নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যক্তিজীবনে অহিংসায় বিশ্বাস করি। বুদ্ধের দর্শন গভীরভাবে ভাবায় আমায়। “আসক্তিই সকল দুঃখের কারণ, অধিকারবোধ থেকেই দুঃখের সৃষ্টি।” এই দুটো বাক্যের উপর অগাধ বিশ্বাস। কারো চিন্তা-চেতনাকেই ছোট করে দেখিনা। আমি বিশ্বাস করি যে মতবাদই হোক, তার গভীরে না ঢ

প্রজ্জলিত মেশকাত

আমি আমার মত। আমি অনন্য। পৃথিবীতে আমার মত কেউ ছিলনা, নেই আর কেউ আসবেও না। জন্মের আগেও আমি ছিলাম না। মৃত্যুর পরেও এই নশ্বর পৃথিবীতে আমার কোন অস্তিত্ব থাকবেনা। যা থাকবে তা আমার কৃতকর্ম।

প্রজ্জলিত মেশকাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ আমার জন্মদিন।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৭

গতকাল রাতের লেখাটি ভূলক্রমে মুছে ফেলেছি। ক্যাশ থেকেও উদ্ধার করতে পারলামনা। যাইহোক, আজকের এই দিনে তেত্রিশ বছর পূর্বে পহেলা এপ্রিল, ১৯৮৭ সাল, ১৩৯৩ বংগাবব্ধের ১৭ ই চৈত্র, রোজ বোধবার, সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটে, গ্রামের এক মধ্যবিত্ত, ঐতিহ্যপূর্ণ, শিক্ষিত পরিবারে, চার সন্তানের মধ্যে শেষ সন্তান হিসেবে আমার জন্ম হয়। আজ তেত্রিশ বসন্ত কেটে গেল আনন্দ-বেদনায়, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে, সুখ-দুঃখে, ভুল-ভ্রান্তিতে, সাফল্য-ব্যর্থতায়। গভীরভাবে চিন্তা করলে আমি সুখীই। আমি জন্মের পূর্বে আমার মায়ের গর্ভ বা পিতা কোনটাই নির্ধারণ করে আসিনি। নরমাল ন্যাচারাল র‍্যান্ডম সিলেকশন প্রক্রিয়ায় এই পৃথিবীতে এসেছি। মোটামুটি প্রিভিলেজডই ছিলাম। ছোট থেকেই অনেক কিছু অ্যাকসেস করার সুযোগ হয়েছে যা গ্রামের অধিকাংশ বাচ্চারা পায়নি। আমি সর্বশক্তিমান স্রষ্টার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আমাকে আমার জেঠা-জেঠি মানুষ করেছেন। তাদের বাবা মা হিসেবে জানি। একই বাড়িতে থাকা স্বত্বেও নিজের বাবাকে চিনতে অনেক সময় লেগেছে। মোটামুটি ১৫-১৬ বছর। এতে কখনোই আমার আক্ষেপ ছিলোনা। এখনও নেই। ভবিস্যতেও থাকবেনা। নিজের মাকে মা ডেকেছি ইন্টার পরীক্ষার আগে, অনেক শক্তি আর সাহস সঞ্চয় করে। বাবাকে বাবা ডেকেছি আন্ডারগ্র্যাডে চান্স পাওয়ার পর। স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় শিশু তার প্রাইমারি কেয়ার গিভারের প্রতিই বেশি দূর্বল হয়। আমিও তাই। আমার তিন ভাইবোন সমাজের ভাল অবস্থানেই আছে। তারা আমার বায়োলজিক্যাল প্যারেন্টসদের যত্ন নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তারপরও আমি আমার পক্ষ থেকে যেটুকু করার, তা চেষ্টা করি কারণ তাঁরা আমার স্রষ্টা। তাদের মাধ্যমেই আমি পৃথিবীতে এসেছি।

বলতে গেলে আমার পরিবার একটাই। যে ঘরে মানুষ হয়েছি। ভাইবোনদের সাথে সুসম্পর্ক আছে। আমার বায়োলজিক্যাল প্যারেন্টস কখনো আমার কোন ব্যাপারে নাক গলাইনি। এমনকি চাচা-চাচিরা যতটুকু অধিকারবোধ দেখায় তাউও দেখাইনি। কারণ তারা যথেষ্ঠ মানবিক, সামাজিক এবং প্রথাগতভাবে শিক্ষিত যে, অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার আর রাখিতে চান নাই। আমি তাদের যথেষ্ঠ সময় দিতে পারিনা। আমার পারিবারিক সব সম্পর্ক বেড়ে উঠা মায়ের পরিবারের সাথেই। মায়ের পরিবার কখনো আমাকে বুঝতে দেয়নি, আমি তাদের না। এখনো না। আমার মা-বাবার প্যারেন্টিং নিয়ে কোন প্রশ্নই তোলা যায়না। অসাধারণ প্যারেন্টিং ছিলো। কখনোই কোন যৌক্তিক বিষয়ে না করেননি। আমাকে তাঁরা সর্বোচ্চ আদর্শ দিয়ে মানুষ করেছেন। আমি হলফ করে বলতে পারি শুধু গ্রাম হিসেবে নয়, সার্বজনীনভাবে তাঁরা আমাকে প্রিভিলেজড রেখেছেন। তাদের প্রত্যাশা আমি পূরণ করেছি। কখনো হতাশ করিনি। সবই তাঁদের প্রচেষ্টা, দোয়া আর স্রষ্টার নেয়ামত। সমাজের সর্বোচ্চ স্থানের একটাতে তাঁরা নিয়ে যাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। আমি সেই পথেই আছি। মোটেও বিচ্যুত হয়নি। সন্তান হিসেবে আদর্শই ছিলাম। বাবা-মায়ের কথা কখনো লংঘন করিনি। শুধু জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায়না। আমার মা বলেন তুমি আমার পেট থেকে হওনি, কিন্তু তুমি আমার আত্মা থেকে পৃথিবীতে এসেছো। তুমি আমার অস্তিত্বের অংশ। স্রষ্টা আমাকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন আমার মায়ের কালার কমপ্লেক্সন এবং চেহারা ছবির সাথেও মিল আছে।

সবার জীবনেই ড্র-ব্যাকস থাকে। আমার জীবনেও আছে। সেগুলোর জন্য আমিই দায়ী। ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন আছে। এতে কিছু জেনেটিক প্রভাব আছে। পূর্ব পূরুষের ছিলো। তারপরও ফাংশনাল লাইফ মেনটেইন করে চলছি। আলহামদুলিল্লাহ। সবসময় সেলফলেস স্যাক্রিফাইস করার চেষ্টা করি। সব শ্রেনী পেশার লোকজনকে হারবার করার চেষ্টা করি। সকল সংগঠনকে, যারা কাছের তাদের সহায়তা করেছি। যখন যাদের প্রয়োজন পড়েছে। বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলই আসুক না কেন কেউ আমাকে লাথি মেরে দূরে সরিয়ে দিতে পারবেনা। এটা কমপক্ষে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জন্য। অন্যকোন কারণে নয়। কারণ যত ক্ষমতাশালীই আজ হোন পাশার দান ঘুরে গেলে আপনাকে চরম মূল্য দিতে হবে। ইনশাল্লাহ আমাকে তা করতে হবেনা। হয়তো কিছুটা সাপ্রেশড থাকব। এটা বিশ্বজনীন। আন্ডারগ্র্যাড লেভেল থেকে একটা বিশদ পরিসরে মিশেছি। গ্রাজুয়েশন শেষের পর এবং তার আগেও যার জন্য যা সম্ভব করেছি। রাষ্ট্রের মোটামুটি সব লেভেলেই বন্ধু, শুভাকাংখি, সিনিয়র, জুনিয়র আছে। প্রকৃতি আমার প্রতি কোন অবিচার করেনি। আমি নিজে অনেকটাই নিজের প্রতি অবিচার করেছি। নিজেকে ক্ষমা করেছি। নিজেকে ভালবাসি।

আমি সেলফলেস স্যাক্রিফাইস করি। নিজের দ্বায়িত্বের বাইরেও অনেক কাজ করে দেই, মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য। মানুষের যে ভালবাসা পাই সেটাই বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ঠ। একরোগীকে বাঁচাতে পারিনি। কিন্তু রোগী মরার আগে বলেছে, স্যার আমি হয়তো বাঁচবোনা কিন্তু আল্লাহর কাছে আপনার কথা বলবো। এর চেয়ে প্রাপ্তি আর হতে পারেনা। অল্প বয়সের মৃত্যু আমাকে খুব কষ্ট দেয়। অনেক মৃত্যুইতো দেখি। কিন্তু অসময়ের মৃত্যুগুলো আমাকে ভীষণ কষ্ট দেয়। আরেকটা কথা কেউ ক্ষমতা দেখালে আমি তাকে কখনো বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেইনা। আরো বড় ক্ষমতা দিয়ে তাকে নিচে নামিয়ে দেয়। যদিও এটা উচিত না। একদিক থেকে উচিত। আমার পেশার লোকজনকে মানুষ ধঞ্চে মনে করে। এজন্য আমাদেরই একটা শ্রেনী দায়ী। কোরাপ্টেড লোকজনকে আমি কখনোই ভালবাসিনা। আর একটা সত্য কথা আমার পেশার মানুষের মধ্যে ঈর্ষা আসলেই বেশি। একটা অংশের মধ্যে। তাই বলে ধঞ্চে ভেবে মানুষ যা ইচ্ছে করবে আমি তা হতে দেইনা। আমার প্রফেসররাও আমাকে ভালবাসে, দুরৃত্ত শ্রেনীকে উপযুক্ত জবাব এবং শিক্ষা দেওয়ার জন্য আর রোগীদের জন্য সর্বাত্বক প্রচেষ্টার জন্য। অনেক কথা বলে ফেললাম। যারা আমার ব্লগ পড়বেন, আমার জন্য দোয়া করবেন। স্রষ্টা যেন সারাজীবন অসহায় মানুষের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকতে পারি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সেই জন্যই আজকে কেন যেন মেশকাত আম্বরের সুবাশে
মনটা প্রফু্ল্ল হয়ে আছে। মেশকাতের জন্মদিন বলে কথা।
কিন্তু ঘোর অমানিশার কবলে দেশ এখন। তাই কোন
খানাপিনার আয়োজনের আবশ্যকতা নাই। এমনি এমনিতে্ই
শুভ জন্মদিন জনালাম। হ্যাপি বার্থ ডে টু ই্উ মেশকাত।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৮

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: ধন্যবাদ নূরু ভাই। আমি আপনার এলাকা থেকেই পড়ে আসছি। বরিশাল আমার মনে প্রাণে। এককথায় বরিশাল আমার সেকেন্ড হোম। বরিশাল গেলে, ক্যাম্পাসে ঢুকলে মনটা সব অবস্থা থেকেই ভাল হয়ে যায়। ত্রিশ গোডাউন, বিবির পুকুরপাড়, গোঠাইল মসজিদ, শেরে বাংলার বাড়ি, সেই দীঘিটা, ব্রাউন্ড কমপাউন্ড, শহরের অলিগলি, সদররোড, অভিরুচি সিনেমা হল........সবকিছু শুধু স্মৃতিতে নয়, যেন রক্তে মিশে আছে। মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসটা স্বপ্নে দেখি।

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৫৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: Happy birthday

০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪১

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.