নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভিন্নধারার সিনেমাওয়ালাদের প্রতি

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৬

ডালাসে এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রথমবারের মত বাংলাদেশী সিনেমা আনা হয়েছিল।

খুবই গর্বের বিষয়। ডালাস ফোর্টওয়ার্থ নিবাসী তামাম বাংলা ভাষা ভাষী জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রচারণাও চালানো হয়েছিল, কিন্তু রেসপন্স পাওয়া গিয়েছিল প্রায় শুন্য।

আমার অতি প্রিয় বন্ধুদের একজন ছিল আয়োজক বোর্ডের সদস্য। সে দুঃখ করে বলেছিল যে, প্রতিবার সে একা বাংলাদেশী সিনেমা আনতে লড়াই করে। ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, বলিউডের সিনেমা পর্যন্ত আসে, এবং আমাদের(বাংলা সিনেমা) ভীষণ অবজ্ঞার সাথে রিজেক্ট করে। তাঁদের দাবী, 'বাংলা সিনেমা আনলে দর্শক রেসপন্স তেমন আসবে না।'

বন্ধু এইবার খুবই আশাবাদী কারন এইবার তারা প্রথমবারের মত বাংলা সিনেমা শো করতে রাজি হয়েছে। তাও আবার দুই-দুইটা সিনেমা। দুইটাই মুস্তফা সারওয়ার ফারুকির; টেলিভিশন এবং পিপড়া বিদ্যা।

এখন বাঙ্গালিদের ইজ্জত রক্ষার্থে দর্শক হতেই হবে।

সবার দৃষ্টি আকর্ষণের খাতিরে আমি ভীষণ জ্বালাময়ী একটি স্ট্যাটাস লিখে দিলাম।

স্ট্যাটাসের মূল বক্তব্য ছিল, অন্যান্য কমিউনিটিতে যেমন 'একতা' বিদ্যমান, আমাদের কমিউনিটিতে সেটা ভীষণভাবে অনুপস্থিত। উদাহরণ দেয়া যাক।

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জনবহুল দেশ হচ্ছে ভারত এবং চীন। তারা নিজেদের দেশে যত না আছে, বিশ্বময় সে পরিমানই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমার এক ভারতীয় বন্ধু রসিকতা করে বলেছিল, "তেলাপোকা, চাইনিজ এবং ইন্ডিয়ান - এই তিন প্রজাতিকে পৃথিবীর সব জায়গাতেই খুঁজলে পাওয়া যাবে। যেখানে পাওয়া যাবেনা, খবরদার, সেখানে ভুলেও যেও না। হয়তো সেখানে নরখাদকরা থাকে!"

এই ডালাস শহরেই আমার বিশ্বাস লক্ষাধিক ভারতীয়ের বাস। এত বিরাট কমিউনিটির পরেও তাঁদের দিওয়ালি অনুষ্ঠান হয় মাত্র একটি। তারা গান গায়, "হাম সাব এক হ্যায়" - তারা সেটা প্রমাণও করে।

চাইনিজদের সংখ্যা আরও বেশি। ওদেরও অনুষ্ঠান একটি হয়।

আমাদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান নববর্ষের মেলা। এই অঞ্চলে আমাদের জনসংখ্যা বিশহাজারও না। আমাদের কয়টা মেলা হয়? কমসে কম তিন থেকে চারটা! পুরো এপ্রিল মাস জুড়েই সবাই গায় "এসো হে বৈশাখ!"

স্ট্যাটাসে জ্বলাময়ী ভাষার পেছনে আমার ব্যক্তিগত ক্ষোভও ছিল।

এই প্রথম ডালাস শহরে আমরা ঢাকা থিয়েটারের একটি একক নাটক আয়োজন করেছিলাম। অভিনয় করেছিলেন রোজী সিদ্দিকী ভাবি, পরিচালনায় শহীদুজ্জামান সেলিম ভাই। নাটকের নাম "পঞ্চনারী" আখ্যান। দারুনভাবে প্রশংসিত একটি নাটক।

দর্শক হয়েছিল খুবই কম। সবাই পরিচিত লোকজন। বেশির ভাগই আসেননি, কারন "ঐ দল আয়োজন করছে? তাহলে আমরা যাব না।"

একটা দলের লোক সেলিম ভাইকে সরাসরি বলেও দিলেন, "কাদের সাথে এসেছেন? আমাদের দলের সাথে এলে কমসেকম পাঁচশো দর্শক হাজির করতাম।"

এই হচ্ছে 'বাঙ্গালি মানসিকতা।' আমার হয়ে কাজ করলে করো, নইলে তোমাকে কোন কাজই করতে দিব না।

কাজেই আমি আহ্বান করেছিলাম, অন্তত এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমরা সবাই যেন ঐসব ফাজলামি না করি। আমাদের দেশের সিনেমা দেখানো হচ্ছে, আমরা সবাই যেন দেখতে এগিয়ে আসি। মানুষ ইন্ডিয়ার নাম শুনলেই বলে, "বলিউড? শারুক কান? I heard about them."

আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও যেন সবাই বলতে পারে, "ঢালিউড? I know where are you from."

Ananta Jalil'র নাম না বললেও আপাতত চলবে।

শোয়ের দিনেই বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ছিল। ছিল ইফতারের দাওয়াতও। যিনি ইফতারের দাওয়াত দিয়েছেন, তাঁর বাসাতেই খেলা দেখার দাওয়াত।

তারপরেও খেলা শেষে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গেলাম কিছুক্ষণের জন্য হলেও জানান দিতে যে, আমরা সাথে আছি।

যা অনুমান করেছিলাম, সেটাই হলো।

বিশ হাজার মানুষের কমিউনিটি থেকে বিশজন মানুষও এলো না। উল্টো বিদেশীদের দেখলাম সাব টাইটেল পড়ে পড়ে ফারুকী ভাইয়ের সিনেমা দেখছেন। সবাই সাদা চামড়ার লোক।

উল্টো দিকে চাইনিজ বা জাপানিজ সিনেমাগুলোতে দর্শক এতই উপচে পড়েছিল যে তাদের কয়েকটা করে শো করতে হয়েছে। তারপরেও দর্শক চাহিদা মিটে না।

যাই হোক, আজকের লেখার পয়েন্ট বাঙ্গালির ঐক্য না। সেটা কখনও হবার নয় এটা সর্বজন বিধিত। আজকে সিনেমা নিয়ে লিখছি।

সেই শোয়ের পরে বোর্ডের মত ছিল বাংলা সিনেমা আশানুরূপ ভাল হয়নি। দর্শক দৈন্যতাতো আছেই, সিনেমার কোয়ালিটিও নাকি ভাল ছিল না।

'টেলিভিশন' সিনেমাটা আমি দেখেছিলাম, আমার কাছে তখন খারাপ লাগেনি। তবে 'পিপড়া বিদ্যা' যতটুকুই দেখেছি, বোর্ডের বিচারকদের সাথে আমিও একমত।

মুস্তফা সারওয়ার ফারুকির মতন গুনী ডিরেক্টর এইটা কিভাবে বানালেন? দেখে মনে হচ্ছিল টাইম পাসের জন্য একটা সাধারণ টিভি নাটক দেখছি। এর বেশি কিছু না। তাও আবার অ্যাডাল্ট কন্টেন্টের নাটক। মা বোন বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে দেখার মতন সিনেমা না।

বন্ধু বান্ধব নিয়ে দেখা যায়। সুরসুড়ি দেয়া সীনগুলোয় পাশেরজনকে চিমটি কেটে বুঝে নেয়া যে সেও অ্যাপিলটা ধরতে পেরেছে কিনা।

অনেকেই বাজেট বাজেট রব তুলবেন।

ইরানি সিনেমাগুলো যে খুব বেশি বাজেটে তৈরী হয় এমন কিন্তু না। ওদের নায়কেরা নায়িকাদের হাত পর্যন্ত ধরে না, অথচ কি দূর্দান্ত সব সিনেমা যে তাঁদের প্রডাকশন থেকে বেরোয়! সমস্যা অন্য কোথাও।

আজকে পত্রিকায় জানলাম মুক্তির আগেই পিপড়া বিদ্যা আরও কিছু পুরষ্কার জিতে নিয়েছে।

রহস্যের কিছু নেই। দশটা গাধা দৌড়ালে একটা ফার্স্ট হবেই। তাই বলে গাধাকে ঘোড়া যারা ভাববেন, তাঁদের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে।

সেদিন বর্ষীয়ান চলচ্চিত্রকার তানভির মোকাম্মেলের সাথে চায়ের আসরে গল্প হচ্ছিল। তিনি বলছিলেন, "আমাদের কেন ভারতীয় ছবির অনুকরণ করতে হবে? আমাদের সিনেমার গল্প এত বাজে কেন হবে? এতটা মেধাহীন জাতিতো আমরা নই।"

যদিও পিপড়া বিদ্যা মোটেও ভারতীয় সিনেমার অনুকরন নয়, কিন্তু তাতে যথেষ্টই গল্পের অভাব ছিল। এই সিনেমা যে কেউ বানাতে পারতেন, ফারুকী ভাইকে লাগতো না।

ভিন্নধারার সিনেমা যারা নির্মাণ করেন, তাঁদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। তাঁরা কেউই মেধাহীন নন। আমরা তাঁদের সিনেমাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখতে চাই। নাহলে শাকিব খানের সিনেমা কেন আনা হয় না? অনন্ত জলিলের সিনেমা কেন আনা হয়না?

শুধুমাত্র এইটা নিশ্চিত করতেই যাতে সিনেমা দেখে বোর্ডের লোকজন উড়িয়ে দিতে না পারেন।

এখন যদি গুনী ডিরেক্টররাও সেরকম সিনেমা বানান, তাহলে চলবে কিভাবে?

তাঁদের বুঝতে হবে যে দেশের ইজ্জত তাঁদের সিনেমার সাথেই বাঁধা থাকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: হক কথা

২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৫

অন্ধবিন্দু বলেছেন:

হুম। গুণীরা শুনছে কি !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.