নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আজকে একটা বিষ্ফোরণ ঘটাবো।
যে ঘটনা বলতে যাচ্ছি তা পড়ার পর একদল মানুষ চোখ বন্ধ করেই লাফালাফি শুরু করে দিবেন। আমাদের দেশে এই ধরনের লোকের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। আফসোস!
একদল মানুষ কিছু না বলে ঝিম মেরে বসে থাকবেন। তাঁরা কথাটা ঠিক বিশ্বাসও করবেন না, আবার অবিশ্বাসও করবেন না। "ধরি মাছ না ছুই পানি" আর কি। এইটাও সমস্যা। তাহলে আপনার জেনে লাভটা কী হলো যদি আরেকজনকেই না জানালেন?
আরেকদল লোক যুক্তি মেনে নিবেন। তাঁরা তাঁদের আশেপাশের লোকজনদেরও ঘটনাটা বলবেন। এই ধরনের লোকেরই সংখ্যাধিক্যের বেশি প্রয়োজন ছিল। আফসোস, এই ধরনের লোকের সংখ্যাই কম।
তাহলে গল্প শুরু করা যাক।
আমরা সবাই জানি, পৃথিবীর আর অন্যান্য সবকিছুর মতই নবীজির (সঃ) হাদিসেরও নকল বের হয়েছে। পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ ভুয়া হাদিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ইসলাম ধর্মে ছয়টি হাদিস গ্রন্থকে বিশুদ্ধতম ধরা হয়ে থাকে। তাদের মাঝে তিরমিদি অন্যতম।
সেই তিরমিদি শরীফে উল্লেখ আছে, পিতা মাতা হারা নবীজির (সঃ) বয়স তখন একদম কম। বাল্যকাল বলা চলে। সদ্যই তাঁর দাদাজানও মারা গেছেন। চাচার কাছে বড় হচ্ছেন। চাচা তাঁকে ব্যবসায়িক সফরে সিরিয়া (অঞ্চলটার নাম ছিল "শাম," বর্তমানের সিরিয়াসহ আশেপাশের বেশ কিছু অঞ্চল ছিল এর অন্তর্গত) নিয়ে গেছেন। সঙ্গে গেছেন হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) এবং বিলাল(রাঃ)।
রাস্তায় বুহায়রা নামের এক মহাজ্ঞানী ধার্মিক স্কলারের সাথে তাঁদের দেখা হয়। তিনি নবীজিকে (সঃ) দেখেই তাঁর চাচা আবু তালিবকে ডেকে বলেন, "এই ছেলে বড় হয়ে একজন নবী হবে। এর যত্ন নিও।"
আবু তালিব বলেন, "কিভাবে বুঝলেন যে এ নবী হবে?"
বুহায়রা তখন বলেন, "চেয়ে দেখ, একটা মেঘ তাঁকে সর্বদা ছায়া দিয়ে যাচ্ছে।"
শিশু নবীজি (সঃ) তখন একটি গাছের নিচে বসে ছিলেন। তিনি যখন নড়াচড়া করছিলেন, তখন গাছের শাখাও তাঁর সাথে নড়াচড়া করে তাঁকে ছায়া দিয়ে যাচ্ছিল।
এই দেখে বুহায়রা আরও নিশ্চিত হয়ে বলেন, "নিশ্চিত থাকো এ বড় হয়ে একজন নবী হবে। রোমান সিপাহিদের থেকে একে বাঁচিয়ে রেখ। ওরা জানতে পারলে ওকে হত্যা করবে।"
একেক বইয়ে একেকভাবে বর্ণিত হলেও মূল ঘটনা মোটামুটি এই। মানে নবীজি (সঃ) যেখানে যেতেন, একটা মেঘ তাঁকে সর্বদা ছায়া প্রদান করতো। গাছও তাঁকে ছায়া দিত।
এখন কিছু প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই মনে জাগা উচিৎ। "আস্তিক-নাস্তিক" ইস্যু এখানে ব্যপার না, সাধারণ মানুষের মনের কথাই বলছি।
"হযরত আবুবকর (রাঃ) তখনও নিতান্তই শিশু, আবু তালিব কেন তাঁকে নিয়ে সফরে যাবেন? তাঁরাতো আত্মীয় ছিলেন না।"
"হযরত বেলাল(রাঃ) আরেকজনের ক্রীতদাস ছিলেন যখন আবুবকর (রাঃ) তাঁকে কিনে মুক্ত করেন, এবং সেটা আরও তিরিশ পয়ত্রিশ বছর পরের ঘটনা! তারচেয়ে বড় কথা, হযরত বেলালের তখনও জন্মই হয়নি। তাহলে বিলাল(রাঃ) সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিভাবে? "
"যদি একটি মেঘ ইতিমধ্যেই তাঁকে ছায়া দিয়ে আসছিল, তবে বাড়তি ছায়া দিতে গাছের কী দরকার ছিল?"
"আবু তালিব যদি বুহায়রার কাছ থেকে জেনেই থাকেন যে ইনিই আখিরী জমানার নবী হতে চলেছেন, তাহলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি কেন?"
"যখন আবু তালিব তাঁকে নবী হিসেবে স্বীকার করে নিচ্ছিলেন না, তখন কেন নবীজি (সঃ) বুহায়রার ঘটনাটা তাঁকে মনে করিয়ে দিলেন না?"
"নবীজি(সঃ) যদি জেনেই থাকেন যে তিনি নবী হতে চলেছেন, তাহলে জিব্রাইল (আঃ) যখন ওহি নিয়ে আসলেন, নবীজি (সঃ) কেন তাঁকে দেখে ভয় পেলেন?"
এমন হলে হেরা পর্বতের গুহায় জিব্রাইলকে (আঃ) প্রথম দেখেই তিনি সরাসরি বলতেন, "তোমার জন্য তিরিশ বছর ধরে অপেক্ষা করছি, তুমি আসতে এত দেরী করলে কেন?"
"বুহায়রা যদি ভবিষ্যতবাণী করেই থাকতো, তবে মক্কার কোরাইশরা তাঁর এত বিরোধিতা করলো কেন?"
"ওহি নাজিলের পরে তিনি যখন কি ঘটছে কিছুই বুঝতে পারছেন না, তখন হযরত খাদিজা (রাঃ) তাঁকে ওরাকা ইবন নওফলের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। যখন ওরাকা তাঁকে জানালেন 'এই সেই entity যে ঈসার (আঃ) কাছে এসেছিল, মূসার (আঃ) কাছে এসেছিল, এবং পূর্ববর্তী সব রাসূলের কাছে এসেছিল - নিশ্চই তুমিই আখেরী জমানার নবী।' তখন নবীজি (সঃ) কেন খুব অবাক হয়েছিলেন?"
কথা হচ্ছে, আমরা সবকিছুতেই অতিরঞ্জন পছন্দ করি।
সাহিত্যিকেরা যখন কোন নায়কের চরিত্র আঁকেন, তাঁকে সবকিছুতেই শ্রেষ্ঠ দেখাতে চান। সিনেমার নায়কদেরকেই দেখুন না। তিনি অতি অবশ্যই একজন সুদর্শন ব্যক্তিত্ব। অতি দরিদ্র ঘরেও যদি তিনি জন্মান, তাঁর চমৎকার সুন্দর স্বাস্থ্য হতেই হবে। একই লোক এলাকার গরিবের বন্ধু, গরিবের হক আদায়ে যিনি সর্বদা প্রতিবাদী চরিত্র। আবার একই সাথে অতি বড়লোক কন্যার সাথেও তিনি প্রচন্ড রোমান্টিক তরিকায় প্রেম করছেন। তিনি চমৎকার গাইতে পারেন, দুর্দান্ত নাচতে পারেন এবং অতি অবশ্যই মারামারি করে একাই বিশ তিরিশজন ভিলেনকে কাত করে দিতে পারেন। পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে তিনি একশো দুইশোজন ভিলেন মেরে ফেললেও আইন তার কিছু করেনা। এবং সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এতকিছু করেও তিনি ঠিকই পরীক্ষায় "ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট" হয়ে যায়!
আমরা পড়তে পড়তে জিহ্বা বের করে ফেলি, তারপরেও টেনেটুনে A পেলে (হয়তো সাড়ে উননব্বই পেয়েছিলাম, স্যারের দয়ায় নব্বই হয়ে গেছে) আনন্দে দিশাহারা হয়ে যাই।
ওরা নায়ক বলে কথা!
কিছু সাহিত্যিক আরও বেশি পারফেক্ট নায়ক সৃষ্টি করেন। এভাবেই জন্ম হয় সুপারহিরোদের। যাদের কেউ কেউ উড়তে পারেন, কেউবা হাত থেকে মাকড়সার জাল বের করতে পারেন। কারও আছে আরও অনেক সুপার কুল সব ক্ষমতা!
কথা হচ্ছে, আমাদের নবীজি (সঃ) এমনিতেই সুপারহিরো। তাঁকে নিয়ে অতিরঞ্জনের কোনই দরকার নেই।
তিনি একজন ইয়াতিম ছিলেন, একজন "স্বেচ্ছা-দরিদ্র" (অকাতরে দান খয়রাত করতেন, পার্থিব কোন সম্পদে তিনি আগ্রহী ছিলেন না) ব্যক্তি ছিলেন এবং অক্ষরজ্ঞানহীন মানব ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে বড় ক্ষমতা ছিল তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট। কোন মেঘ অথবা বৃক্ষ তাঁকে ছায়া দিল কিনা সেটার উপর তাঁর মহত্ব নির্ভর করে না। সেটা করলে তাঁকে উল্টো ছোট করা হবে।
কিন্তু পোলাপান সেটাই বুঝে না। অতিরঞ্জন কথাবার্তা লিখবেই।
"নবীজি (সঃ) যেহেতু নূরের তৈরী, তাই তাঁর কোন ছায়া ছিল না।"
ভাই, কোরাইশরা যদি দেখতো একজন লোকের ছায়া মাটিতে পড়ছে না, তাহলে তারা কখনই বলতো না, "তুমি আমাদের মতই ভাত খাও, বাজারে যাও - তুমি নবী হও কিভাবে?"
নিশ্চই তিনি আর সাধারণ আট দশটা মানুষের মতনই "মানুষ" ছিলেন। তিনিও ভাত খেতেন, বাথরুমে যেতেন, স্ত্রী সন্তান নিয়ে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন। চরিত্রই তাঁকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে।
"নবীজি (সঃ) ছোটবেলায় আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন, আর চাঁদ তারা সূর্য তাঁর ইশারায় নড়াচড়া করতো। তিনি ছোটবেলায় ওসব নিয়ে খেলতেন।"
ভাই, "সুবহানাল্লাহ" বলার আগে এইরকম হাস্যকর তথ্য আপনি কোথায় পেয়েছেন সেটা বলবেন? নবীজি (সঃ) নিজে বলেছেন এই কথা? তাহলে এইটাও বাদ!
এখানে বলে রাখা ভাল, একবার চাঁদ তাঁর ইশারায় ভাগ হয়েছিল। সেটা কোরআনেই উল্লেখ করা আছে। এবং চাঁদে এখনও সেই ফাঁটল বিদ্যমান। এবং এইটা দেখার পরে কুরাইশরা তাঁকে জাদুকর বলে ডাকা শুরু করেছিল।
তবে সেটা ছিল তাঁর একটি মোজেজা, আল্লাহর ইশারায় ঘটনা ঘটিয়েছেন। দৈনন্দিন জীবনে এমনটা তিনি করতেন না।
কথা হচ্ছে, নবীজি (সঃ) বারবার সাবধান করে দিয়ে গেছেন তাঁকে উপাসনা না করতে। তাঁর জীবনের শেষ খুৎবাতেও তিনি একই কথা বলেছিলেন, "তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাঁদের নবী রাসূলদের কবরকে ইবাদতের স্থান বানিয়ে ফেলেছিল। তোমরা এই কাজটি করোনা।"
বারবার বলে গেছেন "আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আল্লাহর দাস!"
তবুও মানুষ তাঁকেই পূজা করা শুরু করে দেয়!
একটা কথা প্রচলিত আছে, কেউ শুনেছেন কিনা জানিনা, "একজন দাস, সে যত উপরেই চলে যাক না কেন, সে দাসই থাকে। আর প্রভু যতই নিচে নেমে আসুক না কেন, প্রভুই থাকেন।"
মেরাজের ঘটনা প্রাইম এক্সাম্পেল।
নবীজি (সঃ) এমন স্থানে গিয়েছিলেন যেখানে জিব্রাইলেরও (আঃ) প্রবেশাধিকার নেই, তারপরেও তিনি আল্লাহর একজন দাস!
আবার আল্লাহ যদি আজকে পৃথিবীতে নেমে আসেন, তবুও তিনি আল্লাহই থাকবেন। সবার মালিক!
ভক্তি অবশ্যই ভাল, তবে সেটারও একটা সীমা থাকা জরুরী।
খ্রিষ্টানরা যে হযরত ঈসার (আঃ) উপাসনা করেন, সেটাও এই অতিভক্তির কারনেই।
সমস্যা হচ্ছে আমরাও একই কাজ করছি। নবীজি (সঃ) এমনিতেই শ্রেষ্ঠ মানব। তাঁকে মহান দেখাতে এতটুকুও অতিরঞ্জনের সাহায্য নিতে হবে না। উল্টো অতিরঞ্জনের ফলে মানুষ আমাদের ধর্মকেই হাস্যকর ভাবতে পারে।
অনেকেই ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে যখন দেখেন এইসব আজগুবি বিষয় ইসলামের সাথে মিশে আছে, তখন একে রূপকথার সাথে তুলনা করে সটকে পড়েন।
আমাদের দেশে প্রকাশিত প্রায় সবক'টা জীবনী গ্রন্থেই উপরের ঘটনার উল্লেখ আছে। আশংকার কথা, গোটা বিশ্বে যে কোটি কোটি জীবনী গ্রন্থ ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রকাশিত হয়েছে, প্রায় নব্বই ভাগেরও বেশি গ্রন্থে এই ঘটনার উল্লেখ আছে।
একটা ভুল তথ্য এইভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে। অনেক স্কলারও এইটাকে অথেন্টিক রেফারেন্স হিসেবে জাস্টিফাই করেন।
এইটা খুবই দুঃখজনক।
সেদিন এক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করলো, "তুমি না নবীজির (সঃ) জীবনী লিখতে চেয়েছিলে? কতদূর এগিয়েছ?"
তাঁকে জানালাম, "এইটিই আমার জীবনের ড্রিম প্রজেক্ট! সময় লাগবে।"
একটা কথা সবাইকে বুঝতে হবে, নবীজির (সঃ) জীবনী রচনা আর আমাদের দেশের কোন প্রয়াত প্রেসিডেন্টের জীবনী রচনা এক জিনিস না। দ্বিতীয়টিতে যা খুশি বানিয়ে বানিয়ে লেখা গেলেও বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের জীবনীতে একটা লাইনও ভুল লেখা যাবে না। পরিনাম কী হতে পারে, সেটাতো উপরের ঘটনাতেই বুঝতে পারছেন।
তারপরেও আমরা মানুষ। ভুল আমাদের হবেই।
আল্লাহ পরমকরুনাময়, তিনি আমাদের মাফ করুন।
এবং অতি অবশ্যই আমাকে যেন তিনি সাহায্য করেন, সামর্থ্য দান করেন, আমি যেন তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, "দ্য মাস্টার পিসের" সঠিক জীবনী সবার কাছে পৌছে দিতে পারি।
আপনারা জোরে বলেন, আমীন!
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:১৬
শাহরীয়ার সুজন বলেছেন: আবু তালিব জানতেন মুহাম্মদ (সাঃ) সত্য নবী। কিন্তু সীমাহীন অহংকার এবং ইসলাম গ্রহণ করলে তার বংশের লোকেরা তাকে উপহাস করবে এজন্য সে ইসলাম গ্রহণ করে নাই।
বুহায়রা কথাটা গোপনে শুধু আবু তালিব কে বলেছিলো সুতরাং নবী বা অন্যেরা সেটা আগে থেকেই কী ভাবে জানবে?
অনেক ঘটনাই অতিরঞ্জণ করে বর্ণনা করা হয় এটা ঠিক। তবে সব ঘটনাই যে মিথ্যা তাও কিন্তু না।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আগে বুঝে নেয়া যাক তখনকার মক্কার ধর্মীয় দৃশ্যপট।
আমরা সবাই জানি মক্কার লোকেরা "পেগান আরব ছিল," মূর্তি পূজক। সেই সময়ে মক্কায় কোন খ্রিষ্টান, ইহুদি লোকের বাস ছিল না। তাঁদের ওখানে কোনও লাইব্রেরিও ছিল না যেখানে বাইবেল, তোরাহ্ ইত্যাদি খুঁজে পাওয়া যাবে। আমাদের নবীজি (সঃ) নিজেও ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন, স্কুলে পড়ালেখা করার সুযোগ তাঁর হয়নি। এবং মক্কার লোকেরাও পূর্ববর্তী ধর্ম ও নবীদের (ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) বাদে) ঘটনা সম্পর্কে একদমই অজ্ঞ ছিল।
নবীজি (সঃ) যখন বলতে শুরু করলেন ইউসুফের (আঃ) ঘটনা, মূসার (আঃ) ঘটনা, ঈসার (আঃ) ঘটনা - আরবদের কাছে একদম নতুন ঠেকলো। এরা কারা? কাদের ঘটনা শুনিয়ে শুনিয়ে ধর্ম প্রচার করা হচ্ছে? এরাতো তাদের অঞ্চলের লোক নয়!
তারা ক্ষেপে উঠলো, ভাবলো তাদের বাপ দাদার ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে।
যে কারণে আমরা দেখতে পাই মদিনার লোকেরা আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কারন সেখানে আগে থেকেই ইহুদি-খ্রিষ্টানরা থাকতো, ওদের কাছে এইসব ঘটনা পরিচিত লেগেছে।
যে কারণে আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশী হযরত ঈসা (আঃ) এবং তাঁর মা মারইয়ামের (আঃ) ঘটনা শুনে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, "আমাদের বাইবেলেও এই কথাই বলা আছে। অবশ্যই তোমাদের নবী সত্য বলছেন।"
নবীজি (সঃ) এই জ্ঞান কোথায় পেলেন? এখনও পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের কাছে সলিড কোন জবাব নেই। শুধু আমরা জানি নবীজি (সঃ) এসব জেনেছেন জিব্রাইলের (আঃ) মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে।
কিন্তু উপরের ঘটনাকে ভিত্তি করে অবিশ্বাসী হিস্টোরিয়ানরা বলে থাকেন, "না, শৈশবে যেখানে বুহায়রার সাথে নবীজির দেখা হয়েছে, সেখানেই তিনি ওর কাছ থেকে ওসব ধর্ম সম্পর্কে জেনেছেন। বুহায়রাই তাঁকে সব ঘটনা বলেছে। এবং তিরিশ বছর পর যখন তিনি নবুয়্যতের দাবী করেন, তখন নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে এসব ঘটনা বলেন। যে কারনে বাইবেল, তোরাহ্ থেকে তাঁর ভার্সনে অনেক অমিল পাওয়া যায়।"
আমি জানিনা, কোন যুক্তিতে কিভাবে মাত্র একটা লাঞ্চের দাওয়াতে এত এত হিস্টোরিকাল ডিটেইল জেনে ফেলা সম্ভব! কিন্তু যাই হোক, এই একটা ঘটনাই ওদের "মিসিং লিঙ্কস"এর সন্ধান দেয়। এবং এই একটা ঘটনাই ওদের সবচেয়ে বড় যুক্তি।
কোন ঘটনা বলার আগে বা বিশ্বাস করার আগে আমাদের ভাবতে হবে, ঘটনাটা কতখানি অথেন্টিক। সেই ভিত্তিতে এই ঘটনা খুবই দূর্বল।
কেউ বলবেন হযরত আবু তালিবকে বুহায়রা আড়ালে সাবধান করেছিলেন (নবীজির (সঃ) নবী হবার ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে)। আবু তালিব কাউকে বলেননি। এমনকি নবীজিকেও (সঃ) না। কাজেই মক্কার কেউ ঘটনা জানতো না।
তাহলে ঘটনাটা ইতিহাসে এলো কী করে, যদি তিনি কাউকেই না বলে থাকেন? নবীজি (সঃ) নিজে কোথাও বলেছেন? নাহ!
ঘটনাটা শুনতে ভাল লাগে বলেই এত জনপ্রিয় হয়ে গেছে।
কিন্তু ঘটনাটা লাভের চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি।
কেউ কেউ রেফারেন্স চাইছেন।
তাঁদের জন্য বলছি, ঘটনাটা নিয়ে ইমাম আজ জাহবি, ইবন কাসীর, ইবন সাইয়েদ আননাস প্রমূখ স্কলাররা এই ঘটনা নিয়ে প্রথম আপত্তি তোলেন।তাঁরা ছিলেন ক্রিটিকাল হিস্টরিয়ান। কেউ কিছু বলল এবং চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেললাম, এমন নয়। তাঁরা প্রচুর রিসার্চ করতেন এবং যাচাই বাছাই করে দেখতেন কোনটা কতটুকু সঠিক।
বর্তমানেও বিশ্বখ্যাত স্কলার ড. ইয়াসির ক্বাদী এই ঘটনা উল্লেখ করলে সব সময়েই বলেন, "এর কোন অথেন্টিক ভিত্তি নেই, কাজেই এই ঘটনাকে এড়িয়ে চলাই ভাল।"
বাকি আল্লাহ ভাল জানেন।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:০৩
এম এ কাশেম বলেছেন: চিন্তায় পড়ে গেলাম রে ভাই
বুহায়রার কথাটা আমি ও শুনেছি
তবে আপনার কথাটা ও ফেলনা নয়, তবে ১০০% নিশ্চিত করার মতো
তেমন কোন যুক্তি ও দেখাতে পারেননি , দরকার ছিলো হযরত আবু বকর ও
হযরত বেলাল রাঃ জন্ম তারিখ বা তাদের বয়সের সাথে নবী সাঃ এর বয়সের পার্থক্য কত তা উল্লেখ করা ।আবার কত বৎসর বয়সে নবী সাঃ সফরে গিয়েছিলেন সে তথ্য ও নাই,
তিরমিজি শরীফের কোন একটা হাদীসকে ভুল প্রমানিত করার জন্য যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য তথ্যের দরকার - যা আপনার আলোচনায় সঠিক ভাবে আসে নাই।
আশা করি সঠিক তথ্য সংযোজন করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করবেন।
বিস্ফোরণ ঘটাইয়া চমক দেয়া বড় কথা নয়
আমরা সত্য জানতে চাই, ফেৎনা চাই না,
আল্লাহ আমাদের সত্য জানার তওফিক দান করুক।
শুভেচ্ছা নেবেন।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আগে বুঝে নেয়া যাক তখনকার মক্কার ধর্মীয় দৃশ্যপট।
আমরা সবাই জানি মক্কার লোকেরা "পেগান আরব ছিল," মূর্তি পূজক। সেই সময়ে মক্কায় কোন খ্রিষ্টান, ইহুদি লোকের বাস ছিল না। তাঁদের ওখানে কোনও লাইব্রেরিও ছিল না যেখানে বাইবেল, তোরাহ্ ইত্যাদি খুঁজে পাওয়া যাবে। আমাদের নবীজি (সঃ) নিজেও ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন, স্কুলে পড়ালেখা করার সুযোগ তাঁর হয়নি। এবং মক্কার লোকেরাও পূর্ববর্তী ধর্ম ও নবীদের (ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) বাদে) ঘটনা সম্পর্কে একদমই অজ্ঞ ছিল।
নবীজি (সঃ) যখন বলতে শুরু করলেন ইউসুফের (আঃ) ঘটনা, মূসার (আঃ) ঘটনা, ঈসার (আঃ) ঘটনা - আরবদের কাছে একদম নতুন ঠেকলো। এরা কারা? কাদের ঘটনা শুনিয়ে শুনিয়ে ধর্ম প্রচার করা হচ্ছে? এরাতো তাদের অঞ্চলের লোক নয়!
তারা ক্ষেপে উঠলো, ভাবলো তাদের বাপ দাদার ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে।
যে কারণে আমরা দেখতে পাই মদিনার লোকেরা আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কারন সেখানে আগে থেকেই ইহুদি-খ্রিষ্টানরা থাকতো, ওদের কাছে এইসব ঘটনা পরিচিত লেগেছে।
যে কারণে আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশী হযরত ঈসা (আঃ) এবং তাঁর মা মারইয়ামের (আঃ) ঘটনা শুনে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, "আমাদের বাইবেলেও এই কথাই বলা আছে। অবশ্যই তোমাদের নবী সত্য বলছেন।"
নবীজি (সঃ) এই জ্ঞান কোথায় পেলেন? এখনও পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের কাছে সলিড কোন জবাব নেই। শুধু আমরা জানি নবীজি (সঃ) এসব জেনেছেন জিব্রাইলের (আঃ) মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে।
কিন্তু উপরের ঘটনাকে ভিত্তি করে অবিশ্বাসী হিস্টোরিয়ানরা বলে থাকেন, "না, শৈশবে যেখানে বুহায়রার সাথে নবীজির দেখা হয়েছে, সেখানেই তিনি ওর কাছ থেকে ওসব ধর্ম সম্পর্কে জেনেছেন। বুহায়রাই তাঁকে সব ঘটনা বলেছে। এবং তিরিশ বছর পর যখন তিনি নবুয়্যতের দাবী করেন, তখন নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে এসব ঘটনা বলেন। যে কারনে বাইবেল, তোরাহ্ থেকে তাঁর ভার্সনে অনেক অমিল পাওয়া যায়।"
আমি জানিনা, কোন যুক্তিতে কিভাবে মাত্র একটা লাঞ্চের দাওয়াতে এত এত হিস্টোরিকাল ডিটেইল জেনে ফেলা সম্ভব! কিন্তু যাই হোক, এই একটা ঘটনাই ওদের "মিসিং লিঙ্কস"এর সন্ধান দেয়। এবং এই একটা ঘটনাই ওদের সবচেয়ে বড় যুক্তি।
কোন ঘটনা বলার আগে বা বিশ্বাস করার আগে আমাদের ভাবতে হবে, ঘটনাটা কতখানি অথেন্টিক। সেই ভিত্তিতে এই ঘটনা খুবই দূর্বল।
কেউ বলবেন হযরত আবু তালিবকে বুহায়রা আড়ালে সাবধান করেছিলেন (নবীজির (সঃ) নবী হবার ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে)। আবু তালিব কাউকে বলেননি। এমনকি নবীজিকেও (সঃ) না। কাজেই মক্কার কেউ ঘটনা জানতো না।
তাহলে ঘটনাটা ইতিহাসে এলো কী করে, যদি তিনি কাউকেই না বলে থাকেন? নবীজি (সঃ) নিজে কোথাও বলেছেন? নাহ!
ঘটনাটা শুনতে ভাল লাগে বলেই এত জনপ্রিয় হয়ে গেছে।
কিন্তু ঘটনাটা লাভের চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি।
কেউ কেউ রেফারেন্স চাইছেন।
তাঁদের জন্য বলছি, ঘটনাটা নিয়ে ইমাম আজ জাহবি, ইবন কাসীর, ইবন সাইয়েদ আননাস প্রমূখ স্কলাররা এই ঘটনা নিয়ে প্রথম আপত্তি তোলেন।তাঁরা ছিলেন ক্রিটিকাল হিস্টরিয়ান। কেউ কিছু বলল এবং চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেললাম, এমন নয়। তাঁরা প্রচুর রিসার্চ করতেন এবং যাচাই বাছাই করে দেখতেন কোনটা কতটুকু সঠিক।
বর্তমানেও বিশ্বখ্যাত স্কলার ড. ইয়াসির ক্বাদী এই ঘটনা উল্লেখ করলে সব সময়েই বলেন, "এর কোন অথেন্টিক ভিত্তি নেই, কাজেই এই ঘটনাকে এড়িয়ে চলাই ভাল।"
বাকি আল্লাহ ভাল জানেন।
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮
চক্চাপড়ী বলেছেন: শাহরীয়ার সুজন বলেছেন: আবু তালিব জানতেন মুহাম্মদ (সাঃ) সত্য নবী। কিন্তু সীমাহীন অহংকার এবং ইসলাম গ্রহণ করলে তার বংশের লোকেরা তাকে উপহাস করবে এজন্য সে ইসলাম গ্রহণ করে নাই।
বুহায়রা কথাটা গোপনে শুধু আবু তালিব কে বলেছিলো সুতরাং নবী বা অন্যেরা সেটা আগে থেকেই কী ভাবে জানবে?
অনেক ঘটনাই অতিরঞ্জণ করে বর্ণনা করা হয় এটা ঠিক। তবে সব ঘটনাই যে মিথ্যা তাও কিন্তু না
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আগে বুঝে নেয়া যাক তখনকার মক্কার ধর্মীয় দৃশ্যপট।
আমরা সবাই জানি মক্কার লোকেরা "পেগান আরব ছিল," মূর্তি পূজক। সেই সময়ে মক্কায় কোন খ্রিষ্টান, ইহুদি লোকের বাস ছিল না। তাঁদের ওখানে কোনও লাইব্রেরিও ছিল না যেখানে বাইবেল, তোরাহ্ ইত্যাদি খুঁজে পাওয়া যাবে। আমাদের নবীজি (সঃ) নিজেও ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন, স্কুলে পড়ালেখা করার সুযোগ তাঁর হয়নি। এবং মক্কার লোকেরাও পূর্ববর্তী ধর্ম ও নবীদের (ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) বাদে) ঘটনা সম্পর্কে একদমই অজ্ঞ ছিল।
নবীজি (সঃ) যখন বলতে শুরু করলেন ইউসুফের (আঃ) ঘটনা, মূসার (আঃ) ঘটনা, ঈসার (আঃ) ঘটনা - আরবদের কাছে একদম নতুন ঠেকলো। এরা কারা? কাদের ঘটনা শুনিয়ে শুনিয়ে ধর্ম প্রচার করা হচ্ছে? এরাতো তাদের অঞ্চলের লোক নয়!
তারা ক্ষেপে উঠলো, ভাবলো তাদের বাপ দাদার ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে।
যে কারণে আমরা দেখতে পাই মদিনার লোকেরা আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কারন সেখানে আগে থেকেই ইহুদি-খ্রিষ্টানরা থাকতো, ওদের কাছে এইসব ঘটনা পরিচিত লেগেছে।
যে কারণে আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশী হযরত ঈসা (আঃ) এবং তাঁর মা মারইয়ামের (আঃ) ঘটনা শুনে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, "আমাদের বাইবেলেও এই কথাই বলা আছে। অবশ্যই তোমাদের নবী সত্য বলছেন।"
নবীজি (সঃ) এই জ্ঞান কোথায় পেলেন? এখনও পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের কাছে সলিড কোন জবাব নেই। শুধু আমরা জানি নবীজি (সঃ) এসব জেনেছেন জিব্রাইলের (আঃ) মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে।
কিন্তু উপরের ঘটনাকে ভিত্তি করে অবিশ্বাসী হিস্টোরিয়ানরা বলে থাকেন, "না, শৈশবে যেখানে বুহায়রার সাথে নবীজির দেখা হয়েছে, সেখানেই তিনি ওর কাছ থেকে ওসব ধর্ম সম্পর্কে জেনেছেন। বুহায়রাই তাঁকে সব ঘটনা বলেছে। এবং তিরিশ বছর পর যখন তিনি নবুয়্যতের দাবী করেন, তখন নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে এসব ঘটনা বলেন। যে কারনে বাইবেল, তোরাহ্ থেকে তাঁর ভার্সনে অনেক অমিল পাওয়া যায়।"
আমি জানিনা, কোন যুক্তিতে কিভাবে মাত্র একটা লাঞ্চের দাওয়াতে এত এত হিস্টোরিকাল ডিটেইল জেনে ফেলা সম্ভব! কিন্তু যাই হোক, এই একটা ঘটনাই ওদের "মিসিং লিঙ্কস"এর সন্ধান দেয়। এবং এই একটা ঘটনাই ওদের সবচেয়ে বড় যুক্তি।
কোন ঘটনা বলার আগে বা বিশ্বাস করার আগে আমাদের ভাবতে হবে, ঘটনাটা কতখানি অথেন্টিক। সেই ভিত্তিতে এই ঘটনা খুবই দূর্বল।
কেউ বলবেন হযরত আবু তালিবকে বুহায়রা আড়ালে সাবধান করেছিলেন (নবীজির (সঃ) নবী হবার ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে)। আবু তালিব কাউকে বলেননি। এমনকি নবীজিকেও (সঃ) না। কাজেই মক্কার কেউ ঘটনা জানতো না।
তাহলে ঘটনাটা ইতিহাসে এলো কী করে, যদি তিনি কাউকেই না বলে থাকেন? নবীজি (সঃ) নিজে কোথাও বলেছেন? নাহ!
ঘটনাটা শুনতে ভাল লাগে বলেই এত জনপ্রিয় হয়ে গেছে।
কিন্তু ঘটনাটা লাভের চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি।
কেউ কেউ রেফারেন্স চাইছেন।
তাঁদের জন্য বলছি, ঘটনাটা নিয়ে ইমাম আজ জাহবি, ইবন কাসীর, ইবন সাইয়েদ আননাস প্রমূখ স্কলাররা এই ঘটনা নিয়ে প্রথম আপত্তি তোলেন।তাঁরা ছিলেন ক্রিটিকাল হিস্টরিয়ান। কেউ কিছু বলল এবং চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেললাম, এমন নয়। তাঁরা প্রচুর রিসার্চ করতেন এবং যাচাই বাছাই করে দেখতেন কোনটা কতটুকু সঠিক।
বর্তমানেও বিশ্বখ্যাত স্কলার ড. ইয়াসির ক্বাদী এই ঘটনা উল্লেখ করলে সব সময়েই বলেন, "এর কোন অথেন্টিক ভিত্তি নেই, কাজেই এই ঘটনাকে এড়িয়ে চলাই ভাল।"
বাকি আল্লাহ ভাল জানেন।
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৪০
নিলু বলেছেন: মহান আল্লাহ্ পাক , কখন কাকে কি দিবেন বলা মুশকিল , একটি হাদিস শুনেছিলাম তা হোলও , একজন নারী , একদিন পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখেন যে , একটি কুকুর পানির তিস্নায় কাৎরাচ্ছে , তখন ওই মহিলা কুকুরটিকে পানি পান করান , তাতে মহান আল্লাহ্ পাক নাকি , ওই নারীর সকল পাপ মোচন করে দেন , ধর্ম প্রচার , বিস্ফোরণের কথা বলে , চমক দিয়ে করা যায় না , তা হতে হয় দাম্ভিকতাবিহিন ভাবে , সরল পথে ,
৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৫
হানিফঢাকা বলেছেন: Dear Brother
I read your observation regarding the Hadith. Fortunately, I have been studying this topic from less than one year. I also had to face lots of difficulties regarding this issue (Frankly speaking, I am not a scholar of this topic or not have any academic background on this matter. All that I have learned whether right or wrong is through my own studies) and trying to find out how to reach the truth. To solve this issue regarding Hadith, I set some parameters through which I examine the issues. My parameters are:
1. There is only one God, and He is supreme. His words are Divine.
2. No words or saying has any importance over his divine command.
3. His divine command has been preserved as it is (The Quran)
4. So, the holy Quran has to be the upmost sources of our belief and command
5. Anything that goes against Quran, should be rejected does not matter how important it is in our belief
6. Muhammad (PUBH) is last and final messenger
7. Allah says in Quran in several places “Obey Allah and obey his messengers” (3:32, 3:132, 5:92, 8:46 and so on…)
8. Prophet’s teachings are only Quranic teaching, that is what Allah command to Muhammad (PUBH), he teaches us those things.
9. So, if you follow Quran and reject anything that goes against it, you are following the prophet as well, no matter what is written in hadith as hadith may be fake.
10. In this way, we do not reject all hadith, but accept only those what are in accordance with Quaran, and reject those directly contradicts with Quran since prophet’s teaching cannot go against Quran (see point 7)
Under these set rules (set by me for my own belief), I found many fake hadith even in Bukhari and Muslim as well. So, the six books that Muslims claim that are authentic are not fully authentic. There is lots of contradiction with Quran as well as among these books. In conclusion, only authentic book is Quran that has divine verse of Allah and His command is supreme, and no other books are fully authentic. These so called six authentic hadith books contain authentic hadith as well as many fake hadith.
NB: This is solely my own observation, and as a human being I am subject to error and open to be rectified with logic and reasoning. I am not a scholar on this topic and do not in any way influence others to believe my observation.
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনি সঠিক পথে আছেন। শুভকামনা!
৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৭
সুপ্ত আহমেদ বলেছেন: সেই তিরমিদি শরীফে উল্লেখ আছে, পিতা মাতা হারা নবীজির (সঃ) বয়স তখন একদম কম। বাল্যকাল বলা চলে। সদ্যই তাঁর দাদাজানও মারা গেছেন। চাচার কাছে বড় হচ্ছেন। চাচা তাঁকে ব্যবসায়িক সফরে সিরিয়া (অঞ্চলটার নাম ছিল "শাম," বর্তমানের সিরিয়াসহ আশেপাশের বেশ কিছু অঞ্চল ছিল এর অন্তর্গত) নিয়ে গেছেন। সঙ্গে গেছেন হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) এবং বিলাল(রাঃ)।
রাস্তায় বুহায়রা নামের এক মহাজ্ঞানী ধার্মিক স্কলারের সাথে তাঁদের দেখা হয়। তিনি নবীজিকে (সঃ) দেখেই তাঁর চাচা আবু তালিবকে ডেকে বলেন, "এই ছেলে বড় হয়ে একজন নবী হবে। এর যত্ন নিও।
এটা কত পৃষ্ঠায় আছে ? কোন র্সোস তো দেখালেন না। যুক্তুই দেখালেন শুধু !
কোন বইয়ে কত পৃষ্ঠা? উল্লেখ না করে পোষ্ট ! ভিত্তিহিন মনে হতেই পারে অনেকের কাছে। র্সোস গুলো সগ্রহ করে আপডেট দিন প্রমান এখানেই হবে!
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আগে বুঝে নেয়া যাক তখনকার মক্কার ধর্মীয় দৃশ্যপট।
আমরা সবাই জানি মক্কার লোকেরা "পেগান আরব ছিল," মূর্তি পূজক। সেই সময়ে মক্কায় কোন খ্রিষ্টান, ইহুদি লোকের বাস ছিল না। তাঁদের ওখানে কোনও লাইব্রেরিও ছিল না যেখানে বাইবেল, তোরাহ্ ইত্যাদি খুঁজে পাওয়া যাবে। আমাদের নবীজি (সঃ) নিজেও ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন, স্কুলে পড়ালেখা করার সুযোগ তাঁর হয়নি। এবং মক্কার লোকেরাও পূর্ববর্তী ধর্ম ও নবীদের (ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) বাদে) ঘটনা সম্পর্কে একদমই অজ্ঞ ছিল।
নবীজি (সঃ) যখন বলতে শুরু করলেন ইউসুফের (আঃ) ঘটনা, মূসার (আঃ) ঘটনা, ঈসার (আঃ) ঘটনা - আরবদের কাছে একদম নতুন ঠেকলো। এরা কারা? কাদের ঘটনা শুনিয়ে শুনিয়ে ধর্ম প্রচার করা হচ্ছে? এরাতো তাদের অঞ্চলের লোক নয়!
তারা ক্ষেপে উঠলো, ভাবলো তাদের বাপ দাদার ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে।
যে কারণে আমরা দেখতে পাই মদিনার লোকেরা আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কারন সেখানে আগে থেকেই ইহুদি-খ্রিষ্টানরা থাকতো, ওদের কাছে এইসব ঘটনা পরিচিত লেগেছে।
যে কারণে আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশী হযরত ঈসা (আঃ) এবং তাঁর মা মারইয়ামের (আঃ) ঘটনা শুনে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, "আমাদের বাইবেলেও এই কথাই বলা আছে। অবশ্যই তোমাদের নবী সত্য বলছেন।"
নবীজি (সঃ) এই জ্ঞান কোথায় পেলেন? এখনও পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের কাছে সলিড কোন জবাব নেই। শুধু আমরা জানি নবীজি (সঃ) এসব জেনেছেন জিব্রাইলের (আঃ) মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে।
কিন্তু উপরের ঘটনাকে ভিত্তি করে অবিশ্বাসী হিস্টোরিয়ানরা বলে থাকেন, "না, শৈশবে যেখানে বুহায়রার সাথে নবীজির দেখা হয়েছে, সেখানেই তিনি ওর কাছ থেকে ওসব ধর্ম সম্পর্কে জেনেছেন। বুহায়রাই তাঁকে সব ঘটনা বলেছে। এবং তিরিশ বছর পর যখন তিনি নবুয়্যতের দাবী করেন, তখন নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে এসব ঘটনা বলেন। যে কারনে বাইবেল, তোরাহ্ থেকে তাঁর ভার্সনে অনেক অমিল পাওয়া যায়।"
আমি জানিনা, কোন যুক্তিতে কিভাবে মাত্র একটা লাঞ্চের দাওয়াতে এত এত হিস্টোরিকাল ডিটেইল জেনে ফেলা সম্ভব! কিন্তু যাই হোক, এই একটা ঘটনাই ওদের "মিসিং লিঙ্কস"এর সন্ধান দেয়। এবং এই একটা ঘটনাই ওদের সবচেয়ে বড় যুক্তি।
কোন ঘটনা বলার আগে বা বিশ্বাস করার আগে আমাদের ভাবতে হবে, ঘটনাটা কতখানি অথেন্টিক। সেই ভিত্তিতে এই ঘটনা খুবই দূর্বল।
কেউ বলবেন হযরত আবু তালিবকে বুহায়রা আড়ালে সাবধান করেছিলেন (নবীজির (সঃ) নবী হবার ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে)। আবু তালিব কাউকে বলেননি। এমনকি নবীজিকেও (সঃ) না। কাজেই মক্কার কেউ ঘটনা জানতো না।
তাহলে ঘটনাটা ইতিহাসে এলো কী করে, যদি তিনি কাউকেই না বলে থাকেন? নবীজি (সঃ) নিজে কোথাও বলেছেন? নাহ!
ঘটনাটা শুনতে ভাল লাগে বলেই এত জনপ্রিয় হয়ে গেছে।
কিন্তু ঘটনাটা লাভের চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি।
কেউ কেউ রেফারেন্স চাইছেন।
তাঁদের জন্য বলছি, ঘটনাটা নিয়ে ইমাম আজ জাহবি, ইবন কাসীর, ইবন সাইয়েদ আননাস প্রমূখ স্কলাররা এই ঘটনা নিয়ে প্রথম আপত্তি তোলেন।তাঁরা ছিলেন ক্রিটিকাল হিস্টরিয়ান। কেউ কিছু বলল এবং চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেললাম, এমন নয়। তাঁরা প্রচুর রিসার্চ করতেন এবং যাচাই বাছাই করে দেখতেন কোনটা কতটুকু সঠিক।
বর্তমানেও বিশ্বখ্যাত স্কলার ড. ইয়াসির ক্বাদী এই ঘটনা উল্লেখ করলে সব সময়েই বলেন, "এর কোন অথেন্টিক ভিত্তি নেই, কাজেই এই ঘটনাকে এড়িয়ে চলাই ভাল।"
বাকি আল্লাহ ভাল জানেন।
৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫০
অবিবাহিত ছেলে বলেছেন: বুহায়রা যখন নবীজি ( : ) কে দেখেছে তখন কিন্তু মোহাম্মদী ইসলাম ছিলনা । তাই ইসলাম গ্রহনের যুক্তি নেই ।
হ্যা আপনার সাথে আমি একমত যে তিনি তার জীবনাচরণ দিয়ে মানুষকে পবিত্র ইসলামে অন্তর্ভুক্ত করেছেন । সবসময় মেঘের ছায়া, চাদঁকে ইশারায় ঘুড়ানো এসব অতিরঞ্জন বলে মনে হয় । মোঝেজা সব আম্বিয়া আলাহিছালামই দেখিয়েছেন, তবে তা প্রয়োজনে । সাধারনের মাঝে সাধারণ থেকেই তারা আল্লার দাওয়াত দিয়েছেন ।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: বোহায়রার ইসলাম গ্রহণের কথা বলা হচ্ছে না, আবু তালিবের কথা বলা হচ্ছে।
৯| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮
ইমরুল_কায়েস বলেছেন: দায়সারা ভাবে বললেন তিরমিযি শরিফের কথা কিন্তু কোন অংশের কত নাম্বার হাদিস তা উল্লেখ করলেন না। একটু ইয়ে হয়ে গেল মানে সত্যের অপালাপ যাকে বলে। আমার ভুল হতে পারে কিন্তু আপনি যখন সঠিক বলবেন বলে ঠিক করেছেন তার মাঝে আলোআঁধারি রাখলে সুযোগ সন্ধানীরা সুযোগ নেবে। ভাল থাকবেন।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঘটনা হচ্ছে, নিজে থেকেও একটু কষ্ট করে রিসার্চ করা উচিৎ, নাকি বলেন?
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এই লিংক শুনে ফেলুন....
https://www.youtube.com/watch?v=BKh04EyJw1g&list=PLAEA99D24CA2F9A8F&index=8
১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: ।।
১১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
মেলবোর্ন বলেছেন: Source of that story in seera see here Click This Link see 5th para
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ
১২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭
আজকের বাকের ভাই বলেছেন: ভালো লাগল।
আপনার বইটির অপেক্ষায় রইলাম। সংকলন শেষ হলে উত্তরে জানাবেন।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
১৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: আমি ঐ সফরে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) এবং বিলাল (রাঃ) এর সহযোগী হওয়ার কোন তথ্য পেলাম না। মূল ঘটনার সাথে এটা মশলা সংযোজন বলে মনে হয়।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: Click This Link
১৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২১
আমি আনোয়ার বলেছেন: সুপ্ত আহমেদ বলেছেন
সেই তিরমিদি শরীফে উল্লেখ আছে, পিতা মাতা হারা নবীজির (সঃ) বয়স তখন একদম কম। বাল্যকাল বলা চলে। সদ্যই তাঁর দাদাজানও মারা গেছেন। চাচার কাছে বড় হচ্ছেন। চাচা তাঁকে ব্যবসায়িক সফরে সিরিয়া (অঞ্চলটার নাম ছিল "শাম," বর্তমানের সিরিয়াসহ আশেপাশের বেশ কিছু অঞ্চল ছিল এর অন্তর্গত) নিয়ে গেছেন। সঙ্গে গেছেন হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) এবং বিলাল(রাঃ)।
রাস্তায় বুহায়রা নামের এক মহাজ্ঞানী ধার্মিক স্কলারের সাথে তাঁদের দেখা হয়। তিনি নবীজিকে (সঃ) দেখেই তাঁর চাচা আবু তালিবকে ডেকে বলেন, "এই ছেলে বড় হয়ে একজন নবী হবে। এর যত্ন নিও।
এটা কত পৃষ্ঠায় আছে ? কোন র্সোস তো দেখালেন না। যুক্তুই দেখালেন শুধু !
কোন বইয়ে কত পৃষ্ঠা? উল্লেখ না করে পোষ্ট ! ভিত্তিহিন মনে হতেই পারে অনেকের কাছে। র্সোস গুলো সগ্রহ করে আপডেট দিন প্রমান এখানেই হবে!
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আগে বুঝে নেয়া যাক তখনকার মক্কার ধর্মীয় দৃশ্যপট।
আমরা সবাই জানি মক্কার লোকেরা "পেগান আরব ছিল," মূর্তি পূজক। সেই সময়ে মক্কায় কোন খ্রিষ্টান, ইহুদি লোকের বাস ছিল না। তাঁদের ওখানে কোনও লাইব্রেরিও ছিল না যেখানে বাইবেল, তোরাহ্ ইত্যাদি খুঁজে পাওয়া যাবে। আমাদের নবীজি (সঃ) নিজেও ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন, স্কুলে পড়ালেখা করার সুযোগ তাঁর হয়নি। এবং মক্কার লোকেরাও পূর্ববর্তী ধর্ম ও নবীদের (ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) বাদে) ঘটনা সম্পর্কে একদমই অজ্ঞ ছিল।
নবীজি (সঃ) যখন বলতে শুরু করলেন ইউসুফের (আঃ) ঘটনা, মূসার (আঃ) ঘটনা, ঈসার (আঃ) ঘটনা - আরবদের কাছে একদম নতুন ঠেকলো। এরা কারা? কাদের ঘটনা শুনিয়ে শুনিয়ে ধর্ম প্রচার করা হচ্ছে? এরাতো তাদের অঞ্চলের লোক নয়!
তারা ক্ষেপে উঠলো, ভাবলো তাদের বাপ দাদার ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে।
যে কারণে আমরা দেখতে পাই মদিনার লোকেরা আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কারন সেখানে আগে থেকেই ইহুদি-খ্রিষ্টানরা থাকতো, ওদের কাছে এইসব ঘটনা পরিচিত লেগেছে।
যে কারণে আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশী হযরত ঈসা (আঃ) এবং তাঁর মা মারইয়ামের (আঃ) ঘটনা শুনে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, "আমাদের বাইবেলেও এই কথাই বলা আছে। অবশ্যই তোমাদের নবী সত্য বলছেন।"
নবীজি (সঃ) এই জ্ঞান কোথায় পেলেন? এখনও পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের কাছে সলিড কোন জবাব নেই। শুধু আমরা জানি নবীজি (সঃ) এসব জেনেছেন জিব্রাইলের (আঃ) মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে।
কিন্তু উপরের ঘটনাকে ভিত্তি করে অবিশ্বাসী হিস্টোরিয়ানরা বলে থাকেন, "না, শৈশবে যেখানে বুহায়রার সাথে নবীজির দেখা হয়েছে, সেখানেই তিনি ওর কাছ থেকে ওসব ধর্ম সম্পর্কে জেনেছেন। বুহায়রাই তাঁকে সব ঘটনা বলেছে। এবং তিরিশ বছর পর যখন তিনি নবুয়্যতের দাবী করেন, তখন নিজে থেকে বানিয়ে বানিয়ে এসব ঘটনা বলেন। যে কারনে বাইবেল, তোরাহ্ থেকে তাঁর ভার্সনে অনেক অমিল পাওয়া যায়।"
আমি জানিনা, কোন যুক্তিতে কিভাবে মাত্র একটা লাঞ্চের দাওয়াতে এত এত হিস্টোরিকাল ডিটেইল জেনে ফেলা সম্ভব! কিন্তু যাই হোক, এই একটা ঘটনাই ওদের "মিসিং লিঙ্কস"এর সন্ধান দেয়। এবং এই একটা ঘটনাই ওদের সবচেয়ে বড় যুক্তি।
কোন ঘটনা বলার আগে বা বিশ্বাস করার আগে আমাদের ভাবতে হবে, ঘটনাটা কতখানি অথেন্টিক। সেই ভিত্তিতে এই ঘটনা খুবই দূর্বল।
কেউ বলবেন হযরত আবু তালিবকে বুহায়রা আড়ালে সাবধান করেছিলেন (নবীজির (সঃ) নবী হবার ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে)। আবু তালিব কাউকে বলেননি। এমনকি নবীজিকেও (সঃ) না। কাজেই মক্কার কেউ ঘটনা জানতো না।
তাহলে ঘটনাটা ইতিহাসে এলো কী করে, যদি তিনি কাউকেই না বলে থাকেন? নবীজি (সঃ) নিজে কোথাও বলেছেন? নাহ!
ঘটনাটা শুনতে ভাল লাগে বলেই এত জনপ্রিয় হয়ে গেছে।
কিন্তু ঘটনাটা লাভের চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি।
কেউ কেউ রেফারেন্স চাইছেন।
তাঁদের জন্য বলছি, ঘটনাটা নিয়ে ইমাম আজ জাহবি, ইবন কাসীর, ইবন সাইয়েদ আননাস প্রমূখ স্কলাররা এই ঘটনা নিয়ে প্রথম আপত্তি তোলেন।তাঁরা ছিলেন ক্রিটিকাল হিস্টরিয়ান। কেউ কিছু বলল এবং চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেললাম, এমন নয়। তাঁরা প্রচুর রিসার্চ করতেন এবং যাচাই বাছাই করে দেখতেন কোনটা কতটুকু সঠিক।
বর্তমানেও বিশ্বখ্যাত স্কলার ড. ইয়াসির ক্বাদী এই ঘটনা উল্লেখ করলে সব সময়েই বলেন, "এর কোন অথেন্টিক ভিত্তি নেই, কাজেই এই ঘটনাকে এড়িয়ে চলাই ভাল।"
বাকি আল্লাহ ভাল জানেন।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:১৭
খেলাঘর বলেছেন:
সাধারণ ব্যাপার স্যাপার, এমন কিছুই না।