নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উত্তুরে হাওয়া

শ্রদ্ধা আর মমতাই তোমাকে জয়ী করতে পারে; তুমি তোমার জ্ঞান প্রয়োগ কর।

ম্যাভেরিক

প্রাচীন সভ্যতা, পুরাণ, সংখ্যাতত্ত্ব, শব্দের ইতিহাস ভালো লাগা একজন মানুষ

ম্যাভেরিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রমিত বাংলা বানান রীতি (৩): অনুস্বার (ং) এবং উঁয়ো (ঙ)!

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:২৩



আধুনিক বাংলায় অনুস্বার এবং উঁয়ো-র উচ্চারণ এক রকম। কিছু কিছু বানানে এদের যেকোনো একটি গ্রহণযোগ্য হলেও, অন্যান্য ক্ষেত্রে একটি আরেকটির বিকল্প নয়।



৪.১ সাধু ভাষার /ঙ্গ/ এর কোমল রূপ হিসেবে চলিত ভাষায় /ঙ/

আঙ্গিনা > আঙিনা

আঙ্গুর > আঙুর

গাঙ্গ > গাঙ

গোঙ্গানি > গোঙানি

ঠ্যাঙ্গারে > ঠ্যাঙারে

বাঙ্গালি > বাঙালি

ঢ্যাঙ্গা > ঢ্যাঙা

ল্যাঙ্গট > ল্যাঙট

স্যাঙ্গাৎ > স্যাঙাৎ



৪.২ অবিকল্প ঙ (যেখানে শুধুমাত্র ঙ প্রযোজ্য)

ক-বর্গের /ক খ গ ঘ/ এর সাথে নাসিক্য-ব্যঞ্জন (ঙ্, ঞ্, ণ্, ন্, ম্) যুক্ত হওয়ার সময় নাসিক্য-ব্যঞ্জনটি শুধুমাত্র /ঙ/ হবে; /ঙ/ এর পরিবর্তে অনুস্বার ব্যবহার করা যাবে না।



/ঙ্ ঞ্ ণ্ ন্ ম্/ + /ক খ গ ঘ/ = ঙ্ক ঙ্খ ঙ্গ ঙ্ঘ

ঙ্‌ + ক (ঙ্ক): অঙ্ক (অংক নয়), আতঙ্ক (আতংক নয়);

এমনিভাবে, অঙ্কুর, আশঙ্কা, কঙ্কর, কঙ্কাল, কেলেঙ্কারি, চিত্রাঙ্কন, পঙ্কিল,

বঙ্কিম, শশাঙ্ক।

দ্রষ্টব্য পঙ্‌ক্তি বানানটি বেশ মজার।



ঙ্‌ + ক্ষ (ঙ্ক্ষ): আকাঙ্ক্ষা, হিতাকাঙ্ক্ষী

ঙ্‌ + খ (ঙ্খ): উচ্ছৃঙ্খল, পুঙ্খানুপুঙ্খ, শঙ্খ

ঙ্‌ + গ (ঙ্গ): অঙ্গ, অঙ্গার, অঙ্গীকার, অঙ্গীভূত, অঙ্গুরি, আনুষঙ্গিক, অন্তরঙ্গ, আঙ্গিক, ইঙ্গ-বঙ্গ, ইঙ্গিত, কুরঙ্গ, গাঙ্গেয়, জঙ্গম, পিঙ্গল, প্রাঙ্গন, ভঙ্গুর, ভৃঙ্গু, শৃঙ্গ, সাঙ্গোপাঙ্গ, স্ফুলিঙ্গ

ঙ্‌ + ঘ (ঙ্ঘ): উল্লঙ্ঘন, জঙ্ঘা, লঙ্ঘন



তবে সাধিত শব্দের পূর্বপদের শেষ বর্ণ কেবলমাত্র /ম্/ হলে এবং পরপদের প্রথম বর্ণ /ক খ গ ঘ/ হলে সন্ধির নিয়মে /ঙ/-র বিকল্পে অনুস্বার ব্যবহার করা যাবে।



ম্‌/ + /ক খ গ ঘ/ = ংক বা ঙ্ক, ংখ বা ঙ্খ, ংগ বা ঙ্গ, ংঘ বা ঙ্ঘ/

যেমন, অহম্‌ + কার = অহংকার/অহঙ্কার।

বানানে সরলতার জন্য এসব ক্ষেত্রে অনুস্বারই বর্তমানে বহুল প্রচলিত। নিচে আরো কিছু উদাহরণ দেখানো হল:

অলম্‌- অলংকার অলংকৃত

অহম্‌- অহংকার, অহংকারী

কিম্‌-কিংকর, কিংকিণী।

তবে কিংকর্তব্য, কিংকর্তব্যবিমূঢ় বানানে কেবলমাত্র অনুস্বার হবে।



ঝম্‌- ঝংকার, ঝংকৃত

ভয়ম্- ভয়ংকর

শম্‌- শংকরী

সম্‌- বিপদসংকুল, সংকট, সংকর, সংকলক, সংকল্প, সংকীর্ণ, সংকীর্তন, সংকোচন, সংগতি, সংগীত, সংঘর্ষ

হুম্‌- হুংকার, হুহুংকার



দ্রষ্টব্য সংক্রান্ত, সংক্রান্তি, সংক্ষিপ্ত, সংক্ষুব্ধ, সংক্ষোভ, সংখ্যা, সংখ্যক, সংগঠন, সংগোপন, সংগ্রাম, সায়ংকাল, সায়ংকৃত ইত্যাদি বানানে কেবলমাত্র অনুস্বারই হবে।

----------------------------------------------------

৪.৩ অবিকল্প ং (যেখানে শুধুমাত্র অনুস্বার প্রযোজ্য)

৪.২-এ দেখছি /ম্‌/ + /ক খ গ ঘ/ = অনুস্বার বা ঙ উভয়ই প্রচলিত।

তবে এছাড়া

ম্‌/ + অন্তস্থ বর্ণ /য র ল ব/ বা উষ্ম বর্ণ /শ ষ স হ/ = অনুস্বার /

(সন্ধির নিয়মে এক্ষেত্রে অনুস্বারের কোন বিকল্প নেই)



কিম্- কিংবদন্তি, কিংবা, কিংশুক

সম্‌- সংবৎসর, সংবরণ, সংবর্ধনা, সংবলিত, সংবিৎ, সংবিধান, সংরক্ষণ, সংশপ্তক, সংশ্লেষণ, সংস্করণ, সংস্ক্রিয়া, সংহিতা, স্বয়ংবর



দ্রষ্টব্য সম্বন্ধ, সম্বল, সম্বোধন এগুলি এই নিয়মের ব্যতিক্রম নয় কারণ এখানে পরপদের /ব/ বর্গীয়-ব, অন্তস্থ-ব নয়।



৪.৪ সংস্কৃত থেকে আগত কিছু শব্দে মূলত অনুস্বার

অংশ, অংস, কাংস্য, জিঘাংসা, দংশন, দংষ্ট্রা, নপুংসক, নৃশংস, পাংশু, পুংলিঙ্গ, প্রাংশু, প্রিয়ংবদা, বৃংহণ, মীমাংসা, রিরংসা, শংসাপত্র, হিংসাত্মক



৪.৫ তদ্ভব ও দেশি শব্দে অনুস্বার

এসব ক্ষেত্রে /অং/ বা /ng/ উচ্চারণে সাধারণত অনুস্বার হয়:

আংটি, গাংচিল, চিচিংফাঁক, চিৎপটাং, চ্যাংদোলা, ঝপাং, ডাংগুলি, তিড়িংবিড়িং, ভড়ং, ভেংচানো, ল্যাংচানো, ল্যাংড়া



৪.৬ বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে /ng/ ধ্বনির উচ্চারণে বর্তমানে প্রায় সর্বত্র অবিকল্প অনুস্বার

যেমন, পূর্বে ব্যাঙ্ক বেশ প্রচলিত থাকলেও, এখন ব্যাংকই অধিকতর গ্রহণযোগ্য।

আংটা, ইংলিশ, ওয়েটিংরুম, কংক্রিট, কিংখাব, ঠুংরি, ডায়ালিং, পিকেটিং, বিয়ারিং, শিলিং

দ্রষ্টব্য কঙ্গো, ক্যাঙ্গারু, চাঙ্গা, জঙ্গি, ডেঙ্গু, দঙ্গল, নাঙ্গা, লুঙ্গি, হাঙ্গামা প্রভৃতি ব্যতিক্রম।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৩৫

নিদ্রালু বলেছেন: ডরাইছি।

পেলাচ +

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৪০

ম্যাভেরিক বলেছেন: হা, হা, হা। ডরানোর পরও যেহেতু ভালো লেগেছে, এটি আনন্দময় ডর; এরকম ডর সবারই পাওয়া উচিত।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৪৯

কুমিল্লার পোলা বলেছেন: ও বাপস্‌ আপনি '+' পাইছেন।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৫৮

ম্যাভেরিক বলেছেন: হা, হা। একটু কাজে লাগলেই কিন্তু + টা জ্বলজ্বল করবে।

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:১০

আইরিন সুলতানা বলেছেন: চক্ষু সংকুচিত করে পড়লাম....এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম পোস্ট পড়ে ...শব্দের জটিল অলংকরণ ...

:)

+

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:১৫

ম্যাভেরিক বলেছেন: মন্তব্যখানি বচনামৃতের ন্যায় কর্ণকুহর উদ্ভাসিত করিল। :)

৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:১৩

সজল শর্মা বলেছেন: মাভেরিক ভাই, ব্যাকরণ ক্লাশটা খুব প্রয়োজনীয়। ধন্যবাদ।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:১৬

ম্যাভেরিক বলেছেন: এখানে আপনার শায়েরিগুলি দেখি না যে! ভালো থাকবেন।

৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:২৪

অবনীল্‌ বলেছেন: কষ্ট করে লেখার জন্য ধন্যবাদ। আমিও কিছুদিন ধরে বাংলা বানান নিয়ে একটি পোস্ট দেয়ার কথা ভাবছিলাম। আমার ভাবনার কিছুটা ইংগিত আপনাকে দিচ্ছি। 'ইংগিত'-এ ইংগিত পেলেন কি? আমি সরলিকরণ করতে চাচ্ছি। সংস্কৃত থেকে উৎপত্তির দোহাই দেবেন, এই তো? সংস্কৃত থেকে উৎপন্ন অধিকাংশ শব্দই মূল সংস্কৃত রূপে নেই। নেই যখন, সে যখন বাংলার নিজের মতো করে নিয়েছে, তো তার ওপর সংস্কৃতের ব্যাকরণ না চাপানোই ভাল।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:৩৩

ম্যাভেরিক বলেছেন: আপনি আমার অন্য পোস্টগুলি দেখলে হ্য়তো চাপানো, দোহাই শব্দ দুটি ব্যবহার করতেন না, কারণ আমিও সরলিকরণের পক্ষে। তবে তার জন্য নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও মতৈক্য প্রয়োজন। এই পোস্টের নিয়মগুলি যখন আরো সরল হবে, আমি আরো বেশিই খুশি হব। কিন্তু যেহেতু সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারী নই, আমি কেবলমাত্র এখন পর্যন্ত প্রচলিত কথাগুলিই এখানে বলতে পারি এবং সঠিক কর্তৃপক্ষকে আপনার/আমার মতামত পৌঁছে দিতে পারি।

ধন্যবাদ।

৬| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:৩৭

'লেনিন' বলেছেন: এই জাতীয় পোস্টগুলো খুব দরকার বাংলা বানান বিষয়ে সচেতনা বৃদ্ধি পাবে।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১০:৪৫

ম্যাভেরিক বলেছেন: ধন্যবাদ, লেনিন ভাই। বানানে উৎকর্ষতা দরকার। :)

৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১০:৩৭

আমিনুল ইসলাম বলেছেন: ভাইয়া অনুগ্রহ করে কি এই পোস্টটা পড়বেন একটু? Click This Link

৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১০:৩৯

আমিনুল ইসলাম বলেছেন: আকাঙ্ক্ষার বানান তো জানতাম আকাঙ্খা এভাবে।

আর চলিত ভাষায় কি আঙ্গুর এর বদলে আঙুর হবে? ঠিক বুঝলাম না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.