নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমার ছেলের বয়স আগামী ডিসেম্বরের তিন তারিখে ছয় মাস হবে। এখনও দাঁত গজায়নি। এখনও সে বসতে পারেনা। কথা বলাতো এখনও বছর খানেক দূরের ব্যপার।
সে শুধু কাঁদতে ও হাসতে পারে। দুইটাই পিওরেস্ট ইমোশন। যখন কাঁদে, চোখ দিয়ে মোটা দানার অশ্রু গড়ায়। এবং যখন হাসে....এই হাসির লিখিত বর্ণনা দেয়ার মতন প্রতিভা আমার নেই। আমার ফেসবুকে তাঁর কিছু হাস্যোজ্জ্বল ছবি আছে, দেখে নিলে বুঝে নিবেন।
রাতে সে আমার এবং তাঁর মায়ের মাঝখানে ঘুমায়। ক্রিবে শোয়ানো নিয়ম, কিন্তু বাঙালি বাবা মা বলেই হয়তো বাচ্চা বুকে জড়িয়ে না শুলে নিজেদেরই ঘুম আসেনা।
সেও খুব শান্তিতে বাবা মায়ের মাঝখানে ঘুমায়। মাঝরাতে উঠে গলা ছেড়ে গান গায়। ঢুলু ঢুলু চোখে আমি আর তাঁর মা চেষ্টা করি আবারও ঘুম পাড়াতে। কিন্তু সে এতে আরও উৎসাহিত হয়ে গলা ছেড়ে দেয়।
ক্ষুধার্ত হলে সে দুধ খায়। খেতে খেতেই সে বারবার ফিরে ফিরে দেখে আমি তাঁর পাশে আছি কিনা। আমাকে দেখেই সে যে হাসি দেয়, শুধুমাত্র এই হাসি দেখার জন্য আমার হাজারটা বছর পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করে।
তাঁর মা যখন বাড়িতে থাকেনা, তখন তাঁর চেহারা দেখেই বুঝা যায় সে পরিপূর্ণ সুখী নয়। মা আসলে সে যে হাসিটা দেয়, মায়ের প্রচন্ড কর্মব্যস্ত দিনের সমস্ত ক্লান্তি মুহূর্তে দূর হয়ে যায়।
এই বয়সেই সে বুঝে গেছে বাবা মার যে কোন একজনের উপস্থিতি ছাড়া তাঁর পরিবার পূর্ণতা পায়না।
আমি নিশ্চিত, সন্তান আছে এমন প্রতিটা বাড়িতেই একই ঘটনা ঘটে।
মা, বাবা তাঁদের সন্তানের ছবি তুলে ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার বানান। সন্তানের ঘুমের সময় হলে জমজমাট আড্ডা ছেড়ে খুশি মনেই বাড়ি ফিরে যান। সন্তান অসুস্থ হলেতো কথাই নাই, দুনিয়া অন্ধকার!
জ্বী, আরও লাখ খানেক পরিবারের মতন আমরাও একটি সুখী পরিবার।
এবং এই সুখ চিরতরে ধ্বংস করতে মাত্র কয়েক সেকেন্ডই যথেষ্ট।
আকাশ থেকে নেমে আসা একটি বোমা, কামান থেকে ছুটে আসা গোলা কিংবা একটি সামান্য বুলেট খুব সহজেই আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে পারে। হয়তো আমরা তিনজনই মারা যাব। কিংবা যে কোন একজন বেঁচে থাকবে বাকি দুইজনের স্মৃতি নিয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করতে।
জ্বী ভাই, প্যারিসে বোমা হামলায় এমন দেড়শটি পরিবার চিরতরে ধ্বংস হয়ে গেছে। এবং এর বদলা নিতে সিরিয়ায় এখন প্রতিদিন হাজার খানেক পরিবার ধ্বংস হচ্ছে। এক দুইটা আইসিস সদস্য মারার জন্য আকাশ থেকে টনকে টন বোমা ফেলা হচ্ছে। তেলাপোকার মতন মানুষ মরছে।
হয়তো বাবার হাত ধরে বাজার করতে একটি শিশু বাড়ির বাইরে গিয়েছে। হঠাৎ সাইরেনের শব্দে বাবা তাঁকে নিয়ে দৌড় শুরু করলেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ, এবং ধোঁয়া কেটে যেতেই দেখা গেল রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পিতাপুত্রের মৃতদেহ। বাড়িতে মহাতংকে অপেক্ষারত মায়ের অবস্থা কী কল্পনা করতে পারছেন? এরাও কিন্তু আইসিসকে দেখতে পারেনা। এরাও চায় আইসিস ধ্বংস হোক। প্রতিবেশীদের মতন তাঁদেরও ইচ্ছে হয় সমুদ্রে নৌকা ভাসিয়ে ভিনদেশে শরণার্থী হতে। কিন্তু মাতৃভূমির ভালবাসা বড় শক্ত পিছুটান হিসেবে কাজ করে! কে চায় চৌদ্দ পুরুষের ভিটে ছেড়ে বিদেশ পাড়ি দিতে? শুন্য থেকে জীবন শুরু করা কী এতই সহজ?
আধুনিক বিশ্ব কিছু বুঝতে চায়না। সবার সহানুভূতি মিডিয়া কভারেজের উপর নির্ভরশীল। মিডিয়া যদি বলে প্যারিসের জন্য কাঁদো, সবাই অশ্রুর বন্যা ছুটিয়ে দিবে। মিডিয়া যদি বলে সিরিয়ায় বোমার আঘাতে টুকরো হয়ে যাওয়া ছয় বছরের নিচের শিশুটি একটি সন্ত্রাসী, সবাই চোখ বন্ধ করে তাঁকে ভর্ত্সনা করবে। মিডিয়া! আজকের যুগের সবচেয়ে ভয়াবহ হাতিয়ার! এবং পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষ অতি সহজেই এর শিকার।
ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক, লেবাননের অসহায় ভাই বোনদের জন্য একটাই দোয়া করতে পারি যা আমাদের নবীজি(সঃ) বলেছিলেন সুমাইয়া ইয়াসিরের (রাঃ) পরিবারকে, "ধৈর্য্য ধরো! আল্লাহর সাহায্য একদিন আসবেই।"
দোয়াটি আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও ব্যপকহারে প্রযোজ্য।
একবার এক স্কুল জীবনের বন্ধুর সাথে দেখা করতে তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায় গিয়েছিলাম। ফেরার সময়ে আসরের নামাজের সময় হয়ে গিয়েছিল। তিন বন্ধুই ঢাকা শহরে মোটামুটি নতুন। মোহাম্মদপুরের কিছুই চিনিনা। মসজিদ দেখে ঢুকে গেলাম ভিতরে। পরে জেনেছি ওটা ছিল মোহাম্মদপুরের বিখ্যাত শিয়া মসজিদ। বগুরায় শিয়া মসজিদে বোমা হামলার ঘটনায় মনে পড়ছে সেই দিনটির কথা। যদি সেদিন মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদে বোমা হামলা হতো, তাহলে তিনটা সুন্নি ছেলেও মারা যেত। আমাদের কারও চেহারায় লেখা থাকেনা কে সুন্নি, কে শিয়া। বন্দুকের বুলেট বা বোমার স্প্লিন্টার কখনও বুঝতে পারেনা সামনের মানুষটি হিন্দু নাকি মুসলমান। সর্বক্ষেত্রেই মৃত মানুষটির একটি পরিবার থাকে। হয়তো সে কোন সন্তানের পিতা-মাতা, কিংবা সে নিজেই কারও সন্তান। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি পরিবারের শান্তি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়!
অথচ কেউ বুঝতে চায়না!
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩০
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৬
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
বন্দুকের বুলেট বা বোমার স্প্লিন্টার কখনও বুঝতে পারেনা সামনের মানুষটি হিন্দু নাকি মুসলমান। সর্বক্ষেত্রেই মৃত মানুষটির একটি পরিবার থাকে। হয়তো সে কোন সন্তানের পিতা-মাতা, কিংবা সে নিজেই কারও সন্তান। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি পরিবারের শান্তি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়! অথচ কেউ বুঝতে চায়না!
আল্লাহর কাছে কামনা করিঃ মুসলমাদের সহায় রাখুন।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আমিন
৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৬
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
বন্দুকের বুলেট বা বোমার স্প্লিন্টার কখনও বুঝতে পারেনা সামনের মানুষটি হিন্দু নাকি মুসলমান। সর্বক্ষেত্রেই মৃত মানুষটির একটি পরিবার থাকে। হয়তো সে কোন সন্তানের পিতা-মাতা, কিংবা সে নিজেই কারও সন্তান। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি পরিবারের শান্তি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যায়! অথচ কেউ বুঝতে চায়না!
আল্লাহর কাছে কামনা করিঃ মুসলমাদের সহায় রাখুন।
৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৪
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আমরা না বদলালে কোন সাহায্যই কোনদিন আসবে না!
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক।
৫| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬
দধীচি বলেছেন: হৃদয় ছুয়ে যাওয়া লেখা
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৬| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৮
শামছুল ইসলাম বলেছেন: মঞ্জুর ভাই,আপনার বর্ণনা পড়ে অতীতমুখী হলাম,ফিরে গেলাম অনির্বচনীয় আনন্দে ভরা স্মৃতির সেই দিন গুলোয়ঃ
//যখন কাঁদে, চোখ দিয়ে মোটা দানার অশ্রু গড়ায়। এবং যখন হাসে....এই হাসির লিখিত বর্ণনা দেয়ার মতন প্রতিভা আমার নেই।//
....
//আমাকে দেখেই সে যে হাসি দেয়, শুধুমাত্র এই হাসি দেখার জন্য আমার হাজারটা বছর পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করে।//
...ি
//মা আসলে সে যে হাসিটা দেয়, মায়ের প্রচন্ড কর্মব্যস্ত দিনের সমস্ত ক্লান্তি মুহূর্তে দূর হয়ে যায়।//
চমৎকার সুখী একটা পারিবারিক ছবি-আপনার,আমার,আরো অনেকের-আপামর মানব গোষ্ঠীর।আর একে তছনচ করে দিতে এক মুহূর্তের একটা বোমা বা গুলির আঘাতই যথেষ্ট।
প্যারিস তারই জ্বলন্ত উদাহরণ।এবং প্যারিস ঘটনার জন্য দায়ীদের দু'এক জনকে মারতে সিরিয়ায় বোমা ফেলে মারা হচ্ছে প্রতিদিন হাজারে হাজার।
কিন্তু মিডিয়ার কল্যাণে আহাজারিটা শুধু প্যারিসের ভাগ্যেই জুটছেঃ
//মিডিয়া যদি বলে প্যারিসের জন্য কাঁদো, সবাই অশ্রুর বন্যা ছুটিয়ে দিবে। মিডিয়া যদি বলে সিরিয়ায় বোমার আঘাতে টুকরো হয়ে যাওয়া ছয় বছরের নিচের শিশুটি একটি সন্ত্রাসী, সবাই চোখ বন্ধ করে তাঁকে ভর্ত্সনা করবে। মিডিয়া! আজকের যুগের সবচেয়ে ভয়াবহ হাতিয়ার! এবং পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষ অতি সহজেই এর শিকার। //
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে, অসহায় মুসলিম ভাইদের জন্য আমরা দোয়া ছাড়া কিই বা করতে পারিঃ
//ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক, লেবাননের অসহায় ভাই বোনদের জন্য একটাই দোয়া করতে পারি যা আমাদের নবীজি(সঃ) বলেছিলেন সুমাইয়া ইয়াসিরের (রাঃ) পরিবারকে, "ধৈর্য্য ধরো! আল্লাহর সাহায্য একদিন আসবেই।"
দোয়াটি আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও ব্যপকহারে প্রযোজ্য। //
সিরিয়ার ঘটনার রেশ বগুড়ায় পড়েছে। কিন্তু কেন? ঃ
//আমাদের কারও চেহারায় লেখা থাকেনা কে সুন্নি, কে শিয়া। বন্দুকের বুলেট বা বোমার স্প্লিন্টার কখনও বুঝতে পারেনা সামনের মানুষটি হিন্দু নাকি মুসলমান।//
একটি পরিবারের কান্না, কেউ বুঝতে চায়নাঃ
//অথচ কেউ বুঝতে চায়না!//
অসম্ভব মানবিক একটি আবেদন,কেউ কি সাড়া দেবে না?
ভাল থাকুন। সবসময়।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৪৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করবেন।
৭| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:২২
দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: হে ঈশ্বর পৃথিবীর সবাই মানুষ বানাও আর তোমার পথগামী করে রেখো না ।দেখছো তো তারজন্য পৃথিবীতে কত ঘোরতোর বিপদ নেমে এসেছে ।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৪৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঈশ্বরের পথগামি হলেই বরং কোন ঝামেলা থাকতো না। সমস্যা হচ্ছে, এরা ভাবে এরা আছে, আসলে এরা দূর দূরান্ত পর্যন্ত নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
সুলতানা রহমান বলেছেন: কেন যে এমন হয়! সব ক্ষমতাশীনরা প্রতিশোধ নেয়। আর সে প্রতিশোধ কত কিছু যে ধ্বংস হয়! তারপর ও তারা শান্তি পায়না।