নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
কাউকে ছোট করতে নয়, মনে আঘাত দিতেও নয়, বরং কিছু বিষয় ক্লিয়ার করতেই আজকে কিছু কথা বলতে চাই। শুনলে এবং মেনে চললে আপনারই নিজের বা নিজের আপনজনদের উপকার হবে।
দেশী রেডিও চ্যানেলগুলো এখন মেতে উঠেছে ভূত নিয়ে। আগে ছিল ভূত এফএম একা, চমৎকার চমৎকার সব ঘটনা নিয়ে লোকজন হাজির হতেন, নিশুতি রাতে ঘরের বাতি নিভিয়ে গল্পগুলো শুনতে ভালই লাগত। দাদী নানিদের কেচ্ছার ঘটনা মনে পরে যেত - রাক্ষস, খোক্ষস, ডাইনি বুড়ি.....!
এখন অনেক রেডিওতে অনেকগুলো শো। সবাই ভুতের গল্প শোনায়।
এবং পাবলিক একই ঘটনা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেন। যেমন, অন্ধকার রাতে হয়তো কাউকে লিফট দিয়েছেন, রিয়ার ভিউ মিররে তাকিয়ে দেখেন লোকটা পেছনের সিটে বসে লাশ খাচ্ছে।
কিংবা, অমুকের সাথে তমুকের দেখা হলো। বাড়ি পর্যন্ত হেঁটে এসে বিদায় নিল। বাড়িতে এসে জানা গেল এতক্ষণ যার সাথে পথ হেটেছেন, তিনি আসলে কয়েক মাস আগেই গত হয়েছেন।
আরও সব কমন ঘটনা, ভুতের উল্টা পা, ভুতের সাদা পোশাক, মানুষরূপি জ্বিনের হাত লম্বা হয়ে যাওয়া ইত্যাদিতো আছেই। এবং মাছ হাতে বাড়িফেরত কোন গৃহস্তের কাছে ভুত-প্রেতের মাছ খেতে চাওয়া। অস্বীকার করায় ভুতের চর থাপ্পর থেকে শুরু করে মার্ডার পর্যন্ত চরম কোন পরিনতি।
মোটামুটি সবাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একটি পয়েন্ট দিয়েই ব্যপারটিকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেন, "ভুতে বিশ্বাস করিনা, কিন্তু জ্বিনতো আছে।"
এবং মুসলমান মাত্রই তখন চোখ বুজে ঘটনা মেনে নেন। নাহলেতো ইমান চলে যাবে!
আজকে এই জ্বিনকে নিয়েই কিছু লিখতে চাই। কারন আমি বেচারাদের জন্য সমব্যথী। পশ্চিমা বিশ্বে যে কোন সন্ত্রাসী ঘটনায় যেমন সবাই প্রথমেই সন্দেহ করে "মুসলিমদের কাজ," আমরাও তেমনি যেকোন অদ্ভূত ঘটনায় মাথা না খাটিয়েই বেচারা জ্বিনদের ঘাড়ে দোষ চাপাই। ওরাও হয়তো ওদের ব্লগে লেখা লেখি করে, সিনেমা বানিয়ে টাইটেল দেয় "মাই নেম ইজ জ্বিন অ্যান্ড আই অ্যাম নট আ টেররিস্ট।"
প্রথম প্রশ্ন, জ্বিন কী? ওদের সম্পর্কে ধারনা কোথায় পান?
উত্তর হচ্ছে, জ্বিন সম্পর্কে যাবতীয় "সহিহ" জ্ঞানের উৎস হচ্ছে কুরআন এবং হাদিস। ইবলিস নিজে একজন জ্বিন, সেই শয়তান স্বয়ং, দি আলটিমেট ভিলেন।
এছাড়াও রূপকথার গল্প আছে, কিন্তু ওসব আপনার ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তি হওয়া উচিৎ না।
জ্বিন সম্পর্কে প্রথম ধারণা হচ্ছে তারা আগুনের তৈরী। ঠিকতো? এই জন্যই সবাই নিজের "ঘটনায়" বলেন, "....আমরা দেখলাম একটা আগুনের গোলা সামনে দিয়ে চলে গেল।"
কথা হচ্ছে, কুরআনের ভাষায় জ্বিনের আগুন কিন্তু যেই সেই আগুন না, "ধোয়াহীন আগুন," আমরা চর্মচক্ষে যেই আগুন দেখি সেটা হওয়া সম্ভব না। ঠিক যেমনটা বলা হয়ে থাকে, মানুষ মাটির তৈরী। এখন আপনি যদি মাটি ধুয়ে যাওয়ার ভয়ে গোসল বাদ দিয়ে দেন, আগুনের গোলার ব্যপারটা তেমনই হাস্যকর।
কাজেই যারা চোখের সামনে আন আইডেন্টিফাইড আগুনের গোলা দেখে জ্বিন মনে করছেন, সেটা খুব সম্ভবত আপনাদের মনের ভুল, অথবা অন্য কিছু হবে। বুঝতে পারছেন?
"আমার রুমে কে যেন হেঁটে যায়, দেয়ালে স্ক্র্যাচ করে, নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ শুনি।"
ভাই, জ্বিনে যদি বিশ্বাস করেন তাহলে এটাও বিশ্বাস করার কথা যে ওদেরও খাওয়া দাওয়া করতে হয়, বউ বাচ্চা পালতে হয় - আপনার বাথরুমের কল ছেরে দেয়া বা দেয়াল খামচানোর চেয়েও তার জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি কাজ আছে। কল থেকে পানি পড়লে আগে কলের মিস্ত্রীকে ফোন দিন, তারপরে রেডিও স্টেশনে।
"সন্ধ্যায় কালো বিড়াল সেজে এসে ভয় দেখায়।" - খুবই হাস্যকর এবং ফালতু দাবি। জ্বিনের যদি যেকোন রূপ ধারণের ক্ষমতা থাকে এবং তার জীবনের উদ্দেশ্যই হয় আপনাকে ভয় দেখানো, তাহলে সে বিড়ালের রূপ নিবে কেন? বাঘ-সিংহ কেন নয়? বিড়াল দেখে কয়জনের কলিজা কেঁপে উঠে। কাজেই সন্ধ্যায় শুধু শুধু কোন বিড়ালের সাথে যদি আপনার দেখা হয়ে যায়, তাহলে দয়া করে ওটাকে লাঠিসটা দিয়ে মারতে যাবেন না যেন। খুব বড় একটা চান্স আছে বেচারা ক্ষুধার্ত, সারাদিনে হয়তো কিছুই খেতে পায়নি। তাকে কিছু হলেও খেতে দিন।
মাছ চাওয়ার ঘটনাটাও হাস্যকর। এই কথা সবাই মানেন যে জ্বিনের গায়ের শক্তি সাধারণ মানুষের গায়ের জোরের চেয়ে বেশি। তার যদি মাছ বা মিষ্টিই খেতে হতো, তাহলে আপনার কাছ থেকে চাইবে কেন? ডিরেক্ট কেড়ে নিলেই পারে। অথবা নিজেই ধরে খেতে পারে। বুঝাতে পারছি?
ভুতের সাদা পোশাক আরও হাস্যকর ব্যপার। ওরা কী ডিটারজেন্ট পাউডারের মডেল নাকি যে সাদা পোশাক পরে ঘুরে বেড়াবে? ওরা পোশাক পাবে কোথায়? তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম যে মানুষ মরে ভূত হয়, কিন্তু পোশাকও কী মরে? তাছাড়া ওরা হচ্ছে ভূত, ওদের পোশাকেরই বা দরকার কী? তাও আবার সেই শাড়ি যা সিনেমার নায়িকারা গায়ে চড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজে গান গায়।
জ্বিন ভুতের সাথে যাদের কথাবার্তা হয়, সবই হয় মাতৃভাষায়। সিলোটির গল্পের ভূতও হয় সিলোটি, বরিষাইল্যার ভূতও হয় বরিষাইল্যা। আপনার নলেজের বাইরে আপনার জ্বিন/ভূত একটা শব্দও উচ্চারন করেনা। এর মানে কী জানেন? আপনার "দিমাগ মে কেমিকাল লোচা হ্যায়।" ডাক্তার দেখান, জ্বিন চলে যাবে।
শিশু জন্মের পরে সব দেশেরই বেশির ভাগ মা ডিপ্রেশনে চলে যান। কারও ডিপ্রেশন এক সপ্তাহেই কেটে যায় - কেউ কেউ ভায়োলেন্ট হয়ে স্বামী-সন্তান খুন করেন অথবা নিজেই আত্মহত্যা করেন। বিদেশে একে পোস্টপার্টেম ডিপ্রেশন বলে, যা হরমোনাল ম্যাসিভ ইমব্যালেন্সের কারনেই ঘটে থাকে। আমাদের দেশে কী বলে জানেন? জ্বিনের আসর! কেউ কেউ আবার একে সলিড ভিত্তি দেয়ার জন্য বলেন, "ডিমোনিক পসেশন।" কথা হচ্ছে বাংলায় কন আর ইংরেজিতে - ফালতু বাত ফালতু বাতই হয়ে থাকে।
Bass বাবা সুমন, ক্রিপটিক ফেইটের সাকিব ভাই এবং জিব্রান ভাই ভৌতিস্ট টিম বানিয়ে দেশের হন্টেড এলাকাগুলো ঘুরে ঘুরে ভৌতিক ঘটনা ভিডিও করছেন - এবং তা দেখে আপনিও আপনার ঘরে শিষের শব্দ শুনে নিজের ঘরকে "হন্টেড" ঘোষণা করে বসলেন! একটু খোঁজ নিন, দেখবেন আপনার জানালায় অবশ্যই কোন ফাঁক আছে, যেটা দিয়ে বাতাস ঢুকলে শিষের শব্দ হয়।
তারচেয়ে বড় কথা, মানুষের চোখের লেন্স কত শক্তিশালী জানেন? সেখানে যে জিনিস ধরা পরছে না, সেটা মাত্র কয়েক মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার লেন্সে ধরা পরে যাবে - থিওরি কতটা হাস্যকর বুঝতে পারছেন? কাজেই যারা এমন গল্প ফাঁদেন, "ছবি তোলার সময়ে পেছনে কেউ ছিল না, অথচ ক্যামেরায় দেখা গেল পেছনে একটা ফিগার" - তাদের বিশ্বাস করার আগে জেনে নিন পৃথিবীতে ফটোশপ বলিয়া একখানা software এর অস্তিত্ব আছে।
এবং লাশের ঘটনাগুলো বলছেন? আপনার মাথার চুল যখন নাপিত কেটে ফেলে দেয়, অথবা আপনার হাতের নখ যখন আপনি ফেলে দেন, সেগুলো কী ভূত হয়? অথবা, অ্যাক্সিডেন্টে কাটা পরা হাত পায়ে কোন অনুভূতি থাকে? তেমনি মানুষ মরে গেলে তাঁর বডিও ফেলে দেয়া চুল নখের মতন হয়ে যায়। আত্মা ফাত্মা সবই বুজরুকি। এমনকি ইসলাম পর্যন্ত বলে মানুষ মরে গেলে তার রুহের সাথে পৃথিবীর সব ধরনের সম্পর্কই ছিন্ন হয়ে যায়। কাজেই এসব "ভৌতিক" বিষয়ে বিশ্বাস করলে ইমান নিয়েই টানাটানি লেগে যাবে।
পেদ্রো লোপেজ নামের কলাম্বিয়ান এক সিরিয়াল কিলার ছোটবেলায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার মা এক পীরের (কবিরাজ) কাছে যান। ফাজিলটা মাকে জানায়, "তোমার ছেলেকে তোমার প্রতিবেশী অমুক কিডন্যাপ করেছে। ওকে চেপে ধরলেই ছেলের সন্ধান পাবে।"
ঐ মহিলা দেরযুগেরও বেশি সময় ধরে সেই প্রতিবেশী নির্দোষ মানুষটাকে গালাগালি আর অভিশাপ দিয়ে আসছিল।
কথা হচ্ছে, আপনার পরিচিত মানুষজনেরাও কী একই কাজ করছেন না? কিছু হলেই এইসব ঠগবাজ পীরের পায়ের কাছে নিজের ইমান ফেলে দিয়ে আসছেন। এইসব ঠগীরাও আপনাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তাদের জ্বিন তাদের জানিয়েছে আপনার এই দুরবস্থার জন্য আপনারই নিকটাত্মীয় দায়ী। আপনার উপর জাদু করা হয়েছে।
এবং লেগে গেল গিট্টু!
হয়তো আপনার সাধারণ ডিপ্রেশন হয়েছে, অথবা ক্যান্সার, চিকিৎসা না করিয়ে আপনি তাবিজ ঝুলিয়ে ব্যপারটাকে আরও বাড়তে দিচ্ছেন। তার উপর আবার নিরপরাধ মানুষকে সন্দেহ। আলটিমেট লুজার কে?
বলতেই পারেন, ব্ল্যাক ম্যাজিকের কথাতো ইসলামে আছে। আছে, তবে ৯৯.৯৯% ক্ষেত্রে আপনার আশেপাশের ঘটনাগুলো ব্ল্যাক ম্যাজিক নয়।
এখন কথা হচ্ছে তাহলে কী পৃথিবীতে প্যারানরমাল কিছুই ঘটেনা?
অবশ্যই ঘটে। কিছু ঘটনা অবশ্যই ঘটে যার ব্যাখ্যা হয়তো আপনি তাৎক্ষণিক খুঁজে পাবেন না। যেমন আপনার সামনেই মানুষ উড়তে শুরু করলো। যদিও ডেভিড কপারফিল্ড নিয়মিত দর্শকের সামনে উড়িয়া থাকেন।
কিংবা আরও ভয়াবহ কিছু যা ফিজিক্স দ্বারা প্রমান করা অসম্ভব।
একটা সময়েতো হুজুররা খালি পায়ে জলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হেঁটে প্রমান করে দিত নিজেদের অলৌকিক ক্ষমতার ব্যপারে। খালি পাকে ভাল মতন পানি দিয়ে ভিজিয়ে আপনি জলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হাঁটুন, দেখবেন আপনিও অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেছেন।
এখন একটা ঘটনা বলছি যা আমার সাথে ঘটেছে এবং এর ব্যাখ্যা আমি পাইনি। তবে তার আগে উপসংহার বলে নেই, এবং সেটা হচ্ছে পৃথিবীর সব ঘটনাই নরমাল। প্লিজ ওদের জোর করে প্যারানরমাল বানাবার চেষ্টা করবেন না। কারন আপনার এই ভয়ের ফায়দা তুলেই চরমোনাই, দেওয়ানবাগিরা কোটিপতি হয়ে বসেছে।
তাহলে ঘটনা শুরু করা যাক।
তখন মাত্রই এইচএসসি পাশ করে ঢাকায় পড়তে এসেছি। ফিজিক্স বই খুলে বসেছি। জটিল জটিল সব অংক করছি। হঠাৎ আমার হাতের ক্যালকুলেটর ফ্রিজ (হ্যাং) হয়ে গেল। যতই বোতাম চাপি, কিছুতেই কিছু হয়না। রিস্টার্ট দেয়ার জন্য স্যুইচ অফ করতে চাইলেও অফ হচ্ছেনা। মনিটর একটা নম্বরে এসে স্থির হয়ে আছে এবং অবশ্যই সেটা ১৩ কিংবা ৬৬৬ নয়। আহ! আমি মাত্রই ভৌতিক গল্পের রসে পানি ঢেলে দিলাম!
যাই হোক, আমার ক্যালকুলেটরটা ছিল টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টের সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর, দেশের প্রচলিত ক্যাসিও ক্যালকুলেটরগুলো থেকে পুরোপুরি আলাদা। অ্যামেরিকা থেকে চাচা পাঠিয়েছিল। সোলার পাওয়ারে চলতো। ব্যাটারির কাজ কারবার নেই। ভাবলাম ক্যালকুলেটরের ভিতরের অংশের কোন একটা যন্ত্র খুলে আবার লাগিয়ে দিলেই বুঝিবা রিস্টার্ট হবে।
ড্রয়ার থেকে স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে এলাম। একটা একটা করে স্ক্রু আনস্ক্রু করলাম। প্রতিটা স্ক্রু যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য স্ক্রু ড্রাইভারের সাথে একত্রে রাখলাম।
ক্যালকুলেটরের ভিতরে এমন কোন যন্ত্রাংশ পেলাম না যা টান দিয়ে খুলে আবার লাগিয়ে রিস্টার্ট করা যাবে। দামী ক্যালকুলেটর বলে রিস্ক নিতেও ইচ্ছা হলো না। মেকানিকের কাছে নিয়ে যাওয়াই উত্তম ভেবে আবারও ডালা লাগিয়ে স্ক্রুগুলো ঢুকিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার নিতে গিয়ে দেখি সেটা সেখানে নেই। অথচ কিছুক্ষণ আগেও সেখানেই ছিল।
আমি বইখাতা তুলে ধরে প্রতিটা পৃষ্ঠা নাড়ালাম চারালাম। তারও আগে নিজের জামার পকেট টেনে বের করে নিশ্চিত হলাম পকেট খালি। যে বিছানায় বসে পরছিলাম সেই বিছানার চাদর উল্টে ঝেড়ে দেখলাম সেখানেও নেই। তারপর "রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে" ভেবে চাদর বিছিয়ে আবারও পড়তে বসলাম। ঘন্টা খানেক পরে দেখি স্ক্রু ড্রাইভার আমার বিছানার ঠিক সেখানেই আছে যেখানে আমি প্রথমে রেখেছিলাম। বইখাতা ও চাদর উল্টানোর পরে যেখানে থাকা নিতান্তই অসম্ভব একটি ব্যপার।
এবং তারচেয়ে বড় কথা, তখনই রিস্টার্ট ছাড়াই আমার ক্যালকুলেটর ঠিকমতন কাজ করতে শুরু করে দিল। আপনাতেই সেরে গেল।
এখন প্যারানরমাল থিওরি অনুযায়ী জ্বিন "এনার্জির" তৈরী (যে কারনে সব গোস্ট হান্টাররাই এনার্জি ডিটেক্টর যন্ত্র ব্যবহার করেন এবং ইসলামী তথ্য খাটালেও প্রমান করা সম্ভব যে জ্বিন এনার্জির তৈরী, সেটা পরে কোন একদিন লেখা যাবে) এবং কোন এক "এনার্জির" কারনেই হয়তো আমার ক্যালকুলেটর হ্যাং করেছিল, এবং সেটা সরে যেতেই আবার সেরে গেছে। আই ডোন্ট নো। বললাম না, ব্যাখ্যা করতে পারিনি।
তবে এখানেও প্রশ্ন একটাই, জ্বিনের কী ঠ্যাকা পরেছিল আমার স্ক্রু ড্রাইভার ধার নেয়ার?
নাকি সেটা ছিল কোন সিগনাল বা ম্যাসেজ যা আমি বুঝতে পারিনি?
পুনশ্চ: আমি ভৌতিক গল্প শুনতে ভীষণ ভীষণ পছন্দ করি। লজিক দেখিয়ে বক্তাকে বিন্দুমাত্র নিরুৎসাহিত করি না। যার সাথে ঘটেছে, সেটা তাঁর নিজের পয়েন্ট অফ ভিউ। কাজেই সেটাকে অবশ্যই সম্মান করি।
সেদিন রেডিওতেই প্রস্তাব তুলেছিলাম এক কাপ চায়ের একটা পর্ব ভূত স্পেশাল হলে কেমন হয়? কারও কোন ভৌতিক অভিজ্ঞতা থাকলে প্লিজ জানান, আমরা লাইভ রেডিওতে সেই ঘটনা প্রচার করতে আগ্রহী।
এবং একদিন আমিও একটা ভুতের উপন্যাস লেখার প্রয়াস রাখি, যেখানে কোন উল্টা পায়ের ভূত সাদা শাড়িতে ক্যাটওয়াক করবে না। কোন মাছ শিকারী মানুষের কাছে মাছ ভিক্ষা চাইবে না। বা হুমায়ুন আহমেদের কোন গল্প মেরে দিয়ে নিজের নামে চালানোর চেষ্টাও হবে না। উহা হবে পিওর ভুতের গল্প, যা বাস্তব মানুষের জীবন থেকেই সংগ্রহ করা।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: দড়ি দেখেই তাই সাপ বলে চিৎকার করছে।
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০১
আমি মিন্টু বলেছেন: সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে ভালো কিছু থিওরি দিয়েছেন ভাই ।
পারার লোকে কয় আমায় ভূতে ধরেছে
গাঁয়ের লোকে কয় আমায় জ্বিনে ধরেছে
কি করে বলি আমি কে আমায় পাগল করেছে ........
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হাহাহা। মজা পেলাম।
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০৯
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার একটা পোস্ট!
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, নিয়মিত পড়েন এবং কমেন্টও করেন। অনেক ধন্যবাদ!
৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৬
মুদ্দাকির বলেছেন: চমতকার পোষ্ট !! অনেক ঘটনা মিথ্যা বোঝাই যায়, বর্ননা কারীদের গলার টোনেই বোঝাযায়, আর জ্বীন সম্পর্কিত মিথ্যা রটনা গুলা সত্য ঘটনা কে চাপাদিয়ে দিচ্ছে! আর ভুত এফ এম তো জ্বিন বিশ্বাস ঈমানি দ্বায়িত্ত বানিয়ে ফেলেছে।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হ্যা, মিথ্যার ভিড়ে সত্যিটা চাপা পরে যায়
৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩২
রাশেদ রাহাত বলেছেন: ভূত.....
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৩
সরদার হারুন বলেছেন: যখন কোন কাজ নেই তখন খই ভাজাই ভাল, কি বলেন ?
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক।
৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯
মুনতা বলেছেন: দারুণ লেখা।
+++
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৮
আজাদ মোল্লা বলেছেন: মিন্টু ভাইয়ের সাথে একমত ।
৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:২৫
বাঘ মামা বলেছেন: যাদের মেধার সীমাবদ্ধতা আছে ভুত অস্তিত্ব তাদের জন্যই।অন্য আর রোগের মত এটাও একটা রোগ বলেই আমাদের মেনে নিতে হবে, আর আমি বিশ্বাস করি যে, মেধা মননে সফল মানুষদের কোন কিছুতেই তার আত্নবিশ্বাস নষ্ট করতে পারবেনা।ঐসব অনুষ্ঠান দেখে তারাই ভাববে বিশ্বাস করবে যারা শুধু বিশ্বাস করতে জানে বিচার করার শক্তি তাদের নেই।
পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ
শুভ কামনা সব সময়
১০| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:০৯
আরব বেদুঈন বলেছেন: ভাল লাগল...উপদেশ দিচ্ছি না অনুরোধ করছি আরো একটা ব্যপার বিস্তারির যোগ করার জন্য...সেটা হল অনেকেই গল্প ফাদে অমুক স্থানে এক মেয়ে আত্নহত্যা করেছিল তাই আজো তার আত্তা মানুষ কে তাড়া করে...বা অমুক স্থানে এক লোক মারা গেছিল বলে তার অত্তা সেখানে আছে মানুষ কে ভয় দেখায় (নাউজুবিল্লা নাউজুবিল্লা) রাসূল বলেছেন মামুষ মারা গেলে তার রুহু বা আত্তা ইল্লিন বা সিজ্জিনে থাকে সেটা তার ভাল খারাপের উপর নির্ভর করে।এবং কবরের আজাব বা সান্তি ভোগ করে।তাহলে এই গাধা গুলোর মত আপননি যদি ঐ কথা বিশ্বাস করেন তাহলে একি সাথে কত গুলো হাদিস আর কুরানের আয়াত কে অশ্বিকার করে বসছেন হুস আছে তো?
আর কুরানের যে একটা কথা অবিশ্বাস করবে সে কাফির! তাহলে এই গাধা গুলো কি মুসলিম???কালেমা পড়লেই সে মুসলিম?
এই সমস্ত কথা তো আছে হিন্দু ধর্মে।ওরা বিশ্বাস করে কোন মানুষ মারা গেলে সে যদি অতৃপ্ত থাকে তাহলে তার অত্তা এসে প্রতিশোধ নেই। আমরা মুসলিম হয়ে এই ঈমান ঘাতি কথা বিশ্বাস করি। কারণ এই বিশ্বাস তো পরকালকেও অশ্বিকার করে বসছে।মানুষ মরে যদি ভূত হই তাহলে তো কবরে তার শাস্ত বা শান্তি পাবে না, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান হবে না।আর এই যদি হত তাহলে ফেরাউনের বউ আসিয়া (যাকে ইতিহাসে সবচেয়ে নির্মম ভাবে ইসলাম গ্রহনের জন্য হত্যা করেছে) ভূত হয়ে ফেরাউনের ঘাড়ে সাওয়ার হত।হল না কেন??
এইসমস্ত কথা যারা বিশ্বাস করে তারা ভাবে না এর প্রভাব কত দূর অথচ প্রত্যেক মুসলিমই জানে কবরে আজাব হই।আজরাইল জান কবুজ করে কবরে তার রুহু ফেরত দেওয়া হই।তাহলে এউ সব জানার পরও কেন এই শিরক?
১১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪২
নির্বাসিত কবি বলেছেন: আপনার ভৌতিক গল্পের অনূরুপ ঘটনা আমার সাথেও প্রায়ই ঘটে। আমিও এটাকে ব্যাখ্যায় ফেলতে ব্যর্থ হয়েছি, প্রত্যেকবার।
১২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪২
মহা সমন্বয় বলেছেন: ডাক্তার দেখান, জ্বিন চলে যাবে। আর যারা, জ্বীন ভুতে বিশ্বাস করে তার নিজেরাই এক একটা জ্বলজ্যন্ত ভূত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:০৪
ধমনী বলেছেন: নিজেদের ভৌতিক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার স্বার্থে আমরা স্বাভাবিক ঘটনাকেও কাল্পনিক রঙে রাঙিয়ে ভৌতিক ভাবার রোমাঞ্চ নেই। জ্বিনের অস্তিত্বে বিশ্বাসের সুযোগে অনেক কুসংস্কার তৈরী হয় তখন। আশংকার জায়গা হলো আধুনিক প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও ভূতের শো শুনে বিকারগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। আমার পরিচিতদের মধ্যেই দেখা।