নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
যখন তিনি সবাইকে বলতে শুরু করলেন এক আল্লাহ ছাড়া আর কারও সামনে মাথা নত করো না, এবং মেনে নাও আমি তাঁর শেষ পয়গম্বর, তখন থেকেই তাঁর পেছনে শত্রুরা লেগে ছিল।
আবু জাহেল এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাঁকে জাদুকর, লোভি, বাটপার ইত্যাদি কত অপবাদই না দিয়েছে। কোন কিছুতেই কাজ না হওয়ায় তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। হিজরতের রাতে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত ঘিরে ফেলেছিল খুনি বদমায়েশের দল! কিন্তু না তিনি, না তাঁর সাহাবীরা একজন মানুষকেও (কেবল মাত্র যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া) সে কারণে হত্যা করেছেন।
এমন নয় যে তাঁরা দূর্বল ছিলেন। তখনই মুসলিম দলে ছিলেন হযরত হামযাহ (রাঃ), হযরত উমারের (রাঃ) মতন মক্কার শ্রেষ্ঠতম বীর পুরুষেরা। কার সাধ্য বা সাহস ছিল তাঁদের সামনে গলা উঁচিয়ে কথা বলার?
উপরন্তু মক্কা বিজয়ের পরে যখন কুরাইশরা মাথা নিচু করে মৃত্যুদন্ডের অপেক্ষা করছিল, তখন তিনি সবাইকে সাধারণ ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
কেন জানেন? যাকে আল্লাহ স্বয়ং বলেছেন তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, আসমান-জমিন-বেহেস্ত-দোযখ , জ্বিন-ফেরেস্তা ও মানব জাতির সবার মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ আসনধারী, the ultimate master piece, তাঁকে সামান্য আবু জাহেল কেন, তামাম দুনিয়ার কোটিকোটি মানুষ ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করলেও তাঁর সম্মানের এতটুকুও কিছু আসবে যাবে না। একটা কার্টুন, একটা সিনেমা অথবা একটা উন্মাদের প্রলাপ আজকে আল্লাহর দেয়া সম্মানের চেয়ে বড় হয়ে গেল?
তায়েফে যখন তাঁকে পাথর মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলা হয়েছিল, জ্ঞান ফেরার পর তিনি আল্লাহর কাছে কাঁদতে কাঁদতে দোয়া করেছিলেন ওদের যেন সঠিক জ্ঞান দেয়া হয়। আল্লাহ যেন তাঁদের ক্ষমা করেন।
তিনি কী নিজের অপমানে বা ব্যথায় কষ্ট পেয়ে কেঁদেছিলেন? না! তিনি কেঁদেছিলেন এই কষ্টে যে তারা কেউ তাঁর কথা বুঝতে চাইছে না।
বিদায় হজ্জের দিনে আরাফাহর ময়দানে লক্ষাধিক মুসলমানের সামনে মানব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম ভাষণটি শেষ করে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, "আমি কী তোমাদের কাছে ইসলামের (কল্যাণের) বাণী পৌছে দিতে পেরেছি?"
সমবেত জনতা উৎফুল্ল কন্ঠে জবাব দিয়েছিলেন, "হ্যা!"
জবাব শুনে তিনি তৃপ্তির হাসি হেসেছিলেন।
কিন্তু আজকে যদি তিনি আমাদের সামনে থাকতেন, তবে আমি নিশ্চিত, মদিনার কুড়ে ঘরে খেজুর পাতার বিছানায় বসে মুসলিম সাম্রাজ্যের সম্রাট কাঁদতে কাঁদতে বুক ভাসাতেন। এই কান্না তায়েফের কান্নার চেয়ে ভিন্ন হতো, তাঁর উম্মতেরা যে তাঁর বাণীর কিছুই উপলব্ধি করতে পারেনি! দীর্ঘ তেইশ বছরের অকল্পনীয় সংগ্রাম, শহীদ সাহাবাদের আত্মত্যাগ - সব মিথ্যা প্রমাণ করে কিছুদিন আগে পেশোয়ার-সিডনির পর আজকেও তাঁর "উম্মতেরা" তাঁর নাম নিয়েই প্যারিসে হামলা চালালো।
কেয়ামতের দিন যখন এইসব মাথা মোটা আহাম্মক উন্মাদদের সাথে নবীজির (সঃ) দেখা হবে, এবং তখন তিনি জিজ্ঞেস করবেন, "আমাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপের অপরাধে যদি আমি বা আমার সাহাবীরা কাউকে এতটুকু আঘাত পর্যন্ত না করে থাকি, তবে তুমি কোন সাহসে মানুষ হত্যা করতে গেলে? কে তোমাকে এই অনুমতি দিয়েছিল?" - তখন তারা কী জবাব দিবে?
নবীজি যদি জানতে চান, "তোমরা কী আমার এবং আমার সাহাবীদের চেয়ে বেশি ধর্ম বুঝে ফেলেছো?"
তখনই বা তারা কী জবাব দিবে?
নবীর(সঃ) অপমান কোন কার্টুনে হয়না, কোন জোকসেও হয়না - আমার নবীর সম্মান অনেক অনেক উঁচুতে।
কিন্তু সেই নবীরই (সঃ) আসল অপমান হয় তাঁর নির্দেশ অমান্য করলে। তাঁর অপমান হয় ইবলিসের কর্মকান্ড তাঁর নামে হালাল করার প্রচেষ্টা করলে।
নির্যাতিতের আর্তনাদে যেখানে আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠে, সেখানে "আল্লাহু আকবার" ধ্বনীতে মানুষ হত্যা করা হয়।
প্রিয় নবীজি হযরত মুহাম্মদ(সঃ), আল্লাহর কাছে আমরা ক্ষমা চাই, তিনি পরমকরুনাময় ও অসীম দয়ালু। তিনি আমাদের ক্ষমা করুন এবং সঠিক পথ দেখান!
এবং সেই সাথে আপনার কাছেও ব্যক্তিগতভাবে মাফ চাই। আপনিও দয়ার সাগর, আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দেয়া শিক্ষার বিকৃত অর্থ প্রয়োগ করে আপনাকে বুঝিবা আমাদের মুসলমানদের চেয়ে বেশি অপমান আর কেউ কখনও করতে পারেনি।
২| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ১:১৬
নির্বাসিত আমি বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০২
মন্জুরুল আলম বলেছেন: অনেক সুন্দর করে মূলকথাটা গুছিয়ে লিখেছেন। জানিনা এই লেখায় কেন কোন মন্তব্য নাই!!!