নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

মাহফুজ

তেমন কিছু লিখবোনা নিজেকে নিয়ে কারণ লিখতে গেলে সেটা এতো বিশাল হবে যে কেউ পড়বেনা; অবশ্য লিখলেই যে অনেকে পড়বে তাও না। যাই হোক আসি মূল বিষয়ে, আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যে জীবনে চলার পথে একটি সুন্দর সেতু পেয়েছিলাম, মজবুতও ছিলো। সেতুটির পাশেই ছিলো একটি বাঁশের সেতু। আমি অনায়াসেই সুন্দর আর মজবুত সেতু দিয়ে ওপারে চলে যেতে পারতাম যেখানে খুব সুন্দর একটি পৃথবী আছে। আমি বোকার মতো নিজের খামখেয়ালিপনার কারণে বাঁশের সাঁকোতে উঠে পড়লাম যেটা ছিলো খুবই ভয়ানক এবং জায়গায় জায়গায় ত্রুটি অর্থাৎ নড়বড়ে আর খুবই গভীর। বাতাস দিলেই সেতুটি দুলতে থাকে ভয়ানক ভাবে।

মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইয়াবা : দমন অসম্ভব

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:১৭


শিরোনাম দেখে নিশ্চই কিঞ্চিৎ অবাক হয়েছেন। নেগেটিভ এপ্রোচ নিয়ে স্টার্টিং দেখে বিরক্তি বোধও করবেন স্বাভাবিক। তবে আমি চেষ্টা করবো শিরোনাম নিয়ে আপনাকেও কিছুটা দ্বিধান্বিত করতে বাস্তবতা ব্যাখ্যা করে।

ইয়াবা কি সেটা ইদানীং সবারই জানা হয়ে গেছে ; তবুও একটু বলি। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার তার বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকদের এমন কিছু তৈরী করতে বলেছিলো যেটার মাধ্যমে সৈন্যবাহিনী প্রচুর শক্তি পাবে, উদ্যমী হবে, ক্লান্ত হবেনা। অনেক গবেষণার মাধ্যবে তখন তৈরী হয় হিটলার ড্রাগস বর্তমানে যা বিভিন্ন পর্যায় এবং সংষ্কারের পথ মাড়িয়ে ইয়াবা ট্যাবলেটের রূপ লাভ করেছে। বাবা নামেই বাংলাদেশে পরিচিতি বেশী ইয়াবার। ইতিহাসের খুনী হিটলার মারা গেলেও হিটলারের ধ্বংসযজ্ঞ ঠিকই চলছে তার রেখে যাওয়া এই ইয়াবা নামক অভিশাপে। যুদ্ধের সময় কিংবা পরবর্তীতে হিটলার ড্রাগস বলা হতো ইয়াবা কে।

এবার আসি কেন নির্মূল অসম্ভব সে প্রশঙ্গে-
মনে করি এক তরুন, যার নাম অভি। ইয়াবা তার ফেভারিট ড্রাগস। ভয়াবহ রকম আসক্ত হয়ে গিয়ে অভি একদিন উপলব্ধি করলো, এই মরণ নেশা শুধু তার নয়, আরো যারা আসক্ত তাদেরকেও ছাড়াতে হবে। কিন্তু কিভাবে? চিন্তাভাবনা করে সে একটা রাস্তা বের করলো। তার যুক্তি হচ্ছে, ইয়াবার সহজলভ্যতাই এর বিস্তারের প্রধান কারণ। যদি ইয়াবা না পাওয়া যায় তাহলে তো কেউ তা খাবেনা কিংবা নেবেনা। সে একটা তালিকা তৈরী করলো। এপর্যন্ত সে যতো জায়গা থেকে ইয়াবা কিনেছে তার তালিকা এবং তার জানা মতে কারা সেখান থেকে ইয়াবা এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য নেয় তাদের তালিকা। মোটকথা সে বলতে গেলে একটা আর্টিকেলই করে ফেললো এর উপর। তারপর পুলিশের সাথে গোপনে যোগাযোগ করলো একদিন। পুলিশ তাকে বাহবা দিলো খুব, তার স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি রেকর্ড করে রাখলো। সবশেষে অভির ঠিকানা, পরিবারের পরিচয়, প্রয়োজনীয় যোগাযোগের মাধ্যম নোট করে তাকে বিদায় দিলো।

অভি সেদিন রাতে বাসায় এসে খুব শান্তির একটা দিলো। নিজের প্রতি নিজের একটা শ্রদ্ধাবোধ তৈরী হয়েছে তার। সুন্দর এক আগামীর স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঘুমালো অভি।

পরদিন সকালে, অভি তখনো ঘুম থেকে উঠেনি। তার মা এসে তাকে ডেকে তুলে বললেন, অভি বাসায় পুলিশ এসেছে। তোর সাথে কথা বলতে চায়। অভি ভাবলো গতকালকের বিষয়টা নিয়ে নিশ্চই কোনো কথা। হাত মুখ ধুয়ে খুব স্বাভাবিক ভাবেই ড্রইং রুমে গেলো সে। পুলিশ, তবে সে যাদের আশা করেছিলো তারা না! তাকে দেখেই সিনিয়র অফিসার জিজ্ঞেস করলেন, তুমি অভি?
-জ্বি স্যার।
-তোমার বাসা সার্চ করতে এসেছি।
-কিন্তু স্যার, আমি তো গতকাল....
-চুপ কোন কথা না, তোমার ঘর থেকেই শুরু হবে। সেন্ট্রি যাও,ভালো করে দেখবে কিছু পাওয়া যায় কি না।
দুই সেন্ট্রি অভির মাকে ঘর দেখিয়ে দিতে বলে উনার সাথে গেলো।
-তুমি চুপ করে এখানে বসে থাকো।
-স্যার আপনারা ভুল করছেন।
-বললামনা একদম চুপ।
মিনিট দুয়েক পরেই সেন্ট্রি দুইজন ফেরত এলো।
-স্যার পেয়েছি, পেয়েছি!!

মেকি একটা উত্তেজনা ওদের চোখেমুখে। একটা পলিথিনের ছোট প্যাকেট এগিয়ে দিলো অফিসারের দিকে। অভির সামনে সেটা খোলা হলো। অভি বিমূঢ় হয়ে তাকিয়ে আছে। ভাবছে সত্যি কি ঘটছে এসব না কল্পনা। সেই প্যাকেটে ৫ টা ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেলো! অভির মাকে যেন নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরেছে, নির্বাক তাকিয়ে আছেন তিনি।

সবচাইতে বেশী অবাক হয়েছে অভি। সে ১০০ ভাগ নিশ্চিত এই ট্যাবলেট তার নয়, প্রায় এক সপ্তাহ ইয়াবার আস্তানাগুলোর ধারেকাছেও যায়নি অভি।

-এই অবস্থা তাহলে? নিজের ঘরে ইয়াবা রেখে সাধু সাজতে চাও। নিজে খাও আবার অন্যের শাস্তি চাও। কি, ব্যবসা করো ইয়াবার, নিজের ব্যবসা চাঙ্গা করার ফিকির তাই না?

-আল্লাহর কসম স্যার এগুলো আমার না।

চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে অভির, সাথে তার মায়েরও।

-কসম যা করার থানায় গিয়ে করবে, চলো।
টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হলো অভিকে।

মামলা ঠুকে দেয়া হলো অভির বিরুদ্ধে, ইয়াবার ব্যবসায়ী উল্লেখ করে।

কেন আর কিভাবে এমন হলো আইডিয়া করতে পারছেন পাঠক? যে সমাজ থেকে ইয়াবা উৎখাত করতে চাইলো তার ঘরে ইয়াবা আসলো কিভাবে? অথচ সে তো সপ্তাহখানেক হলো ইয়াবা নিচ্ছেনা! সে কিভাবে বনে গেলো একরাতে ইয়াবার ব্যবসায়ী।

আসলে ইয়াবা কিংবা মাদক লেনদেনের প্রতিটা স্পট প্রশাসনের দেখা এবং জানা। প্রশাসনের নখদর্পণেই চলে এই মরণের আমদানিরপ্তানি, বেচাকেনা ইত্যাদি। প্রশাসন সেখানে বাঁধা না দিয়ে বরং মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা প্রদান করে মাসিক কিংবা বিভিন্ন টাইপের, বড় অংকের টাকার বিনিময়ে। বোকা অভি সেটা বুঝতে পারেনি। তার সহজ সরলতার কোন মূল্য দেয়নি পুলিশ প্রশাসন। সে যে তথ্য দিয়েছিলো তা জানানো হয় সকল ইয়াবা ব্যবসায়ীদের। অত:পর ব্যবসায়ীদের নির্দেশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে, ছোট একটা নাটক সাজিয়ে তাই পুলিশ অভিকে গ্রেফতার করে।

এবার পাঠক, আপনারাই বলুন পরিস্থিতি যখন এই পর্যায়ে তখন কিভাবে সম্ভব মাদক প্রতিরোধ? আপনি যতই সচেতন হোন, সাহসী হোন, প্রতিবাদী হোন, যে কোনো অপরাধ দমনে প্রশাসন, বিশেষ করে পুলিশের সাহায্য আপনাকে নিতেই হবে। তখন পুলিশ তাদের স্বার্থ রক্ষায় আপনার অভিযোগ অনুযায়ী পদক্ষেপ না নিয়ে উলটো আপনাকেই বিপদে ফেললে কি করার থাকে?

দিনকে দিন মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে বিস্তার হচ্ছে তাতে আমি ভয়াবহ এক বাংলাদেশের চিত্র দেখতে পাচ্ছি। অতিসত্বর সামাজিক, প্রশাসনিক, পারিবারিক, ব্যক্তিগত এবং জাতীয় পর্যায়ে ইয়াবার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে; নয়তো দেশটা ধবংস হবে, মাতৃভূমি হারাবে তার গরিমা, ঐতিহ্য আর ইতিহাস। যুক্তি,পরামর্শ করে প্লিজ যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই কৌশলে কিছু করার চেষ্টা করুন। পরিবারের সকল সদস্য, ছাত্র, চাকুরীজীবী, কোনকিছুতে ব্যর্থ এবং প্রায়সময় একাএকা বদ্ধঘরে পড়ে থাকা সদস্যদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। বন্ধুবান্ধবদেরদের চলাফেরা কিংবা আচারব্যবহারের হঠাৎ পরিবর্তনের তথ্য তার পরিবারকে জানান। কেউ টাকা পয়সা ধার চাইলে, বারবার প্রশ্ন করুন, কেন টাকার দরকার, এইসব ছোটছোট এওয়ার্নেসগুলো হয়তোবা বড় রকমের সাহায্য আনতে পারে। আর দীর্ঘায়িত করছিনা, কষ্ট করে পড়ুন, ভাবুন, যুক্তি দেখান নিজে নিজেকেই, তারপর শেয়ার করুন কি করণীয় সবার ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে মুক্তি লাভের জন্য।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৬

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: মাদক ধ্বংস করছে অনেক কিছুই! ভাল লেখা!

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৩৪

মাহফুজ বলেছেন: এবার মাদককে ধবংস করতে হবে নাহলে য, মাদক শিকড় সহ মানবসভ্যতাটাকেই উপড়ে ফেলে দেবে।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: পাঠকের কমেন্টের সবুজ তীর চিনহ ক্লিক করলে একটা বক্স আসে। ওখানে কমেন্ট করলে পাঠক নোটিফিকেশন পায়। না হলেবপায় না। ফলে আপনার লেখার প্রতিউত্তর পাঠক পড়তে পারে না!

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:২২

মাহফুজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আমি জানতামনা।

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:২৫

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: ঠিক আছে! এইতো এবার নোটিফিকেশন পেয়েছি!

৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


ব্লগে প্রেসিডেন্ট আ: হামিদ সাহেবকে একটা খোলা চিঠি লেখেন ইয়াবা বন্ধ করতে, ২ বছরের ভেতর বন্ধ না করলে আমাকে জানাবেন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮

মাহফুজ বলেছেন: কাজটা আপনিই করলে মনে হয় ভালো হবে ভাই। লেখালেখিরআপনার হাত বেশ ভালো আপনার।

৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬

রিমন সাঁই বলেছেন: নেশার আমদনী, প্রচার, প্রসার, সহজলভ্যতা কোনটাই বন্ধ করা যাবে না।(আমার মতে)
তবে হ্যাঁ, একমাত্র আমরা নিজেরা এর সর্বনাশা থেকে দূরে থাকতে পারি নতুবা নয়।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০০

মাহফুজ বলেছেন: জ্বি আমরাই পারি কিন্তু এই আমাদের মাঝে আরেক আমরা আছে যারা এই বিষ হাসিমুখে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমাদেরই হাতে তুলে দিচ্ছে।

৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

মূল-উপদল বলেছেন: আমি এখনো যেমন ইয়াবা মুক্ত আছি এমনিভাবে সব যুবক/যুবতী থাকতে পারলে ইয়াবা বাবা বাবা বলে দেশ ছাড়বে। নিজে ঠিক না হলে জগত ঠিক হবে না। কিশোর যুবক রা যে ভাবে সিগারেট ধরে সেভাবেই ইয়াবা ধরে। সুতরাং এই নেশা গ্রহনের মুল কারন এভেইলিবিলিটি নয়, ইচ্ছা।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৪২

মাহফুজ বলেছেন: ভাই মানলাম আপনার কথা কিন্তু এভেইলিভিলিটি না থাকলে আপনি কি ইয়াবা ইনডিয়া কিংবা মায়ানমার থেকে আনিয়ে খাবেন? ধরুন সিগারেট, সবজায়গায় পাওয়া যায়, সবচাইতে বেশী বিক্রিত প্রডাক্ট। এমন যদি হতো, সিগারেট রুরাল এরিয়ায় নেই, একমাত্র জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে বিক্রী হয় তখন কি সিগারেটের এতো প্রচলন থাকতো?

৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আশা একটাই। নিজেরা ঠিক থাকতে হবে। তাছাড়া সত্যিই উপায় নেই।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৪

মাহফুজ বলেছেন: পড়ে দেখার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ...জ্বি আশাই তো জীবন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.