নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
চায়ের আড্ডায় বাঙালির প্রিয় আলোচনার বিষয় রাজনীতি।
শুধু আজকে থেকেই না, কয় শতাব্দী হবে কে জানে! ব্রিটিশ আমল থেকেইতো বাঙালি জাতি রাজনীতি সচেতন। ভারত স্বাধীন হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি, এবং পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ সৃষ্টি - সবকিছুতেইতো বাঙালিরই নেতৃত্ব ছিল।
তবে আমি অতি যত্নেই পলিটিক্স এড়িয়ে চলি। ভাল লাগেনা, তারচেয়ে বড় কথা মাথার তার প্যাঁচায় যায়। বুঝিই না যে বিষয়, তা নিয়ে আলোচনা করবো কিভাবে?
তবে একটা ব্যাপার ঐতিহাসিকভাবেই সত্য, তা হচ্ছে, রাজনীতিতে শয্যাসঙ্গী বদল কোন বিষয়ই না। এখানে "বন্ধু" বলে কেউ নেই, সবাই প্রয়োজনে যে যাকে পারে, ব্যবহার করে। দুঃসময়ে স্বার্থে আঘাত লাগলে বন্ধুই পল্টি খেয়ে শত্রু হয়ে যায়। এককালের "বন্ধু" চীন-আমেরিকার বর্তমান অবস্থা দেখেন। আমেরিকা জাপানকে আধুনিক যুদ্ধবিদ্যা শেখালো, সেই জাপানই পার্ল হারবারে বোমা মারলো। জবাবে আমেরিকা জাপানে বোমা ফেলে সব তছনছ করে দিল, আজ সেই জাপানই মার্কিনিদের বন্ধু।
অহিংসার পাঠ মুখস্ত করানো গান্ধীজির ফিলোসফি ছিল এক গালে চড় মারলে আরেকগাল পেতে দিতে। তিনি নিজে এই নীতি মেনে চলেছেন, ভগৎ সিং, সুভাষ বোসরা সেটা মানতেন না বলে তাঁদের তিরস্কারও করেছেন।
সেই গান্ধীজিই কিন্তু ইংরেজদের পক্ষে দেশীয় সিপাহীদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ লড়ার পক্ষপাতী ছিলেন। নিজের দেশের স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র তুলতে যিনি নিষেধ করেছেন আজীবন, সেই তিনিই ব্রিটিশদের পক্ষে জার্মানদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য দেশীয় সিপাহীদের অস্ত্র তুলতে বললেন। তাঁর যুক্তি, এতে ইংরেজরা কৃতজ্ঞ হয়ে স্বাধীনতা উপহার দিবে।
গান্ধীবিরোধীরা এই ইস্যু নিয়েই বাপুকে চরম আক্রমন করে। এটি যে মোক্ষম অস্ত্র, এ নিয়েতো কোন সন্দেহ নেই।
গান্ধীজির বিপরীত কাজটাই করলেন নেতাজি সুভাষ বোস। তিনি গিয়ে হাত মেলালেন নরপশু হিটলারের সাথে। যে নরাধম জার্মান জাতি ছাড়া পৃথিবীর অন্য যেকোন জাতের মানুষকে মানুষই মনে করতো না, এমনকি জার্মান কেউ যদি নিজ জাতির বাইরে গিয়ে কাউকে বিয়ে করতো, তাহলেও মৃত্যুদন্ড দিত - সেই পিশাচের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন "শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু" - বিশ্বাসের ভরসায়। উনি কি মনে করতেন যে হিটলার ভারতীয়দের কোলে তুলে রাখবে? হেল নো! রাশিয়া আক্রমন করেই সে বুঝিয়ে দিয়েছিল বিষধরের কোন বন্ধু থাকে না। ভারতীয়রা ব্রিটিশদের বিদায় করলে হিটলার ওর নরপশুবাহিনী নিয়ে ঠিকই ভারত আক্রমন করতো।
হিটলারকে হারানো চার্চিল ইতিহাসের আরেক জঘন্যতম চরিত্র। ওর কারণেই আমাদের কোটি কোটি মানুষ অভুক্ত হয়ে মারা গিয়েছিল, এবং এ নিয়ে ওর মনে কোন অনুশোচনাও ছিল না। তবে কিনা হিটলারের মতন দানবকে বধ করতে চার্চিল ও স্তালিনের মতই কিছু দানব চরিত্রের প্রয়োজন ছিল। গান্ধীর অহিংসা হিটলারের নামের জানোয়ারের উপর কোন প্রভাব ফেলে না। হাজারটা গান্ধীকে মেরেও হিটলারের মনে বিন্দুমাত্র রেখাপাত ঘটতো না।
৭১ এ আমাদের উপর পাক মিলিটারি গণহত্যা চালায়। প্রাণ বাঁচাতে বাঙালি আশ্রয় নেয় মাত্র পাঁচ বছর আগেই যুদ্ধে আমাদের প্রতিপক্ষ "চিরশত্রু" ভারতে। ইন্দিরা গান্ধী তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমাদের পাশে না দাঁড়ালে আমাদের স্বাধীনতা কয় দশক পিছিয়ে যেত কে জানে!
স্বাধীনতাকামী নিপীড়িত বাঙালির পাশে যেভাবে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন, অটলবিহারী বাজপেয়ি তাঁকে দেবী দূর্গার সাথে তুলনা করে মন্তব্য দিয়েছিলেন; অথচ তিনিই অপারেশন ব্লু স্টারের নামে অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে খালিস্তানের (পাঞ্জাবিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম) যোদ্ধাদের (ওদের ভাষায় বিদ্রোহী, দেশদ্রোহী, সন্ত্রাসী) উপর আর্মি লেলিয়ে দেন। আমাদের পবিত্র কাবা শরীফে কেউ যদি মিলিটারি নিয়ে আক্রমন করে, আমাদের কেমন লাগবে? ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছিল সেদিন শিখদের সাথে। এরই ফলশ্রুতিতে লৌহমানবী ইন্দিরাকে শহীদ হতে হলো নিজেরই শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে। তাঁর বিশ্বাস ছিল শিখ দেহরক্ষীরা বুঝবে যে তাঁর শত্রুতা শিখ ধর্মের বিরুদ্ধে নয়, বরং বিদ্রোহীদের দমনের উদ্দেশ্যেই তিনি সেই কঠিন নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ যে বললাম, নিজেদের মহাপবিত্র ইবাদত স্থলে অমন সেনা অভিযান, অমন রক্তপাত কে কবেই বা মেনে নিতে পারবে?
আমাদের আমেরিকার সংকটটা দেখেন। লিবারেলদের ভোট দিলে অতিরিক্ত লিবারেল হয়ে যায়। আবার কনজারভেটিভদের ভোট দিলে রেসিজম শুরু হয়, হেট ক্রাইম বেড়ে যায়।
আরও বহু উদাহরণ আছে। আমাদের দেশেই আছে। মোট কথা রাজনীতিতে সাদা-কালো বলে কোন কিছু নেই। সবই গ্রে। এক তরফাভাবে সবকিছু চোখ বন্ধ করে সমর্থন করে যাবার কোন উপায়ই নেই। সবসময়েই লেসার অফ টু ইভিলস বেছে নিতে হয়।
১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১:৪৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা ধর্ম, সেটাই হওয়া উচিত, কিন্তু রাজনীতি ভিন্ন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে স্বার্থটাই মূল।
২| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:৪৪
রাসেল বলেছেন: খুবই সত্য.। এটা ব্যক্তিগত জীবনের জন্যও সত্য।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক।
৩| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৫২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার অ্যানালাইসিস।
আমাদের দেশে একটা রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি নামে আরেকটা শক্তিশালী দলের সাথে জোট করে খুবই বিতর্কিত অবস্থায় আছে। এরা এত সমালোচিত হবার পরও এ দলটাকে পরিত্যাগ করছে না, কারণ, এরা জানে, যখনই তাদেরকে জোট থেকে ছেড়ে দেবে, অমনি ঐ স্বাধীনতা-বিপক্ষ শক্তিটাকে স্বাধীনতা-পক্ষের শক্তিটিই বিন্দুমাত্র কালবিলম্ব না করেই বুকে টেনে নেবে। ১৯৮৬ সালে এমন হয়েছিল। ১৯৯৬-তেও।
রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কোনো কিছু নেই, মিথ্যাচার বা দুর্নীতি বলেও কিছু নেই। ক্ষমতায় আরোহণের জন্য, কিংবা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আপনি মুখ দিয়ে যা বলেন, শক্তি দিয়ে যা করেন, তা সবই বৈধ।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন।
৪| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: গান্ধী গ্রেট মানুষ।
সুভাষ বোস চালাক মানুষ ছিলেন। আর হিটলার শয়তান। যাই হোক, এদের চিন্তা ভাবানা এযুগে সম্পূর্ন অচল।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: উনারা উনাদের সময় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন, এ যুগে হলে উনাদের ফিলোসফি কেমন হতো কে জানে!
৫| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪১
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: @সোনাবীজ ১৯৮২-১৯৯০ ওই সময়ের উত্তাল দিনগুলি অন্যরকম, একদিকে দ্রোহ, আন্দোলন অন্যদিকে সৃষ্টিশীলতা; কবিতা, পথনাটক আর আন্দোলন - কি অসম্ভব সুন্দর প্যারাডক্স! অজ্ঞান আর নির্বোধ রাজনীতিবিদদের হাত থেকে আমরা আস্তে আস্তে ঔপনিবেশিক আমলাদের নষ্ট বুদ্ধির কাছে হার মেনে শেকলে বন্দী।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: ন্যায়কে ন্যায় এবং অন্যায়েকে অন্যায় বলতে হবে।যুদ্ধেও ন্যায় অন্যায় আছে।অন্যায় যুদ্ধকে ন্যায় যুদ্ধ দিয়ে প্রতিহত করতে হবে।
অন্যায়ের বিরুদ্ধ কথা বলাই রাজনীতি।