নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
গাজায় কিছুদিন আগে একজন আশি বছরের বৃদ্ধা ইজরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। আশি বছর! সেতো অনেক সময়! এতদিন তিনি কি করে বেঁচে ছিলেন? সেই দেশে যেভাবে গণহত্যা চলছে, একজন মানুষ যদি সেখানে স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক নিয়মে মারা যায়, তাহলে সেটাই হবে বিস্ময়ের ব্যপার! আশি বছর বেঁচে থাকা সেখানে প্রায় অমরত্বের কাছাকাছি চলে যাওয়া।
আমাদের দেশও সেদিকেই এগিয়ে চলেছে। আমাদের সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যায়। ভবনধ্বসে মানুষ মারা যায়। লঞ্চদুর্ঘটনা আগের চেয়ে একটু কমলেও, লঞ্চ ডুবিতেও প্রচুর মানুষ মারা যায়।
আমরা যদি সঠিক হিসাব রাখতে পারি, তাহলে বিশ্বের অনেক যুদ্ধদূর্গত দেশে নিহতের তুলনায় আমাদের দেশের কেবল 'দুর্ঘটনাগ্রস্ত মৃত্যুর' সংখ্যা নেহায়েত কম হবেনা। বরং অনেক দেশের থেকে বেশিই হবে বলে আমার বিশ্বাস।
ব্যপারটা আশঙ্কাজনক। আমরা সবাই আশঙ্কাই করি। কিন্তু আমাদের এই আশঙ্কা করা ছাড়া আর কোন উপায়ও নেই।
লঞ্চগুলো প্রতিবারই ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী নিয়ে যাত্রা করবে। যাত্রীরা চিৎকার চ্যাচামেচি করলেও কেউ তাঁদের অভিযোগ শুনবেনা। লঞ্চে তিল ধারণের জায়গা থাকা পর্যন্ত যাত্রী উঠতেই থাকবে।
শুনেছি পিনাক ৬'র যাত্রী ধারণক্ষমতা ছিল পঁচাশি, তারা নাকি তিনশো যাত্রী নিয়ে যাত্রা করেছে। এই লঞ্চ না ডুবাটাই হতো একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। লঞ্চের ম্যানেজমেন্ট জেনেশুনেই এত যাত্রী তুলেছে। সরকারী কর্মকর্তা, যার দায়িত্ব প্রতিটা লঞ্চ ছাড়ার আগে দেখে নেয়া 'ওভারলোড' হচ্ছে কিনা, তিনিও এত যাত্রী দেখার পরেও লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি দিয়েছেন। মাঝে দিয়ে কয়েকশো মানুষ ডুবে মারা গেলেন। একটি সুপরিকল্পিত গণহত্যাকে মানুষ দুর্ঘটনার নাম করে চালিয়ে দিচ্ছেন।
যে ছেলেটি লঞ্চডুবির ভিডিও করেছে, তারও নাকি কথা ছিল সেই লঞ্চে ওঠার। ভিড় বেশি দেখেই সে উঠেনি। রাখে আল্লাহ, মারে কে!
তিনবোনের সেলফি দেখলাম ফেসবুকে আপলোড হয়েছে। লঞ্চ যাত্রা শুরুর ঠিক আগে আগে তোলা। আহারে! এদের মৃত্যু যাদের কারনে হলো, তাদের কি কখনও বিচার হবে? আরও যাদের ভাগ্যে এমন মৃত্যু লিখে দেয়া হচ্ছে, তাদের মৃত্যু কি ঠ্যাকানো যাবে?
©somewhere in net ltd.