নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
"কিরে, আজকে তোকে খুব খুশি খুশি লাগছে? একদম সেজেগুজে এসেছিস দেখছি! ব্যপার কি?"
সেলিনা লাজুক হাসতে হাসতে বলল, "আজকে আমার জন্য বিশেষ দিন।"
আয়েশা বলল, "কি বিশেষ দিন? আমাদের বল না!"
"উহু! তোদের বলা যাবেনা।"
জলি নাছোরবান্দা।
"তোকে বলতেই হবে। আজকে কি তোকে বর পক্ষ্য দেখতে আসবে? নাহলে তুই এইভাবে সেজেগুজে আসবি কেন? ঠোঁটে লিপস্টিক, চোখে কাজল!"
সেলিনা মোচড়া মুচড়ি করতে লাগলো। বান্ধবীরা জানে যে সে কোন কিছুই পেটের ভিতর রাখতে পারেনা। একটু খোচালে সব বেরিয়ে আসবেই। তারা খোচাখুচি অব্যাহত রাখলো।
সেলিনা বেশিক্ষণ ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলো না। হরবর করে বলে দিল, "আজকে সোহেলের সাথে আমি পালিয়ে যাব!"
কথাটা শুনেই বান্ধবীদের হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল। সোহেল মানে কি ঐ গুন্ডা সোহেল? মোটর সাইকেল চালিয়ে যে দাপিয়ে বেড়ায়। শার্টের বোতাম সবসময়েই খোলা থাকে। যেখানেই মারামারি হয়, সেখানেই সে থাকে। কয়েকবার নাকি জেলেও গিয়েছে। সেলিনার সাথে 'লাইন মারার' চেষ্টা করছে বহুদিন ধরে। এখন দেখা যাচ্ছে সে বেশ সফল হয়েছে!
আয়েশা বলেই ফেলল, "তুই ঐ গুন্ডার সাথে পালিয়ে যাবি কেন?"
সেলিনা লাজুক গলায় বলল, "ওকে গুন্ডা বলিস না। ওর ভিতরটা একটা অবুঝ শিশুর মত। আমি জানি, কেউ ঠিক মত ভালবাসলে ও শুধরে যাবে। আমি ওকে সেই ভালবাসা দিব।"
জলি বলল, "আর যদি সে না শুধরায়?"
সেলিনা বলল, "ও শুধরাবে। আমার ভালবাসার ক্ষমতা অনেক বেশি। ওকে ভাল বানিয়েই ছাড়বে।"
আয়েশা দেখলো তার বান্ধবী রঙ্গিন স্বপ্নের ভূবনে বাস করছে। তাকে বাস্তবে ফেরানোর ক্ষমতা আপাতত তাঁদের নেই। সে তখন একটা বুদ্ধি করলো। জলিকে সেলিনাকে ব্যস্ত রাখতে বলে নিজে আরেক বান্ধবিকে নিয়ে সেলিনার বাসায় গিয়ে খবর দিয়ে আসলো।
সেলিনার বাবা ভীষণ জাদরেল মানুষ। তিনি এসে মেয়েকে জোর করে বাসায় নিয়ে গেলেন। তার আর সোহেলের সাথে পালিয়ে বিয়ে করা হলো না। আয়েশাদের সাথেও তার বন্ধুত্বের সমাপ্তি তখনই।
এর কিছুদিনের মধ্যেই সোহেল আবার গ্রেপ্তার হয়। এবারে তার বিরুদ্ধে অ্যাটেম্পট টু মার্ডার অভিযোগ। অস্ত্র সহ ধরা পরেছে!
বেচারার আর শোধরানো হলনা।
এর প্রায় পনের বিশ বছর পর দুই বান্ধবীর দেখা। চিটাগং দুবাই মার্কেটে শপিং করতে গিয়ে।
প্রথমে সেলিনাই চিনলো।
"তুই আয়েশা না?"
"জ্বী!"
সেলিনা বান্ধবিকে জড়িয়ে ধরে উল্লাস করতে লাগলেন। আয়েশা অবাক। কে এই অপরিচিতা মহিলা?
"আরে আমি সেলিনা! চিনতে পারছিস না?"
আয়েশা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন। এই কি তাঁর সেই রোগা, পটকা বান্ধবী? সামনে যিনি হাসি উল্লাস করছেন, তিনি যে ভীষন স্বাস্থ্যবতী এক রমনী! রংও ফর্সা হয়েছে অনেক। গায়ের কাপড় চোপরও বেশ দামী। দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে এখন অনেক সুখে আছে।
"কিরে, চিনতে পারছিস না?"
"কেন চিনবো না?"
"তাহলে এভাবে বোকার মত দাঁড়িয়ে আছিস কেন? জড়িয়ে ধরে চিৎকার দে!"
আয়েশা জড়িয়ে ধরলেন। চিৎকার দিলেন না। তাঁর ভাগের চিৎকার সেলিনাই দিয়ে দিলেন।
"এইটা কি তোর ছেলে?"
"হ্যা।"
বান্ধবির প্রশ্নের জবাব দেন আয়েশা।
সেলিনা ছেলেটির গাল টিপে দিয়ে বলেন, "তোর চেহারা পেয়েছে একদম!"
তারপর ছেলেটিকে বলেন, "আমি তোমার মায়ের বান্ধবি। চাইল্ডহুড ফ্রেন্ড। কি নাম তোমার?"
"রাজীব!"
যে বন্ধু বিপদের সময়ে পাশে এসে দাঁড়ায়, সেই প্রকৃত বন্ধু।
আর যে বন্ধু বন্ধুকে বিপদে পড়া থেকে বাঁচায়, সে আরও ভাল বন্ধু।
সবাইকে বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৪৬
আর্টিফিসিয়াল বলেছেন: শুধু আফসুস,যাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করল,সেই ভুল বুঝল।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এক সময়ে বুঝতে পারবে। না বুঝলেও আপত্তি নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:৫২
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: ভালো হয়েছে... ...
আপনাকেও বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা......