![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন সংক্ষিপ্ত। তাই প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুকে স্মরণে রাখুন আর মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি গ্রহন করুন।
"লাল পাহাড়ির দেশে যা" এই গানটি নিয়ে দেখলাম অনেক দ্বিমত। কেউ বলছে এইটা অর্নবের গান। কেউ বলছে ভূমি'র। আবার কেউ বলছে লোকগীতি। দ্বিধা ভাঙবার এবং সত্য কিছু তথ্য জানাবার উদ্যেশ্যে লিখলাম। একটি কবিতার গান হয়ে ওঠা এবং অজস্র গানপ্রেমী মানুষের মন জয় করার কিছু ঘটনা।
"একটি গাছ। নাম তার মহুয়া। ইংরেজীতে Madhuka Latifolia-যা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা বা মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলে পর্যাপ্ত দেখেছি। ...... এই রকম একটি গাছ শ্রীরামপুর স্টেশনে ঠায় দাঁড়িয়ে আমি দেখছি। যেখানে শব্দের অসহ্য দামামা। লক্ষ লক্ষ মানুষের তাৎক্ষণিক দাপট নিয়ত। ট্রেনের হাঁসফাঁস। হকারের দাপাদাপি, দূষিত ধূলোর থাবা। অসহ্য দুপুর। টোপা টোপা মহুয়া ফুলের ভারে অলংকৃত দেখে মুহুর্তের মধ্যে আমার অরণ্যের কথা মনে হলো। অরণ্যবাসীদের কথা মনে পড়ে গেল। এটা কি Nucleation পর্যায় নয়?
এরপর আমার কেমন কষ্ট হতে লাগলো। যে শব্দটি আমাকে প্রথমেই আঘাত করলো, তার ইঙ্গিতে যেন এক চরম সত্যের স্পর্শগন্ধ রয়েছে বলে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করলো। শব্দটি 'বেমানান'। আমার মতই কিংবা সবাইকার মতই গাছটি যেন ঠিক জায়গায় নেই। আমরা যেন যে যার আপাত স্বস্থানে অত্যন্ত বেমানান। যার যেখানে থাকার কথা নয়, সে যেন ঠিক সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। যেন তার চেয়ে মৃত্যু অনেক শ্রেয় ছিল। এভাবেই দশটি ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে- ভাবনার মধ্যে বিস্তার ঘটে চলেছে- আমাকে যেন কিছুতেই ছাড়তে চাইছে না, আষ্টে পৃষ্ঠে বাধছে। .........জন্ম নিল কবিতা...
শ্রীরামপুর ইস্টিশনে মহুয়া গাছটা
হাই দ্যাখো গ' তুই ইখানে কেনে,লালপাহাড়ীর দেশে যা
রাঙা মাটির দেশে যা
হেথাকে তুকে মানাইছে নাই গ', ইক্কেবারেই মানাইছে নাই
অ-তুই লালপাহাড়ীর দেশে যা...
সিখান গেলে মাদল পাবি
মেইয়ে মরদের আদর পাবি
অ-তুই লালপাহাড়ীর দেশে যা
লারবি যদি ইক্কাই যেতে
লিস্ না কেনে তুয়ার সাথে
নইলে অ-তুই মরেই যা
ইক্কেবারেই মরেই যা
হাই দ্যাখো গ', তুই ইখানে কেনে, লালপাহাড়ির দেশে যা
রাঙা মাটির দেশে যা,
রাঙা মাটির থানে যা... ।"
ঠিক এভাবেই 'লাল পাহাড়ীর দেশে যা' গানটির শুরুর কাহিনী বর্ননা করেন গানটির রচয়িতা কবি অরুন কুমার চক্রবর্তী। এই লেখাটি আমি নিয়েছি তাঁর প্রকাশিত একটি আর্টিকেল থেকে, 'লাল পাহাড়ীর দেশে যাঃ কবিতার জন্মবিজ্ঞান', যা ২০১০ সালে 'AUM'নামকে একটি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়।
একচল্লিশ বছর আগে ১৯৭২ সালে জন্ম নেয়া এই কবিতাটিতে সুরারোপ করেন সেই সময়ের এক উঠতি গায়ক বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের সুভাষ চক্রবর্তী ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে। সুভাষ চক্রবর্তী এই গানটি মঞ্চে মঞ্চে গান এবং প্রচন্ড জনপ্রিয়তা পায়। সেই সুবাদে ১৯৭৬ সালে তখনকার নাম করা সুরকার ভি বালসারার সঙ্গীতায়োজনে এই গানটি রেকর্ড বের হয়। এরপর বাউলরা এই গানটিকে তাঁদের নিজের করে নেয় ভালোবাসা দিয়ে। তখন পর্যন্ত এই গানটির নাম ছিল 'শ্রীরামপুর ইস্টিশনে মহুয়া গাছটা'। বাউলরা অরুন কুমার চক্রবর্তীকে গানটি বড় করার অনুরোধ জানালে তিনি 'লাল পাহাড়ির দেশে যা' নামে আবার লিখেন এবং নতুন করে সুর করেন।
লাল পাহাড়ির দেশে যা
হাই দ্যাখো গ' তুই ইখানে কেনে
অ তুই লালপাহাড়ীর দেশে যা
রাঙা মাটির দেশে যা
হেথাকে তুকে মানাইছে লাই রে
লাল পাহাড়ির দেশে যাবি
হাঁড়িয়া আর মাদল পাবি
হেথাকে তুকে মানাইছে লাই রে
নদীর ধারে শিমুল গাছ
নানা পাখির বাসা রে, নানান পাখির বাসা
কাল সকালে ফুইট্বে ফুল
মনে কতো আশা রে
মনে কতো আশা।
সেথাকে যাবি প্রাণ জুড়াবি
মাইয়া মরদের আদর পাবি
হেথাকে তুকে মানাইছে লাই রে
ইক্কেবারেই মানাইছে লাই রে
ভাদর আশ্বিন মাসে
ভাদু পূজার ঘটা রে, ভাদু পূজার ঘটা
তুই আমারে ভালোবেসে পালিয়ে গেলি
কেমন ব্যাপের ব্যাটা রে, কেমন বাপের বেটা
মরবি তো মরেই যা
ইক্কেবারেই মরে যা
হেথাকে তুকে মানাইছে লাই রে
ইক্কেবারেই মানাইছে লাই রে......
দারুণ অর্থবহ এবং অদ্ভুত সুন্দর এই গানটি গেয়েছেন অনেক গায়ক, ব্যান্ড, বাউল। অনেক লেখক ব্যবহার করেছেন তাঁদের উপন্যাসে। অনেক নাটকে, ছবিতে প্রকাশিত হয়েছে এই গান। এখানে তাঁর লেখা থেকে আরও কিছু অংশ জুড়ে দিলাম। "এখনকার ভূমি ব্যান্ড গানটা প্রায় চুরি করলো। টিভি-র অনুষ্ঠানে প্রচার হলো। অরুণের নাম বলে না দেখে ভূমির অনুষ্ঠানে, গ্রামে গঞ্জে, শহরে, কলেজের সোস্যালে প্রতিবাদ উঠলো। এখন ওরা মানতে বাধ্য হয়েছে। এভাবেই হাজারো ঘটনা ঘটে চলেছে দশক দশক ধরে- সে বড়ো মজার। ঝুপড়ি থেকে ফাইভস্টার লালপাহাড়ীর সুর ঊড়ছে।"
বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া এই গানটি শুনে দেখতে পারেনঃ
কবির নিজের কন্ঠে আবৃত্তি
অর্নব
বাসুদেব দাস
ভূমি
পরশপাথর
এবং লিরিক্সেও কিছু তারতম্য রয়েছে। উপরে অরিজিনালটা দিয়েছি। এছাড়াও কয়েকটির শুধু লিংক দিলাম, যাতে পোস্ট অহেতুক বড় না হয়। প্রয়োজন মনে হলে ঘুরে আসবেন।
অর্নব
ভূমি
সন্দ্বীপ ব্যানার্জী একটি ডকুমেন্টারি বানান যেখানে তিনি এই গানটির মূল খুঁজে ফেরেন। শেষ পর্যন্ত তিনি খুঁজে পান রচয়িতা অরুন চক্রবর্তীকে। এই ডকুমেন্টারির জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কার পান।
--------------------------------------------------------------------------
আমাদের সাথে যুক্ত হনঃ Bangla Song Lyics FB Page
আরো লিরিক্স পেতে ঘুরে আসুনঃ Bangla Song Lyics
২| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৪০
সানফ্লাওয়ার বলেছেন: গান টা আমার খুব প্রিয়। যখনি শুনি মনে হয় এটা আমার জন্য গাওয়া একটা গান। ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:২০
কালো কুয়াশা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
৩| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৭
খেয়া ঘাট বলেছেন: চমৎকার সুন্দর একটা পোস্ট।কিন্তু আফসোস পাঠকের কোনো মন্তব্য নেই।
ব্লগের পাঠকেরা কমেন্ট আদান প্রদানের বিনিময় প্রথায় আটকা পড়েছে।
খুবই দুঃখজনক।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।
২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:২২
কালো কুয়াশা বলেছেন: মন্তব্য নেই, ব্যাপার না। অন্তত পাঠকরা লেখাটা পড়েছেতো।
প্লাসের জন্য একগুচ্ছ ধন্যবাদ।
৪| ২১ শে জুন, ২০১৩ ভোর ৫:১৫
নীল আকাশ আর তারা বলেছেন: ++++++++++++
২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:২২
কালো কুয়াশা বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ২১ শে জুন, ২০১৩ ভোর ৬:৫২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: +++++++++++++++
২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:২৩
কালো কুয়াশা বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২১ শে জুন, ২০১৩ ভোর ৬:৫৪
বোকামন বলেছেন:
চমৎকার পোস্টটির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি :-)
২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১
কালো কুয়াশা বলেছেন: পড়ার জন্যও ধন্যবাদ
৭| ২১ শে জুন, ২০১৩ ভোর ৬:৫৮
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: নাইস একটা পোষ্ট
২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১
কালো কুয়াশা বলেছেন:
৮| ২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৭:৪৭
ইউসুফ আলী রিংকূ বলেছেন: আপনার এই সুন্দর পোস্টটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২
কালো কুয়াশা বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
৯| ২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:১৪
আমি ইহতিব বলেছেন: গানটা যখনই শুনি মনে হয় এখনই ছুটে যাই লাল পাহাড়ীর দেশে। দারুন এই গানটার এতো ইতিহাস জানা ছিলোনা। ধন্যবাদ আপনাকে এতো তথ্য শেয়ার করার জন্য।
২১ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪
কালো কুয়াশা বলেছেন: গানটি আসলেই দারুণ। এক জায়গায় দেখলাম রীতিমিত তর্ক হচ্ছে এই গান কার তা নিয়ে। তাই ভাবলাম একটু লিখি। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
১০| ২১ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩২
হাসান মাহবুব বলেছেন: অসম্ভব প্রিয় একটা গান, অথচ এর প্রকৃত শিল্পীর কথা জানাই ছিলো না। প্লাস এবং শেয়ার্ড।
২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:১৮
কালো কুয়াশা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
১১| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:১৮
নীল বরফ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।পুরো অজানা এক অধ্যায় জানলাম। আমি অর্নব এবং ভূমি'র কনসার্টে গানটি সরাসরি শুনেছিলাম। এক অসাধারন গান এটা।প্রিয়তে।
২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:২২
কালো কুয়াশা বলেছেন: কনসার্টে সরাসরি শুনছেন? আহঃ কি ভাগ্য। আমিও শুনতে চাই
১২| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:২৭
আরমিন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ এই চমৎকার পোস্ট টির জন্য!
প্লাস এবং প্রিয়তে!
২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:০১
কালো কুয়াশা বলেছেন: ধন্যবাদ
১৩| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৪৭
রেজোওয়ানা বলেছেন: আমি সকালে একটা মন্তব্য করে গেলাম, পোস্ট হলো না কেন!!!!
পোস্ট অনেক আগেই শেয়ার্ড হয়ে গেছে,
এত পছন্দের একটা গান, একদম জানতাম না!
২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৫
কালো কুয়াশা বলেছেন: আগের মন্তব্যটি আসে নি কেন বুঝতে পারলাম না। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
১৪| ২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৮
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ভাল লাগল
২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৪১
কালো কুয়াশা বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৫| ২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:১০
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: কবিতাটা মনে হচ্ছে উযড়িয়া ভাষায় লেখা। নাকি সাওতাল ভাষায়?
২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৪১
কালো কুয়াশা বলেছেন: সাঁওতালি ভাষায় ঝুমুর গান। কবি তাঁর লেখায় ইঙ্গিত দেন তিনি বাঁকুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় গান করেন এবং ওখানকার বেশির ভাগ গান সাঁওতালি বা ঝুমুর গান। খুব সম্ভবত শিলজিৎ রায়ের একটি লেখাতেও পড়েছিলাম যেখানে তিনি বলেছিলেন লাল পাহাড়ী গানটি ঝুমুর গান। দাড়ান, লেখাটা আরেকবার চোখ বুলাই। .......হ্যাঁ কবি নিজেই স্পষ্ট করে একে ঝুমুর গান বলেছেন।
১৬| ২৯ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৩
ডট কম ০০৯ বলেছেন: এত ভাল লাগছে যে ফেসবুকের নোটে লইয়াগেছি।
ধন্যবাদ কালো কুয়াশা
১৭| ৩০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
কালো কুয়াশা বলেছেন: ওহ অনেক ভালো লাগলো আমারো। ধন্যবাদ আপনাকেও।
১৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১২
এরিস বলেছেন: অর্ণবের গানটি শোনা হয়েছে। অসম্ভব ভালোলাগার একটা গান। শুনলেই যেন দেখতে পাই আমি নিজেই পাহাড়ের দেশে কোথাও।
গানটির পেছনের এতো বড় ইতিহাস জানা ছিল না। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর কিছু তথ্য শেয়ার করার জন্যে।
অনেক দেরিতে মন্তব্য করলাম, আসলে চোখে পড়লো অনেক দেরিতে। তবুও ছাপ রেখে গেলাম, ভাল জিনিসের কি পুরাতন নতুন আছে??
ভাল লাগা।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৯
কালো কুয়াশা বলেছেন: ঠিক আমিও দেরীতে ধন্যবাদ দিয়ে গেলাম :প
১৯| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯
জেসন বর্ন বলেছেন: প্রিয় লেখক, মুগ্ধ হয়ে আপনার লেখাটা পড়লাম। সত্যি সত্যিই অনেকদিনের অনেক অনেক প্রশ্নের জবাব পেলাম আজ এই খিলক্ষেতের জ্যামে বসে। আপনার লেখাটি উদ্ধৃত করে একটা লিখার অনুমতি চাচ্ছি। ভালো থাকবেন।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৮
কালো কুয়াশা বলেছেন: অনুমতি দেয়া গেল
২০| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:২৬
রিপেনডিল বলেছেন: পরশ পাথরের গাওয়া ভার্সনটার লিরিক পাওয়া যাবে?
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৫১
তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: চমৎকার