নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
সেই পুরনো টপিক নিয়ে আবার লিখতে বসলাম। অবশ্য পুরনো বলাটা ঠিক হচ্ছে না - দুইদিন পরপরই এইটা নতুন নতুন রূপে হাজির হচ্ছে।
গত একমাসেই মুসলিমরা তিনবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, সিডনি-পেশোয়ার-প্যারিস, কে জানে সামনে আরও কয়বার শিরোনাম হতে হবে!
প্যারিসের ঘটনা এখন পুরো পৃথিবীর মুসলমানদের দুইভাগে ভাগ করে দিয়েছে। একদল কোন কথা ছাড়াই ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। শান্তির ধর্ম ইসলামের এইটাই সঠিক রাস্তা।
আরেকদল দাবী করছেন যা ঘটেছে তা ঠিকই ঘটেছে।
দুই একজন বললে কোন সমস্যা ছিল না। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এদের সংখ্যা কোটির উপরে। তাঁরা আবার হাদিস কুরআনের উদাহরণও টানছেন।
অল্পবিদ্যা কতটা ভয়ংকর হতে পারে সেটার দুর্দান্ত উদাহরণ এই ঘটনা। এবং একই সাথে অত্যন্ত বেদনাদায়ক!
আল্লাহ সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন! আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে সবাই জোরে বলেন, "আমিন!"
যার বাংলা অর্থ "তাই হোক!"
শুরুতেই বলে নেই, একজন অপরাধী, সর্বাবস্থায় অপরাধী। একজন খুনি, যেকোন অবস্থাতেই খুনি। সে মুসলিম ছিল নাকি নাস্তিক, নাকি অন্য কোন ধর্মের লোক, এইটা কোন অবস্থাতেই বিচারে আসতে পারবে না। আপনার "দলিল" লাগবে? সুরাহ নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতখানা দেখে নিন, "ন্যায়ের পথে থাকো, যদি তার জন্য তোমার পরিবার, আত্মীয়, এমনকি নিজের বিরুদ্ধেও যেতে হয়।"
আল্লাহর সরাসরি নির্দেশ আপনাদের শুনিয়ে দিলাম, এরপরেও তর্ক করতে আসবেন?
উদাহরণ সেই ইহুদি ব্যক্তির যে এক মুসলিমের বিরুদ্ধে মুসলিম বিচারকের কাছ থেকেই ন্যায় বিচার পেয়ে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এটাকেই প্রকৃত ইসলাম বলে। বিচারের ক্ষেত্রে "মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই" কথাটি ভয়েড।
কিন্তু না, প্রথমেই অনেকে বলবেন, "আমাদের নবীজির(সঃ) কার্টুন বানিয়েছে! ওদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড! ন্যায় বিচার না পেয়েই ওরা কাজটা করেছে, এবং ঠিকই করেছে! এইরকম ঘটনা অনেক আগেই হওয়া উচিৎ ছিল.........।"
আবার একদল আওয়াজ তুলবেন, "ফ্রীডম অফ স্পীচ সবার থাকা উচিৎ! সভ্যদেশে এটাই নিয়ম........।"
তাহলে এটা নিয়েও কিছু কথা দ্রুত বলে ফেলা যাক।
"ফ্রীডম অফ স্পীচ" যেই দেশে যেমন ভাবেই চালু থাকুক না কেন, কিছুকিছু ক্ষেত্রে আপনার মুখে তালা ঝুলিয়ে রাখতেই হয়। সভ্য দেশের এইটাই নিয়ম।
যেমন, আপনি কোন কালো মানুষকে "N...." বলে ডাকতে পারবেন না। কোন সমকামী দেখলে "F...." ডাকতে পারবেন না। নাৎজিদের হলোকাস্ট নিয়ে উল্টাপাল্টা কমেন্ট করতে পারবেন না। ভিনদেশী মানুষকে "ইমিগ্র্যান্টস" ডাকতে পারবেন না। এইসব বললে অবশ্যই তাঁরা অফেন্ডেড হবেন, যা সভ্যতার পরিপন্থী।
তেমনি মুসলিমদের সামনেও আল্লাহ অথবা নবীজিকে (সঃ) নিয়ে রসিকতা করা ঠিক না। কারণ নবীজি (সঃ) তাঁদের কাছে পার্থিব যেকোন কিছু থেকে বেশি প্রিয়। উদাহরণ দিলেই টের পাবেন।
ওহুদের যুদ্ধের শেষের দিকে মুসলমানেরা যখন দারুণ মার খাচ্ছেন এবং নবীজির(সঃ) দিকে কুরাইশদের তীর ছুটে আসছে, তখন হযরত সা'দ (রাঃ) নিজের শরীর এগিয়ে দিয়ে বলেন, "আপনি আমার শরীরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করুন (নবীজির (সঃ) ঢাল ছিল না)। তীর যদি বিধে সেটা আমার শরীরেই বিধুক, তবু আপনার শরীর যেন অক্ষত থাকে!"
হযরত খুবেইবকে (রাঃ) যখন মক্কায় কুরাইশরা বেঁধে রেখে মেরে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন আবু সুফিয়ান (রাঃ) (তখনও মুসলিম হননি) বলছিলেন, "তোমার কী আফসোস হচ্ছে না এই ভেবে যে তোমার জায়গায় এখন যদি মুহাম্মদ(সঃ) এখানে থাকতো এবং তুমি তোমার বাসায় থাকতে পারতে?"
খুবেইব(রাঃ) জবাব দিয়েছিলেন, "তোমরা আমাকে অসংখ্যবার মৃত্যু দিলেও আমি চাইবো না নবীজির(সঃ) গায়ে এতটুকু কাঁটার আঘাত লাগুক!"
এইরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে।
মুসলমানদের কাছে নিজের বাবা মা, নিজের সন্তান এমনকি নিজের থেকেও নবীর(সঃ) প্রতি ভালবাসা বেশি থাকাটা Part of their ঈমান। নাহলে সে প্রকৃত মুসলিমই হতে পারবে না।
কাজেই নবীজিকে(সঃ) নিয়ে রসিকতা করাটা যদি কেউ মনে করে থাকে "ফ্রীডম অফ স্পীচ," তবে সেজন্য রাগ করাটাও তাঁর জন্মগত অধিকার।
যেমন আপনাকে যদি আপনার মাকে নিয়ে অনেক আজে বাজে কথা শুনাই, গালিগালাজ করি, তাহলে আপনার রাগ করাটাই স্বাভাবিক এবং সেটাই আপনার অধিকার। সেটাকে ফ্রীডম অফ স্পীচের দোহাই দিয়ে চালিয়ে দিলে একদমই চলবে না। আশা করি পয়েন্ট ক্লিয়ার করতে পেরেছি।
রাগ ওঠাটা দোষের কিছু না, রাগ কিভাবে প্রকাশ করছি - সেটার উপর দোষ-গুণ নির্ভর করে। এইটাই আমার লেখার উদ্দেশ্য।
আমরা যেহেতু নিজেদের "মুসলমান" হিসেবে দাবী করি, কাজেই আমাদের রাগ প্রকাশের ধরণটাও হওয়া উচিৎ ইসলামী নিয়মে। নাহলে লোকে শুধু আপনার দিকেই আঙ্গুল তুলবে না, আমাদের পুরো জাতটাকে নিয়েই প্রশ্ন তুলবে।
ইতিহাস বলছে নবীজিকে(সঃ) নিয়ে ফাজলামি নতুন কোন ঘটনা না। ধর্মপ্রচারের একদম শুরু থেকেই তাঁকে ওরা যাদুকর, মিথ্যাবাদী, লোভি ইত্যাদি অনেক অপবাদ দিয়ে আসছে। কোরআন পর্যন্ত সেই সাক্ষ্য দিচ্ছে। কিন্তু কোরআন একই সাথে নির্দেশ দিচ্ছে, কিভাবে সেগুলোকে সামলাতে হবে। কুরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন ওরা রসিকতা করবেই, ওরা আগের নবীদের নিয়েও রসিকতা করেছে - ওদের পাত্তা দিও না। ধৈর্য্য ধরো। এদেরই একটা সুরাহ মুজ্জাম্মিলের আয়াত নম্বর ১০, মিলিয়ে দেখতে পারেন।
নবীরা (সঃ) পর্যন্ত তাদের ফাজলামি বন্ধ করতে পারেননি, আমরা সেখানে কী?
একদল কা'ব বিন আশরাফের উদাহরণ টেনে বলছেন, "এই লোকটাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল নবীজিকে (সঃ) নিয়ে রসিকতা করার জন্য।"
উদাহরণটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা হচ্ছে। নোমান আলী খানের কাছেও একজন হ্যান্ডসাম যুবক কিছুদিন আগে এই প্রশ্ন করেছিলেন।
তিনি প্রথমে প্রশ্নটা শুনে একটা হতাশার নিশ্বাস ফেলেন। হাত দিয়ে নিজের মুখ মুছেন।
তারপর বলেন, "কা'ব বিন আশরাফ একজন কবি ছিল, যে নবীজি(সঃ) সহ মুসলিম নারীদের নাম ধরে ধরে অশ্লীল অরূচিকর কবিতা লিখেছে। কিন্তু এই একই লোক নবীজির (সঃ) খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল। বদর যুদ্ধের পর আবু সুফিয়ানের (রাঃ) বাড়িতে গিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিল তাঁকে হত্যার ব্যপারে। এখন তুমি বলো, তোমার রাষ্ট্রে, যদি কেউ তোমার প্রধাণমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে, attempt নিতে গিয়ে ধরা পড়ে - তবে তার শাস্তি কী হওয়া উচিৎ?"
উদাহরণ আমাদের দেশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা চলছে জেনেও চুপ করে ছিলেন, হত্যাকারীরা নাকি এর আগেও অভ্যুন্থান ঘটাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন এবং তিনি তাদের মাফও করে দিয়েছিলেন - ফলাফল "অগাস্ট ট্রাজেডি।"
রাষ্ট্র পরিচালনার কিছু রুলস আছে। কখনও কখনও শাসককে কঠোর হতেই হয়, নাহলে কিছুই লাইনে থাকেনা।
যাই হোক, কা'ব বিন আশরাফের উদাহরণ যারা বারবার ব্যবহার করছেন, তাঁদের জ্ঞাতার্থে হযরত আয়েশার (রাঃ) সহিহ হাদিস বয়ান করছি, তিনি বলেছেন, "নবীজি (সঃ) জীবনেও নিজের ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নিতে কাউকে শাস্তি দেননি।"
যেখানে তায়েফের লোকজনদের তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, যেখানে মক্কার লোকেদের তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, সেখানে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কা'ব বিন আশরাফ? ভাইরে, অমুসলিম হলেই যদি কাউকে হত্যার নিয়ম থাকতো, তাহলে আপনি আমি আজকে পৃথিবীতেই আসতাম না। আমাদের পূর্বপুরুষদের কেউ না কেউ কখনও না কখনও বিধর্মী ছিলই। ফ্যাক্ট!
যেকোন কিছু অল্প জেনে, বা অর্ধেক জেনে হুটহাট করে কোন সিদ্ধান্তে উপস্থিত হওয়া মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
"জ্বর হলে প্যরাসিটামল খেতে হয়" - এই বিদ্যা নিয়ে কেউ যদি ডাক্তারি শুরু করে দেন, তাহলেতো বিপদ। কারণ শরীরের যেকোন ইনফেকশনের একটা লক্ষণ জ্বর আসা। ক্যান্সার রোগেরও একটা অন্যতম লক্ষণ জ্বর আসা। যেখানে আপনার কেমো দরকার, সেখানে আপনি প্যারাসিটামল খেলে চলবে?
সবাই কিছু ইসলামী বই পড়ে নিজেকে ইসলামিক স্কলার ভাবা শুরু করেছেন! ফতোয়া দেয়া শুরু করেছেন। কিভাবে চলবে?
ইসলাম অত্যন্ত লজিকাল ধর্ম। এটিই একমাত্র ধর্ম যা মানুষকে মুক্তচিন্তার অধিকার দিয়েছে। কুরআন নিজেই আহ্বান করছে, কারও যদি ভিন্ন দাবী থাকে, তবে সে সামনে উপস্থিত হোক, "তোমরা সত্যবাদী হলে প্রমাণ সহ উপস্থিত হও।" (২:১১১)
যুক্তি তর্কের জন্য এই ধর্ম পুরোপুরি উন্মুক্ত। ইসলাম জানে, যুক্তি তর্কে একে হারানো একেবারেই অসম্ভব। কারণ ইসলামের মূল শক্তি কোরআনের আয়াতে, তলোয়ারে নয়। এই আয়াতগুলো এতটাই শক্তিশালী যে এর মাত্র কয়েকটি নাযিল হতে না হতেই হাজার বছরের পুরনো আরব সভ্যতার ভিত্তি নড়ে উঠেছিল। তারা যে শুরু থেকেই মুসলিমদের অত্যাচার করতো, মেরে ফেলতো, সেটা এই আয়াতকে ভয় পেয়েই। ওরা জানতো, ইসলাম দাঁড়িয়ে গেলে তাদের ধর্মব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। নাহলে মুসলিমদের ভয় পাবার কী কারণ ছিল? ওদের দলে কারা ছিল? সব গরীব মানুষের দল, বেশিরভাগই যারা দাস-দাসী, এবং আবু বকর(রাঃ) উসমানদের(রাঃ) মতন সমাজের কিছু হাতে গোনা ধনী এবং শান্তিকামী নিরীহ মানুষ!
হযরত উমার (রাঃ) নবীজিকে হত্যা করতে তলোয়ার নিয়ে বেড়িয়েছিলেন। তাঁর চেয়ে বড় কাফির তখন কে ছিল? অথচ মাত্র কয়েকটি আয়াত শুনেই তাঁর জীবন উল্টেপাল্টে গেল। তিনি তলোয়ার এনে নবীজির (সঃ) পায়ে ফেলে দিয়ে কলিমা পড়লেন।
কেউ যদি হযরত উমারকে (সঃ) সেই সুযোগ না দিয়ে প্রথমেই মেরে ফেলতো, তাহলে হযরত বেলাল (রাঃ) প্রথম প্রকাশ্যে আযান দিতেন কার ভরসায়?
কিন্তু আমাদের মাওলানারা এইটা বিশ্বাস করেন না। যার ফলাফল হচ্ছে আরও ভয়াবহ।
আরেকটা উদাহরণ দেয়া যাক। তসলিমা নাসরিন যখন প্রথম ইসলাম বিরোধী কোন লেখা লিখেছিলেন, পুরো দেশ উঠে পড়ে লেগেছিল তাঁকে হত্যা করার জন্য। তাঁকে দেশছাড়া করা হলো। এতে তাঁর মনে জেদ তৈরী হলো, তিনি ইসলামের আরও বিরুদ্ধে চলে গেলেন। একের পর এক বই লিখতে থাকলেন, মন্তব্য করতে থাকলেন।
দুই পক্ষ্যই এখন সমানতালে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আমি বলে দেই ফল কী হবে। গোলশূন্য ড্র।
অথচ কেউ যদি প্রথমেই তাঁকে আহ্বান জানাতেন, "তোমার যা যা অভিযোগ আছে তুমি নিয়ে হাজির হও। আমরা তোমার ভুল শোধরাতে চেষ্টা করবো।"
তাহলে আমি নিশ্চিত ঘটনা এত দূর গড়াতো না।
তসলিমা নাসরিন ভুল বুঝেছিলেন বলেই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁকে শুধরে দিলেই হতো। এখন তিনি যা করছেন জেদের কারণে করছেন। তাঁর শাগরেদরাও একই কাজ করছে। আর আমরা তাদের বিরুদ্ধে "জঙ্গিবাদী" ব্যবহার করে তাদের জেদ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছি।
এইটা আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা শান্তির ধর্মের লোক হয়েও শান্তভাবে কিছুই চিন্তা করতে পারিনা। অন্যকে কুৎসিত ডাকার আগে আয়নায় নিজেকে একটু দেখা নেয়া উচিৎ।
আপনি যদি বিশ্বাস করে থাকেন, ইসলাম একটি "শান্তির" ধর্ম, তাহলে প্যারিসের ঘটনা শুনেই আপনার মনে খটকা জাগবে। তখন আপনার উচিৎ হবে ব্যপারটি নিয়ে কোন বিখ্যাত স্কলারের সাথে আলোচনা করা। তাঁর মন্তব্য শোনা। দরকার হলে আরও কয়েকজন স্কলারের সাথে সেই মন্তব্য মিলিয়ে দেখা। এবং সবার উপরে এইটা বিশ্বাস রাখা, ইসলাম কোন অবস্থাতেই ভায়োলেন্সকে সাপোর্ট করে না। ফুলস্টপ!
কোন ব্যপারে নিশ্চিত না হলে চুপ করে থাকা উচিৎ। সেটাই সবার জন্য ভাল।
একজন মুসলিমকে জন্ম থেকেই নিজের কাঁধে নবীজির(সঃ) রেপুটেশনের ভার নিয়ে চলতে হয়। তাঁর প্রতিটা কাজে নবীজিকে(সঃ) জাজ করা হয়। তাই তাঁকে অনেক সাবধানে জীবন কাঁটাতে হয়। কেউ কিছু বলল আর অমনি বন্দুক নিয়ে টার্গেট প্র্যাকটিসে বেরিয়ে পড়লো, এমন পাগলামি তাঁকে শোভা পায়না।
যেখানে বিশ্বের বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে বড় বড় গবেষণা করে অন্যান্যরা মানবসভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে - সেখানে আমরা এখনও কিছু হলেই বোমা মেরে মানুষদের উড়িয়ে দিচ্ছি। গুলি করে মানুষ হত্যা করছি! স্কুলের বাচ্চারাও আমাদের হাত থেকে মুক্ত নয়। ছিঃ!
আমরা কোন কাজের আগেই এতটুকু চিন্তা করছি না আফটার ইফেক্ট কী হতে পারে।
যে কার্টুন নিয়ে এত তোলপাড়, কয়জন মানুষ সেটা দেখেছিল? আজকে এই ঘটনার পর পুরো বিশ্ব সেটা দেখলো। তারউপর মুসলিমদের সম্পর্কে আবার নতুন করে "জঙ্গিবাদী" ধারণাটা পাকাপোক্ত হলো। আলটিমেট লুজার এখানে কে? আমরা। যদি নবীজিকে (সঃ) নিয়ে ব্যাঙ্গ করা পাপ হয়ে থাকে, তবে তাঁর নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসবাদী কর্ম করাটাও পাপ। বরং বলবো, আরও জঘন্য পাপ!
যারা কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে একহাতে রাইফেল, আরেক হাতে কোরআন নিয়ে ক্যামেরায় পোজ দেয়, তাদের চেয়ে জঘন্যভাবে ইসলামকে ব্যাঙ্গ আর কয়জন করতে পেরেছে?
শেষ করতে চাই একটা মহাগুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়ে।
আপনাদের অনেকেই ইসলামের নামে হত্যাকে সমর্থন করে আসছেন। কোরআন হাদিসই যেখানে আপনাদের শেখাতে পারেনি, আমাদের লেখালেখি কিই বা শিখাবে।
তবে খেয়াল রাখবেন, আপনাদের ছেলে মেয়েরা কিন্তু তাই শিখে যা আপনি তাঁদের শেখাবেন। আপনি যদি বলেন নবীজিকে(সঃ) ব্যাঙ্গ করায় এই হত্যাকান্ড (যেখানে দুইজন নির্দোষ মুসলিমও মারা গিয়েছেন) সঠিক, তবে আপনার শিশুও এই ভুল ধারণা মনে নিয়েই বড় হবে। ভবিষ্যতে তারও জঙ্গী হবার সুযোগ শতকরা নব্বই ভাগ! যদি আপনার ছেলে নিউইয়র্কে আত্মঘাতী বোমা হামলা করতে গিয়ে এফবিআইয়ের হাতে ধরা খায়, তখন যেন "ওকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে" ধরণের কথা বলে কান্নাকাটি জুড়ে দিবেন না। গোড়াতেই গন্ডগোল ছিল, সেটা বুঝতে হবে।
আরেকটা উপদেশ, আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবদের সাথে খোলাখুলি এইসব বিষয়ে আলোচনা করুন। যদি কখনও দেখেন, কেউ একজন এইরকম ঘটনা ঘটানোর প্ল্যান করছে, তাহলে সরাসরি পুলিশকে অবহিত করুন। সে আপনার যতই প্রিয় মানুষ হোক না কেন।
মনে রাখবেন, কুরআনের আয়াত, "ন্যায়ের পথে থাকো, যদি তার জন্য তোমার পরিবার, আত্মীয়, এমনকি নিজের বিরুদ্ধেও যেতে হয়।"
পৃথিবীর সবাইকে আল্লাহ সঠিক জ্ঞান দান করুন, যাতে সবাই শান্তিতে থাকতে পারে।
আবারও আস্তিক, নাস্তিক নির্বিশেষে সবাই জোরে বলেন, আমিন! যার বাংলা মানে, "তাই হোক!"
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: নিজের মন্তব্য করার জন্যও আপনাকে ধন্যবাদ!
আপনি বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন, আলোচনা করুন, একজনের হলেও দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবার প্রয়োজন আছে।
২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩
আমি অথবা অন্য কেউ বলেছেন: চমতকার পোস্ট, যুক্তি আর উদাহরনগুলো দারুন। ভাললাগা রইলো
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। বন্ধুবান্ধবের সাথে এ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন।
৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০২
অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের কিছু কিছু লোকেদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে আমরা জানি কম বুঝি বেশি ! এবং নিজের অল্পকে জাহির করতে সদা প্রস্তুত !
আপনার লেখার ব্যাখ্যা চমৎকার এবং এমন টাই হওয়া উচিৎ ! কিন্তু আপনি নিজেই তো বললেন যে "নবীজিকে(সঃ) নিয়ে রসিকতা করাটা যদি কেউ মনে করে থাকে "ফ্রীডম অফ স্পীচ," তবে সেজন্য রাগ করাটাও তাঁর জন্মগত অধিকার"
আমাদের কে তারা মূর্খ বলে কিন্তু সেই সকল ফ্রীডম অফ স্পীচওয়ালা তো অনেক জ্ঞানী । তাদেরও কি এই জিনিস টা বোঝা উচিৎ নয় যে You have freedom of speech But that does not give you permission to Insult The Faith Of Others.
এখানে অপরাধী দুদলই কিন্তু যত দোষ নন্দ ঘোষ, এই আর কি !!
আল্লাহ সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন! আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে সবারই শুভ বুদ্ধির উদয় হোক !
আমিন !
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঐ যে বললাম, সবাইকেই মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। এক পক্ষ দোষ করলেই অপর পক্ষের দোষ করা হালাল হয়ে যায় না। এবং ওদেরকেও ফ্রিডম অফ স্পীচের সীমা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৮
আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: চমৎকার একটা লেখা। ভালো লাগল।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫
মহান অতন্দ্র বলেছেন: চমৎকার লেখা। ভাল লেগেছে যুক্তি উপস্থাপন । ভাল থাকবেন। শুভ কামনা জানবেন।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২০
মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ভাল লিখেছেন । নবী (সা) এর প্রচারিত ইসলাম নিয়ে আমার সন্দেহ নেই । তবে ওনার (সা) ওফাতের পর যা হয়েছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় । জঙ্গী ইসলামের শুরু সেখান থেকেই যার ধারাবাহিকতা এখনও চলছে। রাসুল (সা) ওফাতের পর তার পবিত্র লাশ মোবারক ফেলে রেখে কিছু সাহাবার সায়েদায় বনু সকিফায় গমন সেখানে রাসুল (সা) এর সাহাবাদের সর্বসম্মতি ছাড়াই উমরের প্রস্তাবে জোরপূর্বক আবু বকরকে খলিফা মনোনয়ন ও এরপরপরই ইসলামের মধ্যে বিভক্তি চলে আসে। একটি হল রাসুল (সা) এর প্রচারিত ইসলাম ও অপরটি হল সুফিয়ানী ইসলাম তথা জঙ্গী ইসলাম । এই সুফিয়ানী ইসলামটাই হল আজকের জঙ্গী ইসলাম যা রাসুল (সা) প্রচার করেণনি ! জঙ্গীরা কি মুসলমানদেরকেও হত্যা করতেছে না ? এই হত্যা কখন থেকে শুরু হয় ? ইতিহাস ঘাটলেই পাবেন এই হত্যাকণ্ড শুরু হয় প্রথম খলিফা আবু বকরের সময় থেকে।তথাকথিত মুরতাদ অ্যাখ্যা দিয়ে কাদেরকে হত্যা করা হয়েছে ? ইয়ামামার যুদ্ধে আবু বকরের প্রতিপক্ষ কারা ছিল ? ইয়ামামার অধিবাসীগণ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিলেন তারা মুসলিমই ছিল । তারা কালেমা পাঠ করেছিল, নামাজ পড়ত, রোজা করত সবই করত কিন্তু তাদের অভিযোগ ছিল তাদের মতামত না নিয়ে আবু বকরকে খলিফা করা হয়েছে আর এরপ্রতিবাদ স্বরুপ তারা খলিফা আবু বকরকে যাকাত দিতে অস্বীকার করে ! আবু ব্কর যখন খালিদ বিন ওয়ালিদকে ইয়ামামার অধিবাসীর বিরুদ্ধে জেহাদ করতে বলেন তখন উমর বলেছিলেন, আপনি কিরুপে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন যারা কালেমা পাঠ করেছে, নামাজ পড়ে? তখন আবু বকর বলেছিলেণ, আল্লাহর কসম ! রাসুল (সা) কে তারা যে যাকাত দিত তা থেকে যদি একটি উস্ট্রির বাচ্চা দিতে অস্বীকার করে তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করব !
তারা কি যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল ? যদি করে থাকে তাহলে কেন করেছিল ? আর যাকাত দিতে অস্বীকার করলেই কি তাদের হত্যা করতে হবে ? যদি বলেন হ্যাঁ তাদরে হত্যা করতে হবে তাহলে আজকে যারা যাকাত দিচ্ছে না তাদের হত্যা করা বৈধ ! তেমনি যারা মুসলমান কিন্তু নামাজ আদায় করছে না তাদরে হত্যা করা বৈধ ! তাহলে আজকে জঙ্গীরা ইসলামের নামে যা করতেছে তা বৈধ হয়ে যায় তাই নয় কি ? যদি বলেন তাদের হত্যা করতে হলে খলিফার হুকুম দরকার ! নো প্রোবলেম -জঙ্গীরা অলরেডি খলিফাও সিলেক্ট করেছে-আবু বকর আল বাগদাদি !
শুধু তাই নয় এরপরের ঘটনা আরো হৃদয়বিদারক ! খলিফা আবু বকর খালিদ বিন ওয়ালিদকে সেনাপতি করে ইয়ামামাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করতে পাঠান ! ইয়ামামামার অধিবাসী ছিলেন মুসলিম ! খলিফা কি পারতেন না তাদের মতামত শুনতে ? খলিফা কি পারতেন না তাদের সাথে বৈঠকে বসতে ? অন্তত সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদও তাই করতে পারতেন কিন্তু তা করা হয়নি ! তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়, তাদের সম্পত্তি হয়ে যায় গণিমতের মাল ! তাদের গোত্রপ্রধানকে হত্যা করে তার সুন্দরি স্ত্রীকে ধর্ষণ করেণ খালিদ বিন ওয়ালিদ ! এই খবর যখন ওমর বিন খাত্তাব জানতে পারেণ তখন তিনি খলিফা আবু বকরের কাছে যেয়ে দাবি করেণ খালিদ বিন ওয়ালিদকে ব্যাভিচারের দায়ে ( মূলত ধর্ষণ) রজম করা হোক ! হয়তো উমর খালিদ বিন ওয়ালিদকে পছন্দ করতেন না বলেই রজম করার দাবি তুলেছেন যার পরবর্তী প্রমান উমর খলিফা হয়েই খালিদ বিন ওয়ালিদকে সেনাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করেণ !
খলিফা আবু বকরের আমলে অন্যান্য যুদ্ধগুলোরও প্রায় একই অবস্থা ! বনু সকিফায় কতিপয় আনসারের পক্ষ থেকে যিনি খেলাফতের দাবিদার ছিলেন ও যিনি আবু বকরের খেলাফত স্বীকার করেণেনি পরবর্তীতে সেই সাহাবার লাশ নির্জন স্থানে পাওয়া যায় আর প্রচার করা হয় যে ঐ সাহাবাকে রাতে জ্বীনেরা হত্যা করেছে ! রাতে কোন জ্বীনেরা হত্যা করেছে তা কি বুঝতে কারো বাকি থাকে ?
যাইহোক, এরকম একটি বা দুটি ঘটনা নয়- রাসুল (সা) এর ওফাতের পর তারই নামে খলিফাগণ যা করেছেন তা মেনে নেওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয় যদি বলেন সম্ভব তাহলে আজকে জঙ্গীরা যা করতেছে তাই হল প্রকৃত ইসলাম ! এরপর খলিফা ওমরের একর পর এক রাজ্য বিস্তৃতি -যা ইসলামের নামে আর এক সাম্রাজ্যবাদ ! তাই তো খলিফা আবু বকর আল বাগদাদি ইউরোপ দখল করারও হুমকি দিয়েছেন ! বলেছেন, ইউরোপবাসীদের হয় ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে হবে, না হলে জিয়িা কর দিতে হবে অথবা তাদের হত্যা করা হবে তারা সংখ্যায় যাইহোক। এমনকি শিয়া মুসলিমদেরও হত্যা করা ফতোয়া জারি করেছেন তিনি ! বলেছেন, ১৫ কোটি, ২০ কোটি বা ৫০ কোটি আমাদের কাছে কোনো বিষয় নয় !
তেমনি খলিফা ওসমনের স্বজনপ্রিতী, দুর্নীতি চরমমাত্রায় ধারণ করে ! রাসুল (সা) এর প্রিয় সাহাবা আবু যর গিফারী তার অনৈসলামিক কাজের কঠোর সমালোচনা করাতে আবু যর গিফারীকে নির্জন স্থানে নির্বাসন দেন খলিফা ওসমান ! সেখানে না খেয়ে ইন্তেকাল করেণ আবু যর গিফারী ! যে মারওয়ান ইবনে হাকামকে রাসুল (সা) বহিষ্কার করেণ সেই মারওয়ান ইবনে হাকামের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেণ খলিফা ওসমান ! শুধু তাই নয় তাকে রাস্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও দেওয়া হয় আর সেই মারওয়ানই পরবর্তীতে খলিফা ওসমান হত্যায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেণ, ইয়াজিদের পর সেই মারওয়ানই হন ইসলামি বিশ্বের খলিফা ! আম্মার বিন ইয়াসির, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ যারা ছিলেন রাসুল (সা) এর প্রিয়তম সাহাবা এরকম সাহাবাদের চরম নির্যাতন করেছিলেন খলিফা ওসমান ! প্রথম তিন খলিফার শাসনামল পর্যালোচনা করলেই বুঝতে পারবেন জঙ্গীরা তাদেরই অনুসরণ করছে মাত্র !
৭| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২
মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: প্রথম তিন খলিফা নিজেদের কর্মকাণ্ডগুলি জায়েজ করার উদ্দেশ্যেই হাদিস লেখা, সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে বর্ণনা করাও নিষিদ্ধ করেছিলেন ! তবে তাদের কর্মকাণ্ডগুলি জায়েজ করার উদ্দেশ্যেই পরবর্তীতে রচিত হয়েছে অসংখ্য জাল হাদিস যার কুফল হিসাবে আজকে আমরা পাচ্ছি জঙ্গীবাদ !
এরকম একটি বিখ্যাত জাল হাদিস রচন করা হয়েছে যে রাসুল (সা) নাকি নিষেধ করেছেন হাদিস লিখে রাখতে ! কিন্তু রাসুল (সা) কেন তা নিষেধ করবেন যেখানে কোরানকে হেফাজত করার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিয়েছেন !
উপরোক্ত এরকম হাদিস বলার উদ্দেশ্যই ছিল-হযরত আবু বকর ও হযরত উমর ও উসমানের কর্মকান্ডগুলোকে জায়েজ ঘোষণা করা। কেননা তারা অনেক সাহাবাগণ কর্তৃক জমাকৃত নবী (সা.)-এর হাদীসগুলিকে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
উক্ত হাদিস যে জাল ছিল তার পক্ষে কিছু যুক্তি দেওয়া হল:
(ক) রাসুলুল্লাহ (সা.) যদি উক্ত হাদীস বলে থাকতেন তাহলে সেই সকল সাহাবাও উহার উপর আমল করতেন যারা রাসুল (সা.)-এর হাদীস লিপিবদ্ধ করে ফেলেছিলেন এবং সেগুলিকে হযরত আবু বকর ও হযরত উমরের আমলের পূর্বেই মুছে ফেলতেন, যা রাসুল (সা.)-এর ওফাতের কয়েক বছর পর আগুনে পুড়িয়ে দিলেন।
(খ) উক্ত হাদীসটি যদি সত্য হত তাহলে প্রথমতঃ হযরত আবু বকর ও দ্বিতীয়তঃ হযরত উমর উক্ত হাদীস দ্বারা যুক্তি প্রদর্শন করতেন যাতে হাদীসগুলির লেখনী এবং সেটিকে পুড়িয়ে ফেলার কর্ম/পাপ থেকে মুক্ত হয়ে যেতেন। তারা এবং তাদের সম্মুখে সাহাবাগণও ওজর উপস্থাপন করতেন, যারা ভুলক্রমে হাদীসগুলি লিখে ফেলেছিলেন। যদি উক্ত হাদীসটি সত্য হত তাহলে হযরত আবু বকর ও উমরের জন্য সেই সমস্ত হাদীসগুলিকে মুছে ফেলা ওয়াজিব ছিল নাকি পুড়িয়ে ফেলা?
(গ) উক্ত হাদীসকে যদি সত্য বলে স্বীকার করে নেয়া হয় তাহলে হযরত উমর বিন আব্দুল আজীজের যুগ হতে অদ্যাবধি সমস্ত মুসলমানই গোনাহ করেছেন। কেননা তারা সেই কর্মটিই সম্পাদন করেছেন যেটা থেকে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছিলেন। আর সর্বপ্রথম হলেন হযরত উমর বিন আব্দুল আজিজ যিনি ওলামাগণকে হাদীস জমা করা এবং লিপিবদ্ধ করার হুকুম দিয়েছিলেন। বুখারী ও মুসলিম উভয়েই উক্ত হাদীসকে সত্য গণ্য করেছেন। সুতরাং তারাও গোনাহগার হলেন, কেননা তারা রাসুল (সা.) হতে হাজারো হাজার হাদীস লিপিবদ্ধ করেছেন।
(ঘ) উক্ত হাদীসটি যদি সত্য হত তাহলে সেই ‘জ্ঞান নগরীর দরজা’ হযরত আলী হতে কিভাবে লুকিয়ে থাকল, যিনি নবী (সা.)-এর হাদীসসমূহকে সেই সহীফার মধ্যে সংকলন করেছেন যার দৈর্ঘ ছিল ৭০ গজ। আর যার নাম হল ‘সহীফাতুল জামেয়াহ্ যে কিতাবের উল্লেখ স্বয়ং বোখারী করেছেন। বলেছেন যে রাসুল (সা) এর এই হাদিসের কিতাবটি আলি কর্তৃক লিখিত ও সংরক্ষিত !
ইমাম বুখারী তার সহীহর ‘কিতাবুল ইলম’-এ এবং বাব কিতাবাতুল ইলমে আবু হুরায়রা হতে রেওয়ায়েত করেছেন যে তিনি বলেন, নবী (সা.)-এর সাহাবাদের মধ্যেকার কারোরই আমার চেয়ে অধিক হাদীস মুখস্ত ছিল না। কিন্তু আব্দুল্লাহ বিন আমরুর আমার চেয়ে অধিক মুখস্ত ছিল। কেননা তিনি লিখে রাখতেন, আমি লিখে রাখতাম না। [দ্র: সহীহ বুখারী, খন্ড-১, পৃ-৩৬, বাব-কিতাবাতুল ইল্ম]
উক্ত রেওয়ায়েত দ্বারা এই কথা বুঝে আসে যে, নবী (সা.)-এর সাহাবাদের মধ্যে কিছু লোক তাঁর হাদীসগুলি লিখে রাখতেন। আর আবু হুরায়রা যখন নবীর মুখে শুনেই ছয় হাজার হাদীস বয়ান করেছেন, তাহলে আব্দুল্লাহ বিন আমরু বিন আ’সের নিকট তো তার চেয়েও অনেক বেশী হাদীস থাকার কথা কারণ তিনি লিখে রাখতেন। সুতরাং আবু হুরায়রাও এই কথা স্বীকার করেছেন যে, আব্দুল্লাহ বিন আমরু বিন আ’স আমার চেয়ে অধিক হাদীস মুখস্ত রেখেছেন কারণ তিনি লিখে রাখতেন। এতে কোন সন্দেহ নাই যে, আরো অনেক সাহাবা নবী (সা.)-এর হাদীসগুলিকে লিখে রাখতেন। কিন্তু আবু হুরায়রা তাদের আলোচনা হয়তো এ জন্য করেন নি যেহেতু তারা এ কথার জন্য বিখ্যাত ছিলেন না যে নবী (সা.)-এর অনেক হাদীস তাদের মুখস্ত আছে।
এই আলোচনায় যে বিষয়টি আমাদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ তা হল এই যে, সাহাবাগণ নবী (সা.)-এর হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করতেন। আবু হুরায়রার এই বক্তব্য যে আব্দুল্লাহ বিন আমরু নবী (সা.)-এর হাদীসসমূহ লিখতেন এবং তাঁর এই বক্তব্য যে, “আমি রাসুল (সা.)-এর নিকট থেকে কেবল কোরআন আর এই সাহিফা লিপিবদ্ধ করেছি” স্বয়ং এই কথার প্রতি নিরেট দলিল হয়ে আছে যে,রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের হাদীস লেখার বিষয়ে কোখনোই নিষেধ করেন নি। বরং এর বিপরীতটিই সঠিক এবং যে হাদীসটি মুসলিম তাঁর সহীহতে বর্ণনা করেছেন যে, “কোরআন ব্যতীত আমার অন্য কোন কথা লিপিবদ্ধ করবে না আর যদি কেউ কোন কথা লিখে থাকে তাহলে সেটি যেন মুছে ফেলে” কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এর দ্বারা খলিফাদের সাহায্যকারীরা খলিফাদেরই সমর্থন ও সাহায্য করেছে এবং হযরত আবু বকর ও উমর এবং উসমানকে হাদীসসমূহ পুড়িয়ে ফেলা এবং প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়ে মুক্ত বা নির্দোষ সাব্যস্ত করেছে।
হাকিম তাঁর মুস্তাদরাকে, আবু দাউদ তাঁর সহীহতে এবং আহমদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুস্তাদরাকে এবং দারেমী তাঁর সুনানে আব্দুল্লাহ বিন আমরু হতে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেছেন, যার সম্পর্কে আবু হুরায়রা এই কথা বয়ান করেছেন যে আব্দুল্লাহ বিন আমরু হাদীস লিখে রাখতেন।
আব্দুল্লাহ বিন আমরু নিজেই বলেন যে, “আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট যাকিছু শুনতাম সেগুলি লিখে রাখতাম, কিন্তু কোরায়েশরা আমাকে লিখতে নিষেধ করে দিল এবং বললো, তুমি রাসুলের নিকট যাকিছু শুনো তার সবটুকুই লিখে রাখ, অথচ তিনি হলেন মানুষ, তিনি রাগ ও ক্ষোবের মধ্যেও কথা বলে থাকেন আবার শান্ত অবস্থাতেও কথা বলেন!”।
আব্দুল্লাহ বলেন যে, আমি সেদিন থেকে হাদীস লেখা বন্ধ করে দিলাম। একদিন আমি রাসুল (সা.)-এর খেদমতে উক্ত ঘটনার আলোচনা করলাম, তখন তিনি (সা.) আমাকে লেখার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, “তুমি লিখে রাখ, সেই সত্মার কসম যার কব্জায় আমার প্রান, আমার জিহ্বা থেকে কেবল হক কথাই বের হয়”। [মুস্তাদরাক, খন্ড-১,পৃ-১০৫]
উক্ত ঘটনা দ্বারা আমাদের কাছে এই কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আব্দুল্লাহ বিন আমরু সেই সকল কথাকে লিখে রাখতেন যা তিনি নবী (সা.)-এর নিকট থেকে সরাসরি শুনতেন আর তিনি (সা.) তাকে এ জন্য কখনোই নিষেধ করেন নি। বরং হাদীস লেখা থেকে তাকে কোরায়েশরা বারণ করেছিল। কিন্তু আব্দুল্লাহ সেই ব্যক্তিবর্গের নাম প্রকাশ করেন নি যারা হাদীস লিখতে বারণ করেছিল। কেননা তাদের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাসুল (সা.)-এর প্রতি আপত্তি ছিল। সে জন্যই উক্ত বক্তব্যের সম্বন্ধ/উদ্দেশ্য কোরায়েশের দিকে করা হয়েছে। আর ইহা তো স্পষ্ট যে কোরায়েশের অর্থ হল মোহাজেরদের বড় বড় সরদারগণ তথা হযরত আবু বকর, উমর, উসমান, আব্দুর রহমান বিন আউফ, আবু ওবায়দাহ, তালহা ও যুবায়র এবং সেই সকল লোক যারা এদেরকে অনুসরণ করতো।
প্রকাশ থাকে যে, নবী (সা.)-এর জীবদ্দশাতেই আব্দুল্লাহকে হাদীস লিখে রাখতে বারণ করা হয়ে ছিল, যাদ্বারা এই ষড়যন্ত্রের গভিরতা অনুমান করা যেতে পারে।
স্বয়ং হযরত আবু বকরও রাসুল (সা.)-এর কিছু কিছু হাদীস লিখে রাখতেন এবং সেগুলিকে তিনি রাসুল (সা.)-এর জামানাতেই জমা করে রেখেছিলেন। কিন্তু খলিফা হবার পর মত পরিবর্তন হয়েগেল এবং কোন একটি বিশেষ লক্ষ্যে হাদীসগুলি পুড়িয়ে ফেললেন। কথাটি সুধী পাঠক ও গবেষকমন্ডলী জানেন।
এবার তার কন্যা হযরত আয়শা বয়ান করছেন যে, “আমার পিতা রাসুল (সা.)-এর পাঁচ শত হাদীস জমা করেছিলেন। এক রাতে তার ইরাদা পাল্টে গেল। কোন সন্দেহ অথবা কোন বিষয়ের কারণে ইরাদা পরিবর্তন হয়েছিল। যখন সকাল হল তখন আমাকে বললেন, হে কন্যা! সেই হাদীসগুলো নিয়ে আস যা তোমার কাছে আছে। আমি এনে তার নিকট সোপর্দ করে দিলাম, তখন তিনি উক্ত হাদীসগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে দিলেন”। [দ্র: কানযুল উম্মাল, খন্ড-৫, পৃ-৩৩৭; ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান্নিহায়া; তাজকিরাতুল হুফ্ফাজ, খন্ড-১, পৃ-৫]
একদিন উমর বিন খাত্তাব নিজ খেলাফত আমলে খোৎবার মধ্যে বললেন, “তোমাদের কারোর কাছে কোন কিতাব লিখিত থাকলে তা আমার কাছে পৌঁছে দাও। আমি এ বিষয়ে কিছু কাজ করতে চাই। লোকেরা চিন্তা করল হয়তো ইবনে খাত্তাব হাদীসগুলোকে দেখতে চান যেন সেগুলি একটি পদ্ধতিতে জমা হোক এবং কোন মতবিরোধ যেন না থাকে। সুতরাং তারা নিজ নিজ কিতাব এনে হযরত উমরের হাওয়ালা করে দিলেন এবং তিনি সবগুলোকে পুড়িয়ে দিলেন”। [আত-তাবাক্বাতুল কুবরা,ইবনে সা’দ, খন্ড-৫, পৃ-১৮৮; খতিব বাগদাদীও এই কথাটিই ‘তাক্বলীদুল ইল্ম’ নামক কিতাবে লিপিবদ্ধ করেছেন]
অনুরূপভাবে হযরত উমর অন্যান্য শহরগুলিতেও একই হুকুম প্রেরণ করলেন যে, “কারোর কাছে হাদীস সংক্রান্ত কোন বিষয় যদি লেখা থাকে তাহলে সে যেন সেগুলিকে মুছে ফেলে” [সূত্র: জামে’ বয়ানুল ইল্ম, -ইবনে আব্দুল বার]। উমরের বক্তব্য এই কথার প্রতি স্বয়ং দলিল হয়ে আছে যে, সাধারণ সাহাবা হয় মদীনার বাসিন্দা হোক অথবা অন্যান্য ইসলামী শহরের বাসিন্দা হোক, সকলেই রাসুল (সা.)-এর হাদীস জমা করে রেখেছিলেন এবং রাসুল (সা.)-এর জামানাতেই তারা সেগুলিকে কিতাবের আকার দিয়েছিলেন। কিন্তু আফসোস! প্রথমে আবু বকর উক্ত কিতাবগুলিকে পুড়িয়েছেন তারপর উমর অন্যান্য শহরে রক্ষিত কিতাবগুলিকে ধ্বংস করলেন।
কিন্তু শাসণ ক্ষমতা এবং উহার রাজনীতির দাবীই ছিল ইহাই যেন নবী (সা.)-এর সুন্নাতকে মুছে ফেলা হোক, কিতাবগুলিকে পুড়িয়ে দেয়া হোক এবং বয়ান করার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক। আবার তাদের খেলাফতের সমর্থনকারী সাহাবারা তাদের নিদের্শেরই আনুগত্য করতেন, সেগুলিকেই প্রকাশ করতেন। সুন্নাত মুছে যাবার পর তাদের আনুগত্যকারী সাহাবা ও তাবেয়ীনদের জন্য ইজতিহাদ বির-রায় করা ছাড়া কোন পথ খোলা ছিলনা অথবা তারা হযরত আবু বকর, উমর, উসমানের সুন্নাত এবং মোয়াবিয়া ও ইয়াজিদের সুন্নাত, মারওয়ান বিন হাকাম, আব্দুল মালিক বিন মারওয়ানের সুন্নাত, এবং ওয়ালীদ বিন আব্দুল মালিকের সুন্নাত, সোলায়মান বিন আব্দুল মালিকের সুন্নাতের উপর আমল করত। এভাবেই উমর বিন আব্দুল আজীজের জামানা উপস্থিত হল এবং তিনি আবু বকর হায্মীকে রাসুল (সা.) অথবা উমর বিন খাত্তাবের সুন্নাতকে লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দিলেন। [দ্র: মোয়াত্তা- ইমাম মালিক, খন্ড-১, পৃ-৫]
এভাবে এই কথাটিও আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, যে যুগে নবী (সা.)-এর হাদীস লেখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছিল এবং সেটি মুছে যাওয়া এবং সার্বক্ষণিকভাবে বাদ্ধবাধকতার মধ্যে আঁকড়ে থাকার শত বছর পর আমরা বনী উমাইয়ার সাম্যবাদী শাসককে নবীর সুন্নাতকে খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের সাথে সংমিশ্রণ করতে দেখতে পাই। সুতরাং উমর বিন আব্দুল আজিজ রাসুল (সা.)-এর সুন্নাত এবং হযরত উমরের সুন্নাতকে জমা করার নিদের্শ দিলেন, যেন উমর বিন খাত্তাব মুহাম্মদ (সা.)-এর রিসালাতের মধ্যে শরীক (অংশীদার) হয়ে আছেন।
প্রশ্ন হলো হাদিস সংগ্রহ ও লেখাতে রাসুল (সা) যদি নিষেধাজ্ঞা দিয়েই থাকেন তাহলে রাসুলের জীবিত অবস্থায় যে সব সাহাবা হাদিস লিখে রেখেছিলেন ( স্বয়ং আবু বকরও তার মধ্যে একজন ! তিনি একাই রাসুলের পাঁচশত হাদিস লিখেছিলেন) তারা কি রাসুলের নির্দেশ অমান্য করেনি ? রাসুলের নির্দেশ অমান্য করে তারা কিভাবে হাদিস লিখে রাখলেন ? আমাদের দুটির একটি সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
১. হাদিস সংগ্রহ ও লেখাতে রাসুল (সা) এর নিষেধ ছিল না বিধায় অনেক সাহাবি হাদিস লিখে রেখেছিলেন । অথবা-
২. কোরানের সাথে মিশ্রিত হবে এই আশংকাতে হাদিস সংগ্রহ ও লেখাতে রাসুল (সা) এর নিষেধ ছিল কিন্তু ঐ সব সাহাবিরা রাসুল (সা) এর নির্দেশ অমান্য করেছিলেন ! ভাল করে ভাবুন-কোরানের সাথে মিশ্রিত হওয়ার আশংকায় নিষেধ ছিল কিন্তু তারা নির্দেশ অমান্য করেছিলেন তাহলে কোরানের সাথে হাদিসের যে মিশ্রণ ঘটেনি এর গ্যারান্টি কি ? তাই হাদিস লিখে রাখার জন্য ঐ সব সাহাবিরা নবীর নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে অভিযুক্ত !
( বড় কথা হল কোরানের সাথে হাদিসের মিশ্রন হওয়ার আশংকায় হাদিস লেখা নিষেধ-এটা হলো প্রথম তিন খলিফার হাদিস পুড়ে ফেলানোর পক্ষে একটা অপযুক্তি ছাড়া কিছুই নয় কারণ কোরানের ভাষার অলংকার ও হাদিসের মধ্যে আকাশ জমিন তফাৎ ! একথাটি শুধু আমি বলছি না প্রত্যেক মুসলিম বিশ্বাস করে থাকেন ও আরবি ভাষা সম্পর্কে যারা অভিজ্ঞ তারাই বলে থাকেন।)
এই দুইটি পয়েন্টের যে কোনো একটি পয়েন্ট এর সাথে অবশ্যই একমত পোষণ করতেই হবে।
আমার এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য রাসুল (সা) এর প্রচারিত ইসলামে জঙ্গীবাদের কোনো স্থান নেই কিন্তু ইসলামের নামে যে রকম ভয়ংকর জঙ্গীবাদী কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে তার উৎস কোথায় ? আমাদের তা অনুসন্ধান করতে হবে।
৮| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: ইসলামের নাম ব্যবহার করে কিছু জঙ্গী গ্রুপঃ
আল কায়েদা, তালেবান, তেহরিকই তালেবান, আল কায়েদা ইন ইসলামিক মাগারিব, আল কায়েদা ইন অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা, তাকফির ওয়াল হিজরা, আল উমর মুজাহিদিন, আর্মি অব ইসলাম, জুনদুল্লাহ, বোকো হারাম, সেপাহে সাহাবা, আনসার আল দ্বীন, হিজবুত তাহরির, জেএমবি, আনসারউল্লা বাংলা টিম, আনসার আল ইরাক, আনসার আল সিরিয়া, আইএসআইএল, আল শাবাব, আল নুসরা, আনসার আল শরিয়া, আবু সায়াফ গ্রুপ, আর্মড ইসলামিক গ্রুপ, ইস্ট তুর্কিস্থান ইসলামিক মুভমেন্ট, আল বদর মুজাহিদীন, জামেয়া ইসলামিয়া, জামাতুল আহলে সুন্নাহ, হরকাতুল জিহাদ, হরকাতুল মুজাহিদীনসহ যতসব জঙ্গীদল আছে যারা বোমাবাজী, হত্যা, গণহত্যায় সিদ্ধহস্ত, ইসলাম বাদে অন্যান্য ধর্মের লোকজন তো বটেই এমনকি নিজ অনুসারিত সেক্ট বাদে ইসলামের অন্যান্য সেক্টের অনুসারীদেরও যেমন শিয়া, আলাভি, সুফিসহ সুন্নীদের একাংশকে এরা হত্যা করা ফরজ মনে করে !
ওরা ইসলাম সম্পর্কে জানে না বললে ভুল হবে। ইসলামের বিভিন্ন সেক্টের নিজ তাফসির বা ব্যাখ্যা ও দর্শন আছে। জেএমবির প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান একজন শায়খ, তেমনি আল কায়েদার একজন তাত্বিক নেতা আনোয়ার আল আওলাকি, তালেবানদের নেতা মোল্লাহ ওমর এরা কি ইসলাম সম্পর্কে কম জানে ?
নি:সন্দেহে জঙ্গীগোষ্ঠীদের জঙ্গী অপকর্ম করে টিকে থাকতে হলে তাদের মেনটর দরকার কিন্তু মেনটরকেই শুধু দোষারোপ করতে পারি না । একটি দল বা গোষ্ঠী বা একজন ব্যক্তি ১০/২০ টি খুন করলে সে একজন খুনী বা সন্ত্রাসী কিন্তু যখন ঐ দল বা গোষ্ঠী বা ব্যক্তি খুন বা বোমাবাজী করবে এই উদ্দেশ্যে যে সে তার অনুসারিত দর্শন/বিশ্বাস জোরপূর্বক বা বল প্রয়োগ করে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় আর তা করতে যেয়ে তার দর্শন/বিশ্বাসের যারা ভিন্নমত পোষণ করে তাদের হত্যা করা সে জরুরী মনে করে । তখন কি আমরা বলভ ঐ খুন, গুম, হত্যা, গণহত্যা বা বোমাবাজীর জন্য শুধু ঐ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা দল দায়ী ? নাকি তার দর্শন/বিশ্বাস/ধর্মও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় ? ইরাকে ও সিরিয়ায় আইএসআইএল নি:সন্দেহে আমেরিকা, ইসরায়েল, ব্রিটেন, ফ্রান্স, তুর্কি ও সৌদি আরবের সৃষ্টি কিন্তু আইএসআইএল এর যে রাজনৈতিক দর্শন বা দৃষ্টিভঙ্গি তাতো আমেরিকা, ইসরায়েল, ব্রিটেন, তুকি বা সৌদি আরবের দৃষ্টিভঙ্গিরন সাথে খাপ খায় না । আইএসআইএল যেভাবেই সৃষ্টি হোক না কেন তাদের লক্ষ্য ইসলামি খেলাফতের পুন:প্রবর্তন আর তা করতে যেয়ে তারা এসব দেশের সহায়তা নিয়েছে ও নিচ্ছে তেমনি আমেরিকা, ইউরোপ, ইসরায়েল , সৌদি ও তুর্কিরও দরকার আসাদকে উৎখাত করার । আসাদকে উৎখাত করতে হলে তাদেরও আইএসআইএল এর সহায়তা দরকার।আল কায়েদার অপভ্রংশ থেকে এভাবেই তো আইএরআইএল নামক এক প্রকাণ্ড দানবের সৃষ্টি হয়েছে। আইএস বা আইএসআইএল তাদের রাজনৈতিক দর্শন প্রতিষ্ঠিত করতে যেয়ে ভিন্নমতের মানুষদেরকে হত্যা করতেছে ! এই দর্শন তারা কোথা থেকে পেল ? আমাদের কি সেই দর্শনের উৎসের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার দরকার নেই ? শিয়াদের হত্যা করতে হবে, বা সুফিবাদীদের হত্যা করতে হবে বা যেসব সুন্নীদের তাদের সেক্ট অনুসরণ করে না তাদেরও হত্যা করতে হবে, করতে হবে বলে কথা নয় হত্যা করা ফরজ বলেই মনে করে । মাজারে হামলা করতে হবে , মসজিদে হামলা করতে হবে এই দর্শন কোথা থেকে আসল ? আপনি জানেন ইসলামের বিভিন্ন সেক্টের প্রত্যেকটি সেক্ট নিজেকে একমাত্র সহিহ মনে করে ও বাদবাকিদের কাফের/মুশরিক মনে করে । এরমধ্যে যারা অত্যন্ত উগ্র তার নিজেদের অনুসারিত সেক্ট বাদে অন্য সেক্টগুলিকে কাফের বা মুশরিক মনে করেই বসে নেই বরং তাদের হত্যা করা ফরজ মনে করে ও প্রতিদিন তাদের হত্যা করতেছে, ইসলামের ভিন্ন সেক্টের মসজিদ, মাজার, বাড়িঘরে হামলা, বোমা হামলা করতেছে ! এরপরে আছে আত্মঘাতি বোমা হামলা ! টাকার বিনিময়ে আত্মঘাতি বোমা হামলা কিভাবে সম্ভব যদি তার এই বিশ্বাস না থাকে যে অমুক লোককে হত্যা করতে পারলে আমি বেহেস্ত যাব বা অনেক সওয়াবের অধিকারী হব ? তারপরেও যুক্তির স্বার্থে মেনে নিলাম ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্থানে যা হচ্ছে তার জন্য ধর্মের ব্যাখ্যা/অপব্যাখ্যা নয় বরং যা হচ্ছে তা রাজনৈতিক ! যদি তাই হত তাহলে ২০০৫ এ কি করে সারা বাংলাদেশে বোমা হামলা হল ? কি করে রমনার বটমূলে বোমা হামলা হল ? কি করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হল ? কি করে সিলেটের শাহজালালের মাজারে বোমা হামলা হল ? ড. হুমাযুন আজাদের উপর কারা হামলা করেছিল ? তেমনি জেএমবি কোন দেশের সংগঠন ? তেমনি হুজি ?
জঙ্গী সবজায়গাতেই আছে কারণ রাসুল (সা) এর ওফাতের পরপরই খলিফাদের অপকর্ম জায়েজ করতে প্রচুর জাল হাদিস রচনা করা হয়েছে তেমনি কোরানের আয়াতকে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে, ভুল তাফসির করা হয়েছে। সেগুলো এখনও বিদ্যমান ও প্রচলিত ! কোটি কোটি মুসলমান তা অনুসরণ করে ! তবে যেখানে তারা অনুকুল পরিবেশ পায় সেখানে প্রকাশ্যে আসে। ইরাক, সিরিয়াতে অনুকুল পরিবেশ যতদিন পায়নি ততদিন সেখানে তারা প্রকাশ্যে আসেনি। তেমনি বাংলাদেশেও প্রচুর জঙ্গী আছে । কথা হল, ইসলামের নামে যারা বোমাবাজী করতেছে তারা কারা ? ইসলামের নামে যারা ভিন্নমতের বা ভিন্ন সেক্টের মানুষকে হত্যা করতেছে তারা কারা ? তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস কি ? তেমনি তারা ইসলামের কোন সেক্টের অনুসারী ? কেন বিশ্বের সমস্ত ইসলামী জঙ্গী সংগঠন ঐ একটি নির্দিষ্ট সেক্টের অনুসারী ? অন্যরা নয় কেন ?
সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্তে না হয় ইরাক, সিরিয়া, পাকিস্থানেরে জনগণ একে অপরকে হত্যা করতেছে কিন্তু আপনি একটু খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়ায় কত হাজার আমেরিকা ও ইউরোপের নাগরিক জঙ্গীবাদে জড়িত ? ইরাক, সিরিয়ায় যা হচ্ছে তা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যেত তাহলে আমেরিকা, ইউরোপ থেকে হাজার হাজার তরুণ জেহাদ করার জন্য ইরাক, সিরিয়া ছুটত না !! এই যে আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার তরুণ জেহাদ করার জন্য ইরাক, সিরিয়ায় ছুটতেছে -এরা কেন সেখানে জেহাদ করার জন্য যাচ্ছে, কি তাদের প্রেরণা যার কারণে তারা নিজেদের সুন্দর জীবনকে, ভবিষ্যতকে বিলিয়ে দিচ্ছে ? তাদের সেই প্রেরণার উৎস কি ?
আমরা ইসলামের নামে জঙ্গীবাদের সমালোচনা করতে যেয়ে শুধু ইউরোপ, আমেরিকার চক্রান্তেই দেখি কিন্তু ইসলামের নামে যতগুলি জঙ্গী/সন্ত্রাসী সংগঠন আছে বিশ্বের আর কোনো ধর্মের নামে এত জঙ্গী সংগঠন নেই ! আমি যা লিস্ট দিয়েছি তার বাইরে আরো অনেক অনেক আছে। প্রতিটি দেশই ইসলামের নামে জঙ্গী সংগঠন আছে !
৯| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৩
মিজানুর রহমান মিলন বলেছেন: যাইহোক, পরিশেষে একটি কথা বলে শেষ করতে চাই তা হলঃ উমাইয়া খলিফাদের মধ্যে সবচেয়ে ন্যায় পরায়ন ও পরহেজগার শাসক ছিলেন খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আজিজ ! এই খলিফার নির্দেশই প্রথমবারের মত রাসুল (সা) এর হাদিসকে লিখিত রুপ দেওয়া হয় যদিও তা অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল ! এই খলিফা উমর ইবনে আজিজ শুধু হাদিস লেখার নির্দেশই দেননি বরং রাসুল (সা) এর প্রাণপ্রিয় কন্যা ফাতেমাকে (রা) দেওয়া রাসুল (সা) এর উপহার বাগে ফাদাক যা প্রথম খলিফা মা ফাতেমার থেকে কেড়ে নিয়েছিলেন তা রাসুল (সা) এর বংশধরকে ফেরত দেন !
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, এরা প্রধাণত শিয়া-সুন্নি দুইভাগে বিভক্ত।
শিয়ারা প্রথম তিন খলিফাকে দেখতে পারেনা, যেখানে সুন্নিদের বিশ্বাস নবী-রাসূলদের পরেই খলিফায়ে রাশেদীনদের(প্রথম চার খলিফা) স্থান।
সুন্নিদের বিশ্বাস, নবী রাসূলদের পর বিশ্ব মানব ইতিহাসে যদি ঈমান-আমলের দিক দিয়ে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তিনি হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)। নবীজির (সঃ) ইন্তিকালের কিছুদিন আগে তিনি যখন চরমভাবে অসুস্থ হয়ে গেলেন, এবং মসজিদে এসে নামাজে ঈমামতি দিতে পারতেন না - তখন তিনি হযরত আয়েশাকে (রাঃ) দিয়ে খবর পাঠাতেন যেন হযরত আবুবকর (রাঃ) ঈমামতি করেন। তিনি অলিখিত ঘোষণা দিয়েই গিয়েছিলেন তাঁর পরে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব দেবার সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তির নাম হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)।
নবীজির (সঃ) সহীহ হাদিস আছে, তাঁর পরে যদি কেউ নবী হতে পারতেন, তবে তিনি হতেন হযরত উমার (রাঃ)।
তেমনি হযরত উসমানেরও (রাঃ) ইসলামের প্রতি অবদান অপরিসীম। নবীজির (সঃ) দুই দুইজন মেয়ের সাথে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। নবীজি (সঃ) যখনই আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয়ের আহ্বান করেছেন, হযরত উসমানের(রাঃ) সমান পরিমাণ সম্পদ নিয়ে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি।
হযরত আলীর (রাঃ) কথা আপনিও বলেননি, তাই আলাদাভাবে আমিও না হয় বললাম না।
কিন্তু আমাদের শিয়া ভাইবোনদের ভালবাসা হযরত আলীর (রাঃ) প্রতি এতই বেশি যে তাঁরা বাকি তিন খলিফাকে গালাগালি ও অপবাদ দিতেও এতটুকু দ্বিধা বোধ করেনা। তাঁদের যেকোন কাজের ভুল ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে ভুল ইতিহাস লিখলেও।
আপনি যেসব রেফারেন্স দিচ্ছেন, প্রায় সবই শিয়া রেফারেন্স।
এইসব নিয়ে বলার কিছুই নেই। একটাই উপদেশ, এইসব বাদ দিয়ে আল্লাহ এবং নবীজিকে (সঃ) আঁকড়ে থাকুন, প্রতিটা সাহাবীদের সম্মান করুন। তাইলেই সব ঠিক থাকবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৮
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন:
খুব চমৎকার লিখেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়ে আমি যতগুলো লেখা পড়েছি, তার মধ্যে এই লেখাটি অন্যতম সেরা এবং যুক্তিযুক্ত।
সত্যি বলতে ইসলাম ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার যে নজির দেখিয়েছে তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। রাসূল (স.)-এর কাজ ছিল শান্তি-সৌহার্দ্যপূর্ণ স্থিতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠা। এজন্য তিনি ধৈর্য এবং ক্ষমার আদর্শকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই পৃথিবীতে নানা ধরনের মানুষের বসবাস। আর এই নানা ধরনের মানুষের সাথে বসবাস করতে গিয়ে সম্পর্কের টানাপড়েন ঘটবে, অসংলগ্ন ও অবাঞ্ছিত আচরণের ফলে অযাচিত অবস্থার সৃষ্টি হবে। এসব মুহূর্তে নিজেকে সংযত রাখা, ধৈর্য ধারণ করা ও সহিষ্ণুতার পথ অবলম্বন করাই ইসলামের আদর্শ।
আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বহু অত্যাচার-নির্যাতন ও অমানবিক কষ্ট সহ্য করেছেন তথাপি প্রতিশোধ গ্রহণের সুযোগ পেয়েও ক্ষমা করে দিয়েছেন। ক্ষমা করে ইসলামকে উপস্থাপন করেছেন বিশ্ব শান্তির ধর্মরূপে। ইসলামের সৌন্দর্যবোধ ধৈর্য ও ক্ষমার মধ্য দিয়েই বিকশিত হয়েছে। তিনি যদি এমনটা না করতেন, তাহলে ইসলাম ধর্ম যে শান্তির ধর্ম তা প্রতিষ্ঠিত হত না।
আমি আশা করব এই পোষ্টটি সবাই পড়বে এবং এই বিষয়ে জানার চেষ্টা করবে। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ এত দারুন ভাবে গুছিয়ে বক্তব্যটি দেয়ার জন্য।