নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
মুসলিমদের নিয়ে একটি বদনাম আছে এরা মৌলিকভাবেই ভীষণ গোড়া। একজনতো সেদিন মুখের উপর শুনিয়েই দিয়েছিলেন, "তোমাদের আল্লাহ নিজেই যেখানে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন কাফিরদের জাহান্নামের আগুনে চিরদিন পুড়াবেন, সেখানে তোমরা নিজেদের কিভাবে সাম্যবাদী দাবি করো? কুরআনই শিক্ষা দিচ্ছে কাফিরদের ঘৃনা করতে। তোমরা সেটা মুখে যাই বলো না কেন।"
তিনি তখন এমনভাবে তেড়ে এলেন যেন আমাকে পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে দিবেন।
আমি তখন হেসে বললাম, "ব্রাদার, রিল্যাক্স! একটু ঠান্ডা হয়ে নেন, তারপরে জবাব দিচ্ছি।"
তিনি ঠান্ডা হবার পরে বললাম, "এইটা ঠিক যে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের প্রতি জাহান্নামের কঠিনতম শাস্তির ওয়াদা করেছেন। কিন্তু আমাকে একটা আয়াত দেখান যেখানে তিনি মানুষদের নির্দেশ দিয়েছেন অবিশ্বাসী পেলেই পুড়িয়ে মারতে।"
তিনি তখন বিশ্বজয়ের হাসি হেসে বললেন "এইরকম আয়াতেও কুরআন ভরপুর। বাকারা, তওবা এইরকম অনেক সুরায় এইরকম আয়াত আছে।"
আমিও তাঁর জবাবে তাঁর মতই হেসে বললাম, "জ্বী ভাই। সেসব আয়াত আমিও পড়েছি, এবং এও জানি যে প্রতিটা আয়াতই যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাজিল হওয়া। এইজন্যই কুরআন পড়ার পাশাপাশি নবীজির (সঃ) জীবনীও হাইয়েস্ট প্রায়োরিটি দিয়ে পড়তে হয়। নাহলে এইরকমই কনফিউজড হতে হয়। তখনকার দিনে মুসলিমদের যুদ্ধ কেবল মুশরিকদের সাথেই হতো এবং যুদ্ধের সময়ে নিশ্চই কোন জেনারেল হুকুম দেন না যে শত্রু গুলি চালালে তাদের কোলে তুলে চুমু খেতে। আমাদের জেনারেলও সেই একই নির্দেশ দিয়েছেন - শত্রু আক্রমন করলে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আক্রমন করতে। এখানে উল্লেখ্য যে এইসব আয়াতের পরবর্তী আয়াতগুলো, যেখানে নির্দেশ দেয়া হয়েছে শত্রু আত্মসমর্পণ করলে তাঁকে ক্ষমা করে দিতে তাঁর সাথে সর্বোচ্চ মানবিক আচরণ করতে। মনে রাখবেন, এইসব আয়াত তখন নাজেল হওয়া যখন যুদ্ধে পরাজিত সিপাহিদের মৃত্যুদন্ডই ছিল একমাত্র শাস্তি। ক্ষমা করা ও সর্বোচ্চ ভাল ব্যবহার করাতো কল্পনাতীত! জেনেভা কনভেশনতো হলো এই সেদিন, কুরআনের হুকুম সেই ১৪০০ বছর আগের। যেকারনে আমরা দেখতে পাই আপন সন্তানের খুনিকেও আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, স্রেফ লোকটি ইসলাম গ্রহণ করেছিল বলে।"
"ফালতু কথা ছেড়ে মূল কথায় আসো। জাহান্নামের শাস্তি।"
"ও হ্যা। তা আল্লাহ কখনই বিধর্মীদের শাস্তি দেয়ার কথা বলেননি। চুরির শাস্তির কথা বলেছেন, ডাকাতির শাস্তির কথা বলেছেন, খুনের শাস্তির কথা বলেছেন, ব্যাভিচারের শাস্তির কথাও বলেছেন - কিন্তু কোথাও বলেননি "যখনই দেখবে কোথাও পুজো হচ্ছে, ওদের মন্দির গুড়িয়ে দিও।" অথবা "মূর্তি পূজাকারীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর কর।" তিনি স্পষ্টই বলেছেন যে তাঁর দরবারে শিরক হচ্ছে সর্বোচ্চ অপরাধ, এবং সেটার শাস্তির ব্যপারে তিনি কোন মানুষকে নির্দেশ দেননি। যে কারনে আমরা দেখতে পাই জেরুজালেমের পতন ঘটানোর পর হজরত উমারকে (রাঃ) ইহুদি খ্রিষ্টানদের কাছে গিয়ে ঘোষণা দিতে 'আজ থেকে তোমরা আমাদের ইবাদতে বাঁধা দিও না। আর যদি তোমাদের ইবাদতে কেউ বাঁধা দেয়, তবে সরাসরি আমার কাছে এসে বলবে, আমি বিচার করবো।'
আমরা সবাই জানি উমার (রাঃ) হবেন পৃথিবীর শেষ ব্যক্তি যিনি তাঁর নবী(সঃ) ও আল্লাহর বিরুদ্ধে যাবার কথা চিন্তা করবেন। কাজেই ইসলাম কখনই বিধর্মীদের উপর Oppression এর নির্দেশ দেয়না।"
ভাই ঠোঁট বাঁকিয়ে বললেন, "ইহুদি খ্রিষ্টানতো তোমাদের জাত ভাই। আমি বলছি হিন্দু বৌদ্ধদের কথা। যারা রিয়েলি মূর্তি পূজা করে।"
"মুসলিম বাহিনীর হাতে পারস্যের পতন ঘটার পর পার্সি সাম্রাজ্যে একটাও মন্দির ভাঙ্গার ঘটনা কী ঘটেনি? জোরাস্ত্রিয়ানরাতো অনেকটা হিন্দুদের মতই, আগুনের পূজা করে।"
"মাহমুদ গজনি সোমনাথের মন্দির ভেঙ্গেছিল ...."
"মাহমুদ গজনি কবে থেকে নবী হলেন? তিনি কী সাহাবী ছিলেন? আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে নবীর নির্দেশ ও আদর্শ মানতে, কোন সুলতান বা সম্রাটের নয়। মাহমুদ গজনি স্রেফ একজন সুলতান ছিলেন। আজকে যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত আক্রমন করে রিজার্ভ ব্যাংক লুট করে আনেন, সেজন্য কোন অবস্থাতেই ইসলামের নাম জড়ানো যাবেনা। তিনি তাঁর কর্মের জন্য দায়ী। ইসলাম হচ্ছে স্রেফ কুরআনের আয়াত ও নবীর সুন্নত। আর কিচ্ছু নয়।"
ভাই নিজের মাথার ভিতরে তীব্র ঝড় বইয়ে দিলেন। বুঝা গেল, তিনি আরও সলিড কোন উদাহরণ খুঁজছেন। আমি অপেক্ষা না করে কথা শেষ করলাম।
"কুরআনে একদিকে আল্লাহ বলেছেন কেউ যদি তাঁকে অবিশ্বাস করা অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে তিনি জাহান্নামে পুড়াবেন। আবার সেই আল্লাহই অন্যদিকে বলেছেন ওদের কোন দেবদেবীকে নিয়ে হাসিতামাশা না করতে। কারন এতে সেও আমাদের আল্লাহ ও নবীকে নিয়ে হাসিতামাশা করার সুযোগ পাবে। সেই সুযোগ কোন অবস্থাতেই না দিতে। দিলে উল্টা আমাদেরই গুনাহ হবে। আল্লাহ বলেছেন, ধর্মের ব্যপারে কোন জবরদস্তি না করতে। যার যার ধর্ম, তাঁর তাঁর কাছে। তাহলে সবক'টা আয়াত একত্র করলে কী দাঁড়ায়? কেউ যদি আমার পাশের বাড়িতেও পূজা করে, আমি কিছু বলতে পারবো না। আমার জেনারেলের নির্দেশ। অমান্য করলে উল্টা আমারই কোর্টমার্শাল হবে।"
প্রতিবছর দূর্গাপূজার সময়ে যেসব ছাগলেরা মন্দির ভাংচুর করে, সেসব ছাগলদের উদ্দেশ্যে একটি সহজ প্রশ্ন, কারও মন্দির ও ঘর লুটপাট করার পর কেউ কী করে আশা করতে পারে যে অত্যাচারের শিকার ব্যক্তিটি আল্লাহ এবং নবীকে (সঃ) যথাযথ সম্মান দিবে? এই যে এই লোকটি এবং তাঁর জ্ঞাতিগুষ্ঠী, বংশধর ও পড়শীদের সবাইকে ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলা হলো, সেটার জন্য কী "সর্বোচ্চ ন্যায়বিচারক" ক্ষমা করে দিবেন? জ্বী না, অপরাধী যেই হোক, তাকে শাস্তির ওয়াদাও তিনিই করেছেন। কাজেই সাবধান! তোমার কাজের উপরই তোমার নবীর(সঃ) রেপুটেশন Judged হচ্ছে।
আল্লাহ, আমাদের মানুষদের মাথায় বুদ্ধি দাও। ছাগল না বানিয়ে আমাদের তুমি মানুষ বানাও।
আমিন!
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪১
শূণ্য মাত্রিক বলেছেন: খুব সুন্দর একটা পোষ্ট পড়লাম
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:০০
বিপরীত বাক বলেছেন: কাজীর গরু কেতাবে আছে
গোয়ালে নেই।।।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এটাই দুঃখ
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩৪
সুমন কর বলেছেন: প্রতিবছর দূর্গাপূজার সময়ে যেসব ছাগলেরা মন্দির ভাংচুর করে, সেসব ছাগলদের উদ্দেশ্যে একটি সহজ প্রশ্ন, কারও মন্দির ও ঘর লুটপাট করার পর কেউ কী করে আশা করতে পারে যে অত্যাচারের শিকার ব্যক্তিটি আল্লাহ এবং নবীকে (সঃ) যথাযথ সম্মান দিবে?
এত অল্প কথায় যুক্তি সহকারে লিখেছেন, যারা বুঝার তাঁরা এমনি বুঝবে। আর যারা বুঝতে চাইবে না, তাদের আপনি কিভাবে বোঝাবেন??
ভালো লাগা রইলো।