নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের দেশে পরচর্চার বিরুদ্ধে কোন আইন নেই, এইটাই আফসোস!

০৩ রা জুন, ২০১৫ রাত ৩:২২

এক বিকেলে নবীজি (সঃ) সাফার উপরে উঠে কুরাইশদের উদ্দেশ্যে বলে উঠেন, "আমি যদি বলি এই পাহাড়ের অপর পাশ থেকে এক বিরাট সেনাবাহিনী মক্কা আক্রমনের উদ্দেশ্যে ধেয়ে আসছে, তবে তোমরা কী তা বিশ্বাস করবে?"
মক্কাবাসী জবাবে বলে, "অবশ্যই বিশ্বাস করব। তুমি আল-আমিন! আমরা কখনই তোমাকে মিথ্যা বলতে শুনিনি।"
নবীজি(সঃ) তখন এক বুক আশা নিয়ে বলেন, "তবে জেনে রাখ, এর চেয়েও কঠিন শাস্তি তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কেয়ামতের দিন যখন তোমাদেরকে তোমাদের প্রভুর কাছে দাঁড়াতে হবে, তখন আমিও তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারব না। সেই ভয়াবহ শাস্তি থেকে বাঁচতে চাইলে এখন থেকেই খারাপ কাজ ত্যাগ করে সৎ পথে ফিরে এসো।"
নবীজির আশা ছিল, তাঁর লোকেরা সহজেই বুঝতে পারবে যে, যে ব্যক্তি পার্থিব কোন স্বার্থে কখনো মিথ্যে বলেননি, তিনি অপার্থিব স্বার্থেও মিথ্যে বলবেন না।
কিন্তু একটু আগেই তাঁকে আল-আমিন ডাকা কুরাইশরা এবার ক্ষেপে উঠলো। আবারও সবচেয়ে বেশি গলা উঁচু করলো আবু লাহাব। সে এক মুঠ ধুলি মাটি থেকে তুলে নিয়ে নবীজিকে গালাগালি করে তাঁর দিকে ঢিল ছুড়ে মেরে বলে, "তুমি ধ্বংস হও ইয়া মুহাম্মদ! তুমি বলতে চাও, আমাদের বাপ দাদার ধর্ম মিথ্যা এবং তোমার ধর্ম সত্যি?"
কুরাইশদের কাছে "বাপ দাদার" যেকোন কিছুই ছিল সন্দেহাতীতভাবে ভাল। তাই আবু লাহাবের সাথে সবাই একযোগে নবীজির (সঃ) বিরোধিতা করলো এবং তাঁকে অভিশাপ দিতে লাগলো। জবাব এলো আল্লাহর তরফ থেকে, "আবু লাহাবের হাত দুটি ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে। কোন কাজে আসেনি তার ধন-সম্পদ ও যা সে উপার্জন করেছে। খুব শীঘ্রই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে। এবং তার স্ত্রীও-যে ইন্ধন বহন করে, তার গলদেশে খেজুরের কাটার রশি নিয়ে।" (সুরাহ লাহাব)
দোজখে দুই স্বামী স্ত্রীকে দিয়ে জাহান্নামের আগুনের ইন্ধন বহন করানো হবে, এবং খেঁজুর কাটায় তৈরী দড়ি গলায় জড়িয়ে টানা হবে। আল্লাহর ওয়াদা! কী ভয়াবহ অভিশাপ!
আবু লাহাব কেন ধ্বংশ হোক এটা সবাই বুঝতে পারছেন। প্রশ্ন আসতে পারে, তার স্ত্রী কোন অপরাধে অপরাধী হলো?
এই মহিলা সামনা সামনি ভাল থাকলেও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নবীজির নামে মিথ্যা রটনা রটাতো। আধুনিক ভাষায় যাকে আমরা কুটনামি বলি, ইংরেজিতে যাকে বলে গসিপ এবং আমাদের অনেকের মধ্যেই যে স্বভাবটি ভাল মতই বিদ্যমান।
"জানেন? পাশের বাড়ির নতুন ভাড়াটে সুহানা আছে না? আরে ঐ যে সবাই সুন্দরী সুন্দরী বলে, যদিও আমার চোখে তাকে কখনই সুন্দরী বলে মনে হয়না - এইটা কিন্তু তার সেকেন্ড বিয়ে। আগেরটা ডিভোর্স হয়ে গেছে। খবর এক্কেবারে পাকা!"
এখন আমাদের হজরত খাদিজার (রাঃ) তৃতীয় স্বামী ছিলেন হজরত মুহাম্মদ(সঃ)। যাইদের সাথে জয়নবের ডিভোর্সের পরেই নবীজি (সঃ) তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। তাহলে "ডিভোর্স" হওয়ায় সুহানা কি করে খারাপ হয়ে গেল?
সাময়িক আনন্দের জন্য, বা সময় কাটানোর জন্য আমরা সত্য মিথ্যা না জেনেই মানুষের ব্যপারে ফালতু কথা বলি।
"কালকে ভাবিকে দেখলাম মার্কেটে অন্য এক পুরুষের সাথে হেসে হেসে গল্প করতে। তোর কোন শালা আছে তাতো জানা ছিল না।"
প্রথম কথা, আমার কয়টা শালা আছে সেটা তোকে হিসাব রাখতে হবে কেন? দ্বিতীয় কথা, আমার বউ কার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে, সেই কৈফিয়ৎ তোকে কেন দিতে হবে? তারচেয়ে বড় কথা, তুই আমার বৌয়ের ব্যপারে এত আগ্রহী কেন?
কিন্তু এসব বিবেচনায় না নিয়ে আমরা শয়তানের ফাঁদে পা দেই, এবং ঘরে অশান্তি টেনে আনি।
সত্য ঘটনা হলো, মহিলা হয়তো অত্যন্ত নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে পূর্বপরিচিত কোন পুরুষের সাথে সামান্য কিছু কথা বলছিল।
আমাদের কারনে অন্যের সংসারে যে আগুন লেগে যাচ্ছে সেটা জেনেও না বুঝার অভিনয় করি। মোটেও পাত্তা দেইনা।
কেউ কেউ আছি ইচ্ছা করেই মানুষের মনে আঘাত দেয়ার জন্য কাজটা করি।
"শুনলাম তোমার বোন্ নাকি পালিয়ে বিয়ে করেছে? তা তোমাদের বাড়ির এখন কী অবস্থা?"
অথবা, "আপনার ছেলের পরীক্ষায় এত বাজে রেজাল্টের কারন কী?"
কিংবা, "ভাবি, মেয়ে বড় হলে চোখে চোখে রাখতে হয়। দিনকাল খারাপ। কবে ইন্টারনেটে সিডি বেরিয়ে আসে, কে বলতে পারে?"
এই স্বভাবের সবার উদ্দেশ্যেই আয়াতটি প্রযোজ্য। শাস্তি বুঝতে পারছেনতো? জাহান্নামের আগুনের ইন্ধন বহনকারী!
যদি আপনার মধ্যে এই স্বভাব থাকে, এখনি তওবা করে নিজেকে শুধরে ফেলুন।
আর যাদের মধ্যে এই স্বভাব আছে, তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করুন। চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, খুন ইত্যাদির মতই পরনিন্দা ও পরচর্চাও একটি ভয়াবহ সামাজিক অপরাধ। আমাদের দেশে এর বিরুদ্ধে কোন আইন নেই, এইটাই আফসোস!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৫০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: সত্য কথা। নিজের কিছুই ঠিক নাই, মানুষ বাইর হয় দুনিয়া উদ্ধারে।

১১ ই জুন, ২০১৫ রাত ১১:২৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন

২| ০৩ রা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: একেবারে সত্য একটা বিষয় তুলে ধরার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
"এই স্বভাবের সবার উদ্দেশ্যেই আয়াতটি প্রযোজ্য। শাস্তি বুঝতে পারছেনতো? জাহান্নামের আগুনের ইন্ধন বহনকারী!
যদি আপনার মধ্যে এই স্বভাব থাকে, এখনি তওবা করে নিজেকে শুধরে ফেলুন।
আর যাদের মধ্যে এই স্বভাব আছে, তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করুন"।

১১ ই জুন, ২০১৫ রাত ১১:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.