![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এতেকাফ রমজানের মহান ইবাদতের নাম। মদিনায় অবস্থানকালীন
রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি বছরই এতেকাফ পালন করেছেন।
দাওয়াত, তরবিয়ত, শিক্ষা ও জিহাদে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও
রমজানে তিনি এতেকাফ ছাড়েননি। এতেকাফ ঈমানি তরবিয়তের
অনুপম পাঠশালা।
রাসূলুল্লাহ (সা.) হেদায়েতি আলোর একটি
প্রতীক। এতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর
ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সব বিষয় থেকে আলাদা করে
নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য
অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি
মোক্ষম সুযোগ। সবার উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের
ঈমানি চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা এবং উন্নততর পর্যায়ে
পেঁছে দেয়ার চেষ্টা করা।
কোরআনুল করিমে বিভিন্নভাবে এতেকাফ সম্পর্কে ইবরাহিম
(আ.) ও ইসমাঈল (আ.) এর কথা উল্লেখ করে এরশাদ হয়েছে,
'এবং আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা
আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-
সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর।' (সূরা বাকারা : ১২৫)।
এতেকাফ অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে কী আচরণ হবে তা বলতে
গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'আর তোমরা মসজিদে
এতেকাফকালে স্ত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করো না।' (সূরা
বাকারা : ১৮৭)।
ইবরাহিম (আ.) তার পিতা এবং জাতিকে লক্ষ্য করে মূর্তির
ভর্ৎসনা করতে গিয়ে যা বলেছিলেন, আল্লাহ তায়ালা তা
উল্লেখ করে বলেন, 'যখন তিনি তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে
বললেন, এ মূর্তিগুলো কী, যাদের পূজারি (এতেকাফকারী হয়ে)
তোমরা বসে আছ?' (সূরা আম্বিয়া : ৫২)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অসংখ্য হাদিস এতেকাফ সম্পর্কে
বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য থেকে ফজিলত সম্পর্কিত কিছু হাদিস
নিম্নে উল্লেখ করা হলো। রাসূল (সা.) এর সহধর্মিণী
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষের
দশকে এতেকাফ করেছেন ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর
স্ত্রীরা এতেকাফ করেছেন। ( সহিহ বোখারি : ২০২৪; মুসলিম :
১১৭২)।
তিনি আরও বলেন, 'রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক
রমজানে এতেকাফ করতেন।' (সহিহ বোখারি : ২০৪১)।
অন্য এক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন, 'আমি (প্রথমে)
এ রাতের সন্ধানে প্রথম দশে এতেকাফ পালন করি। অতঃপর
এতেকাফ পালন করি মাঝের দশে। পরে ওহির মাধ্যমে আমাকে
জানানো হয় যে, এ রাত শেষ দশে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের
মাঝে যে (এ দশে) এতেকাফ পালনে আগ্রহী, সে যেন তা পালন
করে। লোকেরা তার সঙ্গে এতেকাফ পালন করল। রাসূল (সা.)
বলেন, আমাকে তা এক বেজোড় রাতে দেখানো হয়েছে এবং
দেখানো হয়েছে যে, আমি সে ভোরে কাদা ও মাটিতে সেজদা
দিচ্ছি। অতঃপর রাসূল (সা.) একুশের রাতের ভোর যাপন
করলেন, ফজর পর্যন্ত তিনি কিয়ামুল লাইল করেছেন। তিনি
ফজর আদায়ের জন্য দ-ায়মান ছিলেন। তখন আকাশ থেকে
বৃষ্টি নেমে এলো এবং মসজিদ চুইয়ে পানি পড়ল। আমি কাদা ও
পানি দেখতে পেলাম। ফজর সালাত শেষে যখন তিনি বের হলেন,
তখন তাঁর কপাল ও নাকের পাশে ছিল পানি ও কাদা। সেটি ছিল
একুশের রাত।' (মুসলিম : ১১৬৭)।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, 'রাসূল (সা.) প্রতি রমজানে ১০
দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন সে
বছর তিনি ২০ দিন এতেকাফে কাটান।' (সহিহ বোখারি :
২০৪৪)।
আয়শা (রা.) বলেন, 'রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে তাঁর জনৈক
স্ত্রীও এতেকাফ করলেন। তখন তিনি ছিলেন ইস্তেহাজা
অবস্থায়, রক্ত দেখছেন। রক্তের কারণে হয়তো তার নিচে
গামলা রাখা হচ্ছে। (সহিহ বোখারি : ৩০৯)।
রাসূল (সা.) বলেন, 'আমি কদরের রাতের সন্ধানে প্রথম দশ
দিন এতেকাফ করলাম। এরপর এতেকাফ করলাম মধ্যবর্তী দশ
দিন। অতঃপর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হলো যে, তা
শেষ দশ দিনে। সুতরাং তোমাদের যে এতেকাফ পছন্দ করবে,
সে যেন এতেকাফ করে। ফলে মানুষ তার সঙ্গে এতেকাফ যাপন
করল।' (মুসলিম : ১১৬৭)।
©somewhere in net ltd.