নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমেরিকান সেক্যুলারিজ্ম ইউরোপিয়ানদের মতন নয়।

০২ রা জুন, ২০২৩ রাত ১২:৫৮

আমেরিকান উদার গণতন্ত্রের একটি অতি শক্তিশালী খুঁটি হচ্ছে ধর্মীয় স্বাধীনতা।
ধর্মীয় স্বাধীনতা মানে আপনি চাইলে যেকোন ধর্ম পালন করতে পারেন, ইসলাম, বৌদ্ধ, হিন্দু, বাহাই, ইহুদি, খ্রিষ্টান ধর্মের যেকোন শাখা থেকে শুরু করে শয়তানের উপাসনা পর্যন্ত যেকোন ধর্ম, এবং চাইলে ইচ্ছা করলে কোন ধর্ম পালন না করে পুরোপুরি নাস্তিক থাকতে পারবেন। এইটা আমেরিকার সাংবিধানিক অধিকার।
আমেরিকার জন্মই হয়েছে মূলত এই কারণেই। আমাদের মুসলিমদের মাঝে যেমন হানাফী, শাফেঈ, হাম্বালী, মালেকী ঈমামদের শিক্ষায় ছোটখাটো পার্থক্য আছে, তেমনই খ্রিষ্টানদের মধ্যেও এমন নানান মত পার্থক্য আছে। মধ্যযুগে সেই সামান্য মত পার্থক্যই ক্ষমতাবানরা সহ্য করতে পারতো না। ভিন্নমতের খ্রিষ্টানদের মেরে ফেলতো। এবং সেই কারণেই, দলে দলে খ্রিষ্টান আমেরিকায় এসে ধর্মীয় স্বাধীনতা চেয়েছে। এবং এই কারণেই দেখা যায়, এখানে অলিতে গলিতে চার্চ। রাস্তার এই দিকে ব্যাপ্টিস্ট চার্চ, তো উল্টো দিকেই মেথোডিস্ট, একটু দূরেই ক্যাথলিক (বাংলাদেশের মোটামুটি সবাই রোমান ক্যাথলিক) চার্চ পাবেন তো ইভাঞ্জেলিকান লুথেরান চার্চও আশেপাশেই পাবেন। এরই ফাঁকে ফাঁকে কোথাও দেখবেন গুরুদুয়ারা, কোথাও মন্দির, কোথাও মসজিদ ইত্যাদি।
আমেরিকান সেক্যুলারিজ্ম ইউরোপিয়ানদের মতন নয়। আমেরিকান সেক্যুলারিজ্ম প্রো-রিলিজন, মানে ধর্মচর্চাকে বিনাশ করা নয়। ওদের ডলারেই দেখবেন লেখা থাকে "আল্লাহ ভরসা।" আমাদের দেশে যেমন "জয় বাংলা" এদেশে সেটি "God Bless America."
আপনার যদি গাত্রদাহ শুরু হয় যে সেক্যুলার দেশ কোন যুক্তিতে এত God God করে, তাহলে আপনার কোন ধারণাই নাই আমেরিকা সম্পর্কে, এদের ইতিহাস সম্পর্কে এবং এদের সংবিধান সম্পর্কে। সিটিজেন পাবার আগে একটি পরীক্ষা হয়, সেটা পাশ করতে হলে একশো প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই জানতে হয়। আর এদেশে ডিগ্রি নিতে হলে এদের ইতিহাস এবং গভর্নমেন্ট কোর্সগুলোতো করতেই হবে। সেখানে আরও ডিটেইলে আলোচনা করা আছে।
ইউরোপের সেক্যুলারিজ্ম এন্টি রিলিজন, মানে ধর্মচর্চাকে নিরুৎসাহিত করা। কারন ঐ যে বললাম, দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতাবান চার্চ জনজীবনে এতটা ইন্টারফেয়ার করেছে যে ওরা সব ধর্মের উপরই বিরক্ত হয়ে গেছে। ওদের ধারণা ধর্মীয় আচার আচরণ মানেই হচ্ছে চার্চ/মসজিদ/মন্দির কর্তৃক চাপিয়ে দেয়া বোঝা। ইউরোপে বোরখায় ব্যান করা বা ইত্যাদি ইত্যাদি যা যা অসভ্যতার কথা আমরা শুনে চোখ কপালে তুলি, তা আমেরিকায় অকল্পনীয়। কারন সেটা এদেশের সাংবিধানিক অধিকারের বিপরীত। এবং এজন্যই দেখবেন, যখন আমেরিকায় কোন ধর্মীয় বর্ণবাদী ঘটনা ঘটে, তখন এদেশের সাধারণ জনতাই একজন আরেকজনের পাশে এসে দাঁড়ায়। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার প্রথম সপ্তাহেই দেখা গিয়েছিল দলে দলে খ্রিষ্টান মেয়েরা স্কার্ফকে হিজাব বানিয়ে পরছে, এয়ারপোর্টে আজান দিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করছে মুসলিমরা এবং ইহুদিদের সিনাগগে গুলি চালালে পরে দলে দলে মুসলিম ও খ্রিষ্টান ওদের পাশে গিয়ে বলেছে "আমরা তোমাদের পাশে আছি।" এর অর্থ এই না যে দলে দলে সব খ্রিষ্টান মুসলিম হয়ে গেছে, বা আমরা ইহুদি হয়ে গেছি। বর্ণবাদীদের গালে কষে চপেটাঘাত করাটাই এখানে মুখ্য উদ্দেশ্য।

তা এই ধর্মীয় স্বাধীনতার আওতায় পড়ে মুসলিম নারীদের নেকাব সহ বোরখা পরার অধিকার, হিজাব পরার অধিকার, হ্যাসেডিক ইহুদিদের ট্র্যাডিশনাল পোশাক (পুরুষের মাথায় টুপি, লম্বা জুলফি, মেয়েদের হিজাব বা মধ্যযুগীয় ফ্যাশনের ড্রেস), খ্রিষ্টান মহিলাদের, বিশেষ করে নানদের হিজাব পরার অধিকার, শিখ ছেলেদের পাগড়ি মাথায় দেয়ার অধিকার, হিন্দু পুরুষ/নারীদের মাথায় তিলক দেয়ার অধিকার, আমিশদের মধ্যযুগীয় কায়দায় বেঁচে থাকার অধিকার ইত্যাদি ইত্যাদি। হ্যা, নেটিভ আমেরিকানদের প্রতি আমেরিকা ভীষণ অন্যায় করেছে, সেটা ভিন্ন টপিক, অনেক বিস্তারিত আলোচনা হয়ে যাবে তাহলে। কিন্তু ওদের ধর্ম চর্চাতেও কোন সমস্যা নেই।
এদেশে আপনার ইচ্ছা হলে আপনি পানির এলাকায় বিকিনিতে চলতে পারবেন, ইচ্ছা করলে পুরো শরীর ঢেকে রাখতে পারবেন, কেউ কিছু বলতে পারবে না যতক্ষন না পর্যন্ত আপনি অশ্লীলতা করছেন, মানে পুরোপুরি বা আংশিক নগ্ন হচ্ছেন। নগ্ন বিচও এদেশে আছে। এদেশের কিছু স্থানে পোশাকের জন্য কোড আছে, অফিসে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে, আদালতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইত্যাদি; সেটা ভঙ্গ না করলে আপনাকে কেউ কিছু বলবে না।
এই কথাগুলি বললাম কারন ফেসবুকে অনেক মানুষকেই দেখছি নিজেকে প্রগতিশীল মনে করেন, কিন্তু বাস্তবে এত গোড়া যে ওদের প্রতিটা পোস্টেই রেসিজমের নগ্নরূপ প্রকাশ পায়। বিদেশে এসেছে কয়বছর, জানা নেই, কিন্তু পোস্ট থেকে ওদের আদি ও অকৃত্রিম বর্ণবাদের প্রচন্ড দুর্গন্ধ বেরোয়।
একটা ব্যাপার মাথায় রাখুন, আমেরিকার সংবিধানের কারণেই আপনি এদেশে নিজ ধর্ম চর্চা করতে পারছেন। কাজেই অমুক কেন বোরখা পরে, তমুকের দাড়ি কেন লম্বা, তমুকের মাথায় পাগড়ি কেন ইত্যাদি নিয়ে কুমন্তব্য করে নিজেকে অমানুষের কাতারে নামাবেন না। ওসব করতে গেলে যেই টাট্টিখানা থেকে উঠে এসেছেন, সেখানে ফেরত যান। আধুনিক সভ্য সমাজ আপনাদের জন্য না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০২৩ সকাল ১০:২৫

তানভীর_আহম্মেদ বলেছেন: তথাকথিত সেকুল্যার জন্য উত্তম চপেটাঘাত :#)

২| ০৩ রা জুন, ২০২৩ রাত ১২:৫৭

ইমরান আহমেদ সৈকত বলেছেন: সেক্যুলার, এ তো এক মুখোশ মাত্র।

৩| ০৩ রা জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৪৪

ধুলো মেঘ বলেছেন: সময় মত আমেরিকানরা নিজেদের কুৎসিত চেহারা দেখাতে দেরী করেনা। নাইন ইলেভেন হামলার পর পর্দানশীল নারী এবং শিখ ধর্মের অনুসারী পুরুষদের উপর হামলার ঘটনা মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

৪| ০৩ রা জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:০০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার কাছে আমেরিকার সব কিছুই ভালো লাগে।

৫| ০৪ ঠা জুন, ২০২৩ সকাল ৭:১৭

সোহানী বলেছেন: সহমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.