![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন, "ধর্মান্ধতা পরিহার করে ধর্মিষ্ঠ হই" "বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম" [আল-কোরআন-৯৬. সূরা আল-আলাক] ০১. পাঠ কর (এবং ঘোষনা / প্রচার কর) তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন- ০২. সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে। ০৩. পাঠ কর, আর (ঘোষনা / প্রচার কর) তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত। ০৪. যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন- ০৫, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।] পবিত্র কোরআনের ৯৬ নম্বর সূরা 'আলাক'-এর প্রথম এই পাঁচটি আয়াত অত্যন্ত মূল্যবান এবং যা মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে ফেরেশতা জিবরীল (আঃ)-এর মাধ্যমে সর্বশেষ নবী রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর নাযিলকৃত সর্বপ্রথম ওহি অর্থাৎ ঐশীবাণী। মহামহিমান্বিত প্রতিপালকের নামে শিক্ষা লাভের জন্য পাঠ করা ( Study ) অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় থেকে জ্ঞানার্জন করা এবং জ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে কলমের ব্যবহার অর্থাৎ 'লিখন' যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে তা সর্বজনবিদিত। মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালা তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকে খাঁটি মানুষ রূপে গড়ে তোলার জন্য যে সর্বপ্রথমে এই ধরণের চমৎকার ও কার্যকর ঐশীবাণী প্রদান করে অনুপ্রাণিত করবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে পার্থিব জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও আল-কোরআন ও বিজ্ঞানের বিষয়ে জ্ঞান চর্চার তাগিদে সময় বের করে নিতে হয়েছে। যে জ্ঞানের কোন সীমা পরিসীমা নেই, যে জ্ঞানের কথা লিখতে বসলে মহাসাগরের এমনকি আকাশ ও পাতালের সকল জলরাশিকে কালি বানালেও তা ফুরিয়ে যাবে- তার জন্য এই সময়টুকু অতি নগন্য। তথাপি আমার এই ছোট্ট প্রয়াসের জন্য দয়াময় আল্লাহতায়ালা যে আমাকে সুযোগ ও তৌফিক দিয়েছেন সেজন্য আমি অবনত মস্তকে সর্বশক্তিমান স্রষ্টার কাছে প্রতি মূহুর্তে শুকরিয়া আদায় করছি। সত্যের স্বরূপ উদঘাটনে যতটুকু সফলতা অর্জন করতে পেরেছি তার সবটুকুই আল-কোরআনের ঐশীবাণীসমূহের মর্ম সঠিকভাবে অনুধাবনের ফলেই সম্ভব হয়েছে। আর ব্যর্থতার জন্য একজন অতি সাধারন মানুষ হিসেবে আমার অযোগ্যতা ও অজ্ঞতাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী। হে বিশ্ববিধাতা করুণাময় মহান আল্লাহ , সর্বপ্রকার অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তির জন্য সর্বদা অবনত মস্তকে ক্ষমাভিক্ষা চাই। আর সরল ও সত্যের পথ যতটুকু অর্জন করতে পেরেছি তার উছিলায় একজন হতভাগা পাপী বান্দা হিসেবে তোমার জ্যোতির্ময় আরশের ছায়াতলে চিরকালের জন্য একটুখানি ঠাঁই চাই। আশাকরি ছোটখাট ভুলত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। চিন্তাশীল সুধীজনদের সুচিন্তিত পরামর্শ ও সমালোচনা সাদরে গ্রহণ করা হবে।
নবী ইসহাক (আঃ) ছিলেন নবী ইয়াকুব (আঃ) অর্থাৎ ইস্রাঈলের পিতা। এ সম্পর্কে আল-কোরআনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যে ইব্রাহীম (আঃ) এর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাইল (আঃ) এর বংশধর, এরূপ স্পষ্ট কোন ইংগিত আল-কোরআনে না থাকলেও তাঁকে যে খাঁটি ঐশী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এক বিভ্রান্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে গোটা মানবজাতির মুক্তিদূত হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছিল- তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য নিচের আয়াতগুলো লক্ষ্য করি-
সূরা আল বাক্কারাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(২:১২৬) অর্থ- যখন ইব্রাহীম বললেন, পরওয়ারদেগার! এ স্থানকে তুমি শান্তিধান কর এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা অল্লাহ ও কিয়ামতে বিশ্বাস করে, তাদেরকে ফলের দ্বারা রিযিক দান কর। বললেনঃ যারা অবিশ্বাস করে, আমি তাদেরও কিছুদিন ফায়দা ভোগ করার সুযোগ দেব, অতঃপর তাদেরকে বলপ্রয়োগে দোযখের আযাবে ঠেলে দেবো; সেটা নিকৃষ্ট বাসস্থান।
(২:১২৭) অর্থ- স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিল, পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।
(২:১২৮) অর্থ- হে পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু।
(২:১২৯) অর্থ- হে আমাদের মালিক তাদের মাঝে তদের (নিজেদের বংশ) থেকে (এমন) একজন রাসূল পাঠাও, যে তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ পড়ে শোনাবে, তাদেরকে তোমার কিতাবের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে, উপরন্তু সে তাদের পবিত্র করে দেবে; কারন তুমিই মহাপরাক্রমশালী ও পরম কুশলী।
কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপনের সময় পিতা এবং পুত্র হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাঈল (আঃ) (০২:১২৭) তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য দোয়া করেছিলেন। তাদের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, (০২:১২৮) তারা প্রথমত নিজেদেরকে আল্লাহতায়ালার অনুগত বান্দা হিসেবে কবুল করে নেবার জন্য দোয়া করেছিলেন। তারপর নিজ বংশধরদের মধ্য থেকে একটি অনুগত দল সৃষ্টির জন্য এবং ক্ষমা প্রাপ্তির আশায় তাদেরকে হজের সঠিক নিয়ম শিখিয়ে দেবার জন্য আবদার করেছিলেন। শুধু নিজেদের মধ্যেই নয়, (০২:১২৯) কাবার নিকটবর্তী স্থান অর্থাৎ মক্কায় বসবাসরত আরবদের কাছে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে ইসলামের অনুসারী একজন রাসূল প্রেরণের জন্যও আবেদন করেছিলেন।
আমরা জানি যে, রাসূল (সাঃ) তৎকালীন মক্কার আরবদের অন্তর্গত নামকরা ব্যবসায়ী গোত্র 'কুরাঈশ' বংশে জন্মগ্রহণ করেন। কাবা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের ভার তাদের উপরে অর্পিত থাকলেও ইব্রাহীমের (আঃ) একত্ববাদের শিক্ষা থেকে তারা অনেক দূরে সরে গিয়েছিল। তারা অংশিবাদী অর্থাৎ পৌত্তলিক ধর্মের অনুসারী ছিল এবং অন্যায় ও অনাচরের চরম সীমায় উপনীত হয়েছিল। ৫৪ নং সূরায় একাধিক দেব দেবীর মূর্তির (৩৬০টি) মধ্য থেকে প্রসিদ্ধ তিনজন দেবী-মূর্তির ('লাত', 'উযযা' ও 'মানাত') কথা উল্লেখ করে তাদের পৌত্তলিকতার প্রমাণ পেশ করা হয়েছে। সেই সাথে কাবা ঘরের প্রকৃত মালিক একমাত্র স্রষ্টা মহান আল্লাহতায়ালার ইবাদত করার দাওয়াত দিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে একটি সূরাও (১০৬ নং- "সূরা কুরাইশ") নাযিল করা হয়েছিল।
এবার নিচের আয়াতগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি-
সূরা আল জুমুআহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
(৬২:০২) অর্থ- তিনিই ("আল-উম্মী-ঈ-না") অশিক্ষিতদের (পন্ডিত নন এমন ব্যক্তি) মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
l-umiyīna - the unlettered
সূরা আল ইমরান (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৩:২০) অর্থ- যদি তারা তোমার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয় তবে বলে দাও, "আমি এবং আমার অনুসরণকারীরা আল্লাহর প্রতি আত্নসমর্পণ করেছি।" আর আহলে কিতাবদের (সে জনগোষ্ঠির উপরে পূর্বে ঐশী কিতাব নাযিল হয়েছিল) এবং ("আল-উম্মী-ঈ-না") অশিক্ষিতদের (স্রষ্টান পক্ষ থেকে কোন কিতাব নাযিল না হওয়ায় খাঁটি ঐশীজ্ঞান শিক্ষা করার সুযোগ থেকে যারা বঞ্চিত) বলে দাও যে, তোমরাও কি আত্নসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আত্নসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িত্ব হলো শুধু পৌছে দেয়া। আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা।
সূরা আল বাক্বারাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:৭৮) অর্থ- তোমাদের মধ্যে কিছু লোক "উম্মী-ঊনা" (অশিক্ষিত), যারা স্বপ্নচারিতা ছাড়া আল্লাহর কিতাবের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই।
সূরা আল আ’রাফ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(০৭:১৫৭) অর্থ- সে সমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি "উম্মী" নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।
(০৭:১৫৮) অর্থ- বলে দাও, হে মানব মন্ডলী। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও যমীনে তাঁরই রাজত্ব। একমাত্র তাঁকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল- এই "উম্মী" নবীর উপর, যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহতে এবং তাঁর বাণীসমূহে, তাঁকে অনুসরণ কর যাতে তোমরা সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার।
l-umiya- the unlettered
সূরা নাহল (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১৬:১২৩) অর্থ- অতঃপর আমরা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছি যে, একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের ধর্মমতের অনুসরণ কর; আর সে তো অংশিবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:১১৩) অর্থ- যদি তোমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না হত, তবে তাদের একদল তো তোমাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল। কিন্তু তারা নিজেদের ছাড়া কাউকে পথভ্রান্ত করতে পারে না এবং তোমার কোনই অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা তুমি জানতে না। তোমার প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ রয়েছে।
(৬২:০২) নং আয়াতের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -কে আরব বংশোভূত এমন সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে প্রেরণ করা হয়েছে যাদের কাছে তাঁর পূর্বে আল্লাহর বিধান সহ অন্য কোন নবী আসেন নাই। তাই তাদেরকে সামগ্রীকভাবে এখানে 'উম্মী-ঈ-না' অর্থাৎ অশিক্ষিত এবং পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কাজেই (২:১২৯) নং আয়াতে হযরত ইব্রাহীম ও ইসমাইল (আঃ) যে দোয়া করেছিলেন, (৬২:০২) নং আয়াতে তা কবুল হবারই ইংগিত বহন করছে। (০৩:২০) নং আয়াতে "আহলে কিতাব" ও "আল-উম্মী-ঈ-না" এই দুই জনগোষ্ঠির কথা পাশাপাশি উল্লেখ করে তাদের মধ্যকার মৌলিক পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এখানে "আহলে কিতাব" বলতে সেই জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয়েছে যাদের কাছে আল্লাহতায়ালা নবী মারফত ঐশী কিতাব নাযিল করেছিলেন এবং "আল-উম্মী-ঈ-না" বলতে সেই জনগোষ্ঠিকে বোঝানো হয়েছে যাদের কাছে স্রষ্টার পক্ষ থেকে তখন পর্যন্ত কোন নবী প্রেরিত হয়নি। ফলে ঐশী কিতাব নাযিল না হওয়ায় তারা খাঁটি ঐশী-জ্ঞান শিক্ষা করার সুযোগ থেকে তখনও বঞ্চিত ছিল। রাসূলকে (সাঃ) যে এই উভয় শ্রেণীর জনগণের কাছে ইব্রাহীমের (আঃ) প্রচারিত একত্ববাদের ধর্ম ইসলামের দাওয়াত দেবার নির্দেশই দেয়া হয়েছিল (১৬:১২৩) নং আয়াতে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে "আল-উম্মী-ঈ-না" শব্দটি আল-কোরআনে কিরূপ অর্থ প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে সেটাও পরিষ্কার করে দেয়া হেয়েছে। এখানে "আল-উম্মী-ঈ-না" বলতে মূলত এমন সাধারণ জনগোষ্ঠিকেই বোঝানো হয়েছে যারা স্রষ্টা প্রেরিত ঐশী কিতাবের জ্ঞানে শিক্ষিত বা পন্ডিত ছিলেন না। আবার (০২:৭৮) নং আয়োতে, আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান না থাকায় তাদেরকে স্বপ্নচারি অর্থাৎ 'মন বলে সত্য, কাজেই তা সত্য'- এমন চিন্তা বা বিশ্বাসে অভ্যস্তদের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই সামগ্রীকভাবে তাদেরকে আপন ভাবাবেগ দ্বারা চালিত পথভ্রষ্ট/ বিভ্রান্ত জাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কাজেই এই আয়াতগুলোর মূল বক্তব্য থেকে এটাই বোঝা যায় যে, নিজ পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে পার্থিব জ্ঞানলাভের সুযোগ ঘটলেও নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত রাসূল (সাঃ) নিজেও তাঁর সম্প্রদায়ের মতই খাঁটি ঐশী-জ্ঞান শিক্ষা করার মত সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সুতরাং এ থেকে বোঝা যায় যে, নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে খাঁটি ঐশী-জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে কোনরূপ পান্ডিত্ব তাঁর ছিল না অর্থাৎ সে সময়ে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান লাভের দিক থেকে তাঁকে একজন অশিক্ষিত/ অজ্ঞ ব্যক্তির সাথে তুলনা করাটা মোটেই অযৌক্তিক নয়। মূলত সে কারনেই (০৭:১৫৭) ও (০৭:১৫৮) নং আয়াতে তাঁকে ঐশী জ্ঞান লাভের দিক থেকে 'উম্মী' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেই সাথে ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে, রাসূলের (সাঃ) উপরে নাযিলকৃত ঐশী-কিতাব আল-কোরআনের জ্ঞান অন্যকারো কাছ থেকে ধার করা বা নিজের মস্তিষ্ক প্রসূত নয়, বরং সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ প্রদত্ত। কিন্তু সেই সময়েও মহান আল্লাহ তাঁকে সকল বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত রেখেছিলেন। তাই (০৪:১১৩) নং আয়াতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহতায়ালা রাসূলকে (সাঃ) পথভ্রষ্টদের হাত থেকে রক্ষা করে সরল পথে পরিচালিত করেছেন। তাঁর প্রতি ঐশী কিতাব নাজিল করে বিশেষ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং এমন কিছু বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন যা আগে তিনি জানতেন না। তাই সেই ক্রান্তিকালেও দল ও মত নির্বিশেষে সকলেই তাকে "আল-আমীন" অর্থাৎ 'সত্যবাদী' উপাধি দিয়েছিল।
রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যে শুধু আরবের নয়, সকল এলাকার সকল সময়ের ও সবার জন্য হেদায়েত, কল্যাণ ও শান্তির দূতরূপে প্রেরিত হয়েছেন, নিচের বাণীগুলো সেই সাক্ষ্য বহন করছে-
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:১৬৩) অর্থ- আমি তোমার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবীগণের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছে। আর ওহী পাঠিয়েছি ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব, ও তাঁর সন্তানদের প্রতি এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনূস, হারুন ও সুলাইমানের প্রতি; আর আমি দাউদকে দান করেছি যাবুর গ্রন্থ।
(০৪:১৬৪) অর্থ- নিশ্চয় অনেক রসূল (প্রেরণ করেছি) যাদের ইতিবৃত্ত ইতিপূর্বে আমি তোমাকে বলেছি এবং অনেক রসূল যাদের বৃত্তান্ত তোমাকে বলিনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে সাক্ষাত বাক্যালাপ করেছিলেন।
সূরা মুহাম্মদ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৪৭:০২) অর্থ- আর যারা বিশ্বাস করে, সৎকাজ করে এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কাজগুলো ক্ষমা করে দেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন।
সূরা আল আহযাব (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৩৩:২১) অর্থ- নিশ্চয় তোমাদের জন্যে আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম নমুনা / শ্রেষ্ঠতম আদর্শ রয়েছে, যে কারো জন্যই যিনি আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে,
সূরা আম্বিয়া (মক্কায় অবতীর্ণ)
(২১:১০৭) অর্থ- আমি তো তোমাকে বিশ্ব-জগতের জন্যে আশিস রূপেই প্রেরণ করেছি।
সূরা আল-ফুরকান (মক্কায় অবতীর্ণ)
(২৫:০১) অর্থ- পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়,
সূরা সাবা (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৩৪:২৮) অর্থ- আমি তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সু-সংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।
মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর হাবিব রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -কে যে সম্মান দান করেছেন সেটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট। মহান স্রষ্টা তাঁকে মানুষের জন্য শ্রেষ্ঠতম আদর্শ এবং বিশ্বজগতের জন্য মনোনীত করেছেন। তিনি বিশ্বনবী। এটাই তাঁর প্রকৃত ও বড় পরিচয়। সুতরাং এরপর জোর করে তার সম্মান বৃদ্ধির জন্য অন্য কারো বংশের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের স্বার্থে আল-কোরআনে প্রদত্ত নির্দেশনা ছেড়ে অন্য কারো কাছ থেকে ধার করা সূত্র হাতড়ে বেড়াবার কোন প্রয়োজনই নেই।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:১৫
মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ে মন্তব্য দিলে খুশি হব।
শুভকামনা রইল-
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:০১
রক্তভীতু ভ্যাম্পায়ার বলেছেন: প্লাস!
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:১৬
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা...''''''
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:৪২
সিনবাদ বলেছেন: ভাই আল উম্মি না শব্দের অর্থ হল আমার/আমাদের উম্মত বা আমার/আমাদের অনুসারি।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:৫১
মাহফুজশান্ত বলেছেন:
Sahih International
l-umiyīna - the unlettered
(62:02) It is He who has sent among the unlettered a Messenger from themselves reciting to them His verses and purifying them and teaching them the Book and wisdom - although they were before in clear error -
৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:৪৮
েমা আশরাফুল আলম বলেছেন: প্লাস
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:১৭
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা....''''''''
৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:০৫
সুমন আহমাদ স্বাধীন বলেছেন: খুব ভরি পোষ্ট, অনেক কিছুর সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে
আপাতত প্রিয়তে রাখলাম
২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:৩২
মাহফুজশান্ত বলেছেন: জী ভাই, আশাকরি মিলিয়ে দেখে কিছু একটা বলবেন।
ধন্যবাদ ও শুভকামনা.....''''''
৬| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:১৮
মরূেবল বলেছেন: প্লাস +++++++্
২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:৩২
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা.....''''''
৭| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৫৪
মাহমুদডবি বলেছেন: জাযাকাল্লাহ খায়রান
২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:০৫
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা.....''''''
৮| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:১৩
শিপু ভাই বলেছেন:
প্লাস ++++++
সুন্দর একটি পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
২৫ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ২:২১
মাহফুজশান্ত বলেছেন: অনেক দিন পর আমার পোষ্টে মন্তব্য দিলেন।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা.....''''''
৯| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:২৫
শিপু ভাই বলেছেন:
মাঝে কিছুদিন অফ লাইনে বেশি থাকা হত। তবে পোস্ট দেখতাম পড়তাম।
নির্দিষ্ট টপিকে বিস্তারিত রেফারেন্স সহ আলোচনা খুব ভাল লাগে। অনেক বিষয়ে কনফিউশন দূর হয়। এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।
শুভকামনা~
২৭ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৫৮
মাহফুজশান্ত বলেছেন: আপনার স্পষ্ট মন্তব্যটি পড়ে খুব ভাল লাগলো।
মহান আল্লাহর ইচ্ছায় অন্ততপক্ষে আমি যে সত্যকে স্পষ্টরূপে প্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছি, এটাই আমার বড় শান্তনা।
হয়ত কখনো কখনো আমি যেভাবে ভাবি ও প্রকাশ করতে চাই, তাতে কিছুটা ঘাটতি থেকে যায়। সেক্ষেত্রে ভুল বুঝলে পাঠকদের কোনই দায় নেই। একজন লেখক হিসেবে তাদের না বোঝার দায়টাও আমারই ব্যর্থতা বলে শিকার করতে লজ্জা নেই। কিন্তু আমার ভুল হলে যেমন পাঠকগণ আমাকে ধরিয়ে দিতে পারেন। তেমনি তারা ভুল বুঝলেও মাথা ঠান্ডা রেখে তা বোঝানোর দায়টাও অবশ্যই আমারই। আমি সে চেষ্টাই করি।
আপনাদের মত বিজ্ঞ পাঠকদের ভালোলাগা ও সমালোচনা- দুটোই আমাকে অনুপ্রাণিত ও সচেতন করে।
আবারও ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
১০| ০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ১২:১০
ডজ বলেছেন: ধন্যবাদ। প্রিয়তে রাখলাম।
০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ১২:১৯
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
১১| ০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ১২:২৪
জেনারেশন সুপারস্টার বলেছেন: নিক টা আমার বলেছেন: পরে পড়ব, তাই মন্তব্য করে রাখলাম যেন খুঁজে পেতে সুবিধা হয়।
অগ্রিম প্লাস!
০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ২:১৪
মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ে মন্তব্য দিলে খুশি হব।
শুভকামনা রইল-
১২| ০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ১২:২৯
রাজদরবার বলেছেন: উম্মী শব্দের অর্থ মূল, নিরক্ষর নয়। কারণ নবীজী হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং বলেছেন, সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইলম আমাকে দান করা হয়েছে।
০৪ ঠা মে, ২০১২ দুপুর ২:২৫
মাহফুজশান্ত বলেছেন: সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইলম আমাকে দান করা হয়েছে।
জী ভাই, ঠিক বলেছেন। তবে এই নির্ভুল ইলম স্বয়ং স্রষ্টা মহান আল্লাহতায়ালাই তাঁকে দান করেছেন। এ সম্পর্কে আল-কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেছেন-
সূরা আল আ’রাফ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(০৭:১৫৭) অর্থ- সে সমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি "উম্মী" নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।
(০৭:১৫৮) অর্থ- বলে দাও, হে মানব মন্ডলী। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও যমীনে তাঁরই রাজত্ব। একমাত্র তাঁকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল- এই "উম্মী" নবীর উপর, যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহতে এবং তাঁর বাণীসমূহে, তাঁকে অনুসরণ কর যাতে তোমরা সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার।
সূরা নাহল (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১৬:১২৩) অর্থ- অতঃপর আমরা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ প্রেরণ করেছি যে, একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের ধর্মমতের অনুসরণ কর; আর সে তো অংশিবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:১১৩) অর্থ- যদি তোমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না হত, তবে তাদের একদল তো তোমাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল। কিন্তু তারা নিজেদের ছাড়া কাউকে পথভ্রান্ত করতে পারে না এবং তোমার কোনই অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা তুমি জানতে না। তোমার প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ রয়েছে।
কাজেই এই আয়াতগুলোর মূল বক্তব্য থেকে এটাই বোঝা যায় যে, নিজ পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে পার্থিব জ্ঞানলাভের সুযোগ ঘটলেও নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত রাসূল (সাঃ) নিজেও তাঁর সম্প্রদায়ের মতই খাঁটি ঐশী-জ্ঞান শিক্ষা করার মত সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সুতরাং এ থেকে বোঝা যায় যে, নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে খাঁটি ঐশী-জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে কোনরূপ পান্ডিত্ব তাঁর ছিল না অর্থাৎ সে সময়ে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান লাভের দিক থেকে তাঁকে একজন অশিক্ষিত/ অজ্ঞ ব্যক্তির সাথে তুলনা করাটা মোটেই অযৌক্তিক নয়। মূলত সে কারনেই (০৭:১৫৭) ও (০৭:১৫৮) নং আয়াতে তাঁকে ঐশী জ্ঞান লাভের দিক থেকে 'উম্মী' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেই সাথে ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে, রাসূলের (সাঃ) উপরে নাযিলকৃত ঐশী-কিতাব আল-কোরআনের জ্ঞান অন্যকারো কাছ থেকে ধার করা বা নিজের মস্তিষ্ক প্রসূত নয়, বরং সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ প্রদত্ত। কিন্তু সেই সময়েও মহান আল্লাহ তাঁকে সকল বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত রেখেছিলেন। তাই (০৪:১১৩) নং আয়াতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহতায়ালা রাসূলকে (সাঃ) পথভ্রষ্টদের হাত থেকে রক্ষা করে সরল পথে পরিচালিত করেছেন। তাঁর প্রতি ঐশী কিতাব নাজিল করে বিশেষ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং এমন কিছু বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন যা আগে তিনি জানতেন না। তাই সেই ক্রান্তিকালেও দল ও মত নির্বিশেষে সকলেই তাকে "আল-আমীন" অর্থাৎ 'সত্যবাদী' উপাধি দিয়েছিল।
১৩| ১৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৩:৩৮
মুসা ভাই বলেছেন: প্লাস ++++++
২০ শে মে, ২০১২ সকাল ৯:৫০
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
১৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪২
গেছো বলেছেন: আপনার বুঝায় ভুল আছে। হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) যে ইসমাঈল (আঃ) এর বংশধর ছিলেন সে সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ-
"স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।
পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু।
হে পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন। এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা।" (সুরাহ বাকারা, আয়াতঃ- ১২৭-১২৯)
মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেনঃ-
"আমি আমার পিতা ইব্রাহীমের (আঃ) দোয়ার ফসল ও ঈসার (আঃ) সুসংবাদ।" (আহমাদ, সাহীহ ইবন হিব্বান, সিলসিলা সাহীহাহ হাদীস নং ১৫৪৫)
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১৫
মাহফুজশান্ত বলেছেন: জী ভাই, এতদিন আমিও আপনার মত ভুল বুঝে আসছিলাম। মহান আল্লাহতায়ালার কৃপায় আমার সেই ভুল ভেঙেছে। এবার লক্ষ্য করুন-
২:১২৭) অর্থ- স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিল, পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।
এই আয়াতে প্রথমে হযরত ইব্রাহীম ও ইসমাইল (আঃ) মহান আল্লাহর নিকটে তাদের দোয়া কবুলের জন্য আবেদন জানালেন। এরপর বললেন-
(২:১২৮) অর্থ- হে পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু।
তাদের বংশধর অর্থাৎ এখানে মূলত বাবা ইব্রাহীম (আঃ) এর সাথে পুত্র ইসমাইল (আঃ) উপস্থিত থাকায় 'আমাদের' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। কারন বাবা ও পুত্রের বংশ একই। আমরা জানি যে এই বংশেই হযরত ইসহাক (আঃ) এর মাধ্যমে হযরত ইয়াকুব, হযরত মুসা, হযরত ইশা (আঃ) এর বদৌলতে বিশ্বাসীদের একটি বিরাট অংশ ইসলামের অনুসারী হয়েছিলেন।
এবার নিচের আয়তটি লক্ষ্য করি-
(২:১২৯) অর্থ- হে আমাদের মালিক তাদের মাঝে তদের (নিজেদের বংশ) থেকে (এমন) একজন রাসূল পাঠাও, যে তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ পড়ে শোনাবে, তাদেরকে তোমার কিতাবের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেবে, উপরন্তু সে তাদের পবিত্র করে দেবে; কারন তুমিই মহাপরাক্রমশালী ও পরম কুশলী।
এখানে একজন রাসূল প্রেরণের কথাই বলা হয়েছে এবং স্পষ্টভাবে থার্ড পার্সন অর্থাৎ 'তাদের' শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে। আল-কোরআনের বক্তব্য অনুসারে এই সেই রাসূল যিনি ইব্রাহীম বা ইসমাইল (আঃ) এর বংশে নয় বরং আরবের কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ইব্রাহীম কিংবা ইসমাইল (আঃ) এর বংশের সাথে তার কোন সম্পর্ক না থাকলেও তিনি ইসলামের পতাকাবাহী সর্বশেষ রাসূল ও নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)।
আপনার দেয়া হাদিছের মাধ্যমে এখানে কিছুই প্রমাণিত হয় না।
ধন্যবাদ-
১৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:২৭
িফল্ড মার্শাল বলেছেন: ফিতনা যাতে সৃস্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন ।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১৬
মাহফুজশান্ত বলেছেন: ফিতনা সৃষ্টি হবার মত কোন বক্তব্য থাকলে স্পষ্ট করে বলুন।
ধন্যবাদ-
১৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩৮
ওই চোরা বলেছেন: খুব ভালো একটা পোষ্ট
++
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:২৩
মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ার ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ-
১৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩০
মরূেবল বলেছেন: ধন্যবাদ
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১৫
মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ-
১৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩১
গেছো বলেছেন: "স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ।
পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু।" (সুরাহ বাকারা, আয়াতঃ- ১২৭-১২৮)
উপরের আয়াতগুলোতে ইব্রাহীম ও ইসমাঈল (আঃ) দুয়া করেছিলেন। হযরত ইয়াকুব, হযরত মুসা, হযরত ঈসা (আঃ) ছিলেন ইব্রাহীম ও ইসহাক (আঃ) এর বংশধর। আপনাকে ১২৭ এবং ১২৮ নং আয়াতের ধারাবাহিকতায় ১২৯ নং আয়াতকে বুঝতে হবে। ১২৭-১২৮ নং আয়াতে আলাদাভাবে আরব বা কুরাইশদের কোনো উল্লেখ নেই। এখন ১২৯ নং আয়াতটি পড়ুনঃ-
"হে পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন। এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা।" (সুরাহ বাকারা, আয়াতঃ- ১২৯)
১২৭-১২৮ নং আয়াতের ধারাবাহিকতায় এটা সহজেই বুঝা যায় যে ১২৯ নং আয়াতের "তাদের" মানে হলো, ১২৮ নং আয়াতে ইব্রাহীম (আঃ) এবং ইসমাঈল (আঃ) তাদের বংশধরদের মধ্যে যে অনুগত দল সৃষ্টি করার জন্য তাঁরা দুয়া করেছিলেন সেই দলকে বুঝানো হয়েছে। সেই দল মানে যদি বনী ইস্রাঈলদের কথা বুঝানো হতো তাহলে আয়াতগুলোয় অবশ্যই আরব বা কুরাইশদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হতো।
তাই ইব্রাহীম (আঃ) এবং ইসমাঈল (আঃ) এর বংশধরদের মধ্যে থেকে অনুগত দল এবং আরব বা কুরাইশদের আলাদা মনে করা অযৌক্তিক।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৮
মাহফুজশান্ত বলেছেন: আমি আল-কোরআনের বক্তব্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরার পরও আপনি জোর করে একই কথা আওড়ালেন।
১২৮ নং আয়াতে একটি অনুগত দল সৃষ্টি করার জন্য আবেদন জানানো হলো। এই দলটি হলো হযরত ইসহাক, হযরত ইয়াকুব, হযরত মুসা, হযরত ঈসা (আঃ) এবং তাঁদের প্রকৃত অনুসারীদের অর্থাৎ খাঁটি ইসলামের অনুসারীদের দল। আর ১২৯ নং আয়াতে বলা হলো (তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুণ)। এখানে একটি দল নয় বরং স্পষ্টভাবে তাদের অর্থাৎ ঘুনে ধরা আরব সমাজের মধ্য থেকে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যে ধর্মের অনুসারী ছিলেন সেই খাঁটি ইসলামের অনুসারী একজন পয়গম্বর প্রেরণের জন্যই স্পেশালভাবে আবেদন জানানো হয়েছিল। সুতরাং এখানে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে ইব্রাহীমের (আঃ) বংশের সাথে জুড়ে দেবার কোন যুক্তি যেমন নেই, তেমনি কোন প্রয়োজনও নেই। কারনে রাসূলাল্লাহ (সাঃ) কে স্বয়ং মহান আল্লাহ যে সম্মান দান করেছেন সেটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট। এরপরও না বুঝলে আপনি আপনার মত ও বিশ্বাস নিয়ে থাকতে পারেন।
ধন্যবাদ-
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:০১
নিক টা আমার বলেছেন: পরে পড়ব, তাই মন্তব্য করে রাখলাম যেন খুঁজে পেতে সুবিধা হয়।
অগ্রিম প্লাস!