নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
পেশোয়ারের ঘটনা নিয়ে অনেকেই অনেক মন্তব্য করছেন। আমি এদিকে ওদিকে পড়তে পড়তে কিছু ব্যপার লক্ষ্য করলাম।
১. কিছু মানুষ সত্যিই কষ্ট পেয়েছে। তারা পরোয়া করছে না বাচ্চাগুলো পাকিস্তানি ছিল, না ইসরায়েলি ছিল, নাকি অ্যামেরিকান। তারা শুনেছে একটা স্কুলে একদল উন্মাদ বন্দুক নিয়ে ঢুকে গুলি করে শতাধিক শিশুকে হত্যা করেছে। একশোরও অনেক বেশি 'মানব শিশু' মারা গিয়েছে - এইটাই বড় কথা। আমাদের হৃদয়ে তোমাদের জন্য রক্তক্ষরণ ঘটে। আমাদের শোক, ক্ষোভ, ঘৃণা জানানোর ভাষা নেই।
২. একদল লোক দুঃখ পেয়েছে, তবে.....জ্বী, 'তবে' তারা বলছে, 'পাকিস্তানিদের জন্য কোন দয়া নয়, মায়া নয়। একাত্তুরে তারা আমাদের সাথে একই কাজ করেছিল। এই পাকিস্তানি মিলিটারিরাই দায়ী! এখন তারা নিশ্চই বুঝবে স্বজন হারালে কেমন লাগে! মিলিটারী স্কুলেই হামলা হয়েছে কিনা!'
কেউ কোন মন্তব্য করার আগে একটা কথা বলে নেই - একাত্তুরে পাকিস্তানি সৈনিকদের গণহত্যা কতখানি ভয়াবহ ছিল, এখন অনেকেই জানেননা, কল্পনাও করতে পারেন না, কাজেই উপলব্ধি করাটা অনেক কষ্টকর।
একটা অংকের হিসাব দিলেই সেটা মোটামুটি স্পষ্ট হবে বলে আশা করি। ২৫শে মার্চ থেকে ষোলই ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২৬৭ দিন হয় এবং যদি আমরা তিরিশ লক্ষকে এই সংখ্যা দিয়ে ভাগ করি, তবে সংখ্যাটা হয় এগারো হাজার দুইশো পয়ত্রিশ দশমিক নয় ছয় বা প্রায় দুইশ ছত্রিশ জন!
এইটা স্রেফ শহীদের সংখ্যা, আহত মানুষদের হিসাব এখানে আসেইনি।
এগারো হাজার দুইশ ছত্রিশ! মানে প্রতিদিন আমাদের গড়ে এতজন করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে! পৃথিবীতে এখনও অনেক দেশ আছে যাদের জনসংখ্যা এগারো হাজারও না!
একদিনে দেড়শ জনের মৃত্যুতে আমাদের যে কষ্ট হচ্ছে, এগারো হাজার দুইশ ছত্রিশজনের মৃত্যুতে কষ্টের পরিমাণ কতটুকু হবার কথা? তাইলেই বুঝুন।
এইবারে বীরাঙ্গনাদের হিসাবে আনা যাক। দুই লক্ষ বীরাঙ্গনা ভাগ দুইশো সাতষট্টি, সংখ্যা দাঁড়ায় সাতশো উনপঞ্চাশ জন!
মানে প্রতিদিন সাড়ে সাতশোজন নারীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রেপ করার জন্য। সাড়ে সাতশো!
তাদের প্রতি বাঙ্গালিদের ক্ষোভ/ঘৃণা থাকবে না তো কার থাকবে? তাঁরা যদি পাকিস্তানিদের ঘৃণা করে থাকেন, তবে খুব একটা দোষ দেয়া যায়না।
কিন্তু সেটা হওয়া উচিৎ কেবলমাত্র তাদের সরকার, এবং একাত্তুরকে যারা সাপোর্ট করে তাদের প্রতি। পুরো জাতি ধরলে একটু অন্যায় হয়ে যায়।
ব্যাখ্যা করছি।
একটা রিকশাওয়ালাকে আমি হঠাৎ আটকে জিজ্ঞেস করলাম, "নিউটনের ল অফ গ্রাভেটি ব্যাখ্যা কর!"
রিকশাওয়ালা যদি না পারে, তাহলে তাঁকে শাস্তি দেয়া কতটুকু যৌক্তিক লাগবে?
ওদের দেশেও আমাদের দেশের মতই বিকৃত ইতিহাস পড়ানো হয়ে থাকে। ওরা সত্য জানবে কিভাবে? কার দায় পড়েছে ইন্টারনেট ঘেটে সত্যি ঘটনা খুঁজে খুঁজে বের করে পড়ার?
একটা ছোট উদাহরণ দেই। এই বিজয় দিবসে, মানে চলতি সপ্তাহেই, আমরা "বীর" বাঙ্গালিরা পাহাড়িদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছি, কয়জন মানুষ এইটা নিয়ে হাউকাউ করেছি? পাহাড়িরা কী জন্মসূত্রে বাংলাদেশী নয়? ওরা কী মানুষ না? কিন্তু আমরা তিরিশটা (সংখ্যা কম বেশি হতে পারে) বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছি। মানে, কমসে কম তিরিশটা পরিবারকে ঘরছাড়া করেছি। কাজটা কী অন্যায় হলো না?
৭১-এ আমরা ঘটনার শিকার হয়েছিলাম বলেই আমরা সঠিক ইতিহাস নিজেদের দায়েই জানতে চাই। ইন্টারনেট ঘেঁটে ঘেঁটে, লাইব্রেরি খুঁজে খুঁজে বই বের করে ঘন্টার পর ঘন্টা নিজেদের আগ্রহেই ব্যয় করি।
যদি আমরা শিকারী হতাম, মানে আমরা যদি পাকিস্তানে গণহত্যা চালাতাম, তাহলে কিন্তু এই কাজটা করতাম না। যেমন এখন পাহাড়িদের ক্ষেত্রে করছি না। এটাই ফ্যাক্ট! হিউম্যান বিহেভিওর।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে এবং কর্মজীবনে বেশ কিছু 'পাকির' সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। তাদের সাথে আমি ৭১ নিয়ে খোলাখুলিই আলোচনা করতাম। তিরিশ লক্ষ শহীদের ঘটনাকে তারা স্বাভাবিকভাবেই বলতো 'ইন্ডিয়ান প্রোপাগান্ডা!' তাদের 'ভার্সন অফ দ্য স্টোরি' শুনে প্রথমেই রাগ করে কথা বন্ধ করে দিতাম না। মূর্খের কথায় রাগ করার কিছু নেই। একটা অশিক্ষিত লোককে 'হিস্টেরিয়া' সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ৯০% চান্স আছে সে বলবে এইটা 'জ্বীনের আছর!' সে শুনেইনি কখনও এই রোগ সম্পর্কে।
আমি তাদের সঠিক ইতিহাস শোনাতাম, যুক্তি-প্রমাণ দিয়েই তাদের বুঝাতাম কী ঘটেছে। টিউশনির অভিজ্ঞতা আছে আমার। আমার ছাত্ররা সাক্ষ্য দিবে, আমি খারাপ শিক্ষক ছিলাম না।
অনেকেই বলতে পারেন আমার কী দায় পড়েছে! এইসব করলে আমাকে আমার বন্ধু মহলে একজন 'বোরিং ক্যারেক্টার' করে তুলবে! সেটা আপনি ভাবতেই পারেন। আপনি মনে ঘৃণা চেপে রেখে উপর দিয়ে কারও সাথে হেসে খেলে গল্প করতে পারেন। আমি যার সাথে মিশতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করিনা, আমি তার সাথে মিশিনা। আপনি এমন হিপোক্রেটিক জীবনে অভ্যস্ত হতে পারেন, আমি পারিনা।
আমার কাছ থেকে সঠিক ইতিহাস শুনে অনেকেই ইয়াহিয়া-ভুট্টো-টিক্কা-নিয়াজিদের গালাগালি করেছে। জাহানারা ইমাম, আজাদের মা, আলতাফ মাহমুদ, বুদ্ধিজীবিদের, সাত বীর শ্রেষ্ঠের গল্প শুনে তাঁদের প্রতি সমব্যথী হয়েছে। এইটাই কী সফলতা নয়?
এইসমস্ত ছেলে মেয়েরা তাঁদের পরিচিতদের সাথে গল্পের সময়ে এইসব গল্প শুনিয়েছে। কেউ তাঁদের সাথে তর্ক করতে এলে যুক্তি দিয়ে, প্রমাণ দিয়ে তর্ক করেছে। ওরা আস্তে আস্তে তাঁদের ভুল ভাঙ্গছে। আস্তে আস্তে। আপনারাও যদি এগিয়ে আসতেন, তবে এই ভুল অতি দ্রুতই ভাঙ্গতো।
এখন আপনারাই বলুন, কোনটা বুদ্ধিমানের কাজ? রাগ পুষে রেখে কথা না বলে জেনারেশনের পর জেনারেশন ধরে ওদের ঘৃণা করে যাওয়া? ওরাও জানবে না কেন ওদের ঘৃণা করছি!
নাকি, ওদের সঠিক ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান দিয়ে ওদের ভুল ধারণা ধরিয়ে দেয়া?
সঠিক ইতিহাস জেনে যে ওটাকে অস্বীকার করেছে, তার সাথেই কেবল আমি সম্পর্ক রাখিনি। এবং গর্বের সাথে বলতে পারি, সেইরকম ছেলের সংখ্যা কেবল মাত্র একজন ছিল! তাও শালা ডিপোর্ট হয়ে গেছে।
আমি এ থেকে একটা ব্যপার শিখেছি, সঠিক জ্ঞান পেলে তাদের অনেকেই স্বীকার করেন তাদের পূর্বপুরুষেরা পাপ করেছিল। যে নিজের পূর্ব পুরুষের পাপের জন্য অনুতপ্ত, তাকে ঘৃণা করাটা কতখানি যৌক্তিক?
রাজনীতিবিদদের কুকর্মের জন্য গোটা দেশকে ঘৃণা করলে আমার আর হানাদারদের মধ্যে তাহলে পার্থক্যটা থাকবে কোথায়?
ওরাও আওয়ামীলীগকে শিক্ষা দিতে গোটা দেশে তান্ডব চালিয়েছিল। সংখ্যাটা মনে আছেতো? প্রতিদিন এগারো হাজার দুইশো ছত্রিশজন করে মানুষ মেরেছিল।
রাজনীতিবিদদের অ্যাকশনের কারনে, বা স্পষ্ট ভাষায় গণহত্যার দায়ে একটি জাতির ধ্বংস কামনা করলে একটা লিস্ট বানানো যাক পৃথিবীর বুক থেকে কোন কোন জাতির নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া উচিৎ।
১. জার্মানি: হিটলার সাহেবের কেরামতি।
২. সোভিয়েৎ ইউনিয়ন বা রাশিয়া, এরাই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মিত্রপক্ষ ছিল। কথিত আছে, হিটলার যতখানি ইহুদি মেরেছিল, স্টালিন নিজেই নিজের দেশের মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছিলেন।
৩. অ্যামেরিকা, বলার কিছু নেই।
৪. শ্রীলংকা, তামিলদের জিজ্ঞেস করে দেখুন ওদের সাথে কী ঘটেছে।
৫. ইরাক। সাদ্দাম হোসেন। অন্তত মিডিয়া এটাই বলে যে তিনি রাসায়নিক গ্যাস দিয়ে গ্রামের পর গ্রাম উজার করে দিয়েছিলেন। সত্যমিথ্যা আল্লাহ জানেন।
৬. ইংল্যান্ড। জালিয়ানওয়ালাবাগ পার্কে জেনারেল ডায়ারের হত্যাযজ্ঞ মনে আছে? রাং দে বাসান্তি দেখে নিন। অথবা ভগৎ সিংয়ের যে কোন ছবি।
৬. ভারত।
৬.ক. সম্রাট আকবর: রাজপূতদের জিজ্ঞেস করে দেখুন কী আকামটা করেছিল।
৬.খ. সম্রাট অশোক। ইতিহাস একটু ঘাটলেই বুঝে যাবেন।
৭. গ্রীস। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট!
৮. ইসরায়েল।
৯. ইদি আমিনের দেশটার নাম যেন কী? ওটাও।
এবং লিস্ট চলতেই থাকবে।
অন্ধকারকে অন্ধকার দিয়ে দূর করা সম্ভব নয়, একটু হলেও আলোর প্রয়োজন।
কাজেই প্রায় দেরশো শিশুর হত্যা ঘটনায় আমাদের অবশ্যই মর্মাহত হওয়া উচিৎ। তারা পাকিস্তানি নাকি ইজরায়েলি নাকি অ্যামেরিকান - এইসব হিসাব দূরে রাখুন।
মুক্তিযুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিতে চান? বেশ.....ষোলই ডিসেম্বর যখন পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে ফেলে, তখন তাদের ছিড়ে টুকরো টুকরো করে দিতে দেশের কোটি কোটি জনতা একযোগে ঝাপিয়ে পড়তে চেয়েছিল। কারা তাদের প্রাণ রক্ষা করেছিল জানেন? মেজর এটিএম হায়দারের গেরিলা যোদ্ধারা। এরাই মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও পাকি জারজ হায়েনাদের কলিজা টেনে ছিড়ে ফেলার জন্য প্রস্তুত ছিল, অথচ ওরাই কিনা সেদিন ওদের একমাত্র রক্ষাকর্তা!
এ থেকে কী শিক্ষা পেলাম? একটা খারাপ কাজকে আরেকটা খারাপ কাজ দিয়ে জাস্টিফাই করা যায় না। ও অধম হলে আমি উত্তম কেন হবো না?
৩. "পাকিস্তানি পোলাপান মরছে তো আমার কী? ওরা আমাদের বিরুদ্ধে যা করেছে, এটা তারই পাপের ফল। আমার কোন সিম্প্যাথি নেই এই ঘটনায়। নো মার্সি ফর পাকিস!"
ভাই - আপনি আপনার ইমিডিয়েট চিকিৎসা করান। আপনি ভয়াবহ পর্যায়ের মানসিক রোগী! আপনি ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন করার ক্ষমতা রাখেন।
৪. "এখানে অ্যামেরিকার হাত ছিল। তালিবান কাদের সৃষ্টি? এত গরীব গরীব ছেলেদের হাতে এত দামী দামী অস্ত্র কিভাবে উঠে আসে? সি.আই.এ বহুৎ চাল্লু মাল!"
একটা অপরাধের আগে পিছে যেই থাকুক, সবাই দোষী। যেমনটা একটা ভাল কাজের আগে পিছে যারা থাকেন, তাঁরা পুণ্যবান!
একাত্তুরে ওরা আমাদের দেদারসে মেরেছিল, তাদের পেছনে কারা ছিল? চেয়ারম্যান মাওয়ের দেশের সাথে আঙ্কেল স্যাম! তাহলে কী 'পাকিস্তান' নির্দোষ হয়ে গেল?
ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল কার ব্যাকআপে? সেভেন্থ ফ্লিটের সামনে দাঁড়াবার সাহস তখন ইন্ডিয়ার ছিল? কিংবা চায়না আক্রমণ করলে একা ঠ্যাকাতে পারতো? না! সোভিয়েৎ ইউনিয়ন বিরাট ব্যাকআপ ছিল। তাহলে কী রাশিয়ার কৃতিত্ব কমে গেল?
এখানেও একই যুক্তি। অ্যামেরিকা যদি দায়ী হয়ও, যদি তৃতীয় বিশ্বের দেশে সন্ত্রাসের মূল হোতা হয়ও, সেটা তালিবানদের নির্দোষ বানিয়ে দিবেনা। কিছুতেই না।
৫. "কোন মন্তব্য করার আগে আমাদের দেখতে হবে কেন তালিবানরা এমন কাজ করেছে। কতটা নির্যাতনের শিকার তারা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানেরা নির্যাতিত হয়, তখন কেউ কোন কথা বলেনা, অথচ মুসলমানরা প্রতিবাদ করলেই তারা সন্ত্রাসী! কাশ্মিরের দিকে তাকান। ফিলিস্তিনের দিকে তাকান। আফগানিস্তানের দিকে তাকান।"
ভাই....আবারও বলছি, ইসলামের সাথে তালিবানদের দূর দুরান্ত পর্যন্ত কোনই সম্পর্ক নেই। যে নির্দোষ শিশু হত্যা করে, সে কোনভাবেই মুসলিম নয়।
প্রথম প্রথম ইসলাম গ্রহণ করায় সাহাবীদের উপর কী পরিমাণ অত্যাচার হতো কেউ জানেন? মরুভূমিতে টানটান করে শুইয়ে রেখে পাথর চাপা দেয়া হতো। চাবুক মেরে মেরে পিঠের ছাল তুলে ফেলা হতো। একজন নবীজিকে(সঃ) জিজ্ঞেস করলেন, "আমাদের প্রতি কেন এমন হচ্ছে?"
নবীজি(সঃ) উত্তরে বললেন, "তোমরা কী ভেবেছিলে আল্লাহ তোমাদের পরীক্ষা করবেন না?"
সেই জায়গায় মেয়েরা স্কুলে পড়তে যাচ্ছে, ঘরের বাইরে বেরুচ্ছে - এই রাগে আমি গিয়ে স্কুলে বোমা হামলা করবো? বন্দুক চালিয়ে শিশু হত্যা করবো? ফাজলামি?
যুদ্ধের সময়ে নবীজির(সঃ) স্পষ্ট সহিহ হাদিস আছে, "যুদ্ধের সময়ে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, গাছ-পালা এমন কী ঘরবাড়ির পর্যন্ত ক্ষতি করা যাবেনা।"
এরা শিশু হত্যা করে!
এরাই ইসলামের আসল শত্রু।
মুসলিম হিসেবে আপনার দায়িত্ব এদের ধরিয়ে ধরিয়ে 'মুসলিম' বানানো। নাহলে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া।
উপরের পুরো লেখাটিকে নবীজির(সঃ) জীবনের একটি ঘটনা দিয়ে সামারাইজ করতে চাই।
নবীজি(সঃ) যখন তায়েফে ইসলাম প্রচার করছিলেন, তাঁকে ইট পাথর ছুড়ে তাঁকে অজ্ঞান করে দেয়া হচ্ছিল, তখন ফেরেশতারা তাঁকে বলেছিল, "আপনি অনুমতি দিলে আমরা এদের পাহাড়ের নিচে পিষ্ট করে ধ্বংস করে দিব!"
নবীজি(সঃ) সাথে সাথে বলেছেন, "না! আমি গোটা মানব জাতির উপর রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। প্রতিটা কাফির আমার কাছে একেকজন সম্ভাব্য মুসলিম! হে আল্লাহ, এদের জ্ঞান দাও, এদের ক্ষমা করো!"
তিনি এও দোয়া করলেন, "যদি তাদের বয়ষ্করা ইসলাম গ্রহণ না করে থাকে, তবে তাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন ইসলাম গ্রহণ করে হে আল্লাহ!"
এর কিছুদিন পরেই মক্কা বিজয় হলো।
আজকে তায়েফে গিয়ে দেখুন, কয়টা অমুসলিম আপনি খুঁজে বের করতে পারবেন?
কিন্তু নবীজিকে(সঃ) পাথর মারার দায়ে আমরা যদি তাঁদের ঘৃণা করে যেতাম, আজকে ওরা এই অবস্থায় পৌছাত?
পেশোয়ারের ঘটনা নিয়ে আমি এত ঘনঘন লিখছি কারণ ভারত পাকিস্তানে যাই ঘটে না কেন, আমাদের দেশে সেটার হাওয়া লাগতে বেশি দেরী লাগেনা। বাবরি মসজিদের ঘটনা থেকে শুরু করে জে.এম.বির উত্থান...সবকিছুই একটা ভয় যোগাচ্ছে।
এখনই নিজের পরিচিত বন্ধু বান্ধব সবার সাথে এ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন। তাঁদের বোঝান ধর্মের নামে এই সব গণহত্যা কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। সেই ধর্মই এটাকে কঠোরভাবে নিষেধ করে।
কে জানে! আপনি হয়তো বা কথা বলতে বলতেই একটা জঙ্গি আক্রমণ ঠেকিয়ে দিবেন, অথচ নিজেই বুঝতে পারবেন না!
আল্লাহ আমাদের দেশে শান্তি দিক।
আল্লাহ পুরো পৃথিবীকে শান্তি দিক।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মূল বক্তব্য হচ্ছে, মানবতাই সবার আগে প্রাধান্য পাওয়া উচিৎ। কারও পূর্বপুরুষের পাপের জন্য তার উত্তর পুরুষকে ঘৃণা করার মানে হয়না। যদি সে নিজেও পূর্বপুরুষের পাপকে পাপ বলে অস্বীকার করে, তবে অবশ্যই তাকে ঘৃণা করা যায়। যদি অনুতপ্ত হয়, তবে কেন এই ঘৃণা?
ধর্ম নিয়ে কখনই বাড়াবাড়ি করতে নেই। কেউ আমার ধর্মের হলেই তার সাত খুন মাফ হয়ে যেতে পারেনা, আবার কেউ অন্য ধর্মের অনুসারী হলেই পাপী হয়ে যায় না। মানুষকে কর্ম দিয়ে বিচার করা উচিৎ। ধর্ম নিয়ে বিচার আল্লাহই করুন।
২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: বেশী বড় লেখা, তবু যা পড়লুম, ভালই লাগল্
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩০
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩১
এই আমি রবীন বলেছেন: খুবই ভাল!
আপনার হার না মানা প্রত্যয়! +
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৮
রাফা বলেছেন: মূল কথা কি এটাই বুঝাইতে চাইলেন,পাকিস্তানিদের বুঝিয়ে শুনিয়ে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেস্টা করা উচিত আমাদের?
কিছু কিছু জিনিস আছে জিবনেও তার রুপ পরিবর্তিত হয়না।আমরা কথায় কথায় অনেক উদাহারণ দেই।পাকিস্তানিরাও ঠিক তাই।আপনি শুধু আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গারদের কথা চিন্তা করে দেখেন।তাদের আমরা সুযোগ দিয়েছিলাম আমাদের মূল স্রোতে যাতে আসতে পারে।অথচ কি দেখলেন তারা বিন্দুমাত্র অনুতপ্ততো নয়ই,এখনও তাদের বিস্বাস তারা সঠিক ছিলো এবং আছে।
কাজেই উলুবনে মুক্তা ছড়িয়ে কোন লাভ নেই আসলে।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কাউকে সুযোগ দেয়ার মানে কিন্তু এই না যে তাকে একেবারেই ছেড়ে দেয়া। বিদেশে কেউ কোন অপরাধ করলে প্রোবেশন পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে পুলিশ গোপনে নজর রাখে, যদি ইনটেনশন একটুও খারাপ হয়, তবে সাথে সাথেই শাস্তি।
আমরা ভুল করেছি ওদের আবার পুনর্বাসনের সুযোগ দিয়ে। রাজাকার ইস্যু ভিন্ন ইস্যু। ওদের প্রতি কোন দয়া নয়।
৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪২
সরদার হারুন বলেছেন: আমরা লেখতের কাছ থেকে জবা চাই কিন্তু তিনি নিরব কেন ?
৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৬
ইমরান আশফাক বলেছেন: মুল বক্তব্য বুঝতে কোন সমস্যা হয় নাই, সহমত।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৫৮
সরদার হারুন বলেছেন: আপনার কথার যদি সারসংক্ষেপ বলতেন তাহলে বুঝতে সহজ হতো ।
ধন্যবাদ।