নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুটবলদের স্ট্যাটাস

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৮

ইন্টারপোলের হেডকোয়ার্টারের রেড কনফারেন্স রুমে ইমার্জেন্সি মিটিং ডাকা হয়েছে। সাধারণত অতি জরুরি কিছু না হলে এই রুমে মিটিং হয় না।
ইন্সপেক্টর জামশেদ সকালের কফি খাচ্ছিল। জরুরি বার্তা পেয়ে ছুটে এসে দেখে যতটুকু আশংকা করেছিল, পরিস্থিতি তারচেয়েও সিরিয়াস। শুধু ইন্টারপোল প্রধানই নন, মিটিংয়ে উপস্থিত আছেন ডিরেক্টর অফ সিআইএ সহ আরও বেশ কিছু হোমরাচোমরা ব্যক্তিত্ব; যাদেরকে বিশ্বের গোয়েন্দা সমাজে ইতিমধ্যেই কিংবদন্তিতুল্য গণ্য করা হয়। প্রত্যেকের মুখ অসম্ভব গম্ভীর। সাধারণত পরিস্থিতি ভয়াবহ জটিল না হলে এতগুলো স্বচ্ছ মস্তিষ্কের অধিকারীকে এক ঘরে একত্র করা হয়না।
জামশেদ ধারণা করার চেষ্টা করলো কি হতে পারে? পুতিন ফ্রান্সে হামলা করেছে? সেটা হলে ইন্টারপোল মিটিং কেন ডাকবে? ওটাতো মিলিটারি ইস্যু। সিআইএ যেহেতু এসেছে, কোন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংঘের কোন ঘটনা জড়িত আছে নিশ্চই। আবারও কি আল কায়েদা, বা আইসিস মাথা চারা দিয়ে উঠছে?
কিছুক্ষনের মধ্যে মিটিংয়ের কারন জানতে পেরে ইন্সপেক্টর জামশেদেরও মুখ গম্ভীর হয়ে গেল।
"জেন্টেলম্যান, পাবলো এস্কোবার ইজ এলাইভ!"
মানে কি? যাকে তিরিশ বছর আগে ওরই দেশে গুলি করে খতম করা হয়েছিল, সে কিভাবে এলাইভ হতে পারে? নিশ্চিত হওয়ার জন্য জামশেদ প্রশ্ন করতে চাইলো, কিন্ত তাঁরও আগে জেনারেল হাওয়ার্ড প্রশ্ন করে বসলেন, "দ্য নার্কো কিং পাবলো এস্কোবার? কলাম্বিয়ান ড্রাগ লর্ড?"
জবাবে প্রেসিডেন্ট অফ ইন্টারপোল মিস্টার মেং হংওয়েই কেবল মাথা নাড়লেন। হ্যা সূচক। এবং এতেই রুমে থমথমে নীরবতা নেমে এলো। বিশ্বের ইতিহাসের প্রথম নারকো টেরোরিস্ট, যার অর্থবিত্তের কোন সীমা পরিসীমা ছিল না, নিজেরই একটি সুবিশাল, আধুনিক ও বিশ্বস্ত সেনাবাহিনী ছিল, যাকে বাগে পেতে এফবিআই ও সিআইএকে গলদঘর্ম হতে হয়েছিল, সেই পাবলো বেঁচে আছে? সর্বনাশ!
গলা পরিষ্কার করে বক্তব্য শুরু করলেন ডিরেক্টর অফ সিআইএ উইলিয়াম বার্নস, "আমাদের কাছে সলিড তথ্য আছে যে সে ফিরে এসেছে, এবং ইতিমধ্যেই একটিভ্লি নিজের ড্রাগের ব্যবসা চালু করেছে। কোকেন! দক্ষিণ এশিয়ার আস্ত দেশ ওর কোকেনের সর্বনাশা জালে আটকা পড়েছে।"
দক্ষিণ এশিয়ার নাম শুনে ইন্সপেক্টর জামশেদের বুকের হৃদপিন্ড লাফিয়ে উঠলো। সে কাঁপা কণ্ঠে জানতে চাইলো, "দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশ?"
ঠিক যা ভয় পেয়েছিল সেটাই জবাব পেল। মিস্টার মেং জানালেন, "বাংলাদেশ!"
জামশেদের পূর্বপুরুষ বাংলাদেশী। ওর জন্মও হয়েছিল ঢাকায়। মাতৃভূমি, জন্মভূমিতে শৈশবে বহুবার গিয়েছে ছুটি কাটাতে। সেখানে এখনও ওর মায়ের দিকের বহু আত্মীয়ের বাস। শেকড়ের টান এখনও সে অনুভব করে। সেই বাংলাদেশে পাবলোর অশুভ ছায়া পড়েছে? সর্বনাশ! বুকটা তাঁর হুহু করে কেঁদে উঠে। কিন্তু প্রফেশনালের মত সে চেহারায় তার একটুও প্রতিফলন ঘটায় না। একটি মাসলও না কাঁপিয়ে সে বলে, "সোর্স কি?"
এজেন্টরা তাঁদের সোর্স রিভিল করেনা। সিআইএ ডেপুটি ডিরেক্টর বললেন, "সোর্স বিশ্বস্ত। সলিড তথ্য প্রমান আছে।"
সিআইএকে জামশেদ বিশ্বাস করতে পারেনা। ওরা এর আগেও "ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র আছে" দাবি করে আস্ত দেশ গায়েব করে ফেলেছিল। তারপরে বলে, "তথ্যে ভুল ছিল।" ঘটনা এখানেও একই হতে পারে।
সে বলে, "আমি কি একটু দেখতে পারি।"
উইলিয়াম বার্নস এবং তাঁর ডেপুটির চেহারা দেখেই বুঝা গেল একজন সামান্য ইন্সপেক্টরের আবদার তাঁদের পছন্দ হয়নি। তাঁদের কাছে প্রমান দাবি করা মানে তাঁদের কথায় ওর ভরসা নেই।
মিস্টার মেং তাঁর সৈনিককে ভাল করেই চেনেন। তাই তিনি তাঁর আবদারে সায় দিলেন। তিনি চোখের চাহনিতে সিআইএর প্রধানদের বললেন তাঁদের প্রমান যেন প্রজেক্টরে পেশ করা হয়।
দাঁতে দাঁত পিষে অপমান হজম করলেন উইলিয়াম বার্নস। পরিস্থিতি এতটা জটিল না হলে তিনি অবশ্যই এর জবাব দিতেন। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। এস্কোবারকে বাংলাদেশ থেকে ধরতে হবে। আঠারো কোটি বাঙালিকে সর্বনাশা ড্রাগের জাল থেকে মুক্ত করতে হবে। একা তাঁর পক্ষে সম্ভব না।
তিনি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকে প্রজেক্টরে প্রমান পেশ করলেন।
তা দেখে রুমে উপস্থিত কারোরই সন্দেহ রইলো না বাংলাদেশে পাবলো এসকোবার ফিরে এসেছে, এবং কোটি কোটি মানুষকে কোকেন দিয়ে আসক্ত করে রেখেছে। ওদের ফেসবুক স্ট্যাটাসই এর প্রমান।

"জুলে রিমে ট্রফি আসলে কোন বিশ্বকাপ না, আসল বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে সত্তুর সালের পর থেকে। এর আগেরগুলি ছিল দুধভাত।"

"আর্জেন্টিনা তিনটা বিশ্বকাপ জিতে পেলের সমকক্ষ হয়েছে কেবল, ব্রাজিলের সমান হতে আরও দুইটা জিততে হবে।"

"পেলে মোটেই ফুটবলের রাজা না। কারন ও কোন ইউরোপীয় টাইটেল জিতে নাই।"

"পেলে শুধু অফসাইডে গোল দিত। এখন হলে ও দলেই চান্স পেত না।"

"ম্যারাডোনা একটা চোর, হাত দিয়ে গোল দিয়েছে। কোকেনখোর। ওকে বিশ্বসেরা ফুটবলার বলার কোনই কারন নেই।"

"ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো একজন সাধারণ ফুটবলার। মিডিয়া ওকে মেসির প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়েছে।"

"ফিফা চাইছিল মেসি একটা বিশ্বকাপ জিতুক। তাই প্রতিটা ম্যাচ পাতিয়ে ওদেরকে জিতিয়ে দিয়েছে। নাহলে প্রতি ম্যাচে এতগুলি "প্লান্টিক" হয় কিভাবে?"

"মেসি এমন আহামরি কোন প্লেয়ার না। ঐ বয়সে ও যা করেছে, এমবাপে তারচেয়েও বেশি সফল। কাজেই মেসিকে GOAT বলার কোনই কারন নেই। এম্বাপে ওর চেয়ে ভাল।"

স্বদেশীদের স্ট্যাটাসগুলো পড়তে পড়তেই হঠাৎ করে ইন্সপেক্টর জামশেদ ফিট হয়ে পড়ে গেলেন। তাঁর দাঁতে দাঁত লেগে বাড়ি খাচ্ছে। কিড়মিড় করছে পুরো শরীর। সবাই ছুটে এলেন তাঁর দিকে। ইন্টারকমে জরুরি বার্তা পাঠানো হলো, "We have an officer down! I repeat, we got an officer down! Send medical assistance immediately!"

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫১

চারু এবং আমি বলেছেন: এই বিষয়ের উপর এই লিংক টাও দেখা যেতে পারে...

২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২০

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.