত একে ফজলুল হক কি রাজনীতি করেননি? কয়টা টেন্ডারবাজিতে তার নামে মামলা আছে? কয়টা চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে? ক্ষুদিরাম বসু কি ছাত্র ছিলেননা? তবে কেন এত পরিবর্তন? যে দেশের ছাত্ররা ছিলো প্রতিটি আন্দোলনের ফ্রন্টলাইন সে দেশের ছাত্রদের কেন এতো অধঃপতন? তারা কিভাবে ভুলে গেলো বাংলার ছাত্রদের শৌর্যবীর্য?
জানি এমনিতেই চক্ষুশূল হয়ে গেছি অনেকের, সেটা আর না বাড়াই। শেষ করার আগে যারা ছাত্রদের রাজনীতেতে আগ্রহ নেই দেখে আফসোস করেন তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখে যাই, ছাত্ররাজনীতির সুন্দর এবং নিরাপদ একটি পরিবেশ উপহার দিতে পারবেন আপনারা? যেখানে যে যার মত প্রকাশ করতে পারবে স্বাধীনভাবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে রাতের অন্ধকারে কিংবা প্রকাশ্যে মেরে ফেলে দেবেনা কেউ, গ্যারান্টি দিতে পারবেন? রাজনৈতিক লড়াই হবে রাজনৈতিক নিয়মানুসারে, এমন একটা পটভুমি দিতে পারবেন? মতের অমিল হলে যুক্তিতর্ক ছাড়াই লাশ বানিয়ে জয়ী হতে চাইবেনা কোন কাপুরুষ কিংবা বিবেকহীন মানুষ এমন হবে বলতে পারবেন? অপমৃত্যু হবেনা এবং মৃত্যুর পর সে লাশের সাংগঠনিক মালিকানা নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হবেনা সে নিশ্চয়তা দিতে পারবেন? সাংগঠনিক কোন কর্মকাণ্ডে গিয়ে প্রাণ হারালে অসহায় মা বাবাকে সামান্য অর্থসাহায্য করা হবে আশ্বাস দিতে পারবেন? রাজনীতি করার কারণে দোষে বিনাদোষে কারাবরণের কারণে জীবনের মূল্যবান সময়ের ক্ষতিপূরণ কি দেবেন কোন নেতা কিংবা সংগঠন? পরিশেষে একটা কথা বলি, বর্তমান বাংলাদেশে যদি শতকরা ৫% জাতীয় স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে কিংবা অধিকার আদায় ও জনগনের কল্যানে রাজনীতি করে থাকে তবে বাকি শতকরা ৯৫% যে রাজনীতি করে সেটা দখলনীতি, প্রভাব বিস্তারনীতি, মুনাফানীতি, ব্যক্তিভবিষ্যত সাজানোনীতি ইত্যাদি।
রাজনীতি সে যে রাজনীতিই হোক, ছাত্র কিংবা অছাত্র সবার রাজনৈতিক জ্ঞান এবং মানসিকতা থাকা সবচাইতে বেশী প্রয়োজন। রাজনৈতিক মানসিকতা সৃষ্টি না হলে অপরাজনীতিতে রূপান্তরিত হবেই নিশ্চিত। সমালোচনার জনাব সমালোচনা দিয়ে দেবার মতো সহজাত স্বভাব তৈরী করতে হবে। সমালোচনা করলে, সমালোচনা হজমের শক্তিও থাকতে হবে। এদেশের অনেকেই আছে নিজের সংগঠনের কেউ ন্যাংটা হয়ে নাচলেও সে চোখ বন্ধ করে রাখবে পরে বলবে আমি তো দেখিনি আমার দলের কেউ এমন করতে। এই নির্লজ্জরা ছাত্ররাজনীতির কলংক। এরাই ছাত্ররাজনীতির অন্তরায়, এরাই রাজনীতির মাঠ এবং পরিবেশ দূষিত করে। আজ আর নয়, ছাত্ররাজনীতি আবার ঐতিহ্যের পথে চলবে, দেশের কথা বলবে, অধিকারের জন্য লড়বে, জনগনের রক্ষাকবচ হবে এই কামনায় রইলাম।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


"ছাত্ররাজনীতি ছিলো ৫২ তে, ছিলো ৭১ এ ছিলো সৈরশাসনামলে। সেসময়ের ছাত্রনেতা,কর্মী সকলের মনে ছিলো দেশপ্রেম, ছিলো দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা। "

-তখনও ছিল বুলশিট!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.