নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ম্যাকগাইভার, কোথাও কেউ নেইর কথা মনে আছে? কিংবা একদম প্রথম দিকের আলিফ লায়লা? বাংলাদেশের রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা হয়ে যেত। নিতান্তই জীবন মরনের প্রশ্ন না থাকলে কাউকে বাইরে দেখা যেত না। দশ বারো কোটি জোড়া চোখ তখন টিভি পর্দার সামনে। মুগ্ধ হয়ে অনুষ্ঠান দেখা হতো।
সেই দিন আর বাংলাদেশে নেই। লোকে স্যাটেলাইট চ্যানেলের দোষ দেয়। আমার অভিযোগ অনুষ্ঠানের মান নিয়ে। যাই হোক, সেই বিতর্ক অন্য দিনে করা যাবে। এখন ভিন্ন বিষয়ে কথা বলবো।
অ্যামেরিকাতেও একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পুরো দেশের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। কোটি কোটি জোড়া চোখ টিভি পর্দার সামনে স্থির থাকে। অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বার্ষিক "সুপারবোল" খেলা। এনএফএলের ফাইনাল। অ্যামেরিকানরা এই খেলাটিকে একদম উপাসনা পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তা খেলাটি জমেও সেরকম। একদম শেষ মুহূর্তটি না আসা পর্যন্ত কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনা কে জিততে চলেছে। আমাদের ক্রিকেট থেকে কয়েক শতগুন বেশি উত্তেজনায় ঠাসা।
তা অ্যামেরিকান ফুটবল নিয়ে কথা বলতেও আজকে লিখতে বসিনি। আজকের বিষয় ভিন্ন।
এই সুপারবোল খেলা দেখতে গেলাম ভাই তারেকের বাসায়। আমাদের সব বন্ধুবান্ধব এক হয়েছে, হৈহুল্লোড় করতে করতে খেলা দেখছে। আমি ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলাম। ছেলের মা যায়নি। তা পুত্রকে নিচে অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে রেখে উপরের তলায় উঠে গেলাম খেলা দেখতে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখি ছেলে উদ্ভ্রান্তের মতন সেই ঘরে এসে হাজির। চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে বাবাকে খুঁজছিল। বোধয় খেলতে খেলতে হঠাৎ সে আবিষ্কার করলো যে নিচে পরিচিতদের ভিড়ে তাঁর বাবা নেই। আমাকে দেখেই হাসিমুখে এসে কোলে ঝাঁপিয়ে পড়লো। এই হাসি আমি মৃত্যুর আগে মুহূর্ত পর্যন্ত ভুলবো না ইন শা আল্লাহ।
বাচ্চারা এমনই হয়। যখনই একা বোধ করে, বাবা মাকে খুঁজে বের করে। একবার তাঁদের সংস্পর্শে এলেই বুঝে যায়, তাঁদের আর কোন চিন্তা নেই। আমিও ব্যতিক্রম নই। কিন্তু গত পাঁচটা বছর ধরে আমি আমার বাবাকে খুঁজে বেড়াই, দেখা পাইনা, হাসিমুখে কোলে ঝাঁপিয়ে পড়া আর হয়না।
বাবা বলতেন, বাপ বেঁচে থাকতে এত চিন্তা কিসের?
আসলেই, কোনদিন কোন কিছু নিয়ে আমাকে ভাবতে হয়নি।
যাদের বাবা-মা আছে, তাঁদের বলছি, বাবা মা আছে বলেই মাথার উপর বটের ছায়া পাচ্ছেন। ঝড় বৃষ্টি রোদ কিছুই গায়ে লাগতে পারেনা। একবার যখন সেই ছায়াটা সরে যাবে, তখন হাজার আফসোস করেও ফিরিয়ে আনতে পারবেন না।
মা বাবাকে ভালবাসতে কেবল বাবা মা দিবস পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবেন না যেন। কে জানে, সেই সুযোগটা আপনি পান কিনা!
©somewhere in net ltd.