নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিজয় না হওয়া পযন্ত সংগ্রাম করো

মানুষ আজিজ১

মানুষ আজিজ১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেলাশেষের গান । মানুষ আজিজ

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬


নীলছায়া এসে পড়ল মাটির উপর , তাতেই উর্বর মুক্তি । যেদিন আবার খুজে নিব তোমাকে, মণীক্ষা সেদিন গেয়ে যেয়ো বেলাশেষের গান ।

বড়দার মাটির ঘরের পিছনে উলুমাটি উঠেছে অনেক,ঝুর ঝুর মাটিগুলো চিনিগুড়ো চাল বানিয়ে খেলছিল নীলি । আমাকে দুর থেকে দেখে দৌড়ে পালালো -এইরে দাদা এসে পড়েছে । ওর সাথে আরো কয়েজন ছোটরা ছিল । এরপর নীলিকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত আর খুজেঁ পেলাম না । কোথায় যে এত খেলতে যায় ও, সারাক্ষন মাটি আর জল নিয়েই ওর শিল্প খেলা ।
আমি সন্ধ্যার পর উঠনে বসে রয়েছিলাম, ওর অপেক্ষায় । প্রায় সন্ধে শেষ হয়েও গেল তখনো আসছিলো না ও, হঠাৎ গোয়ালঘরের পিছনে মনে হলো কেউ দাড়িয়ে রয়েছে । আমি পিছন দিক থেকে গিয়ে ওর গাঢ়ে ধরলাম বল, এবার কোথা পালাবি? পালালি কেন তখন?

নীলি আমার কাছে আকুতি, মিনতি করে বললো -আজকের মত ছেড়ে দাও দাদা , আর কোনদিন পালাবো না ! মাটি দিয়ে খেলবো না !মণীক্ষাদিদিদের জলপাই তলায় আর যাবো না ! ঠিক মত স্কুলে যাবো, পন্ডিত মশায়ের কথা মেনে চলবো ।
এই তোর গায়ে এত গন্ধ কেন? সাবান দিয়ে, শরীর মুছিস না ? আয় তোকে গোসল করিয়ে দিই । আমার কথা শুনে নীলি খুশিঁ হয়ে বললো-তাহলে ঘাটে দাড়াও আমি সাবান নিয়ে আসি, শরীর ঢলে, সাবানের ফেনাতুলে আমাকে গোসল করিয়ে দিয়ো ।
আমি বললাম-যা ,সাবান নিয়ে আয় । নীলি ছু মেরে ছুটে গেল ,আমি গিয়ে ঘাটে বসলাম । নীলি এসে পুকুরে নেমে গেল । নীলির পুকুরের জলের সাথে ওর বন্ধুত্ব , পুকুরে নামলে আর উঠতে চায় না । এমন সময় মনীক্ষা আসলো গোসল করতে ।
কি মনীক্ষা রাত্রি বেলা গোসল কেন? অনেক কাজ করলে বুঝি? মনীক্ষা কথা না বলে শুধু বললো- হুম । নীলি মনীক্ষাকে পেয়ে যেন আরো উঠতে চাইলো না, আমাকে বললো- দাদা তুমি চলে যাও না আমি দিদির সাথে চান শেষ করে আসি?
আমি চোখ রাঙিয়ে বললাম- না এখনি উঠে এস ।
নীলি মনীক্ষাকে উদ্দেশ্য করে বললো- দিদি বলে দাও না দাদাকে,আমি তোমার সাথে যাব ।
নীলি এটা কি হলো?কথা ছিল কি? এমন সময় মনীক্ষা বলে উঠলো আমাকেও তো একা গোসল করতে হবে? ও থাকলে ভালো হয়, আমিই ওকে পৌচ্ছে দিয়ে যাবনে তোমাদের বাড়ি ।
এরপর আমি চলে এলুম । নীলির ভবিষৎ কি হবে বুঝতে পারি না ! বাবা-মার শেষ সন্তান ও । যে বয়সে তারা নীলিকে পৃথিবীতে নিয়ে আসলো সে বয়সে তাদের সন্তান -লালন পালন করার মত ক্ষমতা নেই ! বাবাকে তো কোনদিন দেখি না ওকে নিয়ে কোন চিন্তে আছে তার, মারও বয়স হয়েছে সারাদিন দেখি তসবী নিয়ে জায়নামাজে বসে আছে । মাঝে মাঝে জেদ উঠে তাদের প্রতি ।
নীলিকে নিয়ে কোথাও গেলে, সবাই জিজ্ঞাসা করে ও আমার মেয়ে কিনা? জিজ্ঞাসা করার কারণ অবশ্যই আছে, আমার যে সব বন্ধুরা বিয়ে করেছে তাদের নীলির চেয়ে বড় মেয়ে আছে যে ।
আমি উঠনেই চেয়ার পেতে বসেছিলাম,কিছুক্ষনপর মনীক্ষা নীলিকে দিয়ে গেল ।
আমি তারাহুরো করে বললাম- নীলি পড়তে বসো । নীলি কোন কথা না বলে ঘরে চলে গেল । মনীক্ষা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো? মানুষ তুমি রাগ করলে?
আমি বললুম- না ,রাগ করবো কেন?
মনীক্ষা: এই যে নীলিকে আমি চান করতে থাকতে বললাম ।
-না , রাগ্বিনী । তোমার মত ঐ অভ্যাস নিই আমার , তো একা যেতে পারবে?
মনীক্ষা: পারবো, হেরিকেন আছে এই বলে মনীক্ষা হেরিকেনের আলোটা বাড়াতে লাগলো ।
-তোমাকে পৌচ্ছে দিয়ে আছি? ঐ শশ্মানের পাশ দিয়ে যাবে, জায়গাটাতো ভালো না ।
মনীক্ষা: আমার কিছু হবে না । তুমি থাক এই বলে মনীক্ষা চলে গেল ।

এই নীলি পড়তে আয় । দাদা , আমার প্রচুর খিদে লাগচে, চলো না আমরা খেয়েই পড়তে বসি । আমিও ওর কথায় সায় দিলাম । রুই মাছ দিয়ে পেট ভরে ভাত খেয়ে নিলাম । খাওয়া শেষে বললাম-নীলি এবার পড়তে আয় , নীলি বললো- দাদা মাত্র তো খেলুম । একটু জিরিয়ে নিই, আচ্ছা একটু জিরিয়ে পড়তে আয় । আমি উঠনে বসে একটা সিগারেট ধরালুম । ১০ কিংবা ১৫ মিনিট পর নীলিকে ডাকি ও আর উত্তর দেয় না ! দেখি রেষ্ট্র নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে গেছে, এরপর জাগাতে চেস্টা করলাম- এই নীলি উঠ বলছি, পড়বি না । নীলি ঘুম কাতর চোখে বললো- দদা সকালে পড়তে বসবো নে,এই দিব্যি কাটলুম । সকালে পড়বোই ।
এরপর আর কিছু বললাম না ওকে ---------------।

নিজ রুমে গিয়ে ,মনীক্ষার কথা মনে হলো । কত স্বাভাবিক হয়ে গেল ও । ও আমার ক্লাসমেট ছিল, স্কুলে থাকতে ওর বিয়ে হয় । তবে ও যখন স্কুলে ছিল -হৃদয় থেকে কোনদিন ওকে ভাবিনী তা কিন্তু নয় , বলবো বলবো করেই বিয়ে হয়ে গেল ওর , তবে লেখা পড়া চালিয়ে যায়। বিয়ে হলো, বিয়ের এক বছররের মাথায় ওর একটা একসিডেন্ট হয় , রাজনৈতিক কোন দল ওর গাড়ি লক্ষ্য করে পেট্টোল বোমা মারে, সে বোমাতে ওর গালের একাংশ খুব মর্মান্তিক ভাবে পুড়ে যায়, এমন ভাবে পুড়ে যায় যে- ওকে দেখলে যে কেউ শিউরে উঠবে । পুড়াস্থান ও ঢেকে রাখে । রাস্তায় বোরকা পড়ে এখন চলাচল করে, ভাবিনি ওর মত স্বাধীনপ্রিয় কোনদিন মেয়ে বোরকা পড়বে ।

একদিন বাসে উঠে ও আমার সামনে বসেছিল । ও এমন ভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো , সুন্দর দু'টি চোখের মায়ার পড়ে গেছিলাম । বাস থেকে নামার পড় বললো- আমি মনীক্ষা ! এরপর ওর আগের ফেসটাই আমার কাছে নাড়া দেয়, বর্তমানে ও অনেকদুর ! ওর হ্যাজবেন্ট পযর্ন্ত নাকি ভয় পেত ওকে দেখে ,তাই ছাড়া ছাড়ি হয়ে গেল ওদের ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২

কল্লোল পথিক বলেছেন: ভাল লেগেছে।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১০

মানুষ আজিজ১ বলেছেন: ধন্যবাদ, কল্লোল পথিক ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.