নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

মাহফুজ

তেমন কিছু লিখবোনা নিজেকে নিয়ে কারণ লিখতে গেলে সেটা এতো বিশাল হবে যে কেউ পড়বেনা; অবশ্য লিখলেই যে অনেকে পড়বে তাও না। যাই হোক আসি মূল বিষয়ে, আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যে জীবনে চলার পথে একটি সুন্দর সেতু পেয়েছিলাম, মজবুতও ছিলো। সেতুটির পাশেই ছিলো একটি বাঁশের সেতু। আমি অনায়াসেই সুন্দর আর মজবুত সেতু দিয়ে ওপারে চলে যেতে পারতাম যেখানে খুব সুন্দর একটি পৃথবী আছে। আমি বোকার মতো নিজের খামখেয়ালিপনার কারণে বাঁশের সাঁকোতে উঠে পড়লাম যেটা ছিলো খুবই ভয়ানক এবং জায়গায় জায়গায় ত্রুটি অর্থাৎ নড়বড়ে আর খুবই গভীর। বাতাস দিলেই সেতুটি দুলতে থাকে ভয়ানক ভাবে।

মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুলিশ ভ্যানে বোমারু

১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:১২

"পুলিশ ভ্যানে বোমারু"

রাত ১২ টা বেজে ৪৪ মিনিট বাজে। কাকড়াইমোড় থেকে হাঁটা শুরু করেছিলাম। শাহবাগ মোড় থেকে প্রায় ২০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে আছি এখন। ইচ্ছে করে দাঁড়াইনি। একটা পুলিশ ভ্যান এসে পাশে থামলো। সামনের সিট থেকে একজন মাথা বের করে ডাকলো। পেছন থেকে আরো দুইজন নামলো। ঐ দু'জন কনস্টেবল বুঝতে পারলাম। সামনের জনের চেহারা ঠিক বুঝা যাচ্ছেনা তবে ধরে নিলাম অফিসার গোছের কেউ হবে যেহেতু সামনে বসে আছে।
-গাড়ীতে উঠেন।
অফিসারের কড়া আদেশ। আমি ভাবলাম একটু মজা করে নেই।
-জ্বী না, লাগবেনা। আমি পায়ে হেঁটেই যেতে পারবো।
-থানা পর্যন্ত যেতে আপনার কষ্ট হয়ে যাবে। গাড়ীতে চুপচাপ উঠে বসুন।
ব্যাটা আমার থেকেও বড় মস্কারি করলো।
বুঝতে পারলাম আজ ওদের পকেটে খড়া চলছে। আমাকে ফাঁসানোর ইচ্ছা। কিন্তু ওরাতো ভুল করছে আমাকে ধরে নিয়ে গেলেও আমি কোন টাকা পয়সা দিতে পারবোনা। কারণ আমি যেদিন রাতে বের হই সাথে মাত্র দুই কাপ চায়ের পয়সা রাখি। সিগারেট আর লাইটার বাসা থেকেই নিয়ে আসি।

-কি হলো, উঠছেন না কেন?
বাজখাঁই কণ্ঠে হাক চাড়লো অফিসার।

-আমি আপনার পাশের সিটে বসি?

আমার প্রশ্ন শুনে অবাক হলো অফিসার।
-আমার পাশে কেন!

-না, এমনিই। পিছে বসে গেলে অনেকে আমাকে বিরাট কয়েদী ভাববে আর আপনার মত ইয়ং পুলিশ অফিসারের পাশে বসে যাওয়াতো অনেকটা উপভোগ্যও হবে।

প্রশংসা শুনে সবাই কিছুটা হলেও খুশী হয়। তার প্রমান পেলাম ভ্যানের সামনের দরোজা খোলে যেতেই। উঠে বসলাম। অফিসার একটু চেপে বসলো ড্রাইভারের দিকে।

-তা কোথায় কোথায় বোমা ফিট করলেন?
বসা মাত্রই এমন প্রশ্নে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তবে ঘাবড়ালামনা। এটা ওদের ট্রিকস। যত বড় অভিযোগের ভয় দেখাবে তত বেশী টাকা হাতানোর ফন্দি। ড্যাসবোর্ডে রাখা সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগ্রেট ধরালো অফসার। দিয়াশলাইয়ের আলোতে দেখে নিলাম ব্যাজে লিখা নামটা। মো.আবরার।
নামের আগে মোহাম্মদকে এখন 'মো.' লিখতে হয়।
বাংলা বানানের নতুন নিয়ম। সারাজীবন শিখে আর দেখে এসেছি 'মোঃ' লিখা। যাই হোক বানানে কি আসে যায়? হোয়াটস ইন এ স্পেলিং! আবরারের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। যেন তেন উত্তর দিলে চলবেনা। সোজা চালান হয়ে যাব।

-সুযোগই তো পেলামনা, ফিট করার আগেই পাকড়াও করে ফেললেন।

মো. আবরার বিষ্মিত হলো আমার উত্তরে।
-কি!
-না মানে সবে বের হয়ে কিছু প্লেস ঠিক করেছি, অমনি এসে ধরে গাড়ীতে তুলে ফেললেন, সেকথা বলছিলাম।

-এর মানে আপনি সত্যি সত্যি বোমাবাজ!

-সত্যি নয়তো কি? আপনারা কি না জেনে ধরেছেন আমাকে! কি কাণ্ড কি কাণ্ড, আমিওতো বলি বাংলাদেশের পুলিশ এত কর্মঠ আর বুদ্ধিমান হলো কিভাবে? বোম ব্লাস্ট তো দূর সেটিংয়ের আগেই স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডিয়ানদের মতো এসে উপস্থিত!

আবরার কি বলবে বুঝতে পারছেনা। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ওর বিষ্ময়ের ঘোর কাটার আগে আরো কিছু বিষ্ময় তার নিউরনে ঢুকিয়ে দিতে হবে।
-আপনার তো প্রমোশন হয়ে যাবেরে ভাই। বোমাসহ বোমাবাজকে ধরে ফেলেছেন।

বিষ্ময়ে আবরারের দু'চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছে।
-কি ক্কি আপনার সাথে বোমা?
-জ্বী, বেশ কয়েকটা। একটা ফাটলে এই ভ্যানের কেউ জীবিত থাকবোনা নিশ্চিত। আমি দু:খিত যে আমি ধরা দিতে পারবনা। আমাদের সংঘটনের কেউ ধরা পড়লে তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়। আমি চাইনা আমার জন্যে আমার পরিবার ধ্বংস হোক। তার উপর এক সপ্তাহ হয়েছে বিয়ে করেছি। আমাকে ক্ষমা করবেন আমি এখন আত্মঘাতী হব তবে আপনাদের সাথে নিয়ে।

আমার কথা শেষ হবার আগেই ড্রাইভার গাড়ী থামিয়ে দরোজা খোলে দৌড় দিয়েছে। পেছনে বসা কনস্টেবল গুলোও পড়িমরি করে ছুটছে। বাকী রয়েছে আবরার। সে হা করে তাকিয়ে আছে। সে বিষ্ময়ের ধাক্কাটা নিতে পারেনি। ফ্রীজ হয়ে গেছে।

-আপনার সাথের সবাই পালিয়েছে। আপনি কি আমার সাথে উপরে যেতে ইচ্ছুক?
-অ্যা,, নাআআআআআ। উপরে যাব কেন? আমি তো পালাবো।

এবার আবরারও দৌড় দিল। দেখলাম গতিটা ওরই সবচাইতে বেশী।
চিন্তা করে পেলামনা যে বাংলাদেশি পুলিশরা চোর ডাকাতদের পিছে ধাওয়া করলে চোর ডাকাত পালায় কিভাবে। কারণ ওদের দৌড়ের যে গতি দেখলাম তাতে মনে হচ্ছে, অলিম্পিকে না হোক কমনওয়েলথে অনায়াসে সোনা জিতবে।

আমি এবার একা। পুলিশ ভ্যানটা আমার দখলে। তাতে কিছু আসে যায়না। কারণ আমি গাড়ী চালাতে পারিনা। পারলে না হয় বাসা পর্যন্ত ফিরে যেতাম। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম আবরার ফোনে বা ওয়ারলেস দিয়ে কথা বলছে। নিশ্চই রিপোর্ট করছে হেড কোয়ার্টারে। ওরা সবাই রাস্তার অন্যপাশে চলে গিয়ে আমাকে ফলো করছে। আমার সিগারেট শেষ। আবরারের সিগারেটের প্যাকেট থেকে দুইটা নিয়ে চুপিচুপি গাড়ী থেকে নেমে পড়লাম। ভাবছি কি করবো ওদের দিকে এগিয়ে গিয়ে আরো ভড়কে দেবো নাকি পালানোর চেষ্টা করবো?

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:৪৯

মহা সমন্বয় বলেছেন: হোঃ হোঃ ব্যাপুক মাজা পেলুম। =p~

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:৫১

নুর আমিন লেবু বলেছেন: ভালই লাগল! আজকাল রাস্তাঘাটে প্রায় এরকম কাহিনী হয়

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৪:১৫

টিস্যু বলেছেন: :P :P

৪| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৫:৫০

হাকিম৩ বলেছেন: থাক পালানোর দরকার নাই । ওদের মাথায় যদি একটু জ্ঞান থাকে তাহলে এর পরে আপনাকে আর কোন প্রকার হয়রানি না করে বরং বাসা পযন্ত এগিয়ে দিয়ে যাবে ।
লেখা ভালো হয়েছে ।

৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫১

মাহফুজ বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে, তবে সত্যি সত্যি কেউ পুলিশের সাথে এমন করলে পরের টুকুর জন্য আমি দায়ী না। :D

৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৫৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লিখেছেন তবে আপনার কথা শুনে দৌড় দিবে অতটা দক্ষ বাং.. পু.. না। পৃথিবীর সবচাইতে নিকৃস্ট অদক্ষ অশিক্ষিত অলস অকর্মন্য অযোগ্য মহা দুর্ণীতিবাজ

৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৭

খোলা মনের কথা বলেছেন: ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লিখেছেন তবে আপনার কথা শুনে দৌড় দিবে অতটা দক্ষ বাং.. পু.. না। পৃথিবীর সবচাইতে নিকৃস্ট অদক্ষ অশিক্ষিত অলস অকর্মন্য অযোগ্য মহা দুর্ণীতিবাজ সহমত

লেখাটি সুন্দর হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.