নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
প্রথমেই বলে নেই, কোন ধর্মকে কটাক্ষ করতে আজকে লিখছি না। আমি লিখছি হযরত ইব্রাহিমের (আঃ) জীবনের একটি সত্য ঘটনা। আগে ঘটনা বর্ণনা করে নেই, তারপরে বলছি কেন এর উল্লেখ করলাম।
হযরত ইব্রাহীমের জন্ম পৌত্তলিক পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন কট্টর মূর্তিপূজক। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) পিতার কাছ থেকে শিখেছিলেন যে মূর্তিগুলোই ঈশ্বর। বিপদে পড়লে এরাই আমাদের উদ্ধার করবে। তাদের পূজা করে তাদের সন্তুষ্ট করতে হবে।
শিশু ইব্রাহিমের (আঃ) মাথায় আসলো, "যে মূর্তিগুলোকে আমরা নিজেরাই সৃষ্টি করছি, সে কী করে আমাদের ঈশ্বর হতে পারে?"
তিনি এক রাতে মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেললেন। তিনি ভাবলেন, যারা নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করতে পারলো না, তারা আমাদের রক্ষা করবে কিভাবে? আমার ঈশ্বর নিশ্চই ভিন্ন কেউ।
তিনি আকাশের দিকে তাকালেন। দেখলেন দারুন সূর্য গনগন করছে। তিনি দেখলেন কী তার প্রতাপ! ভাবলেন, নিশ্চই এ আমার ঈশ্বর!
একটা সময়ে সন্ধ্যা হলো। সূর্য ডুবলো। আকাশে চাঁদ উঠলো। ভরা পূর্নিমা রাত। চারপাশ ভেসে যাচ্ছে জোছনার প্লাবনে। তিনি ভাবলেন, সূর্যকে পরাজিত করে চাঁদ যেহেতু আকাশের দখল নিয়েছে, কাজেই এ নিশ্চই আমার ঈশ্বর!
তারপরে আবার দিন এলো। এবং এলো রাত। আবার এলো দিন। তিনি বুঝতে পারলেন এটা স্রেফ প্রকৃতির একটি খেলা। এরা কেউই ঈশ্বর নয়।
তিনি বুঝতে পারছিলেন, কেউ না কেউ নিশ্চই আছেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা। যিনি আসমান জমিন সবকিছুর মালিক। যিনি সর্বশক্তিমান। যিনি অবশ্যই পবিত্র। কিন্তু সেই তিনিটা কে?
অবশেষে ওহী নাযেল হলো। তিনি জানতে পারলেন প্রকৃত ঈশ্বর কে!
আমার জন্মও এন্টি-আওয়ামীলীগ পরিবারে। আমার বাবা ঘোরতর আওয়ামী বিরোধী ছিলেন। কেন ছিলেন, সেটারও কারন ব্যখ্যার প্রয়োজন আছে।
একাত্তুরের আগে ও পরে আমার বাবা ছিলেন শেখ সাহেবের পাড় ভক্ত। যাকে বলে অন্ধ সাপোর্টার। শেখ সাহেব যাই বলেন, তাই বিশ্বাস করেন, তাই মানেন।
দেশ স্বাধীন হলো। ভাঙ্গাচোরা একটি দেশকে গড়তে শুরু করলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ভাগ্য খারাপ। তাঁর সহযোগীরা শুরু করে দিল দুর্নীতি। ত্রাণের টাকা লুন্ঠন থেকে শুরু করে রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার, কিছুই "সোনার বাংলা" গড়ার স্বপ্নের বাস্তবায়নের ধারেকাছে দিয়েও যাচ্ছিল না।
একটা সময়ে বেচারা বঙ্গবন্ধু বলতে বাধ্য হলেন, "মানুষ পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি!"
যাই হোক, সমাজে কেউ যে প্রতিবাদ করেনি, এমন না। কেউ কেউ ঠিকই আওয়াজ উঠিয়েছিলেন। জাসদের সৃষ্টি তখনই। আমার বাবার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের রুমমেট ছিলেন তাঁদের একজন।
এতকিছুর পরেও আব্বুর বিশ্বাস ছিল শেখ সাহেব ঠিকই দেশকে সামলে নিবেন। তিনি তখনও আওয়ামীলীগ সমর্থক।
একরাতে সেই রুমমেট সহ আব্বুর বেশ কিছু বন্ধুদের রক্ষীবাহিনী ধরে নিয়ে যায়, এবং তারপর তাঁদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়না।
জ্বী, গুমের রাজনীতি তখনও বিরাজমান ছিল।
আব্বুর কথা, শেখ সাহেব যেহেতু দেশের প্রধাণ, তাঁর লোকেদের সব ধরনের কর্মকান্ডের জন্য অবশ্যই তিনি দায়ী।
এছাড়াও আরও বেশ কিছু ঘটনা ছিল। বন্ধুদের হারানো বারুদে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে কেবল।
আওয়ামীলীগ তাদের লাখো ভক্তের সাথে আমার আব্বুকেও হারালো।
আওয়ামীলীগ ছাড়া দেশে ছিল তিনটা বড় দল।
এরশাদ চাচা ছিলেন। লোকটার চরিত্রের সমস্যা ছিল, মেয়েদের দেখলে একটু রোমান্টিক হয়ে যেতেন। কবি বলে কথা। নরম মন!
খানিকটা দুর্নীতিবাজও ছিলেন। খানিকটা বলছি, কারন বাকি দুই দলের তুলনায় তিনি প্রায় কিছুই লুটেননি, ধরা খাওয়াটাই তার জন্য কাল হয়েছে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তাঁর নীতির কোন ঠিক ঠিকানা ছিল না। এখনও যার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। আজকে এই কথা বলেনতো, কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলবেন। আমার ধারনা, তাঁর মানসিক সমস্যা আছে। নাহলে এইভাবে কেউ কথার পরিবর্তন কিভাবে করতে পারে? মানুষ তাঁকে বেহায়া বলে ইগনোর করে আসছে, কিন্তু কোন মানসিক রোগের চিকিৎসক দেখালে অবশ্যই আমার কথার সত্যতা প্রমাণ মিলতো।
যাই হোক, তিনি মোটেও দেশের নেতা হবার যোগ্য নন।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে জামায়াতে ইসলামী আরেকটি বড় দল। একাত্তুরে যারা চায়নি দেশ স্বাধীন হোক, যারা উল্টো পাকিস্তানিদের সাহায্য করে গণহত্যা চালিয়েছে, তারা কি করে স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধাণ রাজনৈতিক দল হয় সেই শৈশবে আমি বুঝতে পারতাম না। সাধারণ নির্বাচনে তারা নাকি তিনটি আসনে জয়লাভও করেছিল! হায়রে বাংলাদেশ!
তারা আমাদের 'নেতা' হবার যোগ্যতাই রাখেনা।
রইলো কেবল বিএনপি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার জন্মের আগেই 'শহীদ' হয়েছেন। তবে গল্পে শুনেছি তাঁর রাজ্যে দেশের বাজার ছিল স্থিতিশীল, প্রচুর খাল কাটার ফলে কৃষি বিপ্লব যেমন ঘটেছে, তেমনি বন্যাও ঠেকানো গেছে। তাঁর স্ত্রীর নেতৃত্বে তাঁর দলই একমাত্র ভাল অপশন।
কিন্তু একি! তাঁদের সরকারের প্রেসিডেন্টের নাম আব্দুর রহমান বিশ্বাস! যার আরেকটি পরিচয় একাত্তুরে যিনি ছিলেন শান্তি কমিটির সদস্য! এরাও কী আমার "নেতা" হবার যোগ্য?
একটা সময়ে বিএনপিও তাঁদের জাত চেনালো, চার দলীয় ঐক্য জোটের মাধ্যমে যখন জামাতে ইসলামীর সাথে হাত মিলিয়ে ক্ষমতায় গেল। জাহানারা ইমামের ছেলে রুমী সহ আরও অনেক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাকে সরাসরি হত্যার আসামী মতিউর রহমান নিজামী হলেন দেশের মন্ত্রী! এরা আমাদের নেতা কী করে হতে পারেন?
বাবার ছেড়ে দেয়া দল আওয়ামীলীগে ব্যাক করবো? কোন যুক্তিতে? কিভাবে ভুলে যাই শেখ হাসিনা নিজে গোলাম আজমের পা ছুয়ে দোয়া নিয়েছিলেন?
এই যদি রাজনীতি হয়, তবে এই রাজনীতির মুখে থুথু মারি!
আমি ভয়ংকরভাবে রাজনৈতিক নাস্তিক হয়ে গেলাম।
তসলিমা নাসরিন বা তার সাগরেদরা যেমন কথায় কথায় ধর্মকে আক্রমন করে, আমিও সেভাবে যেকোন লেখাতেই রাজনীতিবিদদের আক্রমণ করি। মজা পাবার জন্য নয়, ফ্রাস্ট্রেশন থেকেই এমন করি। বাইরের দেশগুলোতে যখন দেখি নেতারা ভাল, তখন ভীষণ হিংসে হয়, কেন আমাদের দেশে এমন নেতা থাকতে পারেনা?
অ্যামেরিকার কথাই বলি। বুশ আসুক, কী ওবামা, তারা বাইরের বিশ্বকে তোলপাড় করে ফেলুক, নিজের দেশের স্বার্থে তাঁদের কার্যকলাপ কিন্তু একটুও প্রশ্নবিদ্ধ নয়। তাঁরা আসলেই দেশের স্বার্থে কাজ করেন।
যাই হোক, আওয়ামীলীগ অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে বলেছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। জনতা তাঁদের বিশ্বাসও করেছিলেন। বাংলাদেশের জনতা মহা বোকা, তাঁরা অতি সহজে ধোঁকা খায়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ঘোষণা হলো। গণহত্যার জন্য কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়।
শাহবাগে যদি মানুষ প্রতিবাদ না করতো, তাহলে তার ফাঁসীর রায় হতো না।
এরপর মাওলানা সাঈদীর রায় হলো ফাঁসীর। শান্তি কমিটির মূল সূত্রধর গোলাম আযমের হলো যাবজ্জীবন! বার্ধক্যের কারণে তার প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হয়েছে!
ইলেকশন চলে এলো। আওয়ামীলীগ মূলা ঝুলালো যে ওদের ক্ষমতা না দিলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর হবেনা।
দেয়া হলো ক্ষমতা। ফাঁসীর রায় বদলে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হলো।
বলছে, বিচারবিভাগের উপর তাদের কোন হস্তক্ষেপ নেই।
তাহলে এরশাদ চাচার বিচারে কিভাবে এত নাটক দেখা যায়?
যখন মানুষ বুঝতে পারে তাকে বোকা বানানো হয়েছে, তখন খুব রাগ করে। বেকুব জনতা এখন রাগে ফুসছে।
আমাদের দেশের খুনী সন্ত্রাসী বিপ্লবের ফাঁসীর সাজা মাফ করে দিয়েছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি। কারন একটাই, তার বাবা আওয়ামীলীগ সমর্থক গডফাদার। বিপ্লব কারাগারে বসেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। কেউ কিছু করতে পেরেছে?
কালকে যদি যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দেয়া হয়, তাহলেও কেউ কিছু করতে পারবেনা। ঐ শাহবাগে গিয়ে মোমবাতিই জ্বালাতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের খুনীদের যে সাজা হয়েছে, একাত্তুরে লাখো মানুষের হত্যাকারীদেরও একই সাজা হওয়া উচিৎ। এটাই সহজ কথা, এবং এটাই শেষ কথা।
এখানে যদি রাজনীতি মেশানো হয়, তবে এই রাজনীতির মুখে আবারও থুথু মারি।
ইব্রাহিমের (আঃ) মত ভাবতে বাধ্য হই, ধর্মকে ব্যবসা করে যারা রাজনীতি করে, তারা আমার নেতা হতে পারেনা।
মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবসা করে যারা রাজনীতি করে, তারাও আমাদের নেতা হতে পারেনা।
আমরাও অপেক্ষায় আছি ওহী নাযিলের। একজন যোগ্য নেতার আগমনের।
২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৪
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: ভাল বলেছেন, দেশে প্রায় সাবাই আজ রাজনৈতিক নাস্তিক. অপেক্ষায় আছি একজন যোগ্য নেতার আগমনের।
৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০৯
আমায় ডেকো না বলেছেন: একটা বিষয়ে কারেকশন দরকার। আপনি যাকে হযরত ইব্রাহিম আলইহিস সালাম উনার পিতা বললেন, তার নাম ছিলো আযর। সে উনার চাচা ছিলো। উনার পিতার নাম ছিলো হযরত তারিখ আলাইহিস সালাম। কোন নবী-রসুল আলাইহিস সালাম উনাদের পিতা কাফির ছিলো না ।
বাকিসবটুকু খুব সুন্দর হয়েছে। আমরাও অপেক্ষায় আছি যোগ্য নেতার।
৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১১
পাজল্ড ডক বলেছেন: রাজনৈতিক নাস্তিক!! ভালো বলেছেন।
৫| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১
আমিনুর রহমান বলেছেন:
অসাধারণ +++
মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবসা করে যারা রাজনীতি করে, তারাও আমাদের নেতা হতে পারেনা।
আমরাও অপেক্ষায় আছি ওহী নাযিলের। একজন যোগ্য নেতার আগমনের।
৬| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভাল লিখেছেন । এইদেশে এখনো সত্যিকার নেতা আসেনি ।
৭| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪
অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: Ekdom sotya kotha
৮| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৯
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: ভাল লাগলো ----- রাজনৈতিক নাস্তিক -------তবে নাস্তিক হওয়ার দরকার নেই ---------
শুভকামনা রইল
৯| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮
শ্রাবণধারা বলেছেন: সত্যি কথা লিখেছেন। নতুন নেতা নতুন দলের প্রয়োজন অনুভব করি, যেটা হয়ত কোনভাবেই এরা হতে দেবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার লেখা।