![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চারপাশ থেমে যায় বদলে যায় সময়,মিথ্যে যখন সত্যি হয়।
এখন ব্যবসা করতে চাইলে নতুন চিন্তা ভাবনা করতে হয়। যুগের সাথে তাল মিলাতে হয়। একটু ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। তাহলেই আপনি আপনার কাক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছা সহজ হয়।
বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে চলেছে দ্রুত গতিতে। আর ইন্টারনেট সেই পথে দারুণ গতি এনেছে। তরুণ থেকে বয়স্ক সবাই এখন ইন্টারনেট ইউজ করে। পাড়ার ছোট্ট চা দোকানদারও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুক ইউজ করে। খবর পড়ে। ভাইভার, ইমোর মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে এখন অশিক্ষিত মানুষও। বলা যায়, তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে আমাদের দেশ খুব বেশি এগোতে না পারলেও দিন দিন এর সাফল্য বাড়ছে। স্বাধীন পেশা ফ্রিল্যান্সিং এ তরুণ ও যুবকরা এগিয়ে চলেছে কাক্ষিত লক্ষ্যে। বাংলাদেশের সাফল্য সফটওয়্যার রফতানিতেও এসেছে। নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তরুণ প্রজন্ম ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে এগিয়ে চলছে সমান তালে। যদিও উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখতে পাই তারা এখন ফাইভ জি নেটওয়ার্ক নিয়ে এগিয়ে চলছে সেখানে আমরা এখনও থ্রিজি সেবা পৌঁছে দিতে পারছি না সব কয়টি জেলা ও উপজেলা শহরে। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে আর এই পিছিয়ে পড়া থেকে এগিয়ে যাওয়ার পথে তৈরি হয়েছে নতুন ব্যবসার সম্ভাবনা। তা হলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা।
আমাদের অনেকেরই হয়ত জানা নেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা সম্পর্কে।আমাদের আগে জানতে হবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যাপার টা আসলে কি!!আমরা তো ডাটা কিনেও নেট ব্রাউজ,ডাউনলোড,আপলোড করতে পারি।তাহলে কেনো এই ব্রডব্যান্ড!! মনে প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক,তো কথা আর না বাড়িয়ে বলি।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কি?
একদম সহজ ভাষায় বলা যায়, কম টাকায় উচ্চ গতির ইন্টারনেট পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। যে সেবা আমরা অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে পেয়ে থাকি।অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ডেটা আলোর গতিতে প্রবাহিত হয় তাই আমরা উচ্চতর গতির ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে পারি ব্রডব্যান্ড এর মাধ্যমে।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা কি?
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা মূলত ইন্টারনেট ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা। বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন ভাবেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। যেমন ওয়ারল্যাস, ওয়াইফাই, ওয়াইম্যাক্স, ব্রডব্যান্ড। এগুলোর মধ্যে গ্রাহকদের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সবচেয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেয়া যায়।আনলিমিটেড প্যাকেজ, স্বল্প মূল্য এবং নিরবিচ্ছিন্ন সঠিক গতির নিশ্চয়তার কারণে অধিকাংশ মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের দেশের খুব কম জায়গাতেই পাওয়া যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা যদিও অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এব্যবসা সম্পর্কে জানার সীমাবদ্ধতার কারনে শুরু করতে পারছেন না অনেকেই।
কিভাবে শুরু করবেনঃ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করতে হলে প্রথমে রিসার্চ করে নিন আপনার ব্যবসায়ের এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কেমন। যদি সন্তোষজনক মনে হয় তাহলে শুরু করতে পারেন। ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করার জন্য বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স করতে হবে। লাইসেন্স করার জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। ফরম পাবেন এখানে http://www.btrc.gov.bd । ফরমে বর্ণিত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিটিআরসি হেড অফিসে নিয়ে জমা দিতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদন করার ৩ মাসে ভিতর লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য সবার আগে প্রয়োজন হবে ব্যান্ডউইথ। আর ব্যান্ডউইথ আসে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে। তাই প্রথমে দেখতে হবে যে আপনার ব্যবসায়ীক এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার আছে কিনা। শুধু ফাইবার থাকলেই হবে না কানেকশন দেওয়ার পপস পোর্টও থাকতে হবে। বিটিসিএলের ফাইবার লাইনের পপস পোর্ট আছে শুধুমাত্র জেলা শহরগুলোতে। তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মোবাইল অপারেটরদের ৩জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারণে এখন গ্রাম পর্যায়েও অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে গেছে। বেসরকারি আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) গুলো প্রায় সারাদেশে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। আপনাকে সেসব আইআইজি এর কাছ থেকে জেনে নিতে হবে আপনার এলাকায় তাদের অপটিক্যাল ফাইবারের পপস পোর্ট আছে কিনা।
একমাত্র সরকারি IIG বিটিসিএল। কমদামে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে এমন কয়েকটি বেসরকারি IIG হল ম্যাঙ্গো টেলিকম, সামিট কামিউনিকেশন, বাংলা ফোন, টমেটুওয়েব, ভিগ্রো কামিউনিকেশন ও বিডি লিংক কামিউনিকেশন। দেশের সবগুলি IIG সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন - Click This Link
আপনি এদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে ব্যান্ডউইথ কিনে নিতে পারবেন।
যদি আপনার কাছাকাছি পোর্ট থাকে তাইলে ব্যবসা শুরু করতে আর বাধা নেই। কাছাকাছি না হয়ে একটু দূরে পোর্ট থাকলে সেখান থেকেও রেডিও লিংক করে আনতে পারবেন। আর যদি পপস পোর্টের দূরত্ব বেশি হয় তাইলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ নিতে পারবেন বা মাইক্রোওয়েভ দ্বারা কানেক্টেড মোবাইল টাওয়ারের বিটিএস থেকেও নিতে পারবেন ব্যান্ডউইথ। তবে এই দুই
পদ্ধতিতেই ব্যান্ডউইথের দাম অনেক বেশি পরবে। বিভাগীয় শহরগুলিতে অনেক আইএসপি কম দামে সাবলাইন দিয়ে থাকে। তাদের থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়েও ব্যবসা করতে পারবেন আপনি।
কি কি লাগবেঃ ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করতে হলে আপনাকে কিছু যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। সেগুলি হল স্পিড কন্ট্রোল করার জন্য মাইক্রোটিক রাউটার, ক্যাবল, একটি পিসি, বেজ স্ট্যাশন স্থাপন করার জন্য সুইচ ও বক্স। মাইক্রোটিক রাউটার ২৪ ঘন্টা অন রাখার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।
পুঁজি লাগবে কতঃ পুঁজি কত লাগবে সেটা নির্ভর করবে আপনি কত কিলোমিটার এলাকায় লাইন টানবেন তার উপর। যন্ত্রপাতি ও লাইসেন্স করার জন্য লাগবে ৫০,০০০ টাকা, প্রতিটি বেজ স্ট্যাশন ১০০০, প্রতি কিলোমিটার ক্যাবল ১০০০০ টাকা। বিটিসিএল এ প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইথের দাম পরবে ২৮০০ টাকা, বেসরকারি IIG এর নিজস্ব লাইন থেকে নিলে দাম পরবে ১০০০-১৮০০ টাকা। আর মোবাইলের টাওয়ারের বিটিএস থেকে নিলে প্রতি মেগাবিট পরবে ৩০০০-৫০০০ টাকা।
ঝুঁকি কতটুকুঃপ্রথমেই বলেছি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক কম। কারণ এই ব্যবসায় শুরুতেই একবার সব কিছু স্থাপন করে নিলে তারপর ব্যান্ডউইথ কেনা ছাড়া তেমন কোন খরচ নেই। বর্ষাকালটা যদিও ব্রডব্যান্ড ব্যবসার জন্য শত্রুতামুলক আচরন করে। কারন বজ্রপাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।
প্রচার এবং প্রসারের প্রয়োজনীয়তাঃ আপনার ব্যবসায়িক এলাকায় আপনি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টানেটের সার্ভিস নিয়ে এসেছেন সেটা তো মানুষকে জানাতেহবে। আর এর জন্য আপনাকে অবশ্যই
প্রচার করতে হবে। যেহেতু আপনি একটা এলাকা টার্গেট করে ব্যবসায় নামবেন সেহেতু মার্কেটিং এর জন্য
আপনাকে তেমন বড় বাজেট রাখতে হবে না। লিফলেটে আপনার প্যাকেজ সমূহ, প্যাকেজ মূল্য, স্পিড, শর্তাদি ইত্যাদি বিস্তারিত লিখে আপনার টার্গেটকৃত এলাকায় বিতরণ করতে হবে। আগে থেকেই কোন আইএসপি থাকলে তাদের সাথে কম্পেয়ার করে রেট নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া সরাসরি বাসায় বাসায় গিয়ে, মাইকিং করে, ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে, পরিচিত মহলকে অনুরোধ করেও মার্কেটিং করতে পারেন।
আপনার যে ব্যাবসায়ীক কৌশল অবলম্বন করা উচিতঃএই ব্যবসা যেহেতু ব্যবহারকারী ভিত্তিক এবং এক ব্যবহারকারীর সাথে আরেক ব্যবহারকারী সম্পর্কযুক্ত থাকে তাই আপনার বর্তমান ব্যবহারকারীদের বিশেষ ডিসকাউন্টের অফার দিয়ে প্রভাবিত করেও উইজার বাড়াতে পারবেন। এ ছাড়াও এমন ঘোষণা দিতে পারেন প্রথম নির্দিষ্ট সংখ্যার কিছু ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট পাবেন। এতে করে দ্রুত
কাস্টমার পাওয়া আপনার জন্য সহজ হবে।
এই ব্যবসায় আপনি কর্মী নিয়োগ দিতে চাইলে দেখতে হবে সে মাইক্রোটিক রাউটার কন্ট্রোলিং এর কাজ জানে কিনা, নতুন পোর্ট বানানো, সুইচ, কানেকশন দিতে পারে কিনা, যোগাযোগ দক্ষতা কেমন, মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কেমন। এ ছাড়াও যোগ্যতা হিসেবে বাই সাইকেল চালানো জানলে বাড়তি সুবিধা পাবেন। কেননা দূর দূরান্তে গিয়ে লাইন ঠিক করতে হবে।
পরিশেষে আপনার করণীয়ঃআপনার কাস্টমারদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে আপনাকে। তারা খারাপ কিছু করলেও তাদের উপর রাগ করা যাবে না। গভীর রাতেও অনেকে ফোন করতে পারে আপনার সেবার জন্য। তাতে বিরক্ত হওয়া চলবে না আপনাকে।
তথ্যসূত্র - গুগল,উইকিপিডিয়া,এবং কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের খন্ড বিশেষ।
ছবিসূত্র-মহামান্য গুগল মামা।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:২৬
KH marup বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আরভিন,পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য এবং আপনার মুল্যবান মন্তব্য টি করার জন্য।ভালো থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:২৮
আরভিন বলেছেন: অনেক অনেক অনেক ইনফরমেটিভ পোস্ট।বিশেষ করে ব্রডব্যান্ড সম্পর্কে জানতে চায়,এবং উদ্যোগ নিতে আগ্রহী!হ্যাটস অফ!