নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধ্রুবতারা

এম বি ফয়েজ

সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকা এবং জেনে-শুনে সত্য গোপন করা কোন ব্লগারের কাম্য হওয়া উচিত নহে।

এম বি ফয়েজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা ইতিহাসের ভয়াবহতম মিথ্যা: জিআর

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৭

এম বি ফয়েজ।।৩ অক্টোবর : গ্লোবাল রিসার্চ নামের আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে, নিহত শিশুদের কিছু ছবিকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করে সিরিয়ার দামেস্কের কাছে যে রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয় তা মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ও বিপজ্জনক মিথ্যা হয়ে থাকতে পারে।





গ্লোবাল রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে জুলি লিউস্ক ও অধ্যাপক মাইকেল খাসদোভোস্কি বলেছেন, বহু সাক্ষ্য-প্রমাণ ও দলিলে দেখা গেছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা বিপুল সংখ্যক সিরিয় শিশুকে অপহরণ করে হত্যা করার পর বিশেষ কায়দায় তাদের ছবি ও ভিডিও তৈরি করেছে যাতে এটা দাবি করা যায় যে এই শিশুরা সিরিয়ার সরকারি সেনাদের রাসায়নিক হামলায় নিহত হয়েছে।





সিরিয়ার সরকারকে রাসায়নিক হামলাকারী হিসেবে প্রচার করার জন্যই এইসব নৃশংস ঘটনা ঘটায় বিদ্রোহীরা। বিশ্ব জনমতকে সিরিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা এবং দেশটিতে আমেরিকার নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর হামলার পরিবেশ সৃষ্টি করা ছিল এইসব পৈশাচিকতার উদ্দেশ্য।





প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, কথিত ওই হামলার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্ত অনুষ্ঠানের প্রতি মার্কিন সমর্থনের উদ্দেশ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যে ও বিশেষ করে ইহুদিবাদী ইসরাইল, (গাদ্দাফির) লিবিয়া ও (সাদ্দামের) ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রের প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে ওয়াশিংটনের অপরাধ বা দায়-দায়িত্বকে আড়ালের চেষ্টা করা।





এই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা সম্পর্কে জাতিসংঘের তদন্তকারীদের তদন্ত-প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি সিরিয়ায় মানবিক ততপরতায় জড়িত 'মাদার অ্যাগনেস মারিয়াম' ও 'সিরিয়ার পুনর্মিলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন' শীর্ষক দু'টি সক্রিয় গ্রুপ তদন্ত চালিয়ে দেখেছে যে ভিডিও-চিত্রকে আমেরিকা ও তার মিত্ররা সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার প্রমাণ বলে উল্লেখ করছে তা স্রেফ মিডিয়ার নাটক মাত্র। (জাতিসংঘ তার প্রতিবেদনে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা হওয়ার কথা উল্লেখ করলেও কারা তা করেছে সে বিষয়ে কিছু বলেনি।)





গ্লোবাল রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপহৃত শিশুদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার এই দুটি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছেন, তারা তাদের অপহৃত শিশুদেরকে এই ভিডিওতে দেখতে ও চিহ্নিত করতে পেরেছেন। ওই দুটি গ্রুপ যথাযথ ও নিখুঁত তদন্তের পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো এই নিষ্পাপ শিশুদের অপহরণের পর হত্যা করেছিল যাতে তাদের লাশকে রাসায়নিক হামলায় নিহতদের লাশ বলে প্রচার করা যায়।





নিহত শিশুদের বেশ কিছু ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এইসব ঘটনার হোতা ও ভিডিও-নির্মাতারা শিশুদের লাশগুলোকে নানা স্থানে জড়ো করে তাদের ছবি তুলেছে এবং ভুলবশত নির্দিষ্ট রঙ্গ ও ডিজাইনের পোশাক পরা কোনো কোনো শিশুর বা একই শিশুর লাশকে নানা স্থানে রেখে ছবি তুলেছে।





অ্যাসোশিয়েটেড প্রেসের মার্কিন সাংবাদিক 'ডেল গ্যাভলাক'সহ কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন যে সৌদি আরবের গোয়েন্দামন্ত্রী প্রিন্স বন্দর বিন সুলতান ছিলেন সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কাছে রাসায়নিক অস্ত্রের মূল যোগানদাতা। এই সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর গ্যাফলককে নানা হুমকি ও চাপ দেয়া হয়েছে যাতে তিনি তার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন।





নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা ডেল গ্যাভলাকের (Dale Gavlak) প্রতিবেদনকে সত্য বলে স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, দামেস্কের কাছে রাসায়নিক হামলার সঙ্গে সিরিয় সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই এবং সৌদি গোয়েন্দা সংস্থাই এই হামলার নেপথ্য ঘটক। কিন্তু কেউ সাহস করে তা বলছে না। তিনি রাসায়নিক হামলার স্থল বলে কথিত গুতে অঞ্চলের বিদ্রোহীদের কাছ থেকেই এইসব তথ্য পেয়েছেন বলে জানান।





এর আগে জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা কার্লা ডেল পন্টি গত মে মাসে সিরিয়ার খান আল আসাল অঞ্চলে রাসায়নিক হামলা সংঘটিত হওয়ার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিয়ে বলেছিলেন, বিদ্রোহীরাই এই সন্দেহজনক হামলার সঙ্গে জড়িত এবং সিরিয় সেনারা যে এ ধরনের হামলা চালিয়ে থাকতে পারে তার কোনো দলিল বা সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই।





এইসব দলিল-প্রমাণের আলোকে গ্লোবাল রিসার্চ তার প্রতিবেদনের উপসংহারে বলেছে, আমরা বিশ্বাস করি যে (সিরিয়ায় সরকারি সেনাদেরকে রাসায়নিক হামলাকারী হিসেবে তুলে ধরার জন্য) ঘটানো এইসব ঘটনা ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অপরাধ। একদল মাসুম বা নিষ্পাপ শিশুকে অপহরণ করে তাদেরকে হত্যার পর এই নারকীয় ভিডিও তৈরি করা হয়েছে এবং এর উদ্দেশ্য হল, সিরিয়ায় হামলার অজুহাত সৃষ্টি করা। এই প্রতিবেদনের লেখকরা ওইসব শিশু হত্যার মত অপরাধযজ্ঞের হোতাদের বিচার করতে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার বিরুদ্ধে ততপরতা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।





উল্লেখ্য সিরিয়ার সরকার খুব জোরালোভাবে গত ২১ শে আগস্টে সংঘটিত রাসায়নিক হামলায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। আসাদ সরকার বলছে, এর আগে বিদ্রোহীদের হাতে সংঘটিত রাসায়নিক হামলার তদন্ত করতে দামেস্ক যখন নিজেই জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তাদের সিরিয়ায় ডেকে এনেছে এবং তদন্ত কর্মকর্তারাও সিরিয়ায় পৌঁছেছেন ঠিক তার একদিন পর সরকার কেন এ ধরনের হামলা চালাতে যাবে?







এ ছাড়াও সিরিয়ার সরকারি সেনারা যখন একের-পর এক বিভিন্ন ফ্রন্টে বিদ্রোহী বা সন্ত্রাসীদের নাস্তানাবুদ করছিল তখন দামেস্কে জাতিসংঘের দপ্তর থেকে মাত্র এক-দুই কিলোমিটার দূরে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি এলাকায় সরকার এই হামলা চালাতে পারে –এমন কথা কোনো পাগলও বিশ্বাস করবে না বলে আসাদ সরকার উল্লেখ করে আসছে।







ইসরাইলের কট্টর বিরোধী আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমতকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্যই আমেরিকা, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তাদের আঞ্চলিক সেবাদাস সরকারগুলোসহ সাম্রাজ্যবাদের লালিত ও প্রভাবিত সংবাদ এবং গণমাধ্যমগুলো কোনো বাছ-বিচার ছাড়াই আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ প্রচার করে আসছে বলে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা উল্লেখ করছেন।



তথ্যঃ রেডিও তেহরান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.