নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

মাহফুজ

তেমন কিছু লিখবোনা নিজেকে নিয়ে কারণ লিখতে গেলে সেটা এতো বিশাল হবে যে কেউ পড়বেনা; অবশ্য লিখলেই যে অনেকে পড়বে তাও না। যাই হোক আসি মূল বিষয়ে, আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যে জীবনে চলার পথে একটি সুন্দর সেতু পেয়েছিলাম, মজবুতও ছিলো। সেতুটির পাশেই ছিলো একটি বাঁশের সেতু। আমি অনায়াসেই সুন্দর আর মজবুত সেতু দিয়ে ওপারে চলে যেতে পারতাম যেখানে খুব সুন্দর একটি পৃথবী আছে। আমি বোকার মতো নিজের খামখেয়ালিপনার কারণে বাঁশের সাঁকোতে উঠে পড়লাম যেটা ছিলো খুবই ভয়ানক এবং জায়গায় জায়গায় ত্রুটি অর্থাৎ নড়বড়ে আর খুবই গভীর। বাতাস দিলেই সেতুটি দুলতে থাকে ভয়ানক ভাবে।

মাহফুজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মার্ট ফোন

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৪০

প্রযুক্তির দান স্মার্টফোনের পোস্টমর্টেম:
অপরাধীর কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে স্মার্ট ফোনের ১৪ গোষ্টী উদ্ধারে যারা ব্যস্ত তাদের জন্য।

অস্বীকারের উপায় নেই যে, কেউ মারা যাচ্ছে কিংবা কোনো মর্মান্তিক মুহূর্তে ভিকটিমের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে না গিয়ে কিংবা সাহায্য না করে ভিডিও/ছবি তুলা এক ধরণের ঘৃণিত কাজ। আজকাল অহরহ এমন ঘটছে, ভিক্টিম মরছে নয়তো কাতরাচ্ছে মৃত্যু যন্ত্রণায় আর তার সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই তার স্মার্ট ফোন দিয়ে সেটা ধারণ করে লাইভ টেলিকাস্ট করছে কিংবা আপলোড করছে। সত্যিই এটাও এক প্রকার নিষ্টুরতা।

এবার যাই অন্যখানে, মনে আছে তো অভিজিতের কথা? অভিজিৎ হত্যার সময় যখন নির্দয় কুপাকুপি করছিলো জানোয়ারগুলো তখন তাদের প্রতিহত করতে যাওয়া আর আত্মহত্যা করা কি সমান ছিলোনা? সাংবাদিক এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা ধারালো অস্ত্রের সামনে জীবন বাজি রেখে যাবেই বা কেনো? অভিজিত তাদের কে? কথায়ই তো আছে, নিজে বাঁচলে বাপের নাম। তারা নিজের জীবন বাঁচিয়ে নিরাপদ দুরুত্ব রেখে সে নির্মমতা ধারণ করায় অন্তত খুনীগুলোর চেহারা কোটি মানুষ চিনতে পেরেছিলাম। যার ফলে পুলিশ তদন্তে মিলেনি "খুনীদের পরিচয় মেলেনি" এমন আজগুবি রিপোর্ট। হরহামেশাই যা হচ্ছে। খুন কিংবা ক্রাইম সংগঠিত হবার পর পুলিশ গিয়ে চাক্ষুষ স্বাক্ষীর অভাবে এবং নানা কলকাঠির কারণে রিপোর্ট দেয় "অপরাধি কে জানা যায়নি তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে মাটির নীচ থেকে হলেও খুঁজে বের করবো। (সমস্যা এটাই, অপরাধীরা মাটির উপরে মাটি কাঁপিয়ে ঘুরছে আর প্রশাসন তার সন্ধান চালাচ্ছে পাতালপুরীতে; তাহলে আর অপরাধী মিলবে কেন?)!!!!

ঘটনা দুই- খাদিজাকে যখন বদরুল কোপাচ্ছিলো তখন তো সে মানুষ ছিলোনা, একটা হিংস্র শয়তান ভর করেছিলো তার ভেতরে। তার কাছে গেলে দুই একটা কোপ যে বসিয়ে দিতোনা তার কি কোনো নিশ্চয়তা ছিলো? কে আর কেনই বা যাবে জীবনের মায়া ত্যাগ করে একটা অপরিচিত মেয়েকে বাঁচাতে? হে সম্মিলিত আক্রমণ অবশ্যই করা যেতো; তবে সেক্ষেত্রেও যে ঝুঁকি থাকতোনা তা কিন্তু না। সুতরাং ভয়ে "বদ"রুলের কাছে না গিয়ে সেটা স্মার্ট ফোনে ধারণ করে সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলতে পারাটা কি প্রশংসার দাবী রাখেনা। স্মার্ট ফোন না থাকলে কয়জন চিনতো মানুষরূপী জানোয়ার "বদ"রুলকে? কয়জন জানতো খাদিজা নামক মেয়েটির সাথে ঘটে যাওয়া অমানবিক, বর্বরোচিত ঘটনার কথা? স্মার্টফোনওয়ালা ফাউল পোলাপাইনজ সেখানে না থাকলে হয়তো খুব বেশী হলে সেদিন বদরুল শুধু গণধোলাই খেত আর খাদিজা কোনো এক অখ্যাত হাসপাতালে গিয়ে অল্পসময়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো। পরবর্তীতে সম্পুর্ণ ঘটনাটাকে আড়াল করে ফেলা হতো নানা যাদুকরী কৌশলে । যেমনটি প্রায়ই ঘটে থাকে আমাদের হতভাগা এই দেশে। স্মার্ট ফোনের কল্যানেই, খাদিজা এখনো বেঁঁচে আছে উন্নত চিকিৎসায় আর "বদ"রুলের যথাযথ বিচারের দাবীতে চতুর্দিক সরগরম।

তৃতীয় যে ঘটনার কথা বলবো সেটা ব্যতিক্রম এবং লজ্জাজনক। "রাজন" হত্যাকাণ্ড! হে সেসময় চাইলেই রক্ষা করা যেতো অসহায় শিশুটিকে।

এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে, সবার ক্ষমতা নেই চাইলেই একটা ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ কম্পিউটার কিনে ফেলা। যাদের কম্পিউটার কেনার সামর্থ্য নেই তারা জানে একটা স্মার্টফোন কতো মূল্যবান কাজে লাগে তাদের দৈনন্দিন জীবনে। বিশেষ করে ছাত্র সমাজ। গুগল কিংবা অনলাইন মাধ্যম ছাড়া তো আধুনিক শিক্ষাই আজ অচল।

যাই হোক, এরকম হাজারো উদাহরণ আছে দেশ বিদেশে স্মার্ট ফোনের উপকারিতা এবং অপকারিতার। সবকিছু নির্ভর করে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত চিন্তাধারা এবং কর্মপদ্ধতির উপর। জানতে হয় সঠিক জিনিসের সঠিক প্রয়োগ ও ব্যবহার।

রাইট ভ্রাতৃদ্বয় উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেছিলেন আর তাতে যুগেযুগে অনেক মানুষ দুর্ঘটনায় প্রাণ দিচ্ছে, হাইজ্যাক হচ্ছে জিম্মি নিয়ে বিমান, টুইন টাওয়ারে হামলা করানো হয়েছিলো এই বিমান দিয়েই। তবে কি উড়োজাহাজ আবিষ্কারকেরা অন্যায় করেছিলেন? তারা কি হামলা করানো কিংবা হাইজ্যাকিংয়ের কথা ভেবেছিলেন তখন?

অবশেষে বলতে চাই, জয় হোক প্রযুক্তির দান এই স্মার্ট ফোনের, আরো উন্নত হোক প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তি হোক জীবন রক্ষার বাহন, কেড়ে নেয়ার নয়।

স্মার্ট ফোনের সঠিক ব্যবহারে ধরা পড়ুক বদের হাড্ডিগুলো, ধরা পড়ুক অভিজিত, রাজনদের খুনীরা।

আসুন আমরা প্রযুক্তির দানের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি, স্মার্ট ফোন দিয়ে শুধু অশ্লীলতা আর নৈতিকতা বর্জিত কর্মকাণ্ড সমাজে ছড়িয়ে না দিয়ে মানবতার কল্যানে ব্যবহার করি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.